আমার প্রিয় পরিবারের সদস্যবৃন্দ, উপস্হিত সকলদিব্যাঙ্গজন, ভাই ও বোনেরা,
আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় ভাই এখনই বলছিলেন যেপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে কোনও সরকারি অনুষ্ঠানে ৪০ বছর পর কোনও প্রধানমন্ত্রী রাজকোটেএসেছেন। আমাকে বলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমার আগে রাজকোটে এসেছিলেন শ্রদ্ধেয়মোরারজিভাই দেশাই। আমার সৌভাগ্য যে আজ আমি রাজকোটে জনতা জনার্দনের দর্শনের সুযোগপেয়েছি। আমার জীবনে রাজকোটের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। রাজকোটবাসীরা যদি একদিন আমাকেনির্বাচিত করে গান্ধী নগরে না পাঠাতেন তাহলে আজ দেশবাসী আমাকে দিল্লিতেও পৌঁছে দিতনা।
আমার রাজনৈতিক যাত্রার সূত্রপাত রাজকোটবাসীর আর্শীবাদেরমাধ্যমে হয়েছে। রাজকোটবাসীর এই ভালোবাসাকে আমি কখনও ভুলতে পারবো না। সেইজন্য আমিআর একবার রাজকোটে জনসাধারণকে মাথা নত করে প্রণাম জানাই আর বারবার আপনাদের আর্শীবাদকামনা করি।
যেদিন এনডিএ-র সকল সাংসদ আমাকে নেতা হিসেবে বেছেনিয়েছিলেন, নির্বাচনে জিতে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ নিশ্চিত হয়েছিল আমিসেদিনকার ভাষণে বলেছিলাম যে আমার সরকার এ দেশের গরিব মানুষের প্রতি সমর্পিত। আমারপ্রিয় দিব্যাঙ্গজন, আমার দেশে কোটি কোটি দিব্যাঙ্গজন রয়েছেন। দুর্ভাগ্যক্রমে যেপরিবারে এই মানুষেরা জন্মগ্রহণ করেছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেই পরিবারকেই তাদেরআজীবন লালন-পালন করতে হয়। আমি এরকম অনেক পরিবার দেখেছি, এরকম অনেক মায়েদের দেখেছি।তাদের বয়স হয়ত মাত্র ২৫, ২৭ কিংবা ৩০ বছর। জীবনের সকল স্বপ্ন বাকি, বিয়ের পর প্রথমবাচ্চা হয়েছে আর সে-ও দিব্যাঙ্গ। আমি দেখেছি সেই দম্পতি, সেই মা-বাবা তাদের জীবনেরসকল স্বপ্ন দিয়ে গড়া ওই শিশুটির লালন-পালনেই উৎসর্গ করে দেন। মনেপ্রাণেঈশ্বরভক্তি নিয়ে তারা আজীবন এই দায়িত্ব পালন করে যান।
কিন্তু আমার প্রিয় দেশবাসী ঈশ্বর হয়ত একটি পরিবারকেপছন্দ করেছেন আর তাদের বাড়িতে দিব্যাঙ্গ সন্তান হয়ে জন্মগ্রহণ করেছেন। সেইপরিবারের সংবেদনশীলতা আর সংস্কার কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়ে পড়ে। আমি যখনগুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, তখনও এই বিষয়টি আমাকে খুব ভাবাতো।
রাজনীতিতে যোগদানের অনেক আগের কথা বলছি, রাজকোটেআমাদের ডাক্তারবাবু পি ভি দোশি এরকম একটি বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁরআমন্ত্রণে আমি ওই বিদ্যালয়ে দিব্যাঙ্গ শিশুদের কাছে বারবার গিয়েছি। ডাক্তারবাবু যেভক্তি ও ভালোবাসা দিয়ে ওই শিশুদের সেবা করতেন, তাকে অনুসরণ করে ডাক্তারবাবুর এককন্যাও ওই কাজে সমর্পিত হয়ে পড়েছিলেন। তখন আমি রাজনীতিতে ছিলাম না। ডাক্তার দোশীপরিচালিত ওই বিদ্যালয়ের পরিবেশ আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেছিল। পরে যখন সরকারি দায়িত্বপাই, আপনাদের হয়তো মনে আছে আমি একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সাধারণসুস্হ শিশুদের পরীক্ষায় পাশ করতে হলে ১০০-র মধ্যে ৩৫ নম্বর পেতে হয়। আমরাসিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে দিব্যাঙ্গ শিশুরা ১০০-র মধ্যে ২৫ পেলেই তাদেরকে পাশ বলেমানা হবে। কারণ একটি সুস্হ শিশু নিজের জায়গা থেকে উঠে আলমারি থেকে বই নিতে যতটাসময় নেয়, একটি দিব্যাঙ্গ শিশুর তার থেকে তিনগুন সময় লাগে, তিনগুন শক্তি-ও লাগে। সেজন্যএহেন শিশুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্হা থাকা উচিত। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীনসময়ে আমি এরকম বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর আরও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিষয়টিকেদেখার সুযোগ পেয়েছি। আমি কেবল দিব্যাঙ্গজনদের জন্য “ দিব্যাঙ্গ ” শব্দটি অনুসন্ধান করেই থেমে থাকিনি। আপনারা এখানেদেখতে পাচ্ছেন এক বোন যে শুনতেও পায়না, বলতেও পারেনা তাকে ইশারায় আমার ভাষণশোনাচ্ছেন। আপনারা শুনে অবাক হবেন স্বাধীনতার ৭০ বছর পর-ও ভারতের ভিন্ন ভিন্নরাজ্যে এই ইশারার ভাষা ভিন্ন ছিল। কাজেই এক অঞ্চলের মানুষেরা ইশারায় কথা বললে অন্যঅঞ্চলের মানুষ তা বুঝতে পারত। সেজন্য তামিলনাড়ুর দিব্যাঙ্গজনদের সঙ্গে কোনওগুজরাটের শিক্ষক কথা বলতে চান তাহলে উভয়ের মধ্যে আলোচনা সম্ভব ছিল না। তামিলে যেসবসঙ্কেত ব্যবহার করা হতো, গুজরাটিতে তা আলাদা ছিল। আর দিব্যাঙ্গরা নিজের রাজ্যেরবাইরে গেলে তাদের কথা অন্য রাজ্যের দিব্যাঙ্গদের বোঝানোর মতো ইন্টারপ্রেটার-ওপাওয়া যেত না। আমরা সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর আইন পাশ করি যাতে দেশে সর্বত্র একধরনের ইশারায় কথা বলা শেখানো হয়। আর সেটা হবে আন্তর্জাতিক সাইনিং সিস্টেম মেনে,যাতে ভারতের দিব্যাঙ্গ ভাই-বোনেরা বিদেশীদের সঙ্গেও সমানভাবে কথা-বার্তা বলতেপারে। ছোট পদক্ষেপ হলেও একটি সংবেদনশীল সরকার কিভাবে কার্যকরী কাজ করতে পারে এইঘটনা তার জীবন্ত উদাহরণ।
১৯৯২ থেকে সমাজকল্যাণ বিভাগের মাধ্যমে দিব্যাঙ্গজনদেরসহায়ক সরঞ্জাম দেওয়া নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছিল। বাজেট বরাদ্দ হচ্ছিল, দেশ স্বাধীনহওয়ার এতো বছর পর ১৯৯২ সালে প্রথম এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। আরআপনারা শুনে অবাক হবেন সেই ১৯৯২ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত আমরা ক্ষমতায় আসা অবধিএতো বছরে সারা দেশে এই দিব্যাঙ্গজনদের সহায়ক সরঞ্জাম বিতরণের মাত্র ৫৫টি অনুষ্ঠানআয়োজিত হয়েছিল। ভাই ও বোনেরা ২০১৪-য় ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে এই তিন বছরে আমরা ৫৫০০অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। ২৫ থেকে ৩০ বছরে মাত্র ৫৫টি অনুষ্ঠান, আর তিন বছরে৫৫০০-টি। এই উদাহরণ থেকে বোঝা যায় দিব্যাঙ্গদের নিয়ে বর্তমান সরকার কতটা সংবেদনশীল ! আমরা যে সকলের সঙ্গে সবার উন্নয়ন এই মন্ত্রকে বাস্তবায়িত করার স্বপ্ন নিয়েএগিয়ে চলেছি।
আর ভাই ও বোনেরা, দিব্যাঙ্গদের সহায়ক সরঞ্জামদেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা একের পর এক নতুন বিশ্বরেকর্ড তৈরি করেছি। আজও রাজকোটে ১৮৫০০ দিব্যাঙ্গজনদেরএকসঙ্গে একই ছাতের নিচে সহায়ক সরঞ্জাম তুলে দিয়ে একটি নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়া হলো।সেইজন্য আমি গুজরাট সরকারকে রাজকোটে কর্মরত আধিকারিকদের সকলকে এবং তাদেরসাহায্যকারীদের হৃদয় থেকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই।
একটু আগেই আমি নির্বাচিত কয়েকজনকে নিজের হাতে সহায়কসরঞ্জাম তুলে দিয়েছি। তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি। তাদের চেহারায় যেআত্মবিশ্বাস দেখেছি, যে খুশি দেখেছি, এর থেকে বড় আনন্দ আর কি হতে পারে বন্ধুগন ! আর আমাদের গহলোতজি যখনই কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন,আর আমাকে আমন্ত্রণ জানান, আমি অন্যান্য অনুষ্ঠান সামনে-পিছনে সরিয়ে দিব্যাঙ্গজনদের জন্য আয়োজিতঅনুষ্ঠানে যাওয়া পছন্দ করি। একে আমি অগ্রাধিকার দিই। কারণ আমাদের সমাজে এই চেতনাজাগ্রত করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
আমাদের দেশে রেলে বা বাসে চড়তে সাধারণ মানুষেরকোনও অসুবিধা হয়না। কিন্তু আমরা শাসনক্ষমতায় এসে একটি বড় সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছিসারা দেশে এরকম কয়েক হাজার স্হান রয়েছে যেখানে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দিব্যাঙ্গজনদেরওনিয়মিত যাতায়াত করতে হয়। তাহলে তাদের জন্য ভিন্নপ্রকার রেল প্ল্যাটফর্ম, ট্রেনেচড়ার ভিন্ন ব্যবস্হা করা উচিত। সরকারি দপ্তরগুলিতে এমন ব্যবস্হা রাখা উচিত যাতে দিব্যাঙ্গভাই-বোনেরা যে ট্রাইসাইকেল চালিয়ে আসবেন, তা চালিয়ে সরাসরি ভিতরে ঢুকে যেতে পারেন।তাদের ব্যবহারের অনুকূল শৌচাগার থাকা উচিত। অনূকূল শৌচাগার না থাকলে দিব্যাঙ্গজনদেরপ্রয়োজনে কতো অসুবিধা হয় ? যতক্ষণ আমরা এ জিনিসগুলি দেখবো না, বুঝবো না, ভাববোনা, আমরা কল্পনায় করতে পারবো না তারা কী কী সমস্যার সম্মুখীন হবেন। আমাদের উচিততাদের কথা মাথায় রেখে অট্টালিকা তৈরি করা। সোসাইটি ও ফ্ল্যাটের উঠা-নামার ব্যবস্হাকরা, যাতে কোনও দিব্যাঙ্গজন অতিথি হয়ে এলে তিনি সহজেই লিফ্ট-এ চড়তে পারেন ও শৌচাগার ব্যবহারকরতে পারেন। এ সবকিছু মাথায় রেখে আমাদের সমাজের চরিত্রে পরিবর্তন আনতে হবে। আমরাওই সমীক্ষার দ্বার চিহ্নিত করা স্হানগুলিতে এ ধরণের দিব্যাঙ্গবান্ধব ব্যবস্হা গড়েতোলার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিয়েছি। মডেন চূড়ান্ত হয়েছে কাজ শুরু হয়েছে, এখন যতোসরকারি বাড়ি তৈরি হবে সেগুলিতে দিব্যাঙ্গদের অনুকূল ব্যবস্হা থাকা বাধ্যতামূলককরে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
আমি কেন্দ্রীয় সরকারের এই মডেলকে গ্রহণ করার জন্যগুজরাট সরকারের কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। তারাও গুজরাটে একইভাবে কাজ শুরু করে দিয়েছেন।আমার বলার অর্থ হল এই যে বড় প্রকল্পে সরকারের দায়িত্ব বর্তায় প্রত্যেক এলাকায়খুঁজে সেই দিব্যাঙ্গজনদের চিহ্নিত করা যারা সরকারি দরজা পর্যন্ত পৌঁছতে পারেন না।তাদের চিহ্নিত করার পর এ ধরণের শিবির চালু করে তাদের সাহায্য করা। গুজরাট সরকার এইকাজ সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তারই ফলস্বরূপ আজ এখানে ১৮০০০-এরও বেশি দিব্যাঙ্গজনএসেছেন। এরফলে যে অ-সরকারি সংস্হাগুলি এহেন সামাজিক কর্মে নিবেদিত, তারাও উৎসাহপাই, শক্তি অর্জন করে। এক্ষেত্রে ভারত সরকারের “ ইনোভেশনইন্সিটিটিউট ” -গুলিও অনেক কাজ করছে।
আমি কয়েকটি ‘ ডেমো ’ দেখেছি। সংসদে আমার অফিসে তাদের সবাইকে ডেকেছিলাম। যাদের হাত নেই তাদেরকে কৃত্রিমহাত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি দেখছিলাম ওই কৃত্রিম হাত দিয়েই তারা নতুন প্রযুক্তিরমাধ্যমে আমার থেকেও সুন্দর হস্তাক্ষরে লিখতে পারছেন। তারা নিজের হাতে জল ভরে খেতেপারছেন, চায়ের কাপ তুলে খেতে পারছেন। আর একজন আমাকে বললেন, সাহেব নতুন প্রযুক্তিআমার অচল পা-কে নতুন শক্তি দিয়েছে। আমি এখন দৌড়তে পারি। আমি আপনাকে দৌড়ে দেখাবো ? আমিবললাম, না দৌড়তে হবে না।
এসব কথা বলার তা ৎপর্য হল নতুন নতুন আবিষ্কারদিব্যাঙ্গদের মনে নতুন আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। সেজন্য সরকার ওইউদ্ভাবক সংস্হগুলিকে আরও উৎসাহ যোগাচ্ছে। অনেক নবীন বৈজ্ঞানিক সেগুলিতে কাজ করছেন।আর আমি দেশের স্টার্ট-আপ ক্ষেত্রের নব যুবক-যুবতীদের অনুরোধ করব আপনারাও একটুখোঁজ-খবর নিন। বিশ্বের অন্যত্র কী কী নতুন দিব্যাঙ্গ সহায়ক সরঞ্জাম আবিষ্কারহয়েছে, সেগুলি আপনারা আরও সুলভে উৎপাদন করতে পারেন কি না অথবা সেই আবিষ্কারেআপনারা নতুন কোন মাত্রা সংযোজন করতে পারেন কি না তা ভাবুন। আপনি বিজ্ঞানী হলেউদ্ভাবনের কথা ভাবুন, আপনি প্রযুক্তিবিদ হলে আপনার দক্ষতা নিয়ে ভাবুন যে কিভাবে আজভারতে দিব্যাঙ্গ সহায়ক সরঞ্জামের যে বড়ো বাজার রয়েছে তার সদ্বব্যহার করতে পারে।এভাবে আপনারা দেশের কোটি কোটি দিব্যাঙ্গজনদের কাছে সুলভে সহায়ক সরঞ্জাম পৌঁছে দিতেপারবেন। রোজগার-ও বৃদ্ধি পাবে।
আমি স্টার্ট-আপের দুনিয়ার নবীন প্রজন্মকে আমন্ত্রণজানাই। আপনারা দিব্যাঙ্গজনদের সুলভে সহায়ক সরঞ্জাম উৎপাদনের উদ্যোগ নিলে সরকারওযতটা সম্ভব সাহায্য করবে যাতে আপনাদের নতুন আবিষ্কার ও উৎপাদিত পণ্য দিব্যাঙ্গভাই-বোনেদের জীবনে পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়।
ভাই ও বোনেরা আমরা দিব্যাঙ্গদের জন্য একটি নতুনবীমা প্রকল্প চালু করেছি যেখানে মাসে এক টাকা করে জমা দিতে হবে। আজকাল তো এক টাকায়এক কাপ চা-ও পাওয়া যায়না। আপনাদের পরিবারে কোনও বিপদ এলে এক মাসের মধ্যে আপনারাবিমার টাকা তুলতে পারবেন। ১২ মাসে মাত্র ১২ টাকা জমা দিয়ে ব্যক্তিগত ও পারিবারিকসঙ্কটের সময় ১ লক্ষ টাকা পাওয়া কম কথা নয়। এরকমই আর একটি বীমা প্রকল্প চালু করাহয়েছে যাতে ৩০ দিনে ৩০ টাকা হিসেবে বছরে ৩৬০ টাকা জমা দিলে বিপদের সময় অনেক বেশিটাকা হাতে পাবেন। ইতিমধ্যেই দেশের সর্বমোট ২৫ কোটি পরিবারের মধ্যে ১৩ কোটি পরিবারএই বীম প্রকল্পগুলির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। আমি সকল দিব্যাঙ্গজনদের পরিবারবর্গকেঅনুরোধ জানাই সাধারণ মানুষের জন্য এই প্রকল্প যতটা লাভজনক আমাদের দিব্যাঙ্গভাই-বোনেদের পরিবারের জন্য, তার থেকে অনেক বেশি লাভজনক। যে বাড়িতে এক জনও দিব্যাঙ্গরয়েছে, তারা অবশ্যই এই প্রকল্পের সুবিধা নিন। আপনার সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য সরকারদায়বদ্ধ। আপনারা এগিয়ে আসুন। সারা বছরে ১২ টাকা নিমিত্ত মাত্র। এর দ্বারা বীমাকোম্পানীর স্টেশনারী খরচও ওঠে না।
ভাই ও বোনেরা দরিদ্রদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারেরএমনি অনেক প্রকল্পর মাধ্যমে আমাদের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে আমরা এগিয়েচলেছি। ২০২২ সালে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি হবে। ৭০ বছর পেরিয়ে গেছে। আজওভারতে কোটি কোটি মানুষের মাথার ওপর নিজস্ব ছাদ নেই। ভাই ও বোনেরা আমরা চাই ২০২২সালের মধ্যে ভারতের সেই গৃহহীন পরিবারগুলির নিজস্ব ঘর হোক। প্রত্যেক পরিবারেরমাথার ওপর ছাদ হোক। সেই ঘরে শৌচালয়, বিদ্যুতের সরবরাহ, পাণীয় জলের সরবরাহ থাকবে।বাড়ির কাছেই ছেলে-মেয়েদের জন্য বিদ্যালয় থাকবে। বয়স্কদের জন্য কাছে-পিঠেই প্রয়োজনীয়স্বাস্হ্য পরীক্ষা ও ওষুধের ব্যবস্হা থাকবে। আমরা এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে চাই। ভাইও বোনেরা আমি জানি যে কাজ ৭০ বছরে হয়নি তা মাত্র ৫ বছরে সম্পূর্ণ করা কতটা কঠিনহবে ! কিন্তুভাই ও বোনেরা ৩০ বছরে দিব্যাঙ্গদের সহায়ক সরঞ্জাম বিতরণের ৫৫টি শিবিরের আয়োজন হয়েছিল। সেই জায়গায়আমরা যদি ৩ বছরে ৫৫০০ শিবিরের মাধ্যমে সহায়ক সরঞ্জাম বিতরণ করতে পারি তাহলে যে কাজ৭০ বছরে হয়নি তা ৫ বছরে হতে পারে। করার ইচ্ছে চাই, সংকল্প চাই, দেশের জন্যজীবনধারণের প্রত্যয় চাই। তাহলে পরিণাম নিজে থেকেই সামনে আসবে আর সেই প্রত্যয় নিয়েইআমরা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।
দরিদ্র পরিবারগুলি কিভাবে লাভবান হবে ! মধ্যবিত্তপরিবারের মানুষেরা নিজেদের প্রচেষ্টাতেই অনেক কিছু করে নিতে পারে। সেজন্যই আমারদেশের গবিরদের দারিদ্রসীমার ওপরে তুলতে পারলে, তাদেরকে মধ্যবিত্তে পরিণত করতেপারলে তারা ভারতকে কোথা থেকে কোথায় পৌঁছানোর শক্তি রাখে তা কেউ কল্পনা করতে পারবেনা। ইতিমধ্যেই ভারত যে দ্রুত গতিতে বিশ্বে একটি শক্তি হয়ে উঠে এসেছে তা দেখেবিশ্ববাসী অবাক। ইতিমধ্যেই উন্নয়নের নতুন উচ্চতা অতিক্রম করতে আমরা সক্ষম হয়েছি।আর সেজন্যই আমার প্রিয় রাজকোটের ভাই ও বোনেরা, আপনারা আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছেন,অনেক কিছু দিয়েছেন। আমার জীবনের পথকে আপনারাই গড়ে দিয়েছেন। এই কৃতজ্ঞতা সারাজীবনমনের মধ্যে থাকবে। আজ এই মাটিকে প্রণাম জানানোর সুযোগ পেয়েছি, আপনাদের সবারআর্শীবাদ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি, আমার দিব্যাঙ্গ ভাই বোনদের আর্শীবাদ নেওয়ার সুযোগপেয়েছি। এর থেকে বড় সৌভাগ্য আমার জীবনে কিছু হতে পারে না।
আমি আর একবার শ্রদ্ধেয়গহলোতজিকে, তার বিভাগকে কৃতজ্ঞতা জানাই। ভারতে কেউ অদ্যাবধি এই বিভাগের মতো এতোসক্রিয় বিভাগ দেখেনি। এই সক্রিয়তা শ্রদ্ধেয় গহলোতজির নেতৃত্বে সম্ভব হয়েছে। তারাআজ আপনাদের সামনে ১৮০০০-এর ও বেশি দিব্যাঙ্গ ভাই-বোনেদের প্রয়োজনের কথা ভেবে তাদেরসহায়ক সরঞ্জাম প্রদানের সাফল্য অর্জন করেছে।
আমি আর একবার এই মাটিকেপ্রণাম জানাই। এখানকার মানুষকে প্রণাম জানাই। আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।