বিপুল সংখ্যায় আগত আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আজ আমার কেদারনাথ গিয়ে আবার দর্শনলাভের সৌভাগ্য হয়েছে; আর সেখান থেকেআপনাদের সবার মাঝে এসে আপনাদের আশীর্বাদ পাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। আমি জানতাম না,বাবা ‘সারপ্রাইজ’ দিলেন। অত্যন্ত আবেগঘন বিশেষ সম্মানে আমাকে আভূষিত করলেন।স্বামীজির জয় হোক, এই গোটা পতঞ্জলি পরিবারকে আমি অন্তর থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।
কিন্তু, যাঁদের মাঝে আমার লালন-পালন হয়েছে, যাঁরা আমাকে সংস্কার ও শিক্ষাদিয়েছেন, তাঁরা সম্মানিত করলে, এর মানে আমি ভালভাবে বুঝি। এর মানে হ’ক, আমার কাছেআপনারা এমনটিই আশা করেছিলেন, আমি যেন আর এদিক ওদিক না ঘুরে সটান এগিয়ে চলি, এইযাত্রা সম্পূর্ণ করি! এভাবেই এক প্রকার গুরুজি আমার সামনে আগামীদিনে কী কী করব, আরকী কী করব না, তার দিকনির্দেশ করলেন।
এই সম্মানের পাশাপাশি আপানাদের আশীর্বাদ, ১২৫ কোটি দেশবাসীর আশীর্বাদেরশক্তিতে আমার ভরসা আছে। এই আশীর্বাদ আমার কাছে জ্বালানি ধারার মতো, স্রোতের মতো,আমার সংস্কার সেই স্রোতকে মর্যাদার মাঝে বেঁধে রাখে, আর রাষ্ট্রকে সমর্পিত জীবনবাঁচার জন্য নিত্য নতুন প্রেরণা গ্রহণ করতে থাকি।
আমি আজ আপনাদের মাঝে এসেছি, আপনারাও নিশ্চয়ই এমনটি অনুভব করেছেন যে, আমাদেরপরিবারেই কোনও সদস্য আপনাদের মাঝে এসেছে। কারণ, আমি এখানে আজ প্রথমবার আসিনি,আপনাদের মাঝে আমার বারবার আসার সৌভাগ্য হয়েছে। স্বামী রামদেব কিভাবে বিশ্ববাসীরসামনে ক্রমদেদীপ্যমান হয়ে উঠেছেন – তা ঘনিষ্ঠভাবে দেখার সুযোগ আমার হয়েছে। সংকল্পআর সংকল্পের প্রতি সমর্পণই তাঁর সাফল্যের সবচাইতে বড় কারণ। আর এই কারণ শ্রদ্ধেয়বালাকৃষ্ণ আচার্যজির খুঁজে আনা জড়িবুটি নয়। এই জড়িবুটি নিঃসন্দেহে বাবা রামদেবের স্ব-অণ্বিষ্টজড়িবুটি। বালকৃষ্ণজিরপাওয়া জড়িবুটি শরীরকে সুস্থ রাখার কাজে লাগে, কিন্তু স্বামীরামদেবজির অণ্বিষ্ট জড়িবুটি নানা সংকট কাটিয়ে নতুনভাবে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি যোগায়।
আজ আমার এই গবেষণা কেন্দ্র উদ্বোধনের সৌভাগ্য হ’ল। আমাদের দেশের অতীতেরদিকে যদি সামান্য তাকাই, তা হলে একটি বিষয় স্পষ্ট দেখা যায়, আমরা এত প্রসারিতহয়েছিলাম,এত উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছিলাম যে অবশিষ্ট বিশ্ববাসী বুঝতে পেরেছিল সেই উচ্চতার ধারেকাছে পৌঁছনো তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। সেজন্য কেউ কেউ আমাদের শ্রেষ্ঠ গুণগুলিকে নষ্টকরার জন্য আমাদের নাস্তানাবুদ করার পথ বেছে নিয়েছিল। ফলে, আসে দীর্ঘ দাসত্বেরঅন্ধকার যুগ। সেই ১০০০-১২০০ বছরের দাসত্বের সময় আমাদের মুনি-ঋষি, সাধু, আচার্য,কৃষক, বৈজ্ঞানিকদের এই শ্রেষ্ঠত্বের শক্তি প্রায় নিঃশেষিত হয়ে পড়েছিল।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও যা কিছু অবশিষ্ট ছিল তার অঙ্কুরণ, লালন-পালন ওসময়ানুকূল পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন নতুন রঙ ও রূপে সুসজ্জিত করে তোলার কাজযথাযথভাবে হয়নি। দাসত্বের শৃঙ্খল মুক্ত করে আমরা স্বাধীন হয়েছি ঠিকই, কিন্তু দেশীয়শাসকদল আমাদের হৃতশক্তি পুনরুদ্ধারের কাজে একপ্রকার নিশ্চেষ্ট-ই থেকেছেন।
আজ আমি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, সেই অতীতকে ভুলে থাকার আর প্রয়োজননেই, এখন আমরা গর্বের সঙ্গে যা কিছু শ্রেষ্ঠ তার জন্য গৌরব অনুভব করতে পারি, সেইগৌরবই ভারতের মর্যাদাকে বিশ্বের সামনে আবার তুলে ধরবে। পাশাপাশি, আমাদের পূর্বজরা ধারাবাহিকউদ্ভাবনের মাধ্যমে মানবজাতির কল্যাণে নিজেদের যে উচ্চমানে নিয়ে গিয়েছিলেন, আমাদেরএখন সেই মানে পৌঁছানোর জন্য, সেই মানকেও ছাপিয়ে যেতে হবে। এহেন উদ্ভাবন ও গবেষণারপ্রতি উদাসীনতা আমাদের বিশ্বের সামনে প্রভাব বৃদ্ধির প্রতিকূল।
অনেক বছর পর যখন আইটি পুনর্মূল্যায়ন হয়, যখন আমাদের দেশের ১৮, ২০, ২২ বছরবয়সী ছেলেমেয়েরা ‘মাউস’-এর মাধ্যমে খেলতে খেলতে বিশ্বকে প্রতিদিন নতুনভাবেআশ্চর্যান্বিত করে তুলেছে, তখন আরেকবার বিশ্ববাসী আমাদের দিকে ঘুরে তাকাতে বাধ্যহয়েছেন। গবেষণা ও উদ্ভাবনের শক্তি কতটা, তা আমরা চোখের সামনে দেখছি। আজ গোটা বিশ্ব‘পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য সুরক্ষা’ সম্পর্কে সজাগ ও সংবেদনশীল। ভারতের মুনি-ঋষিদেরমহান ঐতিহ্য যোগের প্রতি সারা পৃথিবী আজ আকর্ষণ অনুভব করছে। সবাই শান্তি চান।জাগতিক ছোটাছুটি থেকে বিরক্ত হয়ে তাঁরা আজ ভেতরের শক্তিকে জানতে চাইছেন।
এহেন সময়ে আমাদের কর্তব্য বর্তায় আধুনিক স্বরূপে গবেষণা ও বিশ্লেষণেরমাধ্যমে যোগবিদ্যাকে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেহ এবং মনের সুস্বাস্থ্যের জন্যআত্মাকে সচেতন রাখতে, সহজলভ্য করে তুলতে হবে। বাবা রামদেবকে অভিনন্দন জানাই, তিনিযোগাভ্যাসকে একটি আন্দোলনের রূপ দিয়েছেন। দেশের সর্বত্র আপামর সাধারণ মানুষের মনেআস্থা জাগিয়েছেন যে যোগের জন্য আর হিমালয়ের গুহায় যাওয়ার প্রয়োজন নেই, নিজেরবাড়িতে রান্নাঘরে পাশে বসেও যোগাভ্যাস সম্ভব, ফুটপাথে, মাঠে, বাগানে কিংবা মন্দিরচত্ত্বরে বসেও তা করা যায়।
এভাবে তিনি দেশের মানুষের মনে বড় পরিবর্তন আনতে পেরেছেন। আজ তাঁর পরিণামে২১ জুন সারা পৃথিবীতে আন্তর্জাতিক যোগদিবস পালন করতে শুরু করেছে। আমি বিশ্বের যতনেতার সঙ্গে মিলিত হই; উন্নয়ন, বিনিয়োগ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, রাজনৈতিক প্রেক্ষিতনিয়ে আলোচনার পাশাপাশি একটি বিষয়ে আলোচনা অবশ্যই হয়, তা হল যোগাভ্যাস। তাঁরাপ্রত্যেকেই আমাকে যোগাভ্যাস নিয়ে দু-একটি প্রশ্ন অবশ্যই করেন। এই জিজ্ঞাসা ক্রমেবাড়ছে। আমাদের আয়ুর্বেদের শক্তি অপার। আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্র এর অন্তর্নিহিতশক্তিকে এতদিন ঠিকমতো উপলব্ধি করতে পারেনি। আমাদের শিক্ষিত সমাজও আয়ুর্বেদে আস্থাঅর্জন না করে এর ক্ষতি করেছে। এমনকি, যাঁরা আয়ুর্বেদ চর্চা করেন, তাঁরাও নিজেদেরপ্রতি দ্বিধায় থাকেন, কোনও জটিল রোগ আয়ুর্বেদের মাধ্যমে সারিয়ে তুলেও ভরসা পেতেননা যে সত্যি সত্যি এর মাধ্যমেই উপশম হয়েছে কি না! তুমি বড় না আমি বড়, এই লড়াইয়েওঅনেক সময় পেরিয়ে গেছে। অথচ, আমাদের ঐতিহ্য থেকে পাওয়া সকল জ্ঞানের সঙ্গে আধুনিকবিজ্ঞানের জ্ঞানগুলিকে যুক্ত করে এগিয়ে যেতে পারলে মানবতার কল্যাণে চিকিৎসা শাস্ত্রআরও বেশি সাফল্য পেত।
আমি খুশি, পতঞ্জলি যোগ বিদ্যাপীঠের মাধ্যমে বাবা রামদেবজি যে অভিযান শুরুকরেছেন, তা আয়ুর্বেদের মহিমা কীর্তনে সীমাবদ্ধ নয়। বিশ্ব যে ভাষা বোঝে, গবেষণার যেমাপকাঠি সর্বমান্য, আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্রের প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থার মাপকাঠিতে সেইভাষাতেই আয়ুর্বেদকে অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। এভাবে তিনিভারতের সেবা করছেন। হাজার হাজার বছর ধরে আমাদের মুনি-ঋষিরা তপস্যার মাধ্যমে যাউদ্ভাবন করেছেন, তা বিশ্বকে আধুনিক বিজ্ঞানের ভাষায় বোঝাচ্ছেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাসযে, আজ আমি মা গঙ্গার তীরে যে গবেষণা কেন্দ্রটি দেখলাম, তা যে কোনও বিশ্বমানেরগবেষণা কেন্দ্রের সমতুল। সেজন্য আমি বাবা রামদেবজিকে হৃদয় থেকে অনেক অনেক অভিনন্দনজানাই।
শ্রদ্ধেয় অটল বিহারী বাজপেয়ী যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন ভারত সরকার একটি‘স্বাস্থ্য নীতি’ প্রণয়ন করেছিল। এত বছর পর আমরা সরকারের দায়িত্ব নিয়ে আবার একটি‘স্বাস্থ্য নীতি’ নিয়ে এসেছি। ‘পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য সুরক্ষা’-এর দৃষ্টিকোণ থেকে এই‘স্বাস্থ্য নীতি’ শুধু সুস্বাস্থ্যের কথা ভাবে না। বিশ্ববাসীর চাহিদা অনুযায়ী ভালথাকার কথা ভাবে, সমাধানও তাই ‘পূর্ণাঙ্গ’ করার কথা ভাবে। এই স্বাস্থ্য নীতি‘প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য সুরক্ষা’কে অগ্রাধিকার দেয়। আর ‘প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসুরক্ষা’র সবচাইতে সেরা উপায় হ’ল পরিচ্ছন্নতা। ১২৫ কোটি দেশবাসীকে সংকল্প নিতে হবেযে আমরা সবাই পরিচ্ছন্ন থাকব, বাড়িঘর ও পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখব। কোনও কঠিন সংকল্পনেওয়ার প্রয়োজন নেই, একাজে জেলে যেতে হবে না, ফাঁসি হবে না, দেশের সীমান্তেঅতন্দ্র প্রহরায় থাকা বীর সেনানীদের মতো জীবন বাজি রেখে কর্তব্য সমাধান করতে হবেনা। ছোট্ট কর্তব্য – নিজেকে ও পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখব – ব্যাস!
আপনারা ভাবুন, একজন চিকিৎসক যত জীবন বাঁচাতে পারেন, পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমেআপনারা প্রত্যেকে তার থেকে বেশি মানুষকে সুস্থ রাখতে পারবেন। একজন গরিবকে দান করেযত না পুণ্য অর্জন করবেন, পরিবেশ নোংরা না করে তার থেকে বেশি পুণ্য অর্জন করবেন,অর্থের চাইতেও স্বাস্থ্য অনেক বেশি মূল্যবান। আমি খুশি, দেশের নবীন প্রজন্ম এখন পরিচ্ছন্নতানিয়ে প্রয়োজনে বড়দের শাসাচ্ছে, সঠিক পথ দেখাচ্ছে। বাড়ির বড় কেউ গাড়িতে যেতে যেতেখালি জলের বোতল জানলা দিয়ে বাইরে ফেললে, গাড়িতে বসা বাচ্চাটি জেদ করে গাড়ি থামিয়েসেই বোতল তুলে আনছে, এই পরিস্থিতি আমাকে আনন্দ দিচ্ছে। আমার দেশের ছোট ছোটছেলেমেয়েরা এই পরিচ্ছন্নতার আন্দোলনে সিপাহীর ভূমিকা পালন করছে। আর সেজন্যই‘প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য সুরক্ষা’কে আমরা যত অগ্রাধিকার দেব দেশের গরিব মানুষকেসুস্থ রাখার ক্ষেত্রে তত ভাল অবদান রাখব।
পরিবেশকে বাইরে থেকে কেউ এসে নোংরা করে না, আমরাই আমাদের নোংরা করি, নোংরারাখি। তারপর পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ভাষণ দেওয়া আমাদের শোভা পায় না। একবার যদি সমস্তদেশবাসী পরিচ্ছন্ন থাকার শপথ গ্রহণ করি আর নিজেদের পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রেখে সেইশপথ পালন করি, তা হলে দেশকে রোগমুক্ত করতে, সুস্থ সবল দেশ হিসাবে গড়ে তোলারক্ষেত্রে সাফল্য আসতে দেরী লাগবে না।
কিন্তু আমরা এতই উদাসীন যে আমরা এত বড় হিমালয়ের জড়িবুটি ওষধি, ভগবানরামচন্দ্র আর লক্ষণের স্মৃতি বিজড়িত পর্বতমালার সঠিক মাহাত্ম্য জানি না, হনুমানজিজড়িবুটির জন্য কোথায় কোথায় গেছেন আমরা জানি। কিন্তু আমাদের দেশের এই ভেষজেরঅপরিসীমা মূল্য আমরা সময় থাকতে বুঝিনি। উন্নত বিশ্বের দেশগুলি ইতিমধ্যেই এসবজড়িবুটির ব্যবসায়িক মূল্য অনুধাবন করে অনেক ভেষজের পেটেন্ট করে নিয়েছে। হলুদ,তেঁতুল-এর মতো ওষধির পেটেন্ট আর আমাদের দেশে নেই। আমাদের অগ্রজদের উদাসীনতারখেসারত এখন দেশবাসীকে দিতে হচ্ছে।
আজ বিশ্বে ভেষজ ওষধির অনেক বড় বাজার। আমাদের দেশে এসব ভেষজের প্রাচুর্যথাকা সত্ত্বেও সারা বিশ্বে ভেষজ রপ্তানিতে আমরা এখনও নিজেদের শক্তি দেখাতে যথেষ্টসফল হইনি। এখনও অনেক কিছু করা বাকি।
এই পতঞ্জলি সংস্থানের মাধ্যমে যে গবেষণা এবং উদ্ভাবন হচ্ছে, তা বিশ্ববাসীর‘পূর্ণাঙ্গ’ এবং ভাল থাকার যে পরিকাঠামোয় অনেক উপযোগী হয়ে উঠবে। আমাদের দেশে অনেকবছর আগে সরকার একবার আয়ুর্বেদের প্রসার কেমন হওয়া উচিৎ, সে সম্পর্কে বিশদভাবেজানার জন্য ‘হাথী কমিশন’ বসিয়েছিল। শ্রদ্ধেয় জয়সুখলাল হাথীর নেতৃত্বে ঐ কমিশন যেরিপোর্ট পেশ করেছিল, তা খুবই মজার। রিপোর্টের গোড়াতেই লেখা হয়েছে যে, আয়ুর্বেদেরপদ্ধতিগুলি যুগোপযোগী না হওয়ায় সঠিকভাবে মানুষের কাছে পৌঁছয় না। এত বেশি থলি ভর্তিজড়িবুটি খেতে দিয়ে চিকিৎসক যদি বলেন, এটাকে সেদ্ধ করবেন, এতটা জলে সেদ্ধ করবেন,এতটা রস বেরোবে, সেটা চামচে নিয়ে অমুক জিনিস মেশাবেন, তমুক জিনিস মেশাবেন; সাধারণমানুষ ভাবেন, কে এত ঝামেলা করবে, তার বদলে এই ওষুধের দোকান থেকে কিনে নাও,ট্যাবলেট খেয়ে নাও, ব্যাস নিশ্চিন্ত। সেজন্য সবার আগে প্রয়োজন, আয়ুর্বেদ ওষধির যথাযথপ্যাকেজিং। এগুলির প্যাকেজিং আধুনিক ওষুধের মতো করে দিতে পারলে, এগুলির উপকারিতাদেখে মানুষের মনে আয়ুর্বেদের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাবে। আজ আমরা দেখছি, হাথী সাহেবেরভবিষ্যৎ বাণী কত সঠিক ছিল!
আমি মনে করি, এই সাফল্যের পেছনে আচার্যজির আত্মোৎসর্গই সর্বাধিকগুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আজ যে গ্রন্থের আবরণ উন্মোচনের সৌভাগ্য আমার হয়েছে, আমার দৃঢ়বিশ্বাস যে, এই গ্রন্থ সারা পৃথিবীতে সমাদৃত হবে, চিকিৎসা শাস্ত্রের সঙ্গে যুক্তমানুষের নজর কাড়বে। প্রকৃতিদত্ত ব্যবস্থা কত সামর্থ্য রাখে, সেই সামর্থ্যকে যদিআমতা সঠিকভাবে অনুধাবন করি, তা হলে জীবন কত উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারে। এটা যদিব্যক্তিকে একটি জানলা খুলে দেয়, তা এগিয়ে যাওয়ার পথে অনেক বড় সুযোগ তৈরি করে দেয়।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, আচার্য বালকৃষ্ণজির এই সাধনা, বাবা রামদেবের ‘মিশনমোডে’ সমর্পিত এই কর্মধারা আর ভারতের মহান উজ্জ্বল ঐতিহ্যকে আধুনিক রূপে বৈজ্ঞানিকঅধিষ্ঠানের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এই প্রয়াস ভারতকে বিশ্বে একটি বিশেষ স্থানেপৌঁছ দেওয়ার ভিত গড়ে দিচ্ছে। বিশ্বের অসংখ্য মানুষ এখন যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন,তাঁরা আয়ুর্বেদের সঙ্গেও যুক্ত হতে চান, আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাব।
আমি আরেকবার এখানে এসে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হতে পারার সৌভাগ্য প্রদানেরজন্য, বিশেষ রূপে সম্মানিত করার জন্য বাবা রামদেব’কে নত মস্তকে প্রণাম জানাই।আপনাদের সবাইকে অভিনন্দন জানাই। অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
ধন্যবাদ।