আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা , নমস্কার,
আমি বরাবরই চেষ্টা করি সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প সাধারণ মানুষের জীবনে কেমন পরিবর্তন এনেছে সেই বিষয়ে তাদের মধ্যে গিয়ে সরাসরি তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানতে। ঠিক কিম্বা ভুল, ভাল কিম্বা খারাপ, এর ফলে সমস্যা আরও বেড়েছে নাকি কমেছে; এই সমস্ত বিষয়ে আপনাদের কাছ থেকে জানতে পারা আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সরকারি আধিকারিকরা যে রিপোর্ট প্রস্তুত করেন, তার একটা আলাদা গুরুত্ব আছে। কিন্তু আমি সরাসরি সুবিধাভোগীদের সঙ্গে দেখা করে, কথা বলে অনেক নতুন জিনিস জানতে পারি। যেমন উজ্জ্বলা যোজনার সুবিধাভোগীদের সঙ্গে কথা বলে একটি অপ্রত্যাশিত তথ্য জেনেছিলাম। উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস সংযোগপ্রাপ্ত মহিলারা আমাকে জানান যে, এর ফলে আমাদের অনেক জল সাশ্রয় হয়েছে।
আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করি, জল আবার কিভাবে বাঁচল?
তাঁরা বলেন, কাঠের উনুনে যখন রান্না করতাম, সমস্ত বাসন কালো হয়ে যেত। দিনে তিন চারবার বাসন ধুতে অনেক জল লাগতো। এখন গ্যাসের উনুনে রান্না করি তাই এত ঘন ঘন বাসন মাজতে হয় না, তাই জল বাঁচে! এভাবে সরাসরি কথা বলে অনেক নতুন নতুন জিনিস জানি। সেই ক্রমে আজ আমি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সুবিধাভোগীদের সঙ্গে কথা বলেছি। যারা গৃহ নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত আর যারা কিছুদিন পর নিশ্চিতভাবেই নিজের বাড়ি পেতে চলেছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছে।
আপনারা জানেন যে প্রত্যেক ব্যক্তির মনে সবসময়ই একটা ইচ্ছা থাকে যে, তাঁর একটা নিজস্ব বাড়ি থাকুক। দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর মানুষের মনেও নিজস্ব বাড়ির স্বপ্ন থাকে। যত ছোটই হোক না কেন, নিজের বাড়ি থাকার যে সুখানুভূতি তা যে বাড়ি পেয়েছে সে-ই জানে, অন্য কেউ জানে না! আমি আপনাদের টিভির মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি, প্রযুক্তির মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি, আপনাদের চেহারায় যে খুশি দেখতে পাচ্ছি, সন্তুষ্টির ভাব দেখতে পাচ্ছি, যেন বেঁচে থাকার জন্য নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে! নিজের চোখে আপনাদের চেহারায় এই উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখতে পেয়ে আমারউৎসাহকয়েকগুণ বেড়ে যায়। তখন আমার মনে আরও কাজ করার ইচ্ছে জাগে। আপনাদের মুখে হাসি আমাকে আনন্দ দেয়।
কোনও আবাস যোজনার অর্থ শুধুই মানুষকে মাথা গোঁজার ঠাই করে দেওয়া নয়। বাড়ি মানে শুধু চারপাশের দেওয়ালের ওপর একটা ছাদ নয়। বাড়ি মানে সেই স্থান… যেখানে জীবন ধারণ করা যায়, সমস্ত সুবিধা থাকে, পরিবারের সবাই আনন্দে থাকেন!
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মূলেও একই ভাবনা রয়েছে। সবার মনেই নিজস্ব বাড়ির স্বপ্ন থাকে। দরিদ্র থেকে দরিদ্র মানুষও চান যে তাঁর নিজস্ব পাকাবাড়ি হোক! কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার এত বছর পরও গরিবের ইচ্ছা অপূর্ণ রয়েছে। বর্তমান সরকার সংকল্প নিয়েছে যে ২০২২ সালে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তির আগেই যতটা প্রয়োজন দৌড়ঝাপ করে, ভারতের গ্রাম ও শহরের প্রতিটি বস্তি ও ফুটপাথে বসবাসকারী, প্রতিটি পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীআবাসযোজনারমাধ্যমেগৃহনির্মাণ করবে! যেমন তেমন বাড়ি নয়, সেই বাড়িতে সৌভাগ্য যোজনার বিদ্যুৎ সংযোগ থাকবে, জলের কল থাকবে, সেই নলে পানীয় জল আসবে, বাড়িতে স্বতন্ত্র শৌচালয় থাকবে, যাতে বাড়ির সবার মনে হয় যে, জীবন এখন বেঁচে থাকার যোগ্য হয়ে উঠেছে, এখন পরিশ্রম করে এগিয়ে যাওয়ার পথ তৈরি করতে হবে! দরিদ্র থেকে দরিদ্র মানুষ শুধু বিশ্রাম নেওয়ার জায়গা পাবেন না, মান-স্মমান এবং পারিবারিক গরিমা বৃদ্ধির সুযোগও পাবেন। সকলের জন্য নিজস্ব বাড়ি – এটা আমাদের স্বপ্ন এবং এর বাস্তবায়ন আমাদের সংকল্প।
কোটি কোটি মানুষের এই দেশে এই সংকল্প বাস্তবায়ন সহজ কাজ নয়। অনেক বড় সমস্যা, সমাধান অনেক কঠিন। স্বাধীনতার পর থেকে এতবছরের অভিজ্ঞতা বলে যে এটা অসম্ভব কাজ। তা সত্ত্বেও গরিব মানুষের জীবন, গৃহহীণদের কথা ভেবে, আপনাদের প্রতি ভালবাসা থেকে এত বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সরকারি ব্যবস্থা এবং সংশ্লিষ্ট সবাই কাজ করা শুরু করে দিয়েছেন। কিন্তু শুধু ইচ্ছাশক্তি দিয়ে সবকিছু করা যায় না। তাঁর জন্য পরিকল্পনা চাই, গতি চাই, জনগণের বিশ্বাস ও সমর্থন চাই। জনগণের জন্য কাজ করার সমর্পণ ভাব চাই। এই সমস্যা সমাধানের জন্য পূর্ববর্তী সরকারগুলির প্রচেষ্টা কেমন ছিল, কিভাবে কাজ শুরু হতো, কেমন কাজ হতো – এই সবকিছু আপনারা জানেন।
আমার মনে হয় আজ এই প্রক্রিয়ায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। আগে কখনও মন্দিরের নামে, সম্প্রদায়ের নামে, বস্তির নামে সরকারি আবাসন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে, কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধির বাহানায় এই প্রয়াস অপর্যাপ্ত থেকে গেছে। তারপর এই প্রকল্প বড় নেতার নামে, একটি পরিবারের সদস্যদের নামে চালু হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য সাধারণ মানুষের জন্য গৃহনির্মাণ থেকে বেশি রাজনৈতিক লাভের কথা মাথায় রেখে এগিয়ে যাওয়া ছিল। তাই সারাদেশে দালালদের একটি বড় বাহিনী গড়ে উঠেছিল, আর ঠিকেদারদের ছিল পোয়াবারো! আমরা একটি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এই সমস্যা সমাধানের কথা ভেবেছি। বিচ্ছিন্নভাবে না ভেবে মিশনমোডে কাজ করার সংকল্প নিয়েছি। আমরা ঠিক করেছি যে ২০২২ সালের মধ্যে গ্রামাঞ্চলে তিন কোটি আর শহরাঞ্চলে এক কোটি গৃহ নির্মাণ করব! লক্ষ্য যখন এত বড়, লক্ষ্যপূরণের বাজেটও বড় হবে। একটা সময় ছিল, যখন বরাদ্দ করা বাজেট অনুসারে লক্ষ্য নির্ধারিত হ’ত। কিন্তু এখন আমরা আগে দেশের অগ্রাধিকার বিবেচনা করে লক্ষ্য স্থির করি। তারপর, সেই অনুযায়ী বাজেট বরাদ্দ করি। পরিণামস্বরূপ, শহরাঞ্চলেও কাজ হচ্ছে।
ইউপিএ সরকার শেষ ১০ বছরে যত গৃহনির্মাণের আবেদন মঞ্জুর করেছে, বিগত চার বছরে তারচেয়ে প্রায় চারগুণ বেশি আমরা মঞ্জুর করেছি। ইউপিএ সরকার শেষ ১০ বছরে সাড়ে তেরো লক্ষ আবেদন মঞ্জুর করেছিল। আমরা চার বছরে প্রায় ৪৭ লক্ষ মঞ্জুর করেছি। এগুলির মধ্যে ৭ লক্ষ গৃহ নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্মিত হচ্ছে।
সুলভে গৃহনির্মাণের ক্ষেত্রে বিশ্বমানের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য গ্লোবাল হাউসিং টেকনোলজি চ্যালেঞ্জ কর্মসূচির সূত্রপাত করেছি। একইভাবে, গ্রামাঞ্চলে বিগত সরকারের শেষ চার বছরে প্রায় সাড়ে পঁচিশ লক্ষ গৃহ নির্মিত হয়েছে। আর আমাদের সরকার বিগত চার বছরে ১ কোটিরও বেশি গৃহ নির্মাণ করেছে। অর্থাৎ ৩২৫ শতাংশেরও বেশি কাজ। আগে প্রত্যেকটি বাড়ি বানানোর জন্য নির্ধারিত সময় ছিল ১৮ মাস। আমরা গুরুত্ব বুঝে, গতি বাড়িয়ে ১৮ মাসের কাজ ১২ মাসে সম্পন্ন করার সংকল্প নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।
শুধু ইঁট আর পাথর দ্রুতগতিতে ফেললে তাড়াতাড়ি বাড়ি তৈরি হয় না। প্রতিটি স্তরে পরিকল্পনামাফিক পদ্ধতিতে সঠিক পদক্ষেপ নিতে হয়। শুধু পরিমাণ নয়, আকারের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগে গ্রামে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার গৃহনির্মাণের ন্যূনতম ক্ষেত্রফল ছিল ২০ বর্গমিটার; আমরা দায়িত্ব নিয়ে সেই ন্যূনতম ক্ষেত্রফল বাড়িয়ে ২৫ বর্গ মিটার করেছি। আপনারা হয়তো ভাবছেন, এই ৫ বর্গ মিটার বাড়িয়ে কী হবে? এই বৃদ্ধির ফলে সব থেকে বড় লাভ হয়েছে যে এবার বাড়ির সঙ্গে একটি ৫ বর্গ মিটার ক্ষেত্রফলের রান্নাঘর যুক্ত হয়েছে।
আগে গ্রামে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি বানানোর জন্যে ৭০-৭৫ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হতো। এখন সেই রাশি বাড়িয়ে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা করে দিয়েছি। এই টাকা এবং মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান গ্যারান্টি আইনের সুবিধাভোগীদের ৯০-৯৫ দিনের পারিশ্রমিক সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে জমা হয়।
তাছাড়া এখন আলাদা করে শৌচালয় নির্মাণের জন্য ১২ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। আগে দালালদের কিম্বা নেতাদের অট্টালিকা অনায়াসে তৈরি হলেও গরিবের গৃহনির্মাণ হতো না। গরিবের টাকায় কেউ যাতে সিঁদ না কাটতে পারে, অন্য কেউ যেন তাঁদের লুটতে না পারে, তার পাকা ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
আজ ডিবিটি বা ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্র্যান্সফার এর মাধ্যমে দালাল অপসারণ সম্ভব হয়েছে। আর সুবিধাভোগীদের ভর্তুকি এবং অনুদানের টাকা সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হচ্ছে। প্রথমে জন ধন অ্যাকাউন্ট খুলিয়েছি, এখন টাকা পাঠানো শুরু করেছি।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা কর্মসূচির প্রগতি তদারকির সুবিধার্থে এই নির্মীয়মান বাড়িগুলির জিও-ট্র্যাকিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে, যাতে কাজ ও লেনদেনের স্বচ্ছ প্রক্রিয়া বজায় থাকে। এই কাজগুলিকে ‘দিশা পোর্টাল’-এর সঙ্গেও যুক্ত করা হয়েছে, যা দেখে আপনিও তদারকি করতে পারবেন। আমিও অফিসে বসে তদারকি করি, কতটা কাজ হয়েছে আর কোথায় কোথায় হয়েছে।
ইউপিএ-র আমলে পুরনো রাজনীতিবিদদের হাতে তৈরি বিপিএল তালিকার সাহায্যে সুবিধাভোগীদের বেছে নেওয়া হ’ত কিন্তু আমরা সামাজিক-অর্থনৈতিক-জাতি জনগণনার মাধ্যমে নির্বাচন করা শুরু করেছি। ফলে, অধিকাংশ মানুষের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় প্রত্যেক ক্ষেত্র, প্রত্যেক বর্গের মানুষ লাভবান হচ্ছেন।
বাড়ি শুধু প্রয়োজন নয়, সম্মান ও স্বাভিমানের সঙ্গে যুক্ত। একবার বাড়ি তৈরি হয়ে গেলে বাড়ির প্রত্যেক সদস্যের ভাবনাও বদলায়। এগিয়ে যাওয়ার সাহস তৈরি হয়। আমরা প্রত্যেক পরিবারের এই প্রয়োজন মিটিয়ে তাঁদের সম্মান বাড়াতে চাই। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় সমাজের দুর্বল অংশ এবং মহিলা, আদিবাসী, দলিত, পিছিয়ে পড়া মানুষ, তপশিলি জাতি/উপজাতি, অন্যান্য পিছিয়ে পড়া মানুষ, সংখ্যালঘু আর আমাদের দিব্যাঙ্গ ভাই-বোনেদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
এভাবে পরিকল্পনামাফিক ব্যাপক প্রচেষ্টার ফলে আরও দ্রুতগতিতে গৃহনির্মাণ হচ্ছে। আমাদের পা মাটিতে রয়েছে। আমরা সাধারণ মানুষের সমস্যা, তাঁদের পীড়াকে খুব ভালোভাবে জানি ও বুঝি। আর সেজন্যই আমরা মানুষের প্রয়োজন বুঝে কাজ করি। আগে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ স্বতন্ত্রভাবে হ’ত। বিভিন্ন মন্ত্রক, বিভাগ ও প্রকল্পগুলির মধ্যে কোনও সমন্বয় থাকত না।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বিভিন্ন সরকারি যোজনাকে একসঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। নির্মাণ ও কর্মসংস্থানের জন্য একে মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান গ্যারান্টি আইনের সঙ্গে, শৌচালয়, বিদ্যুৎ, পানীয়জল ও এলপিজি গ্যাসের সুবিধার জন্য যথাক্রমে স্বচ্ছ ভারত মিশন, পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রাম জ্যোতি যোজনা, সৌভাগ্য যোজনা, গ্রামীণ পানীয় জল কর্মসূচি এবং উজ্জ্বলা যোজনার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ এই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নেহাতই গৃহনির্মাণেই সীমিত নয়, একে আমরা সার্বিক ক্ষমতায়নের মাধ্যম করে তুলেছি। শহরে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার গৃহ-প্রাপকদের ৭০ শতাংশ হলেন মহিলা।
আজ আগের তুলনায় অনেক বেশি গৃহনির্মিত হওয়ায় এ থেকে কর্মসংস্থানও অনেক বেশি হচ্ছে। স্থানীয় স্তরে ইঁট, বালি ও সিমেন্টের মতো নির্মাণ সামগ্রীর বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থানীয় শ্রমিক ও কারিগরদের কর্মসংস্থান হচ্ছে। এই গৃহ নির্মাণের উৎকর্ষ বজায় রাখতে সরকার সারা দেশে ১ লক্ষ রাজমিস্ত্রির গুণবত্তা প্রশিক্ষণ চালু করেছে। আপনারা শুনলে খুশি হবেন যে, রাজমিস্ত্রিদের পাশাপাশি, রানীমিস্ত্রিদেরও প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। এটিও মহিলা ক্ষমতায়নের বড় উদাহরণ।
শহরাঞ্চলে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে অধিকাংশ মানুষকে সুবিধাভোগী করে তুলতে সরকার চারটি মডেল নিয়ে কাজ করছে। আর শহরাঞ্চলে গৃহনির্মাণের খরচও বৃদ্ধি করে গৃহ প্রতি দেড় লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে।
লিঙ্ক সাবসিডি স্কিমের বা সংযোগ ভর্তুকি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রদত্ত ঋণের সুদে ৩-৬ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। প্রকল্প এলাকার উন্নয়নের জন্য সরকার গৃহ প্রতি ১ লক্ষ টাকা অনুদান দিচ্ছে। অথবা সরকারি ক্ষেত্রের সঙ্গে অংশীদারিত্বে নির্মিত সুলভ গৃহনির্মাণের ক্ষেত্রে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের গৃহ প্রতি দেড় লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে। গরিব ও মধ্যবিত্ত গৃহ ক্রেতাদের স্বার্থ রক্ষার্থে আমরা রেরা বা রিয়াল এস্টেট রেগুলেশন অ্যাক্ট চালু করেছি। এই আইন এতটাই স্বচ্ছ যে ক্রেতাদের অধিকার সুরক্ষিত থাকা নিশ্চিত, নির্মাতারা এখন তাঁদের ঠকাতে ভয় পাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় যাঁরা শুরুতেই গৃহ পেয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, এই প্রকল্প তাঁদের আশা-আকাঙ্খাকে কতটা বাস্তবায়িত করেছে। বাসস্থান সুনিশ্চিত হওয়ায় পরিবারের সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা বৃদ্ধির পাশাপাশি স্বাস্থ্যও ভালো থাকছে। একটি প্রবাদ আপনারাও শুনেছেন আমিও শুনেছি – ‘সারা জীবন কেটে যায় নিজের মতো ঘর বানাতে’। বর্তমান সরকার এই প্রবাদকে বদলে দিতে চায়। সময় এসেছে এখন দেশের প্রতিটি নাগরিক মনের সুখে বলবেন, ‘জীবন কাটছে নিজের বাড়ির ছাদের নীচে’।
আমি মানি যে, এত বড় ব্যবস্থায় এখনও অনেকে আছেন, যাঁদের পুরনো অভ্যাস বদলায়নি। সেজন্য আপনাদের কাছে আবেদন জানাচ্ছি যে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে সুবিধা পেতে কেউ যদি আপনার কাছে ঘুষ বা অবাঞ্ছিত কিছু চায়, সে যেই হন না কেন, তার বিরুদ্ধে নির্দ্বিধায় আপনার জেলাশাসক কিংবা আপনার অঞ্চলের মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন।
আমি আগেও বলেছি যে, ভারতের স্বপ্ন ও আকাঙ্খা এই সামান্য ইচ্ছে পূরণের মাধ্যমে সম্পূর্ণ হবে না। আমরা একটি শক্তিশালী পরিকাঠামো গড়ে তুলছি। কিন্তু আমাদের সকলের সামনে কাজ করার জন্য রয়েছে অসীম আকাশ। সকলের জন্য বাড়ি, বিদ্যুৎ, রান্নার গ্যাসের সংযোগ, ব্যাঙ্ক ও বিমার সুবিধা এনে দিতে পারলে তবেই এই নতুন ভারতের সম্পূর্ণ চিত্র গড়ে উঠবে।
আধুনিক পরিষেবাযুক্ত গ্রাম ও সমাজ গঠনের লক্ষ্যে আমরা দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছি। আর সেজন্য আজ এত বিশাল সংখ্যক ভাই ও বোনেদের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে ও প্রযুক্তির মাধ্যমে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছি …… একটি ছোট্ট ভিডিও আপনাদের দেখাতে চাই। তারপর আমি আপনাদের কথা শুনতে চাই।