দেশের প্রথম মহিলা অর্থমন্ত্রী শ্রীমতী নির্মলা সীতারমন মহোদয়া এবং তাঁর টিমকে আমি এই নাগরিক-বান্ধব, উন্নয়ন-বান্ধব এবং দেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করার লক্ষ্যে রচিত বাজেটের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
এটি দেশকে সমৃদ্ধ এবং দেশের প্রত্যেক সাধারণ মানুষকে সামর্থবান করে তুলবে। এই বাজেট গরিবদের শক্তি যোগাবে, নবীনদের এনে দেবে নতুন ভবিষ্যৎ।
এই বাজেটের মাধ্যমে মধ্যবিত্তরা এগিয়ে যাবেন, উন্নয়নের গতি বাড়বে।
এই বাজেটের মাধ্যমে কর ব্যবস্থা সরলীকরণ হবে, পরিকাঠামোর আধুনিকীকরণ হবে।
এই বাজেট শিল্প এবং শিল্পপতিদের শক্তি যোগাবে, দেশের উন্নয়নে মহিলাদের অংশীদারিত্ব আরও বাড়াবে।
এই বাজেট শিক্ষাকে উন্নত করবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মহাকাশ গবেষণার সুফলকে সাধারণ মানুষের কাজে লাগাবে।
এই বাজেটে আর্থিক সংস্কার রয়েছে, সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজতর করার উপায়ের পাশাপাশি দরিদ্র কল্যাণের ব্যবস্থা রয়েছে।
এই বাজেট একটি সবুজ বাজেট। এতে পরিবেশ, ইলেক্ট্রিক মোবিলিটি ও সৌরক্ষেত্রকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বিগত পাঁচ বছরে দেশ নিরাশার আবহকে পেছনে ফেলে এসেছে এবং দেশ প্রত্যাশা ও আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর।
বিদ্যুৎ, গ্যাস ও সড়কের সমস্যা, নোংরা আবর্জনার ঢের, দুর্নীতি, ভিআইপি সংস্কৃতি, অনেক অনেক সমস্যা, সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংঘর্ষময় জীবন, এমনকি তাঁদের নিজের বিরুদ্ধেও লড়াই করতে হ’ত। আমরা প্রতিনিয়ত এসব সমস্যা লাঘবের চেষ্টা করে গেছি। সাফল্যও পেয়েছি।
আজ সাধারণ মানুষের জীবনে নতুন নতুন আকাঙ্খা এবং অনেক অনেক প্রত্যাশা …… এই বাজেট দেশকে এসব প্রত্যাশা পূরণের আশ্বাস যোগাচ্ছে। এই বিশ্বাস গড়ে উঠেছে যে, এই লক্ষ্য সঠিক, এই পদ্ধতি যথাযথ, এই গতি পর্যাপ্ত এবং সেজন্য লক্ষ্যপূরণও সুনিশ্চিত।
এই বাজেট আশা, বিশ্বাস ও আকাঙ্খার বাজেট। এই বাজেট একবিংশ শতাব্দীর ভারতের প্রত্যাশা পূরণ এবং ‘নতুন ভারত’ নির্মাণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ রূপে প্রমাণিত হবে।
এই বাজেট ২০২২ সালে স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ পালন সংশ্লিষ্ট সংকল্পগুলি পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় পথ নির্ধারণ করবে।
বিগত পাঁচ বছরে আমাদের সরকার গরিব, কৃষক, তপশিলি জাতি, পীড়িত, শোষিত এবং বঞ্চিতদের ক্ষমতায়নের জন্য বহুবিধ পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন আগামী পাঁচ বছরে এই ক্ষমতায়ন তাঁদের দেশের উন্নয়নে পাওয়ার হাউসে পরিণত করবে।
এই পাওয়ার হাউস থেকেই দেশকে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির দেশে পরিণত করার স্বপ্ন পূরণে প্রাণশক্তি সঞ্চারিত হবে।
এই বাজেটে কৃষি ক্ষেত্রে কাঠামোগত সংস্কারের জন্য অনেক প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে। পিএম কিষাণ সম্মান নিধির মাধ্যমে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কৃষকদের সরাসরি প্রায় ৮৭ হাজার কোটি টাকা পৌঁছে দেওয়া কিংবা ১০ হাজারেরও বেশি ফার্মার প্রডিউস অর্গানাইজেশন (এফপিও) স্থাপনের স্বপ্ন, মৎস্যজীবীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ প্রকল্প কিংবা ন্যাশনাল ওয়্যারহাউসিং গ্রিড স্থাপন ইত্যাদি প্রকল্প ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার ক্ষেত্রে কার্যকরি ভূমিকা পালন করবে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ফলে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও বৃদ্ধি পাবে।
জনশক্তি ছাড়া জলসঞ্চয় সম্ভব নয়। ‘জলসঞ্চয়’ গণআন্দোলনের ভাবনা থেকেই গড়ে উঠতে পারে। এই বাজেট শুধু বর্তমান নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভাবনা স্পষ্ট প্রতীয়মান। ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’ – এর মতো ‘প্রত্যেক বাড়িতে জল’ অভিযান দেশকে জল সঙ্কট দূরীকরণের জন্য সক্ষম করে তুলবে।
এই বাজেটের সিদ্ধান্তগুলি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আগামী দশকের ভিত্তি মজবুত করার পাশাপাশি নবীন প্রজন্মের জন্য নতুন নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলবে।
এই বাজেট আপনাদের প্রত্যাশা, স্বপ্ন এবং সংকল্পগুলি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।
আমি আগামীকাল কাশীতে এই বিষয়গুলি নিয়ে বিস্তারিত বলব। কিন্তু আজ একবার অর্থমন্ত্রী ও তাঁর গোটা টিমকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। আর ভারতের সমস্ত নাগরিকদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্যও অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।