পুদুচেরীর উপ-রাজ্যপাল,

বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ,

আমার প্রিয় বন্ধুরা,

পুদুচেরীর পবিত্রতা আমাকে আরও একবার এই পুণ্যভূমিতে নিয়ে এসেছে। ঠিক তিন বছর আগে আমি পুদুচেরী এসেছিলাম। মুনি-ঋষি, পন্ডিত ও কবিদের পুণ্যভূমি এই পুদুচেরী। ভারতমাতার অগণিত বিপ্লবীর আবাস জন্মভূমি এই পুদুচেরী। মহাকবি সুব্রোমনিয় ভারতী এখানে থেকেছেন। ঋষি অরবিন্দও এখানকার সমুদ্র সৈকতে তাঁর পদচিহ্ন রেখেছেন। পুদুচেরীর পবিত্র এই ভূমি বৈচিত্র্যের প্রতীক। এখানে মানুষ ৫টি ভিন্ন ভাষায় কথা বলেন। বিভিন্ন ধর্মে আস্থা রাখেন কিন্তু সকলে একসঙ্গেই সহাবস্থান করেন।

বন্ধুগণ,

আজ আমরা একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা করছি। এই প্রকল্পগুলি পুদুচেরীর মানুষের জীবনযাপনে মানোন্নয়ন ঘটাবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের সমঙ্গে উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি যুক্ত রয়েছে। পুনর্নির্মিত ম্যারি বিল্ডিং উদ্বোধন করে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। পুরনো কাঠামোকে অক্ষত রেখেই নবরূপে ঐতিহ্যবাহী এই ভবনটিকে সুসজ্জিত করা হয়েছে। এরফলে, প্রোমেনাদ সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য আরও বাড়বে এবং আরও বেশি সংখ্যক পর্যটক আকৃষ্ট হবেন।

বন্ধুগণ,

আমাদের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির চাহিদা পূরণে বিশ্বমানের পরিকাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন। এটা জেনে আপনারা আনন্দিত হবেন যে, ৪৫-এ জাতীয় মহাসড়ক চারলেন বিশিষ্ট করার কাজ শুরু হচ্ছে। করাইকল জেলার সত্তানাথাপুরম – নাগাপত্তিনাম পর্যন্ত ৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ অংশ চারলেন বিশিষ্ট করা হচ্ছে। এরফলে, নিশ্চিতভাবেই যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নতি ঘটবে। অর্থনৈতিক কর্মকান্ডও ত্বরান্বিত হবে। একইসঙ্গে, পবিত্র সানীস্বরণ মন্দিরে যাতায়াতে উন্নতি ঘটবে। এমনকি, বাসিলিকা অফ আওয়ার লেডি অফ গুড হেলথ এবং নগরদরগার মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ আরও সহজ হবে।

বন্ধুগণ,

কেন্দ্রীয় সরকার গ্রামীণ ও উপকূলীয় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এরফলে, কৃষি ক্ষেত্রও লাভবান হবে। ভারতে আমাদের কৃষকরা সর্বদাই নতুনত্ব নিয়ে আসছেন। তাই, আমাদের কর্তব্য হ’ল তাঁদের উৎপাদিত পণ্যের উপযুক্ত বিপণনের সুবিধা করে দিয়ে ন্যায্য দাম সুনিশ্চিত করা। ভালো ও উন্নত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকলে এটা সহজেই সম্ভব হয়। ৪৫-এ জাতীয় মহাসড়ক চারলেনের হয়ে উঠলে, তা আরও বেশি শিল্প সংস্থাকে আকৃষ্ট করবে এবং স্থানীয় যুবসম্প্রদায়ের কাজের সুযোগ বাড়াবে।

বন্ধুগণ,

সুস্বাস্থ্যের সঙ্গে সমৃদ্ধির নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। ভারতে গত ৭ বছরে সাধারণ মানুষের সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ ধরনের পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে আমি আজ এখানে ইন্দিরা গান্ধী স্পোর্টস কমপ্লেক্সে ৪০০ মিটার দীর্ঘ সিন্থেটিক অ্যাথলেটিক ট্র্যাক বসানোর কাজের শিলান্যাস করেছি। খেলো ইন্ডিয়া অভিযানের অঙ্গ হিসাবে এই অ্যাথলেটিক ট্র্যাক বসানো হচ্ছে। এর ফলে, প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা আরও উপকৃত হবেন। খেলাধূলা আমাদেরকে টিম ওয়ার্ক করতে শেখায়, নৈতিকতা শেখায়, সর্বোপরি ক্রীড়া সুলভ মানসিকতার বিকাশ ঘটায়। পুদুচেরীতে আধুনিক ক্রীড়া পরিকাঠামো গড়ে উঠলে এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিযোগিতায় আরও বেশি সাফল্য অর্জন করতে পারবেন। আজ লসপেতে বালিকাদের জন্য যে ১০০ শয্যার হস্টেলের উদ্বোধন করা হয়েছে, তার ফলে সাই – এর প্রশিক্ষণাধীন হকি, ভলিবল, ভারোত্তলন, কাবাডি ও হ্যান্ডবল খেলোয়াড়দের থাকা-খাবার সুবিধা হবে। এই হস্টেলের আবাসিকরা সকলেই সাই-এর প্রশিক্ষকদের অধীনে থাকবেন।

বন্ধুগণ,

আগামীদিনে যে ক্ষেত্রটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে, তা হ’ল স্বাস্থ্য পরিচর্যা। যে রাষ্ট্র স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যত বেশি বিনিয়োগ করবে, সেই দেশ তত বেশি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে উঠবে। সকলের কাছে গুণগতমানের স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আমি জিপমার প্রতিষ্ঠানে ব্লাড সেন্টারের উদ্বোধন করেছি। এই কেন্দ্রটি গড়ে তুলতে খরচ ধরা হয়েছে ২৮ কোটি টাকা। রক্ত, স্টেম সেল ও এ ধরনের অন্যান্য উপাদান দীর্ঘমেয়াদী সংরক্ষণের ক্ষেত্রে আধুনিক এই কেন্দ্রটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। এমনকি, রক্ত সঞ্চালনের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এই কেন্দ্রটিকে ব্যবহার করা যাবে। সর্বোপরি, আধুনিক গবেষণাগার হিসাবেও এই কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়েছে। আপনারা সকলেই এ ব্যাপারে অবগত যে, এ বছর বাজেটে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ব্যয় বরাদ্দ লক্ষ্যণীয় হারে বাড়ানো হয়েছে।

বন্ধুগণ,

মহান ব্যক্তিত্ব থিরুভাল্লুর বলেছিলেন, শিক্ষণ ও শিক্ষা প্রকৃতপক্ষেই সম্পদ, বাকি কোনও কিছুই স্থায়ী নয়। গুণগতমানের স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে আমাদের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সুদক্ষ পেশাদার প্রয়োজন। এই লক্ষ্যে করাইকল নিউ ক্যাম্পাসে প্রথম পর্যায়ে মেডিকেল কলেজ ভবন গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরিবেশ-বান্ধব নতুন এই ভবনটিতে এমবিবিএস স্তরের ছাত্রছাত্রীদের অধ্যয়নের জন্য যাবতীয় আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকবে।

বন্ধুগণ,

পুদুচেরীর প্রাণবন্ততা প্রকাশ পায় তার তটভূমির মধ্য দিয়ে। তাই, এখানে মৎস্যচাষ, বন্দর, জাহাজ পরিবহণ ও নীল অর্থনীতির বিকাশে বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। সাগরমালা কর্মসূচির আওতায় পুদুচেরী বন্দর উন্নয়নমূলক কাজকর্মে শিলান্যাস করতে পেরে আমি অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছি। এই কাজ শেষ হলে যাঁরা গভীর সমুদ্রে মৎস্য শিকারে যান, তাঁরা লাভবান হবেন। এমনকি, এই বন্দরের সঙ্গে সমুদ্রপথে চেন্নাইয়ের সংযোগ স্থাপিত হবে। পুদুচেরী থেকে শিল্প সংস্থার পণ্যসামগ্রী সহজেই চেন্নাই বন্দরে পৌঁছে যাবে। এমনকি, উপকূলবর্তী শহরগুলির সঙ্গে যাত্রী পরিবহণের সম্ভাবনা আরও প্রসারিত হবে।

বন্ধুগণ,

বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচির আওতায় প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তরের মাধ্যমে একাধিক সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে পুদুচেরী ভালো কাজ করেছে। প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তরের মাধ্যমে মানুষ তাঁর ইচ্ছে মতো লেনদেনের সুবিধা পেয়েছেন। সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকায় পুদুচেরীতে সুদক্ষ মানবসম্পদের প্রাচুর্য রয়েছে। এমনকি, এখানে শিল্পোন্নয়ন ও পর্যটনের বিকাশেও প্রভূত সম্ভাবনা থাকায় কর্মসংস্থানের বিপুল সুযোগ রয়েছে। পুদুচেরীর মানুষ অত্যন্ত বিচক্ষণ এবং এখানকার প্রাকৃতি শোভা অনুপম। আমি আজ এখানে আপনাদের ব্যক্তিগতভাবে আশ্বস্ত করতে চাই যে, পুদুচেরীর উন্নয়নে আমার সরকারের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সবরকম সাহায্য দেওয়া হবে। আজ সূচনা হওয়া উন্নয়নমূলক কর্মসূচিগুলির জন্য পুদুচেরীর মানুষকে অনেক অভিনন্দন।

ধন্যবাদ। অসংখ্য ধন্যবাদ।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
India’s Biz Activity Surges To 3-month High In Nov: Report

Media Coverage

India’s Biz Activity Surges To 3-month High In Nov: Report
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM to participate in ‘Odisha Parba 2024’ on 24 November
November 24, 2024

Prime Minister Shri Narendra Modi will participate in the ‘Odisha Parba 2024’ programme on 24 November at around 5:30 PM at Jawaharlal Nehru Stadium, New Delhi. He will also address the gathering on the occasion.

Odisha Parba is a flagship event conducted by Odia Samaj, a trust in New Delhi. Through it, they have been engaged in providing valuable support towards preservation and promotion of Odia heritage. Continuing with the tradition, this year Odisha Parba is being organised from 22nd to 24th November. It will showcase the rich heritage of Odisha displaying colourful cultural forms and will exhibit the vibrant social, cultural and political ethos of the State. A National Seminar or Conclave led by prominent experts and distinguished professionals across various domains will also be conducted.