নমস্কার!
কর্ণাটকের রাজ্যপাল এবং মাইসোর বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য শ্রী বজু ভাই বালাজি, কর্ণাটকের শিক্ষামন্ত্রী ডঃ সি এন অশ্বথনারায়ণজি, মাইসোর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হেমন্ত কুমারজি, এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত সমস্ত শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবকবৃন্দ, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ! সবার আগে আপনাদের সবাইকে 'মাইসুরু দশহরা', ‘নাড়-হব্বা' উপলক্ষে অসংখ্য শুভকামনা।
কিছুক্ষণ আগে আমি বেশ কিছু ছবি দেখছিলাম। এবার করোনার বিপদ আমাদের সামাজিক জীবনে অনেক বাধা-নিষেধের পাহাড় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। কিন্তু কর্ণাটকে উৎসবের উদ্দীপনা আগের মতোই রয়েছে। যদিও এই উদ্দীপনায় কিছুদিন আগে হওয়া ভারী বর্ষার ফলে প্রবল বিপত্তি সৃষ্টি হয়েছিল। সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির প্রতি আমার সমবেদনা জানাই। কেন্দ্রীয় সরকার এবং কর্ণাটক সরকার মিলেমিশে ত্রাণ ও পুনর্বাসনের সমস্ত রকম প্রচেষ্টা জারি রেখেছে।
বন্ধুগণ,
আজ আপনাদের জন্য একটি অত্যন্ত বড় দিন। এমনিতে তো আমার চেষ্টা থাকে এই ধরনের শুভ অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত হয়ে আমার নবীন বন্ধুদের সামনে থেকে দেখার, মুখোমুখি কথা বলার। আর মাইসুরু এলে মাইসোর বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবময় ঐতিহ্য, শততম সমার্বতন সমারোহে অংশগ্রহণ করার গরিমাই অন্যরকম হত। কিন্তু এবার করোনার ফলে আমরা 'রিয়েলি নয়, ভার্চ্যুয়ালি' পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হচ্ছি।
বন্ধুগণ,
মাইসোর ইউনিভার্সিটি প্রাচীন ভারতের সমৃদ্ধ শিক্ষা ব্যবস্থা এবং ভাবী ভারতের প্রত্যাশা ও সামর্থ্যের এক আশ্চর্য মেলবন্ধনের প্রমুখ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় 'রাজর্ষি নালওয়াডী কৃষ্ণরাজ ওডেয়ার' এবং 'এম বিশ্বেশ্বরিয়াজি'র দূরদৃষ্টি ও সঙ্কল্পগুলিকে বাস্তবায়িত করেছে। আমার জন্য এটি কাকতালীয় হলেও অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে আজ থেকে ঠিক ১০২ বছর আগে, আজকের দিনেই রাজর্ষি নালওয়াডী কৃষ্ণরাজ ওডেয়ারজি মাইসোর ইউনিভার্সিটির প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখেছিলেন। তখন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত এই রত্নগর্ভা প্রাঙ্গণ থেকে বহু শ্রেষ্ঠ মণীষী তাঁর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে দীক্ষা নিয়েছেন, যাঁরা পরবর্তী সময়ে ভারতের রাষ্ট্র নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ভারতরত্ন ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনজির মতো অনেক মহান ব্যক্তিত্ব এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অসংখ্য ছাত্রছাত্রীদের নতুন প্রেরণা জুগিয়েছেন। এক্ষেত্রে আপনাদের সবার, আপনাদের পরিবারের পাশাপাশি আমাদের সকলের বিশ্বাস ও আস্থা অনেক বেশি, পাশাপাশি আপনাদের প্রতি আমাদের আশাও অনেক বেশি। আজ আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়, আপনাদের অধ্যাপকবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষিকা, আপনাদের ডিগ্রির পাশাপাশি দেশ এবং সমাজের প্রতি দায়িত্ব সমর্পণ করছেন।
বন্ধুগণ,
আমাদের দেশে শিক্ষা এবং দীক্ষাকে, যুব জীবনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় বলে মনে করা হয়। এটি আমাদের হাজার হাজার বছরের পরম্পরার ফসল। যখন আমরা দীক্ষা নিয়ে কথা বলি তখন এটা কেবলই ডিগ্রি পাওয়ার মুহূর্ত নয়, আজকের এই দিনে জীবনের পরবর্তী পর্যায়ের জন্য নতুন সঙ্কল্প গ্রহণেরও প্রেরণা জোগায় এই সমাবর্তন। এখন আপনারা একটি প্রথাগত বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে বেরিয়ে প্রকৃত জীবনের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাট প্রাঙ্গণে পা রাখছেন। এটা এমন একটা প্রাঙ্গণ যেখানে আপনারা এতদিন যত জ্ঞান আহরণ করেছেন, সেই সমস্ত জ্ঞান প্রয়োগ করার সুযোগ আসবে।
বন্ধুগণ,
মহান কন্নড় লেখক ও দার্শনিক গোরুরু রামস্বামী আয়েঙ্গারজি বলেছেন, “শিক্ষণয়ে জীবনাদো বেলকু” অর্থাৎ, শিক্ষা জীবনের কঠিন পথে আলো দেখানোর মাধ্যম। আজ আমাদের দেশ যখন একটি বড় পরিবর্তনের পথে এগিয়ে চলেছে, তখন আয়েঙ্গারজির এই বক্তব্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। বিগত ৫-৬ বছর ধরে আমরা নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, যাতে আমাদের শিক্ষা, ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থা, ভারতের ছাত্রছাত্রীদের একবিংশ শতাব্দীর প্রয়োজনীয়তা অনুসারে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আরও বেশি সাহায্য করে। বিশেষ করে, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে পরিকাঠামো নির্মাণ থেকে শুরু করে কাঠামোগত সংস্কারকে অনেক বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। ভারতকে উচ্চশিক্ষায় গ্লোবাল হাব করে তুলতে আমাদের যুব সম্প্রদায়কে প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে, উৎকর্ষ বৃদ্ধি এবং সংখ্যাগত দিক থেকে প্রত্যেক স্তরে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
স্বাধীনতার এত বছর পরেও ২০১৪ সালের আগে পর্যন্ত দেশে মাত্র ১৬টি আইআইটি ছিল। বিগত ছয় বছরে প্রতি বছর একটি নতুন করে নতুন আইআইটি খোলা হয়েছে। এর মধ্যে কর্ণাটকের ধারোয়ারেও একটি আইআইটি খোলা হয়েছে। ২০১৪ পর্যন্ত ভারতে নয়টি আইআইআইটি ছিল। এরপর থেকে পাঁচ বছরে ১৬টি আইআইআইটি গড়ে তোলা হয়েছে। বিগত পাঁচ বছরে সাতটি নতুন আইআইএম স্থাপন করা হয়েছে। ২০১৪ সালের আগে সারা দেশে মাত্র ১৩টি আইআইএম ছিল। এভাবে প্রায় ছয় দশক ধরে দেশে মাত্র সাতটি এইমস হাসপাতাল দেশকে পরিষেবা দিচ্ছিল। ২০১৪ সালের পর এর দ্বিগুণ, অর্থাৎ ১৫টি এইমস দেশে স্থাপন করা হয়েছে কিংবা স্থাপনের প্রক্রিয়া জারি রয়েছে।
বন্ধুগণ,
বিগত ৫-৬ বছরে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে যে প্রচেষ্টা সাধিত হয়েছে, তা শুধুই নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলায় সীমাবদ্ধ নয়। এই প্রতিষ্ঠানগুলিতে প্রশাসন থেকে শুরু করে সংস্কার পর্যন্ত, ছাত্রছাত্রীদের লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক কর্মে অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করার জন্যও অনেক কাজ করা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলিকে বেশি স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হচ্ছে যাতে তারা নিজেদের প্রয়োজন অনুসারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আগের আইআইএম আইন অনুসারেই, দেশের আইআইএমগুলিকে এখন অনেক বেশি অধিকার দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসা-বিদ্যা শিক্ষার ক্ষেত্রেও স্বচ্ছতা অনেক কম ছিল। এই অস্বচ্ছতা দূর করার ক্ষেত্রেও জোর দেওয়া হয়েছে। আজ দেশে চিকিৎসা-শিক্ষা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনার জন্য ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন গঠন করা হয়েছে। হোমিওপ্যাথি এবং অন্যান্য ভারতীয় চিকিৎসা পদ্ধতিতে পড়াশোনায় সংস্কার আনার জন্য দুটি আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। মেডিকেল এডুকেশনে এই সংস্কারগুলি দেশের যুব সম্প্রদায়কে মেডিকেল পড়াশোনার প্রতি অধিক আগ্রহী করে তুলবে এবং তাঁদের জন্য অধিক আসনের ব্যবস্থাও সুনিশ্চিত করা হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
রাজর্ষি নালওয়াডী কৃষ্ণরাজ ওডেয়ারজি তাঁর প্রথম সমাবর্তন সম্বোধনে বলেছিলেন, “খুব ভালো হত যদি আমি আমার সামনে মাত্র একজন নয়, দশজন লেডি গ্র্যাজুয়েট দেখতে পেতাম।” আমার সৌভাগ্য যে আজ আমি আমার সামনে অনেক কন্যাকে দেখতে পাচ্ছি যাঁরা আজ ডিগ্রি পেয়েছেন। আমাকে বলা হয়েছে যে আজ এখানে ডিগ্রি গ্রহণকারীদের মধ্যে ছাত্রীদের সংখ্যা ছাত্রদের তুলনায় বেশি। এটিই পরিবর্তিত ভারতের আরেকটি পরিচয়। আজ শিক্ষার প্রতিটি স্তরে দেশে মেয়েদের গ্রস এনরোলমেন্ট রেশিও ছেলেদের তুলনায় বেশি। উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রেও, উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তিগত পড়াশোনার ক্ষেত্রেও মেয়েদের অংশীদারিত্ব অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। চার বছর আগে দেশে আইআইটিগুলিতে মেয়েদের এনরোলমেন্ট যেখানে মাত্র ৮ শতাংশ ছিল, সেই পরিসংখ্যান এ বছর বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিগুণ থেকেও বেশি, অর্থাৎ ২০ শতাংশে পৌঁছে গেছে।
বন্ধুগণ,
শিক্ষাক্ষেত্রে যত সংস্কার হয়েছে, সেগুলিকে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি নতুন দিশা, নতুন শক্তি প্রদান করবে। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি প্রি-নার্সারি থেকে শুরু করে পিএইচডি পর্যন্ত দেশের সম্পূর্ণ এডুকেশন সেট-আপ-এ মৌলিক পরিবর্তন আনার একটি অনেক বড় অভিযান। আমাদের দেশের সামর্থ্যবান যুব সম্প্রদায়কে আরও বেশি প্রতিযোগিতামূলক করে তোলার জন্য বহুমুখী দৃষ্টিকোণ অবলম্বন করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এমন চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে আমাদের যুব সম্প্রদায় দ্রুতগতিতে কাজের প্রক্রিয়ার জন্য নমনীয় হয় আর সহজেই অভিযোজন করতে পারে। স্কিলিং, রি-স্কিলিং এবং আপ-স্কিলিং-এর প্রয়োজন আজ সব থেকে বেশি। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে এদিকটাতেও অনেক বেশি লক্ষ্য রাখা হয়েছে।
বন্ধুগণ,
আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে মাইসোর ইউনিভার্সিটি এই নীতিগুলি প্রয়োগের ক্ষেত্রে দায়বদ্ধতা দেখিয়েছে, তৎপরতা দেখিয়েছে। আমার মনে হয়, জাতীয় শিক্ষানীতির ভিত্তিতে আপনারা মাল্টি-ডিসিপ্লিন প্রোগ্রাম চালু করছেন। এখন আপনাদের সামর্থ্য ও স্বপ্নের যতটা বিস্তার সম্ভব হচ্ছে, আপনাদের পছন্দ অনুযায়ী আপনারা বিষয় বেছে নিতে পারছেন। এক্ষেত্রে আপনারা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি এবং স্থানীয় সংস্কৃতি – উভয়কেই একসঙ্গে রেখে পড়াশোনা করতে পারবেন। সেই উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার আপনারা স্থানীয় ক্ষেত্রে প্রয়োগ বাড়াতে পারবেন।
বন্ধুগণ,
আমাদের দেশে গত কয়েকবছর ধরে যেরকম চতুর্মুখী সংস্কার হচ্ছে, তা আগে কখনও হয়নি। আগে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হত, যে কোনও বিশেষ ক্ষেত্রে নেওয়া হত। আর অন্যান্য ক্ষেত্রগুলি অন্ধকারে থেকে যেত। বিগত ছয় বছরে বহুমুখী সংস্কার হয়েছে। বহু ক্ষেত্রে সংস্কার হয়েছে। যদি নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি দেশের শিক্ষাক্ষেত্রের ভবিষ্যতকে সুনিশ্চিত করে তাহলে আপনাদের মতো নবীন বন্ধুদের ক্ষমতায়ন অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে। কৃষির সঙ্গে যুক্ত সংস্কারগুলি যেমন কৃষকদের ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি করেছে, তেমনই শ্রম আইনে সংস্কার শ্রমিক এবং শিল্পোদ্যোগের ক্ষেত্রে উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও গতি বৃদ্ধি করেছে। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ নগদ হস্তান্তরের মাধ্যমে যেখানে আমাদের গণ-সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে, তেমনই 'রেরা'র মাধ্যমে আমাদের গৃহ ক্রয়কারীদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশকে অসংখ্য করের জাল থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য যেমন সারা দেশে জিএসটি আনা হয়েছে, তেমনই করদাতাদের নানা জটিলতা থেকে রক্ষা করার জন্য 'ফেসলেস অ্যাসেসমেন্ট'-এর পরিষেবা চালু করা হয়েছে। ইনসলভেন্সি ব্যাঙ্করাপ্টসি কোড-এর মাধ্যমে যেখানে প্রথমবার দেউলিয়াপনার জন্য একটি লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে, তেমনই প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ সংস্কারের মাধ্যমে আমাদের দেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রভূত অর্থনৈতিক শ্রীবৃদ্ধি হয়েছে।
বন্ধুগণ,
আপনারা বিগত ৬-৭ মাসে হয়ত দেখেছেন যে সংস্কারের গতি ও পরিধি উভয়েই বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষি থেকে শুরু করে মহাকাশ পর্যন্ত, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র থেকে শুরু করে বিমান পরিবহণ পর্যন্ত, শ্রম আইন থেকে শুরু করে উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এখন প্রশ্ন হল, এইসব কিছু কেন করা হচ্ছে? এটা আপনাদের মতো কোটি কোটি যুব সম্প্রদায়ের জন্যই করা হচ্ছে। এই দশককে বিশ্বে ভারতের দশক করে তোলার জন্য এটি করা হচ্ছে। এই দশক তখনই ভারতের দশক হয়ে উঠবে, যখন আমরা আজ নিজেদের ভিত্তিকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে পারব। নবীন ভারতের জীবনে এই দশক অনেক বড় সুযোগ নিয়ে এসেছে।
বন্ধুগণ,
দেশের উন্নততম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি হওয়ার সুবাদে মাইসোর ইউনিভার্সিটিকেও প্রতিটি নতুন পরিস্থিতির নিরিখে উদ্ভাবনের পথ বেছে নিতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব উপাচার্য মহান কবি, সাহিত্যিক কুয়েম্পুজি (কুপ্পর্লি ভেঙ্কটেইয়া পুট্টপ্পা = কুয়েম্পু)বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রাঙ্গণকে 'মান-সাংগগীত্রী’ অর্থাৎ, মনের শ্বাশত প্রবাহ নামে অভিহিত করেছেন। এর মাধ্যমে আপনারা নিরন্তর প্রেরণা পেয়ে আসছেন। আপনাদের ইনকিউবেশন সেন্টারগুলি, টেকনোলজি ডেভেলপমেন্ট সেন্টারগুলি, ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিক লিঙ্কেজগুলি এবং ইন্টার-ডিসিপ্লিনারি রিসার্চ-এর মতো বিষয়ে আরও বেশি অগ্রাধিকার দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এটাও প্রত্যাশা করা হয় যে সেখানে প্রতিটি সমসাময়িক এবং তুলনামূলক আন্তর্জাতিক বিষয়ের পাশাপাশি, স্থানীয় সংস্কৃতি ও স্থানীয় কলা ও অন্যান্য সামাজিক বিষয় সংক্রান্ত গবেষণাকে উৎসাহ প্রদান করা হবে এবং সেই পরম্পরাকে আরও বিস্তারিত করা হবে।
বন্ধুগণ,
আজ যখন এই মহান শিক্ষা প্রাঙ্গণ থেকে আপনারা বাইরে পা রাখছেন, তখন আপনাদের প্রতি আমার আরেকটি অনুরোধ রয়েছে। আপনাদের মধ্যে প্রত্যেকের নিজস্ব শক্তি রয়েছে, নিজস্ব সামর্থ্য রয়েছে। সেই ভিত্তিতে আপনারা শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করার চেষ্টা সারা জীবন চালিয়ে যাবেন। আপনাদের নিজেদেরকে একটি নির্দিষ্ট পরিধির মধ্যে, একটি বাক্সর মধ্যে বন্দী রাখার প্রয়োজন নেই। কারণ, আপনারা যে বাক্সের উপযোগী করে নিজেকে গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন, হয়তো একদিন অনুভব করবেন যে সেই বাক্সটি আপনার জন্য তৈরিই হয়নি। আপনারা নিজেদের জন্য আরও সময় বের করুন, আত্মমন্থন করুন এবং মাটির সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি বিষয়কে নিজেদের অনুভবের পরিধির মধ্যে নিয়ে আসুন যা জীবনকে প্রতিনিয়ত প্রকাশিত এবং উন্মোচিত করতে থাকবে। এর ফলে, আপনাদের ভবিষ্যতের পথ বেছে নিতে অনেক সুবিধা হবে। নতুন ভারত আপনাদের সামনে অসংখ্য সুযোগের ডালা মেলে ধরেছে। করোনার এই সঙ্কটকালেও আপনারা হয়তো দেখেছেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা কত নতুন স্টার্ট-আপ খুলে সাফল্য পেয়েছেন। এই স্টার্ট-আপগুলি শুধু কর্ণাটক নয়, দেশের অনেক বড় শক্তি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস এই অসীম সুযোগের দেশে আপনারা নিজেদের সামর্থ্য দিয়ে, নিজেদের প্রতিভা দিয়ে দেশের জন্য অনেক কিছু করবেন। আপনাদের মানসিক বিকাশ, আপনাদের সার্বিক বিকাশ শুধু আপনাদেরই বিকশিত করবে না, দেশকে বিকশিত করবে। আপনারা যদি আত্মনির্ভর হন, তাহলেই দেশও আত্মনির্ভর হবে। আরেকবার আমার প্রিয় সমস্ত উজ্জ্বল ছাত্রছাত্রীদের উন্নত ভবিষ্যতের জন্য অসংখ্য শুভকামনা জানাই।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।