মঞ্চে উপস্থিত উত্তর প্রদেশের রাজ্যপাল শ্রী রামনাইক মহোদয়, রাজ্যেরমুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ মহোদয়, আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদের সাথী শ্রীমতীস্মৃতি ইরানী মহোদয়া, শ্রী অজয় টামটা মহোদয়, রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য এই অঞ্চলের সাংসদ এবং কয়েক বছর ধরে মন্ত্রিপরিষদে আমার সুযোগ্য সাথীআর এখন ভারতীয় জনতা পার্টির উত্তর প্রদেশ শাখার দায়িত্বে থাকা ডঃ মহেন্দ্রনাথপান্ডে, রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান অশ্বিনীজি যিনি দরিদ্র কল্যাণে, তাঁদেরকেস্বনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যে বেশ বুদ্ধি খাটিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অর্থনৈতিকঅন্তর্ভুক্তিকরণের কর্মযজ্ঞ শুরু করেছেন। তেমনই উৎকর্ষ ব্যাঙ্কের ম্যানেজিংডিরেক্টর গোবিন্দ সিং মহোদয় আর বিপুল সংখ্যায় আগত আমার বারাণসীর প্রিয় ভাই ওবোনেরা,
আজ একই অনুষ্ঠানে একই মঞ্চ থেকে এক হাজার কোটি টাকারও অধিক বিনিয়োগে গড়েওঠা কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং কিছু প্রকল্পের শিলান্যাস হতে যাচ্ছে। আমি উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছে অনেক কৃতজ্ঞ। কারণ, তাঁরা বারাণসী এলাকার উন্নয়নের মাধ্যমেআমার যে পূর্ব ভারতের উন্নয়নের স্বপ্ন তা সফল করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাপালন করেছেন। আর সেজন্য রাজ্য সরকারকেও অভিনন্দন জানাতে হয়। আজ বস্ত্র মন্ত্রণালয়প্রায় ৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে যে প্রকল্প উদ্বোধন করছে আমার মনে হয় না বিগত কয়েকদশকে বারাণসীর মাটিতে এরকম বড় কোনও প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে! আর আমরা যেসবপ্রকল্পের শিলান্যাস করি, সেগুলোর উদ্বোধনও আমরা করি। অন্যথা রাজনীতির হিসেবেশিলান্যাস হতে থাকে, প্রকল্প ঝুলে থাকে, সম্পূর্ণ হয় না! এখানে দুটি সেতু উদ্বোধনকরা হয়েছে, দীর্ঘকাল ধরে ঝুলে থাকা দুটি প্রকল্প, কিন্তু যোগীজি মুখ্যমন্ত্রীরদায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরু করিয়েছেন, ফলে আজ উদ্বোধন হয়ে গেল, ওপারের বাসিন্দাদেরউন্নয়নের নতুন দরজা খুলে গেল, জীবন সহজ হ’ল।
আমার মনে হয়, আজ তাঁতি ও সূঁচশিল্পী ভাই ও বোনেদের জীবনে একটি সোনালী সুযোগ।আপনাদের হাতে রয়েছে পূর্বজদের থেকে পাওয়া কুশলতা। বিশ্ববাসীকে অবাক করে দেওয়াশিল্প সৃষ্টির সামর্থ্য আপনাদের রয়েছে। কিন্তু অরণ্যের গভীরে ময়ূর নাচলে সেই নাচকে দেখে? এরকম চলতে থাকলে আমার কাশী এলাকার তন্তুবায় ও হস্তশিল্পী ভাইদের কখনওবিশ্ব বাজারে নিজেদের সামর্থ্য তুলে ধরার সুযোগ হবে না। তা হলে তাঁদের আর্থিকগতিবিধি থেমে যাবে।
আমি যখন আপনাদের দ্বারা সাংসদ নির্বাচিত হয়ে নতুন নতুন এখানে এসেছিলাম, তন্তুবায়দেরসঙ্গে কথা বলতে গেলে তাঁরা আমায় বলেছিলেন যে, আপনাদের ছেলেমেয়েরা এই শিল্পের সঙ্গেযুক্ত হতে চায় না। আমাদের পরিবারের সদস্যরা এখন এর বাইরে বেরোতে চায়, লেখাপড়া শিখেবাইরে কোথাও যেতে চায়। আর তখনই আমার মনে হয় যে, এত বড় সামর্থ্যবান আর্থিক গতিবিধিরহাতিয়ার যদি এই পরিবারগুলির হাত ছাড়া হয়, তা হলে ইতিহাস আমাদের কখনও ক্ষমা করবেনা। কারণ আপনাদের হাতে এমন আমানত আছে, যা দিয়ে আপনারা বিশ্বকে চমকে দিতে পারেন। যতদিন যাচ্ছে, ভারতের নানা বৈশিষ্ট্যের প্রতি বিশ্ববাসীর আকর্ষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আরসেজন্য ৩০০ কোটি টাকা খরচ করে নির্মিত এই ইমারত নিছকই কোনও অট্টালিকা নয়। এইভারতের সামর্থ্যের পরিচায়ক আমাদের কাশী অঞ্চলের তন্তুবায় ও হস্তশিল্পীরা ভবিষ্যতেরনতুন দ্বার উন্মোচনের শক্তি রাখেন। আমি এখানকার অটোচালক আর ট্যাক্সিচালকদের অনুরোধকরব যে, আপনারা পর্যটকদের নিয়ে বিভিন্ন পর্যটন স্থল দেখানোর ফাঁকে এইহস্তশিল্পীদের কাছেও নিয়ে আসবেন। আগ্রহ দেখিয়ে নিয়ে আসুন, একই স্থানে তাঁদের সামনেকাশী অঞ্চলের তাঁত ও হস্তশিল্পীদের সামর্থ্য তাঁদের সামনে তুলে ধরুন। আমি নিশ্চিতযে, কাছে দেখে এই অনুপম শিল্পকৃতিগুলি দেখলে তাঁরা অবশ্যই সেগুলি কিনে নিয়ে যাবেন।বিদেশি পর্যটকরা এলে তো এখান থেকে সরতেই চাইবেন না! এখানে যে সংগ্রহশালা গড়েউঠেছে, এটি কাশীর পর্যটনকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে। যাঁরা কাশীতে তীর্থ করতে আসেন,তাঁরাও এসব সামগ্রী দেখবেন, কাশীর সামর্থ্যকে জানবেন আর আমার বিশ্বাস, এই অঞ্চলক্রমে নতুন আর্থিক গতিবিধির কেন্দ্র হয়ে উঠবে।
আমি আজ সকল তাঁতি ও হস্তশিল্পী ভাই ও বোনেদের এই সংগ্রহশালা উপহার দিয়েহৃদয় থেকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই। তাঁদের প্রগতির জন্য শুভেচ্ছা জানাই। ভাই ওবোনেরা, সকল সমস্যার সমাধান উন্নয়নেই নিহিত। আগে এমন সব সরকার ক্ষমতায় ছিল, যারাউন্নয়নকে ঘৃণা করার আবহ গড়ে তুলেছিল। তাঁদের জন্য সরকারি কোষাগার নির্বাচনে জেতারঅনুকূল জনমোহিনী প্রকল্পে খরচ করে রিক্ত হয়ে যেত। আমরা চাই এমনভাবে উন্নয়নবাস্তবায়িত হোক, যাতে দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনার সুযোগ গড়েওঠে। দরিদ্রদের ক্ষমতায়ন হোক। আমাদের গরিবদের আর্থিক সামর্থ্য বৃদ্ধি পেলে অর্থব্যবস্থা শক্ত হবে। আর কাজ করার সুযোগ পেলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, ভারতের কোনও গরিব,গরিব হয়ে থেকে যেতে চান না। আপনি যে কোনও দরিদ্র মানুষকে জিজ্ঞেস করুন যে, তাঁদেরসন্তানদের জন্য কেমন জীবন চান? তাঁরা বলবেন, বাপ-দাদার কাছ থেকে যা পেয়েছি, ভাগ্যেযে দারিদ্র্য ছিল, সেই জীবন কাটাচ্ছি, আমরা চাই না যে আগামী প্রজন্ম এরকম জীবনকাটাতে বাধ্য হোক। তাঁরা এমন জীবন কাটাতে চান যাতে তাঁদের সন্তানদের পারস্পরিকভাবেদারিদ্র্য নিয়ে বাঁচতে না হয়। তাঁরা যেন পরিশ্রম করে, নতুন কাজ শিখে নিজের পায়েদাঁড়িয়ে সম্মানের জীবন বাঁচতে পারে তেমনভাবেই তাদেরকে গড়ে তুলতে চান। নিজেরভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য প্রত্যেক গরিবের মনে যে স্বপ্ন রয়েছে আমাদের সরকারেরওতাদেরকে নিয়ে একই স্বপ্ন রয়েছে। আর সেজন্য আমাদের প্রতিটি প্রকল্প সমাজের প্রত্যেকশ্রেণীর ক্ষমতায়নের কথা ভেবে, তাঁদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিজের পায়ে দাঁড় করানোরমতো সামর্থ্য গড়ে তোলার কথা ভেবে গড়ে তুলেছি। এই অঞ্চলে বিশেষ করে, উৎকর্ষব্যাঙ্কের মাধ্যমে এই কাজে জোর দেওয়া হচ্ছে। আমি তাদেরকে শুভেচ্ছা জানাই। যেসমর্পণভাব নিয়ে আমাদের গোবিন্দজি এবং তাঁর টিম এই কাজ করে যাচ্ছেন।
ভাই ও বোনেরা, কাশীতে আজ একটি ‘ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স’-এরও উদ্বোধন হয়েছে।আর উদ্বোধন হয়েছে একটি ‘শববাহন নৌকা’। আমি যখন এগুলির প্রস্তাব রেখেছিলাম, তখনঅনেকে অবাক হয়েছিলেন। আমি বলি, কাশীতে ট্রাফিক সমস্যা আর শ্মশান যাত্রীদের সমস্যালাঘবে যথাসম্ভব জলপথের ব্যবহার বৃদ্ধি করা উচিৎ। আমাদের জলপথেরও একটি শক্তি রয়েছে।তাকে আর্থিক উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত করা, আমাদের জলপথকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষেরজন্য উন্নত পরিষেবা, পর্যটকদের আনাগোনাকে আরও বাড়ানো! এসব লক্ষ্য নিয়ে আমরা বেশকিছু প্রচেষ্টা শুরু করেছি। আজকের এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সেই প্রক্রিয়ারই অংশবিশেষ।
আমার বারাণসীর প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আপনারা জানেন আমি যখন বারাণসী থেকেনির্বাচনী লড়াইয়ে প্রার্থী হয়েছিলাম, পাশাপাশি আমি বরোদা থেকেও ভোটে দাঁড়িয়েছিলাম।বরোদাবাসী আমাকে বিপুল ভোটে জিতিয়েছিলেন। কিন্তু যখন দুটোর মধ্যে একটি সিট ছাড়ারকথা উঠল, আমি ভাবলাম, বরোদাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সেখানে আমার অনেক সাথীরয়েছেন। তাঁরা বরোদার উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে কখনই পিছ পা হবেন না। কিন্তু কাশীরজন্য যদি সময় দিই তা হলে মনে মনে বেশি আনন্দ পাব! সেজন্য আমি নিজের নির্বাচনক্ষেত্র হিসাবে বারাণসীকেই বেছে নিলাম। আজ আমি খুশি যে, বরোদার সঙ্গে বারাণসীকেযুক্ত করার উদ্দেশ্যে আজ একটি নতুন ট্রেন মহামনা এক্সপ্রেসও চালু করা হ’ল। এই মঞ্চথেকে আজ বরোদা থেকে বারাণসীর জন্য এই ট্রেনটি যাত্রা শুরু করল। বরোদা থেকেসৌরাষ্ট্র হয়ে ট্রেনটি বারাণসী পৌঁছবে। গুজরাট ও আমেদাবাদ থেকে বস্ত্র শিল্প রওয়ানাহয়ে একদিন বারাণসী এসেছিল। বারাণসী একটি বিদ্যানগরী। সংস্কৃতির পীঠস্থান। বরোদাওএকটি সংস্কৃতি নগরী এবং বিদ্যাচর্চা কেন্দ্র। এই দুই শহরের মধ্যে ট্রেন চলবে ভায়াসুরাট। সুরাটও একটি বস্ত্রশিল্পের পীঠস্থান। এই ট্রেন তাই এই তিনটি বস্ত্রশিল্পেসমৃদ্ধ শহরের মধ্যে আর্থিক গতিবিধিকে আরও গতিশীল করবে। আমি ভারতের রেল মন্ত্রককেএজন্য ধন্যবাদ জানাই। আজ পীযূষজি বরোদা থেকে মহামনা এক্সপ্রেসের শুভারম্ভ করেছেনআর এই সময় এই মাটির সন্তান আমাদের রেলমন্ত্রী শ্রী মনোজ সিনহা সুরাট থেকে ঐট্রেনটিকে বিদায় জানাচ্ছেন। এই মহামনা এক্সপ্রেসের পথচলা আজ এমনি অদ্ভুতসুন্দরভাবে পালিত হ’ল। ভাই ও বোনেরা, আমি আপনাদের দীর্ঘ সময় নিতে চাই না।
আজ দেশদ্রুতগতিতে উন্নতি করছে। গরিব এবং মধ্যবিত্তের স্বার্থকে কেন্দ্র করে এইউন্নয়নযজ্ঞ শুরু হয়েছে। অনেক সাহসী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এর পরিণাম গোটা বিশ্বদেখছে। ভারত দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। ভারত বদলে যাচ্ছে! আমরা পূর্ব উত্তর প্রদেশেওপরিবর্তন আনতে চাই। আমরা পূর্ব ভারত’কে বদলাতে চাই। দেশের অর্থ ব্যবস্থায় পশ্চিমভারতের রাজ্যগুলির সমকক্ষ করে তুলতে চাই পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিকেও। আমরা সেইলক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি। আজ এখান থেকে যে হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে গড়ে ওঠাপ্রকল্পসমূহের উদ্বোধন হ’ল, আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, এই অঞ্চলের আর্থিক জীবনেপরিবর্তনের ক্ষেত্রে এই অঞ্চলের সামাজিক জীবনে পরিবর্তন আনতে, পরিকাঠামো উন্নয়নেএই প্রকল্পগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমি আরেকবার উত্তর প্রদেশেরমুখ্যমন্ত্রী যোগীজিকে অভিনন্দন জানাই। তাঁর নেতৃত্বে এই রাজ্যে অনেক কাজ দ্রুতগতিতেএগোচ্ছে। মাত্র ছ’মাসের শাসনকালে যোগীজি দারুণ কাজ করে দেখিয়েছেন । আমি তাঁকে হৃদয় থেকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জা নাই।