নমস্কার !
 
 আনন্দের বিষয় যে আমরা প্রবুদ্ধ ভারতর ১২৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছি।  এটি কোনও সাধারণ পত্রিকা  নয়।  ১৮৯৬ সালে স্বামী বিবেকানন্দ এই  পত্রিকার কাজ  শুরু করেছিলেন। তাও আবার  তিরিশ বছর বয়সে।  এটি দেশের দীর্ঘ দিন চলা  ইংরেজি পত্রিকাগুলির মধ্যে একটি।
 
 প্রবুদ্ধ ভরত, এই নামের পেছনে খুব শক্তিশালী চিন্তাভাবনা  রয়েছে।  স্বামী বিবেকানন্দ আমাদের চেতনা প্রকাশের জন্য এই পত্রিকাটির নাম রেখেছিলেন প্রবুদ্ধ ভারত।  তিনি একটি 'জাগ্রত ভারত' তৈরি করতে চেয়েছিলেন।  যারা ভারতকে বোঝেন, তারা জানেন যে এই নামটি রাজনৈতিক বা আঞ্চলিক সত্তা থেকে  বাইরে বহু দূরে  ।  স্বামী বিবেকানন্দ খুব সাহসিকতা এবং গর্বের সঙ্গে  এটি প্রকাশ করেছিলেন।  তিনি ভারতকে এমন এক সাংস্কৃতিক চেতনা হিসাবে দেখেছেন যা বহু শতাব্দী ধরে অবস্থান  করছে এবং জীবিত রয়েছে। দেশের প্রতি ঘৃণা- অবজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ভারত প্রতিটি প্রতিবন্ধকতা পার করে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।  স্বামী বিবেকানন্দ ভারতকে ‘প্রবুদ্ধ’ বা জাগ্রত করতে চেয়েছিলেন।  তিনি আত্মবিশ্বাস জাগাতে চেয়েছিলেন যে একটি জাতি হিসাবে আমরা মহত্বের প্রত্যাশা করতে পারি।
 
 বন্ধুগণ, দরিদ্রদের প্রতি স্বামী বিবেকানন্দের প্রচন্ড সহানুভূতি  ছিল।  তিনি প্রকৃত বিশ্বাস করেছিলেন যে প্রতিটি সমস্যার মূলে রয়েছে দারিদ্র। অতএব, দেশ থেকে দারিদ্র্য অপসারণ করতে হবে।  তিনি ‘দরিদ্র নারায়ণ’ কে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন।
 
 আমেরিকা থেকে স্বামী বিবেকানন্দ অনেক চিঠি লিখেছিলেন।  মহীশুরের মহারাজা এবং স্বামী রামকৃষ্ণানন্দজি কে তিনি যে চিঠিগুলি লিখেছিলেন সেগুলি আমি উল্লেখ করতে চাই।  এই চিঠিগুলিতে, দরিদ্রদের ক্ষমতায়নের জন্য স্বামীজির  দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে দুটি সুস্পষ্ট চিন্তাভাবনা প্রকাশ পেয়েছে।  প্রথমত,তিনি চেয়েছিলেন  যদি গরীবরা সহজেই ক্ষমতায়নে পথে  না যেতে পারে তা হলে তাদের ক্ষমতায়নের বিষয়টিকে  গুরুত্ব দিতে।  দ্বিতীয়ত, তিনি ভারতের দরিদ্রদের সম্পর্কে বলেছিলেন, "তাদের ধারণা দেওয়া উচিত; তাদের চারপাশের বিশ্বে যা চলছে সে সম্পর্কে  তাদের চোখ খোলা দেওয়া দরকার ;এবং তারপরে তারা তাদের নিজস্ব পরিত্রাণের পথ খুঁজে বার কাজ করবে।
 
 সেই পথেই ভারত আজ এগিয়ে চলেছে।  দরিদ্ররা যদি ব্যাঙ্কের সুবিধা গ্রহণ  করতে না পারেন তবে ব্যাংকগুলিকে অবশ্যই দরিদ্রদের কাছে পৌঁছাতে হবে।  'জন ধন যোজনা'র মাধ্যমে এটাই করা হয়েছে।  দরিদ্ররা যদি বীমার সুবিধা গ্রহণ করতে না পারেন  তবে অবশ্যই বীমার সুবিধা  দরিদ্রদের কাছে পৌঁছাতে হবে।  'জন সুরক্ষা' প্রকল্পগুলির মাধ্যমে  এটাই করা হয়েছে।  যদি দরিদ্ররা স্বাস্থ্যসেবার সুবিধা গ্রহণ করতে না পারেন তবে অবশ্যই তাদের স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ গ্রহণের সুবিধা  করে দিতে হবে।  আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের মাধ্যমে  এটিই করা হয়েছে।  সড়ক যোগাযোগ, শিক্ষা, বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগের সুবিধা  দেশের প্রতিটি প্রান্তে, বিশেষত দরিদ্রদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ।  এতে  দরিদ্রদের মধ্যে আকাঙ্ক্ষা প্রজ্বলিত হয়েছে  এবং, এই আকাঙ্ক্ষাগুলিই দেশেকে প্রবৃদ্ধির পথে  চালিত করছে।
 
 বন্ধুগণ, স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, "দুর্বলতার প্রতিকার হ'ল শুধু গভীর ভাবে চিন্তা করা নয়, বরং শক্তিশালী করার কথা চিন্তা করা"।  আমরা যখন প্রতিবন্ধকতার কথা চিন্তা করি, তখন আমরা তাদের মধ্যে মগ্ন  হয়ে যাই।  তবে আমরা যখন সুযোগের কথা  চিন্তা করি তখন আমরা এগিয়ে যাওয়ার পথ পাই।  কোভিড -১৯ বিশ্বব্যাপী মহামারীকে উদাহরণ হিসাবে দেখুন।  ভারত কি করল?  এটিকে কেবল সমস্যা এবং অসহায় হিসেবে দেখে নি ।  ভারত সমাধানের দিকে মনোনিবেশ করেছে।  পিপিই কিট উৎপাদন করা থেকে শুরু করে বিশ্বের জন্য  ওষুধ তৈরি করা, আমাদের দেশ শক্তি থেকে শক্তিধর হয়ে উঠেছে।  সংকটের সময়ে বিশ্বের সহয়ককারি হয়ে উঠেছে।  কোভিড -১৯ টি টিকা তৈরির ক্ষেত্রে ভারত এগিয়ে রয়েছে।  কিছু দিন আগে ভারত বিশ্বের বৃহত্তম টিকা করণ অভিযান শুরু করেছে।  আমরা এই শক্তিগুলিকে অন্যান্য দেশের সহায়তায় ব্যবহার করছি।
 
 বন্ধুগণ, জলবায়ু পরিবর্তন আরেকটি সমস্যা,  যার মুখোমুখি সারা বিশ্ব।  তবে আমরাই কেবল এই সমস্যাটি নিয়েই অভিযোগ করছি না।  আমরা আন্তর্জাতিক সৌর জোট গঠনের মাধ্যমে এর  সমাধান নিয়ে এসেছি।  পুনর্নবীকরণ  সম্পদের বৃহত্তর ব্যবহারের পক্ষেও আমরা পরামর্শ দিয়েছি।  এটিই হল  স্বামী বিবেকানন্দের দৃষ্টিভঙ্গি ভঙ্গি গঠিত প্রবুদ্ধ ভারত।এ এমন ভারত,যা বিশ্বের সমস্যার সমাধানের পথ দেখাচ্ছে ।
 
 বন্ধুগণ, দেশের জন্য স্বামী বিবেকানন্দের বড় স্বপ্ন ছিল, কারণ ভারতের যুব সমাজের প্রতি তাঁর অগাধ বিশ্বাস ছিল। তিনি ভারতের যুবকদের দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাসের ‘পাওয়ার হাউজ’ বা শক্তিঘর হিসেবে দেখেছেন। তিনি বলেছিলেন ‘আমাকে কয়েকশো কর্মশক্তিপূর্ণ তরুণ দিন, আমি ভারতে আমূল পরিবর্তন এনে দেব’। আজ আমরা ভারতের বাণিজ্যিক নেতৃত্ব, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, টেকনোক্র্যাট, পেশাদার, বিজ্ঞানী, উদ্ভাবক এবং আরও অনেকের মধ্যে এই উদ্দীপনা লক্ষ্য করছি। তাঁরা কোনো সীমানায় আবদ্ধ না থেকে অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছেন।
 
কিন্তু কিভাবে আমাদের যুব সমাজকে এইরকম চেতনাকে আরও উৎসাহিত করে তোলা যায়? বেদান্ত সম্পর্কে বক্তৃতায় স্বামী বিবেকানন্দ কিছু গভীর অন্তর্দৃষ্টি ব্যক্ত করেছিলেন। তিনি এই আচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে এবং সেগুলিকে শেখার রেখাচিত্রের অঙ্গ হিসেবে দেখার বিষয়ে কথা বলেছেন। দ্বিতীয় বিষয়টি হলো যে, মানুষের মনের মধ্যে প্রবেশ করা : নির্ভিক হওয়া এবং আত্মবিশ্বাসে পূর্ণ হওয়া। নির্ভিক হওয়ার বিষয়টি আবার স্বামী বিবেকানন্দের নিজের জীবন থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি। তিনি যাই করুক না কেন, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যেতেন। তিনি নিজের সম্পর্কে দৃঢ় আত্মবিশ্বাস ছিলেন। 
 
বন্ধুগণ, স্বামী বিবেকানন্দের চিন্তাভাবনা চিরন্তন, এবং আমাদের তা সর্বদা মনে রাখতে হবে : বিশ্বের কাছে মূল্যবান কিছু তৈরি করে তবেই অমরত্ব লাভ করা সম্ভবপর হয়। এমন কিছু যা আমাদের নিজেদেরকে দীর্ঘজীবী করে তুলবে। পৌরানিক গল্পগুলি আমাদের অনেক মূল্যবান শিক্ষা দেয়। সেখান থেকে আমরা শিক্ষা পাই যে যারা অমরত্ব লাভের পেছনে ছুটেছিলেন তারা প্রায় কখনই অর্জন করতে পারেন নি। তবে, যাঁদের অন্যের সেবা করার লক্ষ্য ছিল তাঁরা সকলেই সর্বদা অমর হয়ে রয়েছেন। যেমন – স্বামীজী বলতেন ‘কেবল তাঁরাই বেঁচে থাকেন, যাঁরা অন্যের জন্য বেঁচে থাকেন’। স্বামী বিবেকানন্দের জীবনেও এটিই দেখা যায়। নিজের জন্য কিছু অর্জন করতে তিনি কখনই বের হননি। তাঁর হৃদয় সর্বদা আমাদের দেশের দরিদ্রদের জন্য উন্মুক্ত ছিল। তাঁর হৃদয় সর্বদা শৃঙ্খলাবদ্ধ মাতৃভূমির জন্য কাঁদতো। 
 
বন্ধুগণ, স্বামী বিবেকানন্দ আধ্যাত্মক এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে কখনই পারস্পররিক স্বতন্ত্র রূপে দেখেন নি। সবচেয়ে বড় কথা হলো তিনি সেই পদ্ধতির বিরুদ্ধে ছিলেন যেখানে লোকেরা দারিদ্রকে রোমান্টিক করে তোলে। বেতান্ত সম্পর্কে বক্তৃতায় তিনি বলেছেন, ‘ধর্ম এবং বিশ্বের জীবনের মধ্যে যে কল্পিত পার্থক্য তা অবশ্যই বিলুপ্ত হবে কারণ বেদান্ত ঐক্যবদ্ধতারই শিক্ষা দেয়’।
 
স্বামীজী ছিলেন একজন আধ্যাত্মিক গুরু, এক উচ্চ আত্মার মানুষ। তবুও তিনি দরিদ্রদের জন্য অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধ্যান ধারণা ত্যাগ করেন নি। স্বামীজী নিজেই সন্ন্যাসী ছিলেন। তিনি কখনই নিজের জন্য কানাকড়ি সন্ধান করেন নি। তবে তিনি বৃহৎ এই প্রতিষ্ঠান তৈরির জন্য তহবিল সংগ্রহ করতে সহায়তাদান করেছিলেন। এই প্রতিষ্ঠান দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে এবং উদ্ভাবনের বিষয়ে প্রচার চালিয়েছে। 
 
বন্ধুগণ, স্বামী বিবেকানন্দের এমন বেশ কয়েকটি সম্পদ রয়েছে যা আমাদের উদ্বুদ্ধ করে। প্রবুদ্ধ ভারত ১২৫ বছর ধরে স্বামীজীর চিন্তাভাবনাগুলি প্রসারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যুব সমাজকে শিক্ষিত করে তোলা এবং দেশকে জাগ্রত করে তোলার লক্ষ্যে এটি হলো এক দর্শনের ভিত। স্বামী বিবেকানন্দের চিন্তাভাবনাগুলি অবিস্মরণীয় করে তোলার ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। আমি প্রবুদ্ধ ভারতের আরও উন্নত ভবিষ্যতের জন্য শুভেচ্ছা জানচ্ছি।
 
 ধন্যবাদ
Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
When PM Modi Visited ‘Mini India’: A Look Back At His 1998 Mauritius Visit

Media Coverage

When PM Modi Visited ‘Mini India’: A Look Back At His 1998 Mauritius Visit
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
I reaffirm India’s commitment to strong bilateral relations with Mauritius: PM at banquet hosted by Mauritius President
March 11, 2025

Your Excellency राष्ट्रपति धरमबीर गोकुल जी,

First Lady श्रीमती बृंदा गोकुल जी,
उप राष्ट्रपति रोबर्ट हंगली जी,
प्रधान मंत्री रामगुलाम जी,
विशिष्ट अतिथिगण,

मॉरिशस के राष्ट्रीय दिवस समारोह में मुख्य अतिथि के रूप में एक बार फिर शामिल होना मेरे लिए सौभाग्य की बात है।

इस आतिथ्य सत्कार और सम्मान के लिए मैं राष्ट्रपति जी का हार्दिक आभार व्यक्त करता हूँ।
यह केवल भोजन का अवसर नहीं है, बल्कि भारत और मॉरीशस के जीवंत और घनिष्ठ संबंधों का प्रतीक है।

मॉरीशस की थाली में न केवल स्वाद है, बल्कि मॉरीशस की समृद्ध सामाजिक विविधता की झलक भी है।

इसमें भारत और मॉरीशस की साझी विरासत भी समाहित है।

मॉरीशस की मेज़बानी में हमारी मित्रता की मिठास घुली हुई है।

इस अवसर पर, मैं - His Excellency राष्ट्रपति धरमबीर गोकुल जी और श्रीमती बृंदा गोकुल जी के उत्तम स्वास्थ्य और कल्याण; मॉरीशस के लोगों की निरंतर प्रगति, समृद्धि और खुशहाली की कामना करता हूँ; और, हमारे संबंधों के लिए भारत की प्रतिबद्धता दोहराता हूँ

जय हिन्द !
विवे मॉरीस !