আসাম, উত্তর-পূর্বের উন্নয়ন, বিকাশ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটানোই সরকারের অগ্রাধিকার : প্রধানমন্ত্রী
রো-প্যাক্স পরিষেবা দূরত্বকে বিপুলভাবে হ্রাস করবে : প্রধানমন্ত্রী

 

নমস্কার আসাম!

 

শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের কর্মস্থল এবং অনেক ‘সত্র’-এর ভূমি মাজুলিকে আমার প্রণাম। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহযোগী শ্রী নীতিন গড়করিজি, শ্রী রবিশঙ্কর প্রসাদজি, শ্রী মনসুখ মাণ্ডব্যজি, আসামের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালজি, মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কোনরেড সাংমাজি, আসামের অর্থমন্ত্রী ডঃ হিমন্ত বিশ্বশর্মাজি, আর আমার আসামের প্রিয় ভাই ও বোনেরা। এমনটি মনে হচ্ছে যেন আলি-আয়ে-লিগাংগ উৎসবের উদ্দীপনা দ্বিতীয় দিনেও জারি রয়েছে। গতকাল মিসিংগ সম্প্রদায়ের জন্য কৃষির উৎসবের দিন ছিল, আর আজ মাজুলি সহ সমগ্র আসাম এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়নের একটি অনেক বড় মহোৎসব! - তাকামে লিগাংগ আছেংগে সেলিদুংগ!

 

ভাই ও বোনেরা,

 

ভারতরত্ন ডঃ ভুপেন হাজারিকা কখনও লিখেছিলেন –

“মহাবাহু ব্রহ্মপুত্র মহামিলনর তীর্থ

কত যুগ ধরি আহিছে প্রকাখি হমন্বয়র অর্থ!”

অর্থাৎ, ব্রহ্মপুত্রের বিস্তার বন্ধুত্ব, সৌভ্রাতৃত্ব ও মিলনের তীর্থ। যুগ যুগ ধরে এই পবিত্র নদী পরস্পরের সঙ্গে মিলন আর যোগাযোগের কাজ করে আসছে। কিন্তু এটাও সত্য, ব্রহ্মপুত্র নদীর দুই পাড়ের মধ্যে যোগাযোগ এবং নদীপথে পরিবহন সংক্রান্ত যত কাজ এতদিনে হওয়া উচিৎ ছিল তা হয়নি। সেজন্য আসাম তথা উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা সর্বদাই একটি বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এসেছে। মহাবাহু ব্রহ্মপুত্রের আশীর্বাদে এখন এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। বিগত বছরগুলিতে কেন্দ্রীয় সরকার এবং আসাম সরকারের ডবল ইঞ্জিনের মাধ্যমে এই গোটা অঞ্চলের ভৌগোলিক এবং সাংস্কৃতিক উভয় ধরনের দূরত্ব কম করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা ব্রহ্মপুত্রের শাশ্বত ভাবনার অনুরূপ পরিষেবা, নতুন নতুন সুযোগ এবং সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের সেতু গড়ে তুলেছি। আসাম সহ সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রাকৃতিক এবং সাংস্কৃতিক সংহতিকে বিগত বছরগুলিতে মজবুত করা হয়েছে।

 

বন্ধুগণ,

 

আজকের দিনটি আসাম সহ গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য এই ব্যাপক দৃষ্টিকোণকে বিস্তারিত করবে। ডঃ ভুপেন হাজারিকা সেতু থেকে শুরু করে বোগিবিল সেতু, সরাইঘাট সেতু – এরকম অনেক সেতু আজ আসামের জীবনকে সহজ করে তুলেছে। এগুলি দেশের নিরাপত্তাকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি আমাদের বীর পরাক্রমী সৈনিকদের যাতায়াতকেও অনেক সহজ করে দিয়েছে। আসাম এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের ভিন্ন ভিন্ন অংশকে যুক্ত করার এই অভিযানকে আজ আরও প্রসারিত করা হয়েছে। আজ থেকে আরও দুটি বড় সেতুর কাজ শুরু হচ্ছে। যখন কয়েক বছর আগে আমি মাজুলি দ্বীপে গিয়েছিলাম, তখন সেখানকার সমস্যাগুলি অনেক নিবিড়ভাবে অনুভব করেছি। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে সর্বানন্দ সোনোয়ালজির সরকার এই সমস্যাগুলি লাঘব করার জন্য সম্পূর্ণ নিষ্ঠা নিয়ে কাজ করে চলেছে। মাজুলিতে ইতিমধ্যেই আসামের প্রথম হেলিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।

 

ভাই ও বোনেরা,

 

এখন মাজুলিবাসীদের জন্য সড়কপথে দ্রুত এবং নিরাপদ যাতায়াতের বিকল্প তৈরি করা হচ্ছে। আপনাদের অনেক বছরের পুরনো দাবি আজ এই সেতুর ভূমি পুজোর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। কালিবাড়ি ঘাট থেকে জোড়হাটকে যুক্ত করা ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু মাজুলির হাজার হাজার পরিবারের জীবনরেখা হয়ে উঠবে। এই সেতু আপনাদের জন্য অনেক সুবিধা এবং সম্ভাবনার সেতু হয়ে উঠবে। এভাবে ধুবরি থেকে মেঘালয়ের ফুলবাড়ি পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণের কাজ যখন শেষ হবে, তখন এর মাধ্যমে বরাক উপত্যকার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হবে। শুধু তাই নয়, এই সেতুর মাধ্যমে মেঘালয়, মণিপুর, মিজোরাম এবং ত্রিপুরার সঙ্গে আসামের দূরত্ব অনেক কমে যাবে। আপনারা ভাবুন, মেঘালয় এবং আসামের মধ্যে এখন সড়কপথে যে দূরত্ব প্রায় ২৫০ কিলোমিটার, যা ভবিষ্যতে মাত্র ১৯-২০ কিলোমিটারে পরিণত হবে। এই সেতু অন্যান্য দেশের সঙ্গেও আন্তর্জাতিক যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

 

ভাই ও বোনেরা,

 

ব্রহ্মপুত্র এবং বরাক সহ আসাম অনেক নদীর আশীর্বাদধন্য। আসামের জনগণকে সমৃদ্ধ করার জন্য আজ মহাবাহু ব্রহ্মপুত্র কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে। এই কর্মসূচি ব্রহ্মপুত্রের ধারা থেকে এই গোটা অঞ্চলে জলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বন্দর উন্নয়নের কর্মকাণ্ডকেও উন্নত করবে। এই অভিযান শুরু করে আজ মিনাতি-মাজুলি, উত্তর ও দক্ষিণ গুয়াহাটি, ধুবরি-তসিংগীমারীর মধ্যে তিনটি রো-প্যাক্স পরিষেবা উদঘাটন করা হল। এই উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গেই আসাম এত বড় স্তরে রো-প্যাক্স পরিষেবাসম্পন্ন দেশের অগ্রণী রাজ্যে পরিণত হল। তাছাড়া, জোগিঘোপায় ‘ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট টার্মিনাল’ সহ ব্রহ্মপুত্র নদীর ওপর চার জায়গায় পর্যটক জেটি গড়ে তোলার কাজও শুরু করা হয়েছে। মাজুলি সহ আসাম তথা উত্তর-পূর্ব ভারতকে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রদানকারী এই প্রকল্পগুলি এই গোটা অঞ্চলের উন্নয়নের গতিকে আরও দ্রুত করবে। ২০১৬-য় আপনাদের প্রদত্ত একটিমাত্র ভোট কত কিছু করে দেখিয়েছে। আপনাদের ভোটের এই শক্তি এখন আসামের উন্নয়নকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

ভাই ও বোনেরা,

 

পরাধীন ভারতেও আসাম দেশের সম্পন্ন এবং অধিক রাজস্ব প্রদানকারী রাজ্যগুলির অন্যতম ছিল। এখান থেকে এমনকি চট্টগ্রাম ও কলকাতা সমুদ্র বন্দর পর্যন্ত চা আর পেট্রোলজাত পণ্য ব্রহ্মপুত্র-পদ্মা-মেঘনা নদীপথে এবং রেলপথেও পৌঁছে যেত। যোগাযোগ ব্যবস্থার এই নেটওয়ার্ক আসামের সমৃদ্ধির বড় কারণ ছিল। কিন্তু স্বাধীনতার পর এই পরিকাঠামোকে যেখানে আধুনিক করে তোলা প্রয়োজন ছিল, সেখানে একে নিজের মতোই ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। জলপথকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি। ধীরে ধীরে প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। এই অঞ্চলের অব্যবস্থা এবং অশান্তির পেছনে উন্নয়ন নিয়ে এই অবহেলা একটি বড় কারণ হয়ে ওঠে। এই ঐতিহাসিক ভুলগুলিকে শুধরানোর প্রথম প্রচেষ্টা করেন অটল বিহারী বাজপেয়ীজি। আর এতদিন পর তাকে আরও প্রসারিত করা হচ্ছে, আরও গতি প্রদান করা হচ্ছে। এখন আসামের উন্নয়ন কেন্দ্রীয় সরকারের অগ্রাধিকারে পরিণত হয়েছে, আর তার জন্য দিন-রাত চেষ্টা করা হচ্ছে।

 

ভাই ও বোনেরা,

 

বিগত পাঁচ বছরে আসামের মাল্টি-মডেল কানেক্টিভিটিকে পুনঃস্থাপিত করার জন্য একের পর এক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আসাম ও উত্তর-পূর্ব ভারতকে অন্যান্য পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে আমাদের সাংস্কৃতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্কের কেন্দ্র করে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেজন্য অন্তর্দেশীয় জলপথকে এখানে একটি বড় শক্তি রূপে গড়ে তোলার কাজ চলছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের সঙ্গে জলপথে যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র এবং বরাক নদীকে যুক্ত করার জন্য হুগলি নদীতে ইন্দো-বাংলাদেশ প্রোটোকল রুট নির্মাণের কাজ চলছে। এর মাধ্যমে আসাম ছাড়াও মেঘালয়, মিজোরাম, মণিপুর এবং ত্রিপুরার সঙ্গেও হলদিয়া, কলকাতা, গুয়াহাটি এবং জোগিঘোপার একটি বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। অর্থাৎ, এখন উত্তর-পূর্ব ভারতকে অবশিষ্ট ভারতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য একটি অপ্রশস্ত ভৌগোলিক ক্ষেত্রের ওপর আমাদের যে নির্ভরতা রয়েছে, সেই নির্ভরতাকে এই পথ লাঘব করবে।

 

ভাই ও বোনেরা,

 

জোগিঘোপার আইডব্লিউটি টার্মিনাল এই বিকল্প পথকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে, আর আসামকে জলপথে কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরের সঙ্গে যুক্ত করবে। এই টার্মিনালে ভুটান এবং বাংলাদেশের কার্গো, জোগিঘোপা মাল্টি-মডেল লজিস্টিক্স পার্কের কার্গো আর ব্রহ্মপুত্র নদীতে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে আসা-যাওয়ার পরিষেবা গড়ে উঠবে।

 

বন্ধুগণ,

 

সাধারণ মানুষের সুবিধাকে অগ্রাধিকার দিলে আর উন্নয়নের লক্ষ্যে অটল থাকলে নতুন পথ তো তৈরি হয়েই যায়। মাজুলি এবং নেমাতীর মধ্যে রো-প্যাক্স পরিষেবা এমনই একটি নতুন যোগাযোগ ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে আপনাদের আর সড়কপথে প্রায় ৪২৫ কিলোমিটার ঘুরে আসার প্রয়োজন পড়বে না। এখন আপনারা রো-প্যাক্সের মাধ্যমে মাত্র ১২ কিলোমিটার নদীপথে নিজেদের স্কুটার, সাইকেল, বাইক কিংবা গাড়ি জাহাজে করে নিয়ে যেতে পারবেন। এই পথে যে দুটি জাহাজ চালানো হচ্ছে সেগুলি একবারে প্রায় ১,৬০০ যাত্রী এবং কয়েক ডজন বাহনকে নিয়ে যেতে পারবে। এমনই পরিষেবা এখন গুয়াহাটির জনগণ পাবেন। এখন উত্তর ও দক্ষিণ গুয়াহাটির মধ্যে ৪০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে মাত্র ৩ কিলোমিটারে পরিণত হবে। একইভাবে, ধুবরি এবং হতসিংগীমারীর মধ্যে দূরত্ব ২২৫ কিলোমিটার থেকে কম হয়ে ৩০ কিলোমিটারে পরিণত হবে।

 

বন্ধুগণ,

 

আমাদের সরকার শুধু জলপথই সুগম করছে না, এর ব্যবহারকারীরা যাতে সঠিক তথ্য পেতে পারেন সেজন্য আজ ই-পোর্টাল উদ্বোধন করা হয়েছে। কার-ডি পোর্টালের মাধ্যমে ন্যাশনাল ওয়াটারওয়ে সমস্ত কার্গো এবং ক্রুজ সংক্রান্ত ট্র্যাফিক ডেটা রিয়েল টাইমে সংগ্রহ করার পরিষেবা চালু হল। এভাবে পানী পোর্টাল নৌ-পরিষেবা ছাড়াও জলপথের পরিকাঠামো সংক্রান্ত তথ্যাদি প্রদান করবে। জিআইএস-ভিত্তিক ভারত ম্যাপ পোর্টাল এখানে পর্যটন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য যাঁরা আসতে চান, তাঁদেরকেও সাহয্য করবে। আত্মনির্ভর ভারতের জন্য মাল্টি-মডেল কানেক্টিভিটি যেভাবে দেশে বিকশিত হচ্ছে, আসাম তার উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে উঠবে।

 

ভাই ও বোনেরা,

 

আসাম এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের জলপথ, রেলপথ, মহাসড়কপথ উন্নয়নের মাধ্যমে দ্রুত গড়ে তোলা উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি এই অঞ্চলে ইন্টারনেট কানেক্টিভিটিও ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য এই বিষয়টির উন্নয়নেও জোরকদমে কাজ চলছে। এখন কয়েকশ’ কোটি টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে গুয়াহাটিতে উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম ও দেশের ষষ্ঠ ‘ডেটা সেন্টার’ গড়ে উঠতে চলেছে। এই কেন্দ্রটি উত্তর-পূর্ব ভারতের আটটি রাজ্যের জন্য ‘ডেটা সেন্টার হাব’ রূপে কাজ করবে। এই ডেটা সেন্টার গড়ে ওঠার পর আসাম সহ গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতে ই-গভর্ন্যান্স, তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা-ভিত্তিক শিল্পোদ্যোগ আর স্টার্ট-আপগুলি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। বিগত কয়েক বছর ধরে উত্তর-পূর্ব ভারতের যুব সম্প্রদায়ের জন্য বিপিও-র যে ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে তাও এখন আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। অর্থাৎ, এক ভাবে এই কেন্দ্রটি আমাদের ডিজিটাল ইন্ডিয়ার দৃষ্টিভঙ্গিকে উত্তর-পূর্ব ভারতেও শক্তিশালী করে তুলবে।

 

ভাই ও বোনেরা,

 

ভারতরত্ন ডঃ ভুপেন হাজারিকা লিখেছিলেন –

“কর্মই আমার ধর্ম, আমি নতুন যুগর নতুন মানব,

আনিম নতুন স্বর্গ, অবহেলিত জনতার বাবে ধরাত পাতিম স্বর্গ!”

অর্থাৎ, জন্য কর্মই ধর্ম আমরা নতুন যুগের নতুন মানুষ। যাঁদের খবর কখনও নেওয়া হয়নি, আমরা তাঁদের জন্য নতুন স্বর্গ বানাব, পৃথিবীকে স্বর্গ বানাব। আসাম এবং উত্তর-পূর্ব ভারত সহ গোটা দেশে কেন্দ্রীয় সরকার আজ এই মনোভাব নিয়েই ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস’ স্থাপনের কাজ করছে। ব্রহ্মপুত্রের দুই পাড়ে সমৃদ্ধ অসমিয়া সংস্কৃতি, আধ্যাত্ম, বিভিন্ন জনজাতির সমৃদ্ধ পরম্পরা আর জৈব বৈচিত্র্য আমাদের ঐতিহ্য। হেমন্ত শঙ্করদেবজিও মাজুলি দ্বীপে এই ঐতিহ্যকে শক্তিশালী করে তোলার জন্য এসেছিলেন। তারপর থেকে মাজুলির পরিচয় আধ্যাত্মিক কেন্দ্র রূপে গড়ে উঠেছে যা ক্রমে আসামের সংস্কৃতির আত্মার স্বরূপ হয়ে ওঠে। আপনারা সবাই এই সত্রিয়া সংস্কৃতিকে যেভাবে সমৃদ্ধ করেছেন, এগিয়ে নিয়ে গেছেন তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। মুখা শিল্প এবং রাস উৎসব নিয়ে দেশ এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যেভাবে উৎসাহ-উদ্দীপনা বাড়ছে - তা অদ্ভূত আনন্দের! এই শক্তি, এই আকর্ষণ ক্ষমতা কেবল আপনাদের কাছেই রয়েছে। সেজন্য একে বাঁচানো এবং একে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন।

 

ভাই ও বোনেরা,

 

আমি মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালজি ও তাঁর গোটা টিমকে অভিনন্দন জানাব, যেভাবে মাজুলি তথা আসামের এই সাংস্কৃতিক, আধ্যাত্মিক এবং প্রাকৃতিক সামর্থ্য বৃদ্ধির জন্য প্রশংসনীয় কাজ করেছেন, তা অভূতপূর্ব। সত্রগুলি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানকে অবৈধ দখলদারি থেকে মুক্ত করার অভিযান থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ, মাজুলিকে ‘বায়ো ডাইভার্সিটি হেরিটেজ সাইট’-এর মর্যাদা প্রদান, তেজপুর-মাজুলি-শিবসাগর হেরিটেজ সার্কিট গড়ে তোলা, নমামী ব্রহ্মপুত্র এবং নমামী বরাকের মতো উৎসবের আয়োজন করা - এ ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে আসামের পরিচয় আরও সমৃদ্ধ হয়ে উঠছে।

 

বন্ধুগণ,

 

আজ যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার স্বার্থে যে প্রকল্পগুলির উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করা হয়েছে, সেগুলির মাধ্যমে আসামে পর্যটনের জন্য নতুন নতুন দরজা খুলতে চলেছে। ক্রুজ ট্যুরিজমের ক্ষেত্রে আসাম দেশের একটি বড় গন্তব্য হয়ে ওঠার ক্ষমতা রাখে। নেমাতী, বিশ্বনাথ ঘাট, গুয়াহাটি এবং জোগিঘোপায় ট্যুরিস্ট জেটি গড়ে ওঠার ফলে আসামের পর্যটন শিল্প একটি নতুন মাত্রা পাবে। এখন ক্রুজে ঘুরে বেড়ানোর জন্য দেশ ও বিশ্বের অনেক পর্যটক এসে পৌঁছবেন, টাকা খরচ করবেন, ফলে আসামের যুব সম্প্রদায়ের রোজগারের উপায়ও বাড়বে। পর্যটন একটি এমন ক্ষেত্র যার মাধ্যমে ন্যূনতম লেখাপড়া জানা, ন্যূনতম বিনিয়োগকারীও রোজগার করেন এবং দক্ষ পেশাদারও রোজগার করেন। এটাকেই তো বলে উন্নয়ন, যারা গরীব থেকে গরীব মানুষকে, সাধারণ জনগণকেও এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়। উন্নয়নের এই প্রক্রিয়াকে আমাদের চালু রাখতে হবে আর আরও গতি প্রদান করতে হবে। আসামকে, উত্তর-পূর্ব ভারতকে আত্মনির্ভর ভারতের শক্তিশালী স্তম্ভ করে তোলার জন্য আমাদের মিলেমিশে কাজ করতে হবে। আরেকবার আপনাদের সবাইকে উন্নয়নের এই নতুন নতুন প্রকল্পগুলির জন্য অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।

 

অনেক অনেক ধন্যবাদ!

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM Modi visits the Indian Arrival Monument
November 21, 2024

Prime Minister visited the Indian Arrival monument at Monument Gardens in Georgetown today. He was accompanied by PM of Guyana Brig (Retd) Mark Phillips. An ensemble of Tassa Drums welcomed Prime Minister as he paid floral tribute at the Arrival Monument. Paying homage at the monument, Prime Minister recalled the struggle and sacrifices of Indian diaspora and their pivotal contribution to preserving and promoting Indian culture and tradition in Guyana. He planted a Bel Patra sapling at the monument.

The monument is a replica of the first ship which arrived in Guyana in 1838 bringing indentured migrants from India. It was gifted by India to the people of Guyana in 1991.