ওড়িশার মাননীয় রাজ্যপাল শ্রী রঘুবর দাসজি, রাজ্যের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নবীন পট্টনায়কজি, আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সহযোগী শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানজি, শ্রী বিশ্বেশ্বর টুডুজি, অন্যান্য সম্মানিত অতিথিবর্গ, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ !
জয় জগন্নাথ !
ভগবান জগন্নাথ এবং মা বিরজার আশীর্বাদে আজ জাজপুর এবং ওড়িশায় উন্নয়নের নতুন ধারা বইতে শুরু করেছে। আজ বিজু বাবুজির জন্মজয়ন্তীও ওড়িশার উন্নয়নের জন্য, দেশের উন্নয়নের জন্য বিজু বাবুর অবদান অতুলনীয়। আমি সমস্ত দেশবাসীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধেও বিজু বাবুকে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করছি, তাঁকে প্রণাম জানাচ্ছি।
বন্ধুগণ,
আজ এখানে ২০,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে নির্মিত কিংবা পরিকল্পিত প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস হয়েছে। পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস ও পরমাণু শক্তি সংক্রান্ত বেশ কিছু প্রকল্প থেকে শুরু করে সড়ক পথ, রেল পথ এবং পরিবহন সংক্রান্ত বেশ কিছু প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস হল। এই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে এই অঞ্চলে শিল্পোদ্যোগ গতিবিধি বাড়বে। কর্মসংস্থানের নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হবে। আমি এই প্রকল্পগুলির জন্য ওড়িশার সমস্ত নাগরিককে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
বন্ধুগণ,
আজ দেশে এমন সরকার রয়েছে যাঁরা বর্তমানের কথাও ভাবছে আবার উন্নত ভারতের সংকল্প নিয়ে ভবিষ্যতের জন্যও কাজ করছে। শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমরা রাজ্যগুলিকে বিশেষ করে পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির সামর্থ আরও বাড়াচ্ছি। ‘উর্জা গঙ্গা পরিযোজনা’-এর মাধ্যমে ৫টি বড় রাজ্য- উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খন্ড, পশ্চিমবঙ্গ আর ওড়িশায় প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহের জন্য বড় বড় প্রকল্প চালু করেছে। আজ পারাদ্বীপ-সোমনাথপুর-হলদিয়া পাইপ লাইনও দেশবাসীকে সমর্পণ করা হল। আজ পারাদ্বীপ তৈল শোধনাগারে একটি প্রাকৃতিক গ্যাস প্রক্রিয়াকরণ ইউনিটেরও উদ্বোধন হয়েছে। পারাদ্বীপ তৈল শোধনাগারে মনো এথিলিন গ্লাইকোল প্ল্যান্টেরও উদ্বোধন হয়েছে। এর ফলে অদূর ভবিষ্যতে পূর্ব ভারতে পলিয়েস্টার শিল্পে নতুন বিপ্লব আসবে। এই পরিকল্পনার মাধ্যমে ভদ্রক এবং পারাদ্বীপে নির্মিয়মান টেক্সটাইল বা বস্ত্রশিল্প পার্কও সহজে কাঁচামাল সংগ্রহ করতে পারবে।
বন্ধুগণ,
বিগত বছরগুলিতে আমাদের দেশে কর্মসংস্কৃতি কত দ্রুত পরিবর্তিত হয়েছে আজকের এই আয়োজন তারও একটি পরিচয় তুলে ধরছে। নিজেদের শুরু করা প্রকল্পগুলি নির্ধারিত সময়ে সম্পূর্ণ করার আগ্রহ পূর্ববর্তী সরকারগুলির ছিল না। কিন্তু আমাদের সরকার যেসব প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে সেগুলিকে দ্রুত গতিতে সম্পূর্ণ করার চেষ্টাও করে। ২০১৪ সালের পর দেশে এমন অনেক প্রকল্প সম্পূর্ণ করা হয়েছে যেগুলি পূর্ববর্তী সরকারগুলির আমলে শুরু হয়ে থেমে ছিল, ঝুলে ছিল কিংবা কোনো কারণে পথভ্রষ্ট হয়েছিল। পারাদ্বীপ তৈল শোধনাগারের প্রস্তাবও ২০০২ সালে রাখা হয়েছিল। কিন্তু ২০১৩-১৪ সাল পর্যন্ত কিছুই করা হয়নি। আমাদের সরকার ক্ষমতায় এসে পারাদ্বীপ তৈল শোধনাগারের কাজ ভালোভাবে শুরু করে এবং সম্পূর্ণ করে। আজই তেলেঙ্গানার সঙ্গারেড্ডিতে আমি পারাদ্বীপ-হায়দ্রাবাদ পাইপ লাইন প্রকল্প উদ্বোধন করেছি। ৩ দিন আগে পশ্চিমবঙ্গের আরামবাগে হলদিয়া থেকে বারাউনি পর্যন্ত বিস্তৃত ৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ অপরিশোধিত তেলের পাইপ লাইনও চালু করেছি।
বন্ধুগণ,
পূর্ব ভারত অপার প্রাকৃতিক সম্পদের আশীর্বাদে ধন্য। আমাদের সরকার এই প্রাকৃতিক সম্পদকে, ওড়িশার মতো রাজ্যের দুর্লভ খনিজ সম্পদকে এই রাজ্যের উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করছে। আজ গঞ্জম জেলায় একটি ডিসেলিনেশন প্ল্যান্ট বা জল থেকে লবন-মুক্ত করার প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে ওড়িশার হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হবেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিদিন ৫০ লক্ষ লিটার লবনাক্ত জলকে পরিশ্রুত ও পানযোগ্য করে তোলা হবে।
বন্ধুগণ,
ওডি়শার সম্পদ, রাজ্যের শিল্পোদ্যোগ শক্তিকে আরও বাড়াতে কেন্দ্রীয় সরকার এ রাজ্যে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার ওপর জোর দিচ্ছে। বিগত ১০ বছরে এই লক্ষ্যে অভূতপূর্ব কাজ হয়েছে। বিগত ১০ বছরে আমরা ওড়িশায় প্রায় ৩,০০০ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক নির্মাণ করেছি। রেলের বাজেট প্রায় ১২ গুন বাড়িয়েছি। রেলপথ, মহাসড়কপথ এবং সমুদ্র বন্দর যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করে তুলতে জাজপুর, ভদ্রক, জগৎসিংহপুর, ময়ুরভঞ্জ, খোরধা, গঞ্জাম, পুরী এবং কেন্দুঝার জেলাগুলিতে জাতীয় মহাসড়ক সম্প্রসারিত করা হচ্ছে। এই এলাকার জনগণের জন্য এখন অনুগুল-সুকিন্দা নতুন রেল লাইনের পরিষেবাও তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে কলিঙ্গনগর শিল্পোদ্যোগ ক্ষেত্রে সম্প্রসারণের পথও খুলে গেছে। ওড়িশার উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এভাবেই দ্রুত গতিতে কাজ করে থাকবে। আমি আর একবার বিজু বাবুর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে আপনাদের সবাইকে এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলির জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
জয় জগন্নাথ !