প্রধানমন্ত্রী মোদী #AyushmanBharat যোজনার সূচনা করেছেন, এই প্রকল্পে ১০ কোটি পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে স্বাস্থ্যবিমা দেওয়া হবে
জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সব স্তরের মানুষ #AyushmanBharat স্বাস্থ্যবিমার সুবিধে পাবেন: প্রধানমন্ত্রী মোদী
#AyushmanBharat বিশ্বের বৃহত্তম রাষ্ট্র-পরিচালিত স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্প: প্রধানমন্ত্রী মোদী
#AyushmanBharat কর্মসূচির সুবিধাপ্রাপকদের সংখ্যা প্রায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন অথবা আমেরিকা, কানাডা ও মেক্সিকোর মিলিত জনসংখ্যার সমান: প্রধানমন্ত্রী
#AyushmanBharat কর্মসূচির প্রথম পর্যায়ের সূচনা হয়েছে বাবাসাহেব আম্বেদকরের জন্মবার্ষিকীতে। এই পর্যায়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তোলার সংস্থান ছিল। কর্মসূচিটির দ্বিতীয় পর্যায়ে স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পটি দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জন্মবার্ষিকীর দু’দিন আগে সূচনা করা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী মোদী
#AyushManBharat কর্মসূচির মাধ্যমে ক্যান্সার, ডায়াবেটিসের মতো রোগের জন্য চিকিৎসার সুযোগ পাবেন গরিবরা, বললেন প্রধানমন্ত্রী
#AyushmanBharat: ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার খরচ প্রদান করা হবে। এর মধ্যে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ভর্তির খরচ, অপারেশনের খরচ, ওষুধপত্রের খরচ এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জামের খরচও সামিল করা হয়েছে, বললেন প্রধানমন্ত্রী
দেশের ১৩ হাজারেরও বেশি হাসপাতাল #AyushmanBharat কর্মসূচিতে যুক্ত হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী মোদী
দেশে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংখ্যা ২,৩০০-তে পৌঁছেছে। এই ধরণের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংখ্যা দেড় লক্ষে নিয়ে যাওয়াই হল আমাদের লক্ষ্য, প্রধানমন্ত্রী মোদী
সরকার দেশের স্বাস্থ্যক্ষেত্রের উন্নয়নে সার্বিকতার ধারণায় কাজ করে চলেছে। সবার নাগালের মধ্যে "স্বাস্থ্য পরিষেবা" এবং "প্রতিরোধমূলক পরিষেবা", এই উভয় ক্ষেত্রের ওপরেই জোর দেওয়া হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী মোদী
প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার সঙ্গে যুক্ত সকলের উদ্যোগ ও ডাক্তার, নার্স, পরিষেবা দাতা, আশা কর্মী এবং সহায়কদের নিষ্ঠায় #AyushmanBharat কর্মসূচি সফল হবে: প্রধানমন্ত্রী মোদী

ঝাড়খন্ডের রাজ্যপাল শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মুজি, রাজ্যের প্রাণবন্ত জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী রঘুবর দাস, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষদে আমার সহকর্মী শ্রী জগৎ প্রসাদ নাড্ডা, আমার সহকর্মী এই রাজ্যের ভূমিপুত্র শ্রী সুদর্শনপ্রসাদ ভগৎজি,আমার সহকর্মী জয়ন্ত সিনহাজি,নীতি আয়োগের সদস্য ডক্টর বি.কে.পাল,রাজ্যসরকারের মন্ত্রী রামচন্দ্র চন্দ্রমুখী,সংসদে আমার সহযোগী শ্রী রামটহল চৌধুরীজি, বিধায়ক শ্রী রামকুমার পাহনজি, এখানে উপস্থিত সকল বিশিষ্ট মানুষজন এবং বিশাল সংখ্যায় আগত ঝাড়খন্ডনিবাসী আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা।  

বন্ধুগণ, আজ আমরা সবাই সেই বিশেষ উপলক্ষের সাক্ষী থাকতে চলেছি,যা আগামী দিনে মানবতার সবচেয়ে বড় সেবা হিসেবে নির্ধারিত হতে চলেছে। আজ আমি এখানে শুধুমাত্র ঝাড়খন্ডের বিকাশের প্রক্রিয়াকে গতিশীল করার জন্যই নয়, বরং গোটা দেশের জন্য আমাদের ঋষি-মুনিগণ যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, যা নাকি প্রত্যেক পরিবারেরই স্বপ্ন হয়ে থাকে, আমাদের মুনি-ঋষিরা স্বপ্ন দেখেছিলেন, ‘সর্ব ভবন্তু সুখিনা,সর্ব সন্তু নিরাময়ঃ!’ আমাদের এই বহু শতাব্দী প্রাচীন শপথকে এই শতাব্দিতেই বাস্তবায়িত করতে হবে, আর এজন্যই এর এক মহামূল্যবান সূচনা হতে চলেছে।     

সমাজের শেষ পংক্তিতে যে মানুষটি দাঁড়িয়ে আছেন, সেই গরিব থেকে গরিবতর মানুষের জন্য চিকিৎসার সুব্যবস্থা করা যায়, তেমন স্বপ্নপূরণের জন্য এক বিশাল বড় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বিরসামুন্ডার এই মাটিতে গ্রহণ করা হচ্ছে।

আজ গোটা দেশের নজর রাঁচির দিকে নিবদ্ধ। দেশের ৪০০-রও বেশি জেলাতে এমনই বড়সড় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেখানকার সমস্ত মানুষ রাঁচির এই গুরুত্বপূর্ণ সমাবেশের দিকে তাকিয়ে আছেন। এরপর তাঁরাও এই কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

আজ এখানে আমার দু’টো মেডিক্যাল কলেজের সূচনা করারও সুযোগ হয়েছে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, স্বাধীনতার ৭০ বছরে তিনটে মেডিক্যাল কলেজে সাড়ে তিনশো পড়ুয়া আর বিগত চার বছরে আটটি মেডিক্যাল কলেজে ১২০০ পড়ুয়া। কাজ কি করে হয়, কত ব্যাপক মাত্রায় হতে পারে, কত গতিতে হতে পারে, এর উদাহরণ খোঁজার জন্য অন্য কোথাও যেতে হবে বলে আমি বিশ্বাস করি না। 

       ভাই ও বোনেরা,

আয়ুষ্মান ভারতের সংকল্প নিয়ে প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা আজ থেকে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই প্রকল্পকে প্রত্যেকেই নিজের নিজের কল্পনানুযায়ী নাম দিচ্ছেন। কেউ একে মোদী কেয়ার বলছেন, কেউ আবার গরিবদের প্রকল্প নাম দিয়েছেন। কিন্তু আমার জন্য এটি দেশের দরিদ্র নারায়ণের সেবার একটি সুবর্ণ সুযোগ। আমার মতে, এর থেকে ভালো করে কোনও মতেই গরিব মানুষের সেবা করা সম্ভব নয়।

 

দেশের ৫০ কোটিরও বেশি মানুষকে বছরে ৫ লক্ষেরও বেশি স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রদানকারী এই প্রকল্প বিশ্বের এ ধরণের সর্ববৃহৎ প্রকল্প। গোটা দুনিয়ায় সরকারি অর্থে এর চেয়ে বড় কোনও প্রকল্প আর নেই।

 

এই প্রকল্পে উপকৃতদের সংখ্যা, আমরা এখানে বসে কল্পনাও করতে পারবো না; গোটা ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭-২৮টি দেশের মোট জনসংখ্যার থেকে বেশি মানুষ ভারতে এই প্রকল্প দ্বারা উপকৃত হবেন।

 

গোটা আমেরিকার জনসংখ্যা, গোটা কানাডা ও মেক্সিকোর মিলিত জনসংখ্যার সমান সংখ্যক মানুষকে এই আয়ুষ্মান ভারত যোজনার মাধ্যমে আরোগ্য প্রদান করা হবে।

 

আর সেজন্য একটু আগেই আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রী নাড্ডাজি বলছিলেন যে, বিশ্বে সবচেয়ে নামী স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিনগুলিতে প্রশংসা করে লেখা হয়েছে যে, ভারত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য প্রকল্প চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার মাধ্যমে দেশে দরিদ্র জনগণের স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসতে চলেছে।

 

আমি বিশ্বাস করি, আগামীদিনে বিশ্বের চিকিৎসা ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে যাঁরা চিন্তাভাবনা করেন, আরোগ্য ও অর্থনীতির সমন্বয়ে নিরাময় এবং আধুনিক ব্যবস্থা নিয়ে যাঁরা ভাবেন, সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের পরিবর্তন আনতে পারলে সমাজ জীবনে এর কী কী প্রভাব পরিলক্ষিত হবে; তেমন সমাজ বিজ্ঞানী, স্বাস্থ্য বিজ্ঞানী ও অর্থনীতিবিদরা এই আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পকে তাঁদের পাঠ্যক্রমের বিষয় করে তুলবে। তাঁদের ভাবতে হবে, এই ভিত্তিতে তাঁদের দেশের পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী কেমন মডেল গড়ে তোলা উচিৎ!

 

এই প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করতে যারা কাজ করে চলেছেন, তাদের সকলকে কৃতজ্ঞতা জানাই। এটা সহজ কাজ ছিল না, ছ’মাসের মধ্যে এত বড় প্রকল্প; এর পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত নানা পর্যায়ে আপনারা উৎকর্ষের পরিচয় দিয়েছেন। সুশাসন একেই বলে! দলবদ্ধভাবে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে রোডম্যাপ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ৫০ কোটি মানুষ ও ১৩ হাজার হাসপাতালকে যুক্ত করে এর বাস্তবায়নের মাধ্যমে আপনারা অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন।

সেজন্য আমি আজ সর্বসমক্ষে ১২৫ কোটি ভারতবাসীর সামনে গোটা টিমকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, এই টিম এখন পূর্ণ শক্তি দিয়ে অধিক সমর্পণ ভাব নিয়ে কাজ করে যাবে। কারণ, এতদিন শুধু প্রধানমন্ত্রী তাদের পেছনে পড়ে ছিল কিন্ত এখন ৫০ কোটি দরিদ্র মানুষের আশীর্বাদ তাদের সম্বল। আর যখন ৫০ কোটি গরিব মানুষের আশীর্বাদ কোনও টিমের সঙ্গে থাকে, যে কোনও গ্রামের আশা কর্মীরাও সর্বান্তকরণে এই কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সদা তৎপর থাকবেন – এটা আমার বিশ্বাস।

 

বন্ধুগণ, গরিবদের নিরাময়ের এই সুরক্ষা কবচ জাতির উদ্দেশে সমর্পণ করে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি যে, প্রকল্প খুবই ভালো এবং প্রত্যেকের জন্য হলেও কেউ হাসপাতাল উদ্বোধন করতে এসে কি বলতে পারেন যে, আপনাদের হাসপাতাল সবসময়ে ভরে থাকুক! কেউ বলতে পারেন না। আমি উদ্বোধন করতে গিয়ে সবসময় বলি, আপনাদের হাসপাতাল সবসময়ে খালি থাকুক।

 

আজ আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প উদ্বোধন করার সময় ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করবো যে আমার দেশের কোনও গরিব কিম্বা তাঁর পরিবারের সামনে যেন এমন সংকট না আসে যাতে তাঁদের এই প্রকল্পের সাহায্যে কোনও হাসপাতালে যেতে হয়। আমি ঈশ্বরের কাছে সকলের উত্তম স্বাস্থ্যের প্রার্থনা করি। কিন্তু এহেন দুর্ভাগ্যের শিকার হয়ে এহেন সংকটের সম্মুখীন হলে ‘আয়ুষ্মান ভারত’ আপনাদের সেবায় হাজির।

 

সেরকম কঠিন সময়ে যে কোনও ধনী মানুষ যে ধরণের চিকিৎসা পরিষেবা পেতে পারেন, আমার দেশের গরিবদেরও এখন সেই পরিষেবা পাওয়া উচিৎ। যে প্রকল্প আজ থেকে চালু হ’ল, এত বড় প্রকল্পের ‘ট্রায়াল রান’ও প্রয়োজন ছিল। প্রযুক্তি কিভাবে কাজ করবে, আরোগ্য মিত্র রূপে যাঁরা কাজ করবেন, তাঁরা ঠিক মতো প্রযুক্তির ব্যবহার করতে পারছেন কি না, হাসপাতালগুলি আগে যেভাবে কাজ করতো, সেই ব্যবস্থায় কাঙ্খিত পরিবর্তন এসছে কি না – সেসব খতিয়ে দেখার জন্য দেশের ভিন্ন ভিন্ন জেলায় বিগত কয়েক দিন ধরে এই পরীক্ষামূলক কাজ চলছিল। এর সাফল্য থেকে আমার বিশ্বাস আরও জোরালো হয়েছে যে, এই অভিযান সঠিক অর্থে দেশের দরিদ্র জনগণকে স্বাস্থ্যের অধিকার প্রদানে সক্ষম হবে।

 

বন্ধুগণ, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের সঙ্গে একটি বিশেষ মাত্রা যুক্ত হয়েছে। বিগত ১৪ এপ্রিল ছত্তিশগড়ের বস্তারের আরণ্যক গ্রামগুলিতে যখন এর প্রথম পর্যায় শুরু হয়েছিল, আরোগ্য কেন্দ্র উদ্বোধন হয়েছিল, দিনটি ছিল বাবাসাহেব আম্বেদকরের জন্মজয়ন্তী। আর আজ দ্বিতীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়টি শুরু করা হ’ল ২৫ সেপ্টেম্বর তারিখে পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জন্মজয়ন্তীকে মাথায় রেখে। আজ রবিবার বলে আমার সুবিধা মতো আমরা এই প্রকল্প দু’দিন আগেই শুরু করেছি। কিন্তু আজও জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। আজ ভারতীয় চৈতন্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রবক্তা রাষ্ট্রকবি দিনকরের জন্মদিন।

 

আর সেজন্য এই মহাপুরুষদের আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে সমাজে সমস্ত রকম ভেদভাব দূর করার জন্য যাঁরা সারা জীবন গরিবদের জন্য ভেবেছেন, গরিবদের জন্য বেঁচেছেন, দরিদ্র মানুষের গরিমা রক্ষায় সারা জীবন সংঘর্ষ করেছেন। আজ সেই মহাপুরুষদের স্মরণ করে জাতির উদ্দেশে এই প্রকল্প উৎসর্গ করছি।

 

দেশে উন্নত চিকিৎসা যেন শুধু কিছু মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকে, সবাই যেন উন্নত চিকিৎসা পান – এই ভাবনা থেকেই আজ জাতির উদ্দেশে এই প্রকল্প উৎসর্গ করছি।

 

ভাই ও বোনেরা, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই আমরা ‘গরিবি হটাও’ শ্লোগান শুনে আসছি। গরিবদের নামে মালা জপতে জপতে যারা গরিবদের চোখে ধুলো দিয়ে গেছেন, তাঁরা যদি আজ থেকে ৩০-৪০-৫০ বছর আগে গরিবদের নামে রাজনীতি করার বদলে তাঁদের ক্ষমতায়নে জোর দিতেন, তা হলে আজ দেশের এই দশা হ’ত না। দেশকে এখনও অনেক মৌলিক ভুলের মাশুল গুনতে হচ্ছে। তাঁরা ভাবতেন যে, গরিবদের বিনামূল্যে কিছু পাইয়ে দিলেই তাঁরা সন্তুষ্ট থাকবেন। কিন্তু আসলে দরিদ্র মানুষ যেমন আত্মাভিমানী হন, তা পরিমাপ করার মতো কোনও দাড়িপাল্লা ঐ তথাকথিত দরিদ্রদরদীদের ছিল না।

 

আমি গরিব ঘরের সন্তান। দারিদ্র্যের যন্ত্রণা আমি বুঝি। গরিবদের আত্মসম্মানও আমি বুঝি। সেই আত্মসম্মানই আমাকে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শক্তি দেয়। কিন্তু তাঁরা কখনও গরিবদের আত্মসম্মানের কথা ভাবেননি, সেজন্য প্রত্যেক নির্বাচনে পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি করে গেছেন। আমরা এই রোগের গোড়ায় গিয়েছি। সেজন্য দেশ দারিদ্র্য মুক্তির পথে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। বিগত দিনে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা বলেছে যে, গত দু-তিন বছরের মধ্যে ভারতের ৫ কোটি পরিবার অতি দরিদ্র পরিস্থিতি থেকে উপরে উঠে এসেছে।

 

ভাই ও বোনেরা, গরিব মানুষের ক্ষমতায়নের মাধ্যমেই আমরা এই সাফল্য পেয়েছি। গরিব মানুষ মাথার ওপর ছাদ পেলে তাঁর জীবনের চিন্তাভাবনা বদলায়। গরিব মা রান্নার গ্যাসের সংযোগ পেলে জীবনে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে অন্যের সমকক্ষ হওয়ার জন্য এগিয়ে যেতে পারেন। গরিব মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুললে তাঁর আত্মসম্মান বৃদ্ধি পায়। অর্থ সাশ্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। গরিব মানুষের টিকাকরণ হলে, পোষণ মিশন সফল হলে, গরিব মায়েরা ক্ষমতায়নের পথে এগিয়ে যান।

 

আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেন, সম্প্রতি যে এশিয়ান গেমস্‌ হয়ে গেল, সেখানে ভারতের হয়ে পুরষ্কার কারা এনেছেন? স্বর্ণপদক কারা এনেছেন? সাম্প্রতিক অতীতে ভারতকে যাঁরা নতুন নতুন সম্মানজনক সাফল্য এনে দিয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই গ্রামের গরিব ঘরে বড় হয়ে ওঠা, অপুষ্টির সঙ্গে লড়াই করা যুবক-যুবতীরা।

 

গরিবের ক্ষমতাকে উপলব্ধি করতে হবে। সেজন্য আমাদের প্রত্যেক প্রকল্প গরিব মানুষের ক্ষমতায়নের জন্য রচিত। দেশের আরেকটি বড় পরিবর্তন এসেছে। এতদিন দেশের সমস্ত নীতি ভোট ব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক ভিত্তিতে প্রণয়ন করা হয়েছে। যে জাতি বা সম্প্রদায় নির্বাচনে জেতার গ্যারান্টি দিতে পারে, তাঁদের জন্য সুবিধা দেওয়ার কথা ভাবা হ’ত। ক্ষেত্রীয় উন্নয়ন, সামাজিক পরিবর্তন এবং সাম্প্রদায়িক সঙ্কট থেকে মুক্তির কথা না ভেবে পূর্ববর্তী সরকারগুলি শুধুই ভোটের রাজনীতি করে সমাজকে বিভাজনের মাধ্যমে লুঠমার চালিয়েছে।

আমরা সেই পথ পরিহার করেছি। আমরা চাই না যে দেশ আর কখনও সেই পথে ফিরে আসুক। আমাদের মন্ত্র হ’ল – ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’। আয়ুষ্মান ভারতের ক্ষেত্রে কোনও জাতি, সম্প্রদায়, উঁচু-নীচু ভেদভাব মানা হবে না। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, অঞ্চল, সম্প্রদায়, বিশ্বাস নির্বিশেষে সবকা সাথ, সবকা বিকাশ। কেউ ঈশ্বরকে মানেন কি মানেন না, মন্দির, মসজিদ, গুরদ্বোয়ারা কিংবা গির্জায় প্রার্থনা করতে যান, প্রত্যেকের জন্যই আয়ুষ্মান ভারত যোজনা।

 

বন্ধুগণ, এই প্রকল্প কতটা ব্যাপক, তা অনুমান করা যায় এই উদাহরণ দিয়ে যে, ক্যান্সার, হৃদরোগ, কিডনী, লিভার ও ডায়াবেটিস সহ ১,৩০০টিরও বেশি রোগের চিকিৎসা এই প্রকল্পে সামিল করা হয়েছে। শুধু সরকারি হাসপাতাল নয়, বেসরকারি হাসপাতালেও তাঁরা এই চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন। ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার খরচ প্রদান করা হবে। এর মধ্যে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ভর্তির খরচ, অপারেশনের খরচ, ওষুধপত্রের খরচ এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জামের খরচও সামিল করা হয়েছে।

শুধু তাই নয়, সারা দেশের প্রত্যেক মানুষ যেন সমান মানের চিকিৎসা পান – সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাউকে যেন চিকিৎসার জন্য দরজায় দরজায় ঘুরতে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা হয়েছে। সবকিছু প্রযুক্তির মাধ্যমে সুনিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কোনও সঙ্কলটগ্রস্ত মানুষ যেন এই প্রকল্প থেকে বাদ না পড়েন, সেজন্য নিরন্তর সমীক্ষা জারি রয়েছে।

 

এই প্রকল্পে আপনাদের কোনও প্রকার নথিভুক্তিকরণের প্রয়োজন নেই। আপনারা যে ই-কার্ড পাচ্ছেন, সেটাই যথেষ্ট। সেখানেই আপনাদের সমস্ত তথ্য থাকবে – এজন্য কোনও আবেদন-নিবেদনের প্রয়োজন নেই।

এছাড়া একটা টেলিফোন নম্বর এবং আমি বিশ্বাস করি তা আপনাদের মনে রাখা জরুরি। আমি সমস্ত গরিব পরিবারের প্রতি অনুরোধ জনাব আপনারা এই নম্বরটা অবশ্যই মনে করে রাখবেন,১৪৫৫৫ ওয়ান ফোর ট্রিপল ফাইভ, এই নম্বর থেকে আপনি জানতে পারবেন এই যোজনায় আপনার নাম আছে কি নেই, আপনার পরিবারের নাম আছে কি নেই। আপনার সমস্যা, কি সুবিধে পাবেন,এই সমস্ত কিছু কাছাকাছি কমন সার্ভিস সেন্টার, আজ দেশে তিন লক্ষ কমন সার্ভিস সেন্টার আছে, এই তিন লক্ষ কমন সার্ভিস সেন্টারের কোনও একটির জন্য আপনাকেও দু’তিন কিলোমিটারের বেশি যেতে হবে না|সেখানে গিয়ে আপনি তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন।

বন্ধুরা, এই ব্যবস্থাপনার সঙ্গেই আরও দু’রকম বড় সহায়ক পেয়ে যাবেন, প্রথমতঃ আপনার গ্রামের আশা ও এ এন এম বোন এবং দ্বিতীয়তঃ প্রত্যেক হাসপাতালে আপনাদের সাহায্য করতে নিয়োজিত থাকবে প্রধানমন্ত্রী আরোগ্য মিত্র। এই প্রধানমন্ত্রী আরোগ্য মিত্র আপনার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে থেকে শুরু করে চিকিৎসার পর পর্যন্ত আপনাকে যোজনার সুবিধে পাইয়ে দিতে পুরোপুরি সাহায্য করে যাবে|দেশকে আয়ুষ্মান করে তোলার জন্য এই নিবেদিত প্রাণ বন্ধু আপনাকে ঠিকঠাক তথ্য যোগাবেন।

বন্ধুগণ, আয়ুষ্মান ভারতের এই অভিযান প্রকৃত অর্থে একতাবদ্ধ ভারতে সবার জন্য একই ধরনের চিকিৎসার ভাবনাকে মজবুত করবে|যে রাজ্য এই যোজনার সঙ্গে যুক্ত হবে, সেখানকার বাসিন্দারা যদি অন্য রাজ্যে যান, তবে সেখানে পর্যন্ত হঠাৎ প্রয়োজন পড়লে, এই যোজনার সুবিধে সেখানেও পেতে পারেন।

এখন পর্যন্ত এই যোজনায় গোটা দেশের ১৩ হাজারেরও বেশি হাসপাতাল আমাদের সহযোগী হয়েছে। আগামী দিনে আরও হাসপাতাল এর আওতায় এসে যাবে|শুধু তা-ই নয়, যে হাসপাতাল ভালো পরিষেবা দেবে,বিশেষ করে গ্রামের হাসপাতালে, তাদের সরকার থেকেও সহায়তা করা হবে।  

ভাই ও বোনেরা, আয়ুষ্মান ভারত যোজনার লক্ষ্য আর্থিক সুবিধে দেওয়া তো বটেই, সঙ্গে এমন ব্যবস্থাও দাঁড় করানো,যাতে ঘরের কাছেই আপনার জন্য উত্তম চিকিৎসার সুবিধে করে দেওয়া যায়।

বন্ধুরা, আজ এখানে দশটি ওয়েলনেস সেন্টারের শুভসূচনা হয়েছে। এখন ঝাড়খন্ডে প্রায় চল্লিশটি এমন সেন্টার কাজ করছে, আর গোটা দেশে এই সংখ্যাটা প্রায় দু’আড়াই হাজারে পৌঁছে গেছে। আগামী চার বছরে দেশে এমন দেড়লক্ষ স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।   

ভাই ও বোনেরা,এই হেলথ ও ওয়েলনেস সেন্টারগুলি আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই সেন্টারে ছোটখাটো অসুখের চিকিৎসা তো হবেই, সঙ্গে ঔষধও পাওয়া যাবে। এখানে বিনাখরচে অনেকগুলো পরীক্ষা–নিরীক্ষা করানোরও ব্যবস্থা থাকবে। এরফলে কঠিন অসুখের লক্ষণও আগে থেকে ধরা পড়লে চিকিৎসার সাহায্য পাওয়া যাবে।

বন্ধুগণ, সরকার দেশের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রটিকে শুধরানোর জন্য একটি সংহত পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। প্রত্যেক সিদ্ধান্ত ও নীতি পরস্পরের সঙ্গে সম্পৃক্ত। একদিকে সরকার সুলভ স্বাস্থ্য পরিষেবার দিকে নজর দিচ্ছে। পাশাপাশি, প্রতিরোধী স্বাস্থ্য পরিষেবার দিকেও লক্ষ্য রাখছিল। যোগাভ্যাস, স্বচ্ছ ভারত অভিযান, উন্মুক্ত স্থানে মলমুত্র বন্ধ করার জন্য অভিযান – এই সমস্ত কিছুর মাধ্যমে কঠিন রোগের কারণগুলি উৎস থেকে নির্মূল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনারা সম্প্রতি হয়তো একটি রিপোর্টে জেনেছেন যে, স্বচ্ছ ভারত মিশনের ফলে ৩ লক্ষ শিশুর জীবন বাঁচানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। নবজাত শিশু ও প্রসূতি মায়েদের জীবন রক্ষার পরিসংখ্যান দ্রুত মৃত্যু থেকে জীবনের পথে এগিয়ে চলেছে।

সরকার রাষ্ট্রীয় পোষণ মিশন অভিযানের মাধ্যমে অপুষ্টি দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছে। স্বাস্থ্য পরিষেবায় মানবসম্পদ বৃদ্ধির মাধ্যমে স্বাস্থ্য কর্মীদের সংখ্যা বাড়িয়ে আগামী তিন বছরে প্রায় আড়াই হাজার উৎকৃষ্ট মানের হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে। এর মধ্যে অধিকাংশই টয়ার-২ এবং টায়ার-৩ শহরগুলিতে গড়ে উঠবে। ফলে মধ্যবিত্ত যুবক-যুবতীদের নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ গড়ে উঠবে।

শুধু তাই নয়, গোটা প্রক্রিয়ায় স্বাস্থ্য পরিষেবার পাশাপাশি, বিমা, প্রযুক্তিগত দক্ষতা, কল সেন্টার, ব্যবস্থাপনা, ঔষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদন ইত্যাদি অনেক ক্ষেত্রে লক্ষ-কোটি কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা গড়ে উঠেছে। প্যারা-মেডিকেল স্টাফ থেকে শুরু করে প্রশিক্ষিত চিকিৎসকদের চাহিদা দেশে অনেক বৃদ্ধি পেতে চলেছে। পাশাপাশি, স্বাস্থ্য ক্ষেত্র সংশ্লিষ্ট অনেক স্টার্ট আপ উদ্যোগও গড়ে উঠবে। লক্ষ লক্ষ চিকিৎসক, সেবিকা, অন্যান্য চিকিৎসা কর্মী এবং হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট কর্মীর কর্মসংস্থান হবে। অর্থাৎ দেশের মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তদের জন্য অনেক বড় কর্মসংস্থানের সুযোগ এটা।

দেশের প্রতিটি গ্রাম, আধা শহর এবং টিয়ার-১ ও টিয়ার -২ শহরগুলির স্বাস্থ্য পরিকাঠামো শক্তিশালী করার জন্য সরকার নিরন্তর কাজ করে চলেছে। বিগত চার বছরে দেশে ১৪টি নতুন এইম্‌স হসপিটাল মঞ্জুর করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য সুরক্ষা যোজনার মাধ্যমে প্রত্যেক রাজ্যে ন্যূনতম একটি এইম্‌স গড়ে তোলার কথা ভাবা হচ্ছে। পাশাপাশি, একই সময়ে ৮২টি নতুন সরকারি মেডিকেল কলেজ চালু করার কাজ চলছে। প্রতি ৩/৪টি সংসদীয় ক্ষেত্রে ন্যূনতম একটি করে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গড়ে তোলার কাজ চলছে।

আজ এখানেও তেমনই ৬০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগে কোডোরমা ও চাইবাসায় দুটি ৪০০ শয্যাসম্পন্ন মেডিকেল কলেজের শিলান্যাস করা হয়েছে।

ভাই ও বোনেরা, বিগত চার বছরে সারা দেশে ২৫ হাজারেরও বেশি আন্ডার গ্র্যাজুয়েট ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট চিকিৎসক আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সরকার চায়, আগামী ৪-৫ বছরে সরকার দেশে ১ লক্ষ নতুন চিকিৎসক হোক।

বন্ধুগণ, দীনদয়াল উপাধ্যায়জী বলতেন যে, শিক্ষার মতোই স্বাস্থ্যের পেছনে যে খরচ করা হয়, তাকে খরচ না বলে বিনিয়োগ বলা উচিৎ। ভালো শিক্ষা ও দক্ষতার অভাবে সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়ন যেমন সম্ভব নয়, তেমনই অসুস্থ ও অপুষ্ট নাগরিক দিয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র নির্মাণ সম্ভব নয়।

বন্ধুগণ, আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির প্রচেষ্টায়, আরোগ্য মিত্র, আশা, এএনএম বোনেদের সহযোগিতায়, প্রত্যেক চিকিৎসক, সেবিকা, স্বাস্থ্য কর্মী এবং পরিষেবা প্রদানকারীদের সমর্পিত ভাবনার সমন্বয়ে আমরা এই প্রকল্পকে সফল করে তুলতে পারব। একটি সুস্থ দেশ গড়ে তুলতে পারব। নতুন ভারত সুস্থ, শক্তিশালী হয়ে উঠবে। আপনারা সবাই সুস্থ ও দীর্ঘায়ু হবেন।

এই আশা নিয়ে আজ রাঁচির মাটি থেকে, ভগবান বিরসামুন্ডার মাটি থেকে ১২৫ কোটি দেশবাসীর চরণে প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা সমর্পণ করছি।

আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

ভারতমাতা কি – জয়।

ভারতমাতা কি – জয়।

ভারতমাতা কি – জয়।

আমি বলব আয়ুষ্মান, আপনারা বলবেন ভারত

আয়ুষ্মান – ভারত

আয়ুষ্মান – ভারত

আয়ুষ্মান – ভারত

আয়ুষ্মান – ভারত

আয়ুষ্মান – ভারত

 

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Text of PM Modi's address at the Parliament of Guyana
November 21, 2024

Hon’ble Speaker, मंज़ूर नादिर जी,
Hon’ble Prime Minister,मार्क एंथनी फिलिप्स जी,
Hon’ble, वाइस प्रेसिडेंट भरत जगदेव जी,
Hon’ble Leader of the Opposition,
Hon’ble Ministers,
Members of the Parliament,
Hon’ble The चांसलर ऑफ द ज्यूडिशियरी,
अन्य महानुभाव,
देवियों और सज्जनों,

गयाना की इस ऐतिहासिक पार्लियामेंट में, आप सभी ने मुझे अपने बीच आने के लिए निमंत्रित किया, मैं आपका बहुत-बहुत आभारी हूं। कल ही गयाना ने मुझे अपना सर्वोच्च सम्मान दिया है। मैं इस सम्मान के लिए भी आप सभी का, गयाना के हर नागरिक का हृदय से आभार व्यक्त करता हूं। गयाना का हर नागरिक मेरे लिए ‘स्टार बाई’ है। यहां के सभी नागरिकों को धन्यवाद! ये सम्मान मैं भारत के प्रत्येक नागरिक को समर्पित करता हूं।

साथियों,

भारत और गयाना का नाता बहुत गहरा है। ये रिश्ता, मिट्टी का है, पसीने का है,परिश्रम का है करीब 180 साल पहले, किसी भारतीय का पहली बार गयाना की धरती पर कदम पड़ा था। उसके बाद दुख में,सुख में,कोई भी परिस्थिति हो, भारत और गयाना का रिश्ता, आत्मीयता से भरा रहा है। India Arrival Monument इसी आत्मीय जुड़ाव का प्रतीक है। अब से कुछ देर बाद, मैं वहां जाने वाला हूं,

साथियों,

आज मैं भारत के प्रधानमंत्री के रूप में आपके बीच हूं, लेकिन 24 साल पहले एक जिज्ञासु के रूप में मुझे इस खूबसूरत देश में आने का अवसर मिला था। आमतौर पर लोग ऐसे देशों में जाना पसंद करते हैं, जहां तामझाम हो, चकाचौंध हो। लेकिन मुझे गयाना की विरासत को, यहां के इतिहास को जानना था,समझना था, आज भी गयाना में कई लोग मिल जाएंगे, जिन्हें मुझसे हुई मुलाकातें याद होंगीं, मेरी तब की यात्रा से बहुत सी यादें जुड़ी हुई हैं, यहां क्रिकेट का पैशन, यहां का गीत-संगीत, और जो बात मैं कभी नहीं भूल सकता, वो है चटनी, चटनी भारत की हो या फिर गयाना की, वाकई कमाल की होती है,

साथियों,

बहुत कम ऐसा होता है, जब आप किसी दूसरे देश में जाएं,और वहां का इतिहास आपको अपने देश के इतिहास जैसा लगे,पिछले दो-ढाई सौ साल में भारत और गयाना ने एक जैसी गुलामी देखी, एक जैसा संघर्ष देखा, दोनों ही देशों में गुलामी से मुक्ति की एक जैसी ही छटपटाहट भी थी, आजादी की लड़ाई में यहां भी,औऱ वहां भी, कितने ही लोगों ने अपना जीवन समर्पित कर दिया, यहां गांधी जी के करीबी सी एफ एंड्रूज हों, ईस्ट इंडियन एसोसिएशन के अध्यक्ष जंग बहादुर सिंह हों, सभी ने गुलामी से मुक्ति की ये लड़ाई मिलकर लड़ी,आजादी पाई। औऱ आज हम दोनों ही देश,दुनिया में डेमोक्रेसी को मज़बूत कर रहे हैं। इसलिए आज गयाना की संसद में, मैं आप सभी का,140 करोड़ भारतवासियों की तरफ से अभिनंदन करता हूं, मैं गयाना संसद के हर प्रतिनिधि को बधाई देता हूं। गयाना में डेमोक्रेसी को मजबूत करने के लिए आपका हर प्रयास, दुनिया के विकास को मजबूत कर रहा है।

साथियों,

डेमोक्रेसी को मजबूत बनाने के प्रयासों के बीच, हमें आज वैश्विक परिस्थितियों पर भी लगातार नजर ऱखनी है। जब भारत और गयाना आजाद हुए थे, तो दुनिया के सामने अलग तरह की चुनौतियां थीं। आज 21वीं सदी की दुनिया के सामने, अलग तरह की चुनौतियां हैं।
दूसरे विश्व युद्ध के बाद बनी व्यवस्थाएं और संस्थाएं,ध्वस्त हो रही हैं, कोरोना के बाद जहां एक नए वर्ल्ड ऑर्डर की तरफ बढ़ना था, दुनिया दूसरी ही चीजों में उलझ गई, इन परिस्थितियों में,आज विश्व के सामने, आगे बढ़ने का सबसे मजबूत मंत्र है-"Democracy First- Humanity First” "Democracy First की भावना हमें सिखाती है कि सबको साथ लेकर चलो,सबको साथ लेकर सबके विकास में सहभागी बनो। Humanity First” की भावना हमारे निर्णयों की दिशा तय करती है, जब हम Humanity First को अपने निर्णयों का आधार बनाते हैं, तो नतीजे भी मानवता का हित करने वाले होते हैं।

साथियों,

हमारी डेमोक्रेटिक वैल्यूज इतनी मजबूत हैं कि विकास के रास्ते पर चलते हुए हर उतार-चढ़ाव में हमारा संबल बनती हैं। एक इंक्लूसिव सोसायटी के निर्माण में डेमोक्रेसी से बड़ा कोई माध्यम नहीं। नागरिकों का कोई भी मत-पंथ हो, उसका कोई भी बैकग्राउंड हो, डेमोक्रेसी हर नागरिक को उसके अधिकारों की रक्षा की,उसके उज्जवल भविष्य की गारंटी देती है। और हम दोनों देशों ने मिलकर दिखाया है कि डेमोक्रेसी सिर्फ एक कानून नहीं है,सिर्फ एक व्यवस्था नहीं है, हमने दिखाया है कि डेमोक्रेसी हमारे DNA में है, हमारे विजन में है, हमारे आचार-व्यवहार में है।

साथियों,

हमारी ह्यूमन सेंट्रिक अप्रोच,हमें सिखाती है कि हर देश,हर देश के नागरिक उतने ही अहम हैं, इसलिए, जब विश्व को एकजुट करने की बात आई, तब भारत ने अपनी G-20 प्रेसीडेंसी के दौरान One Earth, One Family, One Future का मंत्र दिया। जब कोरोना का संकट आया, पूरी मानवता के सामने चुनौती आई, तब भारत ने One Earth, One Health का संदेश दिया। जब क्लाइमेट से जुड़े challenges में हर देश के प्रयासों को जोड़ना था, तब भारत ने वन वर्ल्ड, वन सन, वन ग्रिड का विजन रखा, जब दुनिया को प्राकृतिक आपदाओं से बचाने के लिए सामूहिक प्रयास जरूरी हुए, तब भारत ने CDRI यानि कोएलिशन फॉर डिज़ास्टर रज़ीलिएंट इंफ्रास्ट्रक्चर का initiative लिया। जब दुनिया में pro-planet people का एक बड़ा नेटवर्क तैयार करना था, तब भारत ने मिशन LiFE जैसा एक global movement शुरु किया,

साथियों,

"Democracy First- Humanity First” की इसी भावना पर चलते हुए, आज भारत विश्वबंधु के रूप में विश्व के प्रति अपना कर्तव्य निभा रहा है। दुनिया के किसी भी देश में कोई भी संकट हो, हमारा ईमानदार प्रयास होता है कि हम फर्स्ट रिस्पॉन्डर बनकर वहां पहुंचे। आपने कोरोना का वो दौर देखा है, जब हर देश अपने-अपने बचाव में ही जुटा था। तब भारत ने दुनिया के डेढ़ सौ से अधिक देशों के साथ दवाएं और वैक्सीन्स शेयर कीं। मुझे संतोष है कि भारत, उस मुश्किल दौर में गयाना की जनता को भी मदद पहुंचा सका। दुनिया में जहां-जहां युद्ध की स्थिति आई,भारत राहत और बचाव के लिए आगे आया। श्रीलंका हो, मालदीव हो, जिन भी देशों में संकट आया, भारत ने आगे बढ़कर बिना स्वार्थ के मदद की, नेपाल से लेकर तुर्की और सीरिया तक, जहां-जहां भूकंप आए, भारत सबसे पहले पहुंचा है। यही तो हमारे संस्कार हैं, हम कभी भी स्वार्थ के साथ आगे नहीं बढ़े, हम कभी भी विस्तारवाद की भावना से आगे नहीं बढ़े। हम Resources पर कब्जे की, Resources को हड़पने की भावना से हमेशा दूर रहे हैं। मैं मानता हूं,स्पेस हो,Sea हो, ये यूनीवर्सल कन्फ्लिक्ट के नहीं बल्कि यूनिवर्सल को-ऑपरेशन के विषय होने चाहिए। दुनिया के लिए भी ये समय,Conflict का नहीं है, ये समय, Conflict पैदा करने वाली Conditions को पहचानने और उनको दूर करने का है। आज टेरेरिज्म, ड्रग्स, सायबर क्राइम, ऐसी कितनी ही चुनौतियां हैं, जिनसे मुकाबला करके ही हम अपनी आने वाली पीढ़ियों का भविष्य संवार पाएंगे। और ये तभी संभव है, जब हम Democracy First- Humanity First को सेंटर स्टेज देंगे।

साथियों,

भारत ने हमेशा principles के आधार पर, trust और transparency के आधार पर ही अपनी बात की है। एक भी देश, एक भी रीजन पीछे रह गया, तो हमारे global goals कभी हासिल नहीं हो पाएंगे। तभी भारत कहता है – Every Nation Matters ! इसलिए भारत, आयलैंड नेशन्स को Small Island Nations नहीं बल्कि Large ओशिन कंट्रीज़ मानता है। इसी भाव के तहत हमने इंडियन ओशन से जुड़े आयलैंड देशों के लिए सागर Platform बनाया। हमने पैसिफिक ओशन के देशों को जोड़ने के लिए भी विशेष फोरम बनाया है। इसी नेक नीयत से भारत ने जी-20 की प्रेसिडेंसी के दौरान अफ्रीकन यूनियन को जी-20 में शामिल कराकर अपना कर्तव्य निभाया।

साथियों,

आज भारत, हर तरह से वैश्विक विकास के पक्ष में खड़ा है,शांति के पक्ष में खड़ा है, इसी भावना के साथ आज भारत, ग्लोबल साउथ की भी आवाज बना है। भारत का मत है कि ग्लोबल साउथ ने अतीत में बहुत कुछ भुगता है। हमने अतीत में अपने स्वभाव औऱ संस्कारों के मुताबिक प्रकृति को सुरक्षित रखते हुए प्रगति की। लेकिन कई देशों ने Environment को नुकसान पहुंचाते हुए अपना विकास किया। आज क्लाइमेट चेंज की सबसे बड़ी कीमत, ग्लोबल साउथ के देशों को चुकानी पड़ रही है। इस असंतुलन से दुनिया को निकालना बहुत आवश्यक है।

साथियों,

भारत हो, गयाना हो, हमारी भी विकास की आकांक्षाएं हैं, हमारे सामने अपने लोगों के लिए बेहतर जीवन देने के सपने हैं। इसके लिए ग्लोबल साउथ की एकजुट आवाज़ बहुत ज़रूरी है। ये समय ग्लोबल साउथ के देशों की Awakening का समय है। ये समय हमें एक Opportunity दे रहा है कि हम एक साथ मिलकर एक नया ग्लोबल ऑर्डर बनाएं। और मैं इसमें गयाना की,आप सभी जनप्रतिनिधियों की भी बड़ी भूमिका देख रहा हूं।

साथियों,

यहां अनेक women members मौजूद हैं। दुनिया के फ्यूचर को, फ्यूचर ग्रोथ को, प्रभावित करने वाला एक बहुत बड़ा फैक्टर दुनिया की आधी आबादी है। बीती सदियों में महिलाओं को Global growth में कंट्रीब्यूट करने का पूरा मौका नहीं मिल पाया। इसके कई कारण रहे हैं। ये किसी एक देश की नहीं,सिर्फ ग्लोबल साउथ की नहीं,बल्कि ये पूरी दुनिया की कहानी है।
लेकिन 21st सेंचुरी में, global prosperity सुनिश्चित करने में महिलाओं की बहुत बड़ी भूमिका होने वाली है। इसलिए, अपनी G-20 प्रेसीडेंसी के दौरान, भारत ने Women Led Development को एक बड़ा एजेंडा बनाया था।

साथियों,

भारत में हमने हर सेक्टर में, हर स्तर पर, लीडरशिप की भूमिका देने का एक बड़ा अभियान चलाया है। भारत में हर सेक्टर में आज महिलाएं आगे आ रही हैं। पूरी दुनिया में जितने पायलट्स हैं, उनमें से सिर्फ 5 परसेंट महिलाएं हैं। जबकि भारत में जितने पायलट्स हैं, उनमें से 15 परसेंट महिलाएं हैं। भारत में बड़ी संख्या में फाइटर पायलट्स महिलाएं हैं। दुनिया के विकसित देशों में भी साइंस, टेक्नॉलॉजी, इंजीनियरिंग, मैथ्स यानि STEM graduates में 30-35 परसेंट ही women हैं। भारत में ये संख्या फोर्टी परसेंट से भी ऊपर पहुंच चुकी है। आज भारत के बड़े-बड़े स्पेस मिशन की कमान महिला वैज्ञानिक संभाल रही हैं। आपको ये जानकर भी खुशी होगी कि भारत ने अपनी पार्लियामेंट में महिलाओं को रिजर्वेशन देने का भी कानून पास किया है। आज भारत में डेमोक्रेटिक गवर्नेंस के अलग-अलग लेवल्स पर महिलाओं का प्रतिनिधित्व है। हमारे यहां लोकल लेवल पर पंचायती राज है, लोकल बॉड़ीज़ हैं। हमारे पंचायती राज सिस्टम में 14 लाख से ज्यादा यानि One point four five मिलियन Elected Representatives, महिलाएं हैं। आप कल्पना कर सकते हैं, गयाना की कुल आबादी से भी करीब-करीब दोगुनी आबादी में हमारे यहां महिलाएं लोकल गवर्नेंट को री-प्रजेंट कर रही हैं।

साथियों,

गयाना Latin America के विशाल महाद्वीप का Gateway है। आप भारत और इस विशाल महाद्वीप के बीच अवसरों और संभावनाओं का एक ब्रिज बन सकते हैं। हम एक साथ मिलकर, भारत और Caricom की Partnership को और बेहतर बना सकते हैं। कल ही गयाना में India-Caricom Summit का आयोजन हुआ है। हमने अपनी साझेदारी के हर पहलू को और मजबूत करने का फैसला लिया है।

साथियों,

गयाना के विकास के लिए भी भारत हर संभव सहयोग दे रहा है। यहां के इंफ्रास्ट्रक्चर में निवेश हो, यहां की कैपेसिटी बिल्डिंग में निवेश हो भारत और गयाना मिलकर काम कर रहे हैं। भारत द्वारा दी गई ferry हो, एयरक्राफ्ट हों, ये आज गयाना के बहुत काम आ रहे हैं। रीन्युएबल एनर्जी के सेक्टर में, सोलर पावर के क्षेत्र में भी भारत बड़ी मदद कर रहा है। आपने t-20 क्रिकेट वर्ल्ड कप का शानदार आयोजन किया है। भारत को खुशी है कि स्टेडियम के निर्माण में हम भी सहयोग दे पाए।

साथियों,

डवलपमेंट से जुड़ी हमारी ये पार्टनरशिप अब नए दौर में प्रवेश कर रही है। भारत की Energy डिमांड तेज़ी से बढ़ रही हैं, और भारत अपने Sources को Diversify भी कर रहा है। इसमें गयाना को हम एक महत्वपूर्ण Energy Source के रूप में देख रहे हैं। हमारे Businesses, गयाना में और अधिक Invest करें, इसके लिए भी हम निरंतर प्रयास कर रहे हैं।

साथियों,

आप सभी ये भी जानते हैं, भारत के पास एक बहुत बड़ी Youth Capital है। भारत में Quality Education और Skill Development Ecosystem है। भारत को, गयाना के ज्यादा से ज्यादा Students को Host करने में खुशी होगी। मैं आज गयाना की संसद के माध्यम से,गयाना के युवाओं को, भारतीय इनोवेटर्स और वैज्ञानिकों के साथ मिलकर काम करने के लिए भी आमंत्रित करता हूँ। Collaborate Globally And Act Locally, हम अपने युवाओं को इसके लिए Inspire कर सकते हैं। हम Creative Collaboration के जरिए Global Challenges के Solutions ढूंढ सकते हैं।

साथियों,

गयाना के महान सपूत श्री छेदी जगन ने कहा था, हमें अतीत से सबक लेते हुए अपना वर्तमान सुधारना होगा और भविष्य की मजबूत नींव तैयार करनी होगी। हम दोनों देशों का साझा अतीत, हमारे सबक,हमारा वर्तमान, हमें जरूर उज्जवल भविष्य की तरफ ले जाएंगे। इन्हीं शब्दों के साथ मैं अपनी बात समाप्त करता हूं, मैं आप सभी को भारत आने के लिए भी निमंत्रित करूंगा, मुझे गयाना के ज्यादा से ज्यादा जनप्रतिनिधियों का भारत में स्वागत करते हुए खुशी होगी। मैं एक बार फिर गयाना की संसद का, आप सभी जनप्रतिनिधियों का, बहुत-बहुत आभार, बहुत बहुत धन्यवाद।