মাননীয়রাষ্ট্রপতি শ্রদ্ধেয় প্রণব মুখোপাধ্যায় মহোদয়, নব-নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি শ্রদ্ধেয়রামনাথ কোবিন্দমহোদয়, মাননীয় উপ-রাষ্ট্রপতি মহোদয়, উপস্থিত সকল শ্রদ্ধেয়ব্যক্তিগণ, 

এই সময় আমারমনে মিশ্র ভাবনার উদয় হচ্ছে। আজই রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রণবদার শাসনকালের শেষ দিন।সেজন্য, আজকের এই অনুষ্ঠানে বলতে উঠে অনেক স্মৃতি মনে পড়া স্বাভাবিক। তাঁরব্যক্তিত্ব, তাঁর কর্তৃত্ব; আমরা এসবের সঙ্গে অত্যন্ত পরিচিত। কিন্তু মানুষের একটিসহজ স্বভাব থাকে, আর স্বাভাবিকভাবেই মানুষ নিজের অতীতের সঙ্গে বর্তমানের যোগসূত্রস্থাপন করা থেকে বিরত থাকতে পারে না। প্রত্যেক ঘটনা, প্রত্যেক সিদ্ধান্ত, প্রতিটিউদ্যোগকে নিজের কর্মজীবনের কার্যকালের সঙ্গে তুলনা করাও অত্যন্ত স্বাভাবিক। আমারতিন বছরের অভিজ্ঞতায় আমার কাছে সবচাইতে আশ্চর্যের বিষয় হল প্রণবদা এত বছর শাসনক্ষমতায় ছিলেন, সরকারের নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে তিনি অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন,কিন্তু বর্তমান সরকারের কোন সিদ্ধান্তকে তিনি নিজের অতীতের কোনও সিদ্ধান্তের সঙ্গেদাড়ি-পাল্লায় মাপেননি, কখনও সেভাবে মূল্যায়ন করেননি, প্রতিটি বিষয়কে তিনিবর্তমানের প্রেক্ষিতে মূল্যায়ন করেছেন। আমি মনে করি এটাই তাঁর সবচাইতে বড় পরিচিতি।


সরকার অনেকউদ্যোগ নেয়। আর আমার সৌভাগ্য যে আমি প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমি তাঁর সঙ্গে দেখা করে মনখুলে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। তিনি অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে প্রতিটি বিষয় শুনতেন। কখনওশুধরানোর প্রয়োজন হলে পরামর্শ দিতেন; অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উৎসাহ দিতেন। অর্থাৎ, একজনঅভিভাবকের মতো, একজন পিতৃসুলভ ব্যক্তির মতো রাষ্ট্রপতির ভূমিকা কেমন হওয়া উচিৎ,সমস্তরকম শিষ্টাচার ও কায়দা-কানুনের সীমার ওপরে উঠে ভালোবাসা ও আপনত্ব নিয়ে সমগ্ররাষ্ট্রের যে পরিবার, তার প্রধান রূপে তিনি পথ দেখাতেন। আমার মতো একজন নতুনমানুষকে, যাঁর এ ধরনের কোন অভিজ্ঞতা ছিল না; আমি একটি রাজ্যে কাজ করার অভিজ্ঞতানিয়ে এসেছিলাম, সেই মানুষটিকে সবকিছু বুঝে-শুনে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি সাহায্যেরহাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। আর সেজন্যই গত তিন বছরে আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতেপেরেছি।


তিনিজ্ঞানের ভাণ্ডার। তাঁর সহজ জীবনযাপন ও সারল্য যে কোন মানুষকে আকৃষ্ট করে। কিন্তু আমাদের দু’জনের লালন-পালন ভিন্ন বিচারধারা ওভিন্ন কর্মসংস্কৃতিতে হয়েছে। অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রেও আমার আর তাঁর মধ্যে অনেক বড়পার্থক্য রয়েছে। কিন্তু তিনি কখনও আমাকে তা অনুভব করতে দেননি। তিনি একটি কথা বলতেনযে ভাই দেখুন, এটা ঠিক যে আমি দেশের রাষ্ট্রপতি, কিন্তু গণতন্ত্রের নিয়ম অনুযায়ীদেশের মানুষ আপনার ওপর ভরসা করেছে। আপনার দায়িত্ব আপনি পালন করুন। আমার কাজ হলআপনার কাজ যেন সুচারুভাবে হয়, সেটা দেখা। রাষ্ট্রপতি পদ, রাষ্ট্রপতি ভবন আর প্রণবমুখার্জি নিজে এক্ষেত্রে যা করার তা করবে। তাঁর এই প্রতিশ্রুতি আমার বড় সম্বল ছিল।আর সেজন্য আমি অন্তর থেকে রাষ্ট্রপতিজিকে অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই। 

আমি বিশ্বাসকরি, আমাকে এতবড় দায়িত্ব পালনের যোগ্য করে তুলতে তিনি যে ভূমিকা পালন করেছেন তাআমার ভবিষ্যৎ জীবনে অনেক কাজে লাগবে। তাঁর প্রতিটি কথা আমার জীবনে একটিআলোকবর্তিকা রূপে থেকে যাবে। তাঁর সঙ্গে যখন যাঁরা কাজ করেছেন, হয়তো প্রত্যেকেরইএই সৌভাগ্য হয়েছে। আমার জন্য এটি একটি বড় সম্পদ। একটি ব্যক্তিগত পুঁজি। আর তারজন্য আমি তাঁর কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। 

আজ এখানেবেশ কিছু রিপোর্ট ইত্যাদি জমা করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ভবনকে লোকভবনে পরিণত করাএজন্যই সম্ভব হয়েছে যে প্রণবদা ছিলেন একজন মাটির কাছাকাছি মানুষ। সাধারণ পরিবারথেকে বড় হয়ে সাধারণ মানুষের দ্বারা নির্বাচিত হয়ে তিনি দীর্ঘ রাজনৈতিক যাত্রাপথেবুঝতে পেরেছেন যে জনশক্তি কাকে বলে, জনভাবনা কেমন জিনিস – এগুলির জন্য তাঁকে কোনবই পড়তে হয়নি। তিনি যা অনুভব করতেন, তা বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করতেন। সেজন্যই আজভারতের রাষ্ট্রপতি ভবন লোকভবন-এ পরিণত হয়েছে। দেশের সাধারণ মানুষের জন্য এই ভবনেরদরজা খুলে গেছে।



আমি একজনইতিহাসের ছাত্র হিসেবে দেখেছি, ইতিহাসের প্রতিটি ঘটনা প্রণবদার হাতের তালুতে থাকত।যে কোন বিষয় নিয়ে কথা বললে তিনি সাল-তারিখ সহকারে বলে দিতে পারতেন। সেই জ্ঞানকে,ইতিহাসের মাহাত্ম্যকে কিভাবে তুলে ধরা যায়, রাষ্ট্রপতি ভবনকে সেভাবেই রূপান্তরিতকরার ক্ষেত্রে তাঁর পরামর্শ ছিল গুরুত্বপূর্ণ। একটু আগেই অমিতা মহোদয়া তাঁররিপোর্ট পেশ করেছেন। তাঁর শাসনকালে ইতিহাসের অনেক অমূল্য ধন রাষ্ট্রপতি ভবনেসংরক্ষিত হয়েছে। আর আমি বলতে পারি যে এই ভবনের প্রতিটি গাছপালা, পাথর – সবকিছুরইএকটা ইতিহাস রয়েছে। প্রতিটি জিনিসেরই বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আর সেইসব বৈশিষ্ট্য নিয়েএখন নানা গ্রন্থে লেখা হয়েছে। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আমি সেজন্য তাঁকে এবংতাঁর গোটা দলকে হৃদয় থেকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। আমি আরেকবার প্রণবদাকে দীর্ঘজীবনের জন্য শুভেচ্ছা জানাই। তাঁর এই দীর্ঘ অভিজ্ঞতা, দীর্ঘ অনুভব তাঁর নতুনইনিংসেও আমার মতো মানুষদের ব্যক্তিগতভাবে আর দেশকে স্বাভাবিকভাবেই পথ প্রদর্শনেরকাজ করবে; এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস। 

আমি আরেকবার অনেক অনেক শুভেচ্ছা সহ আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
India’s Biz Activity Surges To 3-month High In Nov: Report

Media Coverage

India’s Biz Activity Surges To 3-month High In Nov: Report
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM to participate in ‘Odisha Parba 2024’ on 24 November
November 24, 2024

Prime Minister Shri Narendra Modi will participate in the ‘Odisha Parba 2024’ programme on 24 November at around 5:30 PM at Jawaharlal Nehru Stadium, New Delhi. He will also address the gathering on the occasion.

Odisha Parba is a flagship event conducted by Odia Samaj, a trust in New Delhi. Through it, they have been engaged in providing valuable support towards preservation and promotion of Odia heritage. Continuing with the tradition, this year Odisha Parba is being organised from 22nd to 24th November. It will showcase the rich heritage of Odisha displaying colourful cultural forms and will exhibit the vibrant social, cultural and political ethos of the State. A National Seminar or Conclave led by prominent experts and distinguished professionals across various domains will also be conducted.