দ্বৈত ইঞ্জিন বিশিষ্ট সরকার ত্রিপুরায় পরিবর্তন এনেছে : প্রধানমন্ত্রী
মহাসড়ক, ইন্টারনেট, রেল ও বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থায় ত্রিপুরাতে লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি : প্রধানমন্ত্রী
যোগাযোগ ব্যবস্থা কেবল ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ককে নিবিড়তর করছে না, বরং ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও মজবুত যোগসূত্র গড়ে তুলছে : প্রধানমন্ত্রী
মৈত্রী সেতু বাংলাদেশেও অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করবে : প্রধানমন্ত্রী

            নমস্কার !  খুলামাখা !

        ত্রিপুরার রাজ্যপাল শ্রী রমেশ বাইসজি, ত্রিপুরার জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব দেবজি, উপমুখ্যমন্ত্রী শ্রী জিষ্ণু দেববর্মণজি, রাজ্যসরকারের সমস্ত মন্ত্রীরা, সাংসদ ও বিধায়করা এবং আমার প্রিয় ত্রিপুরার ভাই ও বোনেরা ! ত্রিপুরার উন্নয়নের যাত্রার তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে আপনাদের অভিনন্দন ! শুভেচ্ছা !

        ভাই ও বোনেরা,

        তিন বছর আগে ত্রিপুরার জনসাধারণ সারা দেশের কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়ে নতুন ইতিহাস তৈরি করেন। ত্রিপুরা বহু দশকের নেতিবাচক শক্তিকে ক্ষমতাচ্যুত করে নতুন যাত্রা শুরু করেছিল, যে শক্তি রাজ্যের উন্নয়নকে আটকে রেখেছিল। আপনারা ত্রিপুরার সম্ভাবনাকে উন্মুক্ত করেছেন। মা ত্রিপুরা সুন্দরীর আর্শিবাদে বিপ্লব দেবজির নেতৃত্বাধীন সরকার বিভিন্ন সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়িত করায় আমি আনন্দিত।

        বন্ধুগণ,

        ২০১৭ সালে আপনারা ত্রিপুরার উন্নয়নের জন্য ডাবল ইঞ্জিন লাগিয়েছিলেন- একটি ইঞ্জিন ত্রিপুরায়, অন্যটি দিল্লীতে। এই ডাবল ইঞ্জিনের সিদ্ধান্ত উন্নয়নের পথকে প্রশস্ত করেছিল এবং তার সুফল আপনারা আজ পাচ্ছেন। ত্রিপুরা, ৩০ বছরের পুরনো একটি সরকার এবং তিন বছরের ডাবল ইঞ্জিনের সরকারের স্পষ্ট পার্থক্য উপলব্ধি করতে পারছে। একটা সময় ছিল যখন কমিশন দেওয়া  এবং দূর্নীতির আশ্রয় নেওয়া  ছাড়া কাজ করা যেত না। আর আজ, সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুফল সরাসরি মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাচ্ছে। কর্মচারীরা নির্দিষ্ট সময়ে বেতন পেতেন না। আজ  সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী তাঁরা তাঁদের বেতন নির্দিষ্ট সময় পাচ্ছেন। কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতেন। আর এখন, প্রথমবার ত্রিপুরায় কৃষকদের উৎপাদিত ফসল ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে কিনে নেওয়া হচ্ছে। এমজিনারেগা প্রকল্পে সহকর্মীরা এখন ১৩৫ টাকার পরিবর্তে ২০৫ টাকা দৈনিক মজুরি পাচ্ছেন। এই রাজ্য একসময় বনধের সংস্কৃতির জন্য পিছিয়ে ছিল। আজ সহজে ব্যবসা করার  জন্য ত্রিপুরা পরিচিত হচ্ছে। এই রাজ্যের শিল্পগুলি একসময় বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল আর আজ নতুন নতুন শিল্প হচ্ছে এবং বিনিয়োগকারীরা আকৃষ্ট হচ্ছেন। রাজ্যে শুধু ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিমাণই বাড়ছে না, এখানে রপ্তানীর পরিমাণ ৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

        বন্ধুগণ,  

        ত্রিপুরার উন্নয়নের জন্য কেন্দ্র সবরকমের উদ্যোগ নিয়েছে। গত ৬ বছরে কেন্দ্রের থেকে রাজ্যের জন্য সাহায্যের পরিমাণ বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৯থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এই রাজ্য কেন্দ্রের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জন্য ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা পেয়েছে। মাত্র ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ! অথচ আমরা সরকার গঠন করার পর ২০১৪ থেকে ২০১৯এর মধ্যে ত্রিপুরায় কেন্দ্রীয় উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির জন্য  ১২ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। যেসব বড় বড় রাজ্যে ডাবল ইঞ্জিন সরকার নেই, যারা সবসময় দিল্লীর সঙ্গে ঝগড়া করে সময় নষ্ট করে তাদের কাছে ত্রিপুরা উদাহরণ স্বরূপ ।  এখন তাঁরা এটি উপলব্ধি করতে পারছেন। আজ ত্রিপুরার ডাবল ইঞ্জিন সরকার রাজ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে নতুন যুগের সৃষ্টি করেছে। এক সময় যে রাজ্যে বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল আজ সেই রাজ্যে বিদ্যুৎ উবৃত্ত থাকছে। ২০১৭ সালের আগে ত্রিপুরার গ্রামাঞ্চলে মাত্র ১৯ হাজার বাড়িতে নলবাহিত জলের সংযোগ ছিল। দিল্লী এবং ত্রিপুরায় ডাবল ইঞ্জিন সরকারের জন্য আজ গ্রামাঞ্চলে ২ লক্ষ বাড়িতে নলবাহিত জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া গেছে।

        ২০১৭ সালের আগে ত্রিপুরায় ৬ লক্ষেরও কম- মাত্র ৫ লক্ষ ৮০ হাজার বাড়িতে রান্নার গ্যাসের সংযোগ ছিল। আজ তা বেড়ে হয়েছে ৮ লক্ষ ৫০ হাজার। ৮ লক্ষ ৫০ হাজার বাড়িতে রান্নার গ্যাসের সংযোগ রয়েছে ! ডাবল ইঞ্জিন সরকার গঠনের আগে ত্রিপুরায় ৫০ শতাংশ গ্রামে খোলা স্থানে শৌচকর্ম হত না। আজ এই রাজ্যের প্রায় প্রতিটি গ্রামই খোলা স্থানের শৌচকর্ম মুক্ত বলে স্বীকৃতি পেয়েছে। সৌভাগ্য প্রকল্পে ১০০ শতাংশ বৈদ্যুতিকীকরণ হয়েছে। উজ্জ্বলা যোজনায় আড়াই লক্ষের বেশি বাড়িতে বিনামূল্যে গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে। মাতৃ বন্দনা প্রকল্পে ৫০ হাজারের বেশ গর্ভবতী মহিলা উপকৃত হয়েছেন। এইভাবে দিল্লী এবং ত্রিপুরার ডাবল ইঞ্জিন সরকার রাজ্যের বোন ও মেয়েদের ক্ষমতায়ণে সাহায্য করছে। পিএম কিষাণ সম্মান নিধি এবং আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে ত্রিপুরার কৃষক এবং দরিদ্র পরিবারগুলি উপকৃত হচ্ছে। গোটা দেশ আজ দেখতে পাচ্ছে যেখানে ডাবল ইঞ্জিন সরকার নেই সেখানে দরিদ্র, কৃষকদের এবং মহিলাদের ক্ষমতায়ণের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প হয় বাস্তবায়িত হচ্ছেনা নয়তো অত্যন্ত ধীরে তা বাস্তবায়নের কাজ চলছে।

        বন্ধুগণ,

        ডাবল ইঞ্জিন সরকারের সব থেকে বড় প্রভাব হল দরিদ্রদের জন্য পাকা বাড়ির ব্যবস্থা করা। আজ যখন বর্তমান ত্রিপুরা সরকার চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ করছে তখন রাজ্যের ৪০ হাজার দরিদ্র পরিবার তাদের নতুন বাড়ি পাচ্ছেন। যেসব দরিদ্র পরিবারের কাছে নিজের বাড়ি স্বপ্নের বিষয় ছিল আজ তারা তাদের একটি ভোটের ক্ষমতা সম্পর্কে উপলব্ধি করতে পারছেন। কিভাবে তারা এটিকে উপলব্ধি করতে পারছেন ! যাঁরা নতুন নিজেদের বাড়ি পেয়েছেন তাঁরা সেটি বুঝতে পারছেন। আমি আশা করব আপনাদের এই নতুন বাড়ি আপনাদের স্বপ্নের উড়ানকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং আপনাদের সন্তানদের উচ্চাকাঙ্খা বাড়িয়ে তুলবে।

        ভাই ও বোনেরা,

        ডাবল ইঞ্জিন সরকারের ক্ষমতার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ত্রিপুরার গ্রাম এবং শহরে দ্রুত গতিতে কাজ এগিয়ে চলেছে। ত্রিপুরার ছোট শহরগুলিতে দরিদ্র মানুষদের জন্য ৮০ হাজারের বেশি পাকা বাড়ির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যে ৬টি রাজ্যে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে গৃহ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে ত্রিপুরা তার মধ্যে অন্যতম।  

        ভাই ও বোনেরা,

        আমরা আপনাদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম ডাবল ইঞ্জিন (সরকার) হলে ত্রিপুরায় ‘হীরা’ উন্নয়নের মডেল কার্যকর হবে। আমি একটি ভিডিও দেখছিলাম যেখানে ‘হীরা’ মডেলের বাস্তবায়ন সম্পর্কে দেখানো হয়েছে। ‘হীরা’- হাইওয়ে (মহাসড়ক) আইওয়েজ (তথ্যপ্রযুক্তির সড়ক), রেলওয়েজ ও এয়ারওয়েজ (বিমান পরিবহণ)! বিগত ৩ বছরে ত্রিপুরার যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিকাঠামোয় দ্রুত হারে উন্নয়ন হয়েছে। বিমান বন্দরের কাজই হোক অথবা সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে ত্রিপুরাকে যুক্ত করাই হোক কিংবা রেল যোগাযোগ প্রতিটি ক্ষেত্রে দ্রুতহারে উন্নয়ন হয়েছে। আমাদের ‘হীরা’ মডেলে আজ ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি প্রকল্প হয় জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করা হয়েছে নয়তো শিলান্যাস হয়েছে। আজ জলপথ এবং বন্দরের  রাজ্যে  যুক্ত হয়েছে।

        বন্ধুগণ,

        এর আওতায় ত্রিপুরায় গ্রামাঞ্চলে সড়ক সংযোগ, মহাসড়ককে চওড়া করা, সেতু নির্মাণ, গাড়ি রাখার ব্যবস্থা, বিদেশে রপ্তানীর পরিকাঠামো নির্মাণ, স্মার্ট সিটি পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। ত্রিপুরায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তার ফলে রাজ্যের প্রত্যন্ত গ্রামে জীবনযাত্রায় যেমন সুবিধা হয়েছে একইসঙ্গে মানুষের আয়ও বেড়েছে। এই যোগাযোগ ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রসার ঘটেছে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যও বৃদ্ধি পেয়েছে।

        বন্ধুগণ,

        পূর্বাঞ্চল, উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং বাংলাদেশের মধ্যে এক ধরণের বাণিজ্যিক করিডর হিসেবে এই অঞ্চলটি গড়ে উঠছে। আমার বাংলাদেশ সফরকালে আমি নিজে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যে সেতুটির শিলান্যাস করেছিলাম সেই সেতু আজ উদ্বোধন হল। এই সেতুর মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে ত্রিপুরার সরাসরি যোগাযোগ গড়ে উঠল। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বন্ধুত্বের সম্পর্ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের কথা বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে আমরা শুনলাম। সাব্রুম থেকে রামগড়ের মধ্যে এই সেতু ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে। যে চুক্তিগুলি বিগত কয়েক বছর ধরে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে হয়েছে আজ সেগুলি ফলপ্রসু হওয়ায় দুটি দেশের মধ্যে স্থল, রেল ও জলপথের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা দৃঢ় হয়েছে। এর ফলে ত্রিপুরার সঙ্গে দক্ষিণ আসাম, মিজোরাম, মণিপুর থেকে বাংলাদেশ সহ অন্যান্য দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার রাষ্ট্রগুলির মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার  উন্নতি হবে। এই সেতু শুধুমাত্র ভারতে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও আর্থিক ক্ষেত্রে সুবিধা বৃদ্ধি করবে না, এর মাধ্যমে বাংলাদেশও উপকৃত হবে। ভারত ও বাংলাদেশের জনসাধারণের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে এই সেতু পর্যটন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বন্দর ভিত্তিক অর্থনীতির জন্য নতুন সুযোগ এনে দেবে। এই সেতুর মধ্যে যোগাযোগের ফলে সাব্রুম সহ পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলি আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র হয়ে উঠবে কারণ এই অঞ্চলের সমুদ্র বন্দরের সরাসরি যোগাযোগ তৈরি হয়েছে।

        বন্ধুগণ,

        যখন মৈত্রী সতুর অন্যান্য সুবিধাগুলি তৈরি হবে সেইসময় আমরা শুধুমাত্র উত্তর পূর্ব ভারতে সড়ক পথের মাধ্যমে সরবরাহ শৃঙ্খলের উপরেই নির্ভর করবো না সমুদ্র এবং নদীপথ গুলিকেও আমরা কাজে লাগাতে পারবো। দক্ষিণ ত্রিপুরার গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে আজ থেকে সাব্রুমে সুসংহত চেকপোস্ট তৈরির কাজও শুরু হল। এই চেকপোস্ট একটি পুরো মাত্রার লজিস্টিক হাবের কাজ করবে। এখানে গাড়ি রাখা যাবে, গুদামে মালপত্র থাকবে এবং মালের ওঠানো-নামানোর কাজও হবে।

        বন্ধুগণ,

        ফেণী নদীর ওপর এই সেতু উদ্বোধন হওয়ায় আগরতলা ভারতে আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দরের সবথেকে কাছের শহর হয়ে উঠল। ৮ নম্বর ও ২০৮ নম্বর জাতীয় সড়কের চওড়া করার যেসব প্রকল্প আজ জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করা হল এবং শিলান্যাস করা হয়েছে এর ফলে উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে সমুদ্র বন্দরের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সুদৃঢ় হবে। এই পথে পরিবহণের খরচ কমবে এবং সমগ্র উত্তর পূর্ব ভারত সহজে পণ্য সামগ্রী পাবে। ত্রিপুরার কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত ফলমূল, শাক-সব্জি, দুধ, মাছ ইত্যাদি বিক্রির জন্য দেশে ও বিদেশে নতুন বাজার পাবে। বর্তমান শিল্পসংস্থাগুলি লাভবান হবে এবং নতুন নতুন শিল্প সংস্থা গড়ে উঠবে। যেসব পণ্য এখানে উৎপাদিত হবে সেগুলি বিদেশের বাজারে নতুন প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করবে। নতুন এইসব ব্যবস্থার ফলে বহু বছর ধরে বাঁশের বিভিন্ন উৎপাদিত পণ্য, ধূপকাঠি শিল্প, আনারস সংক্রান্ত ব্যবসা-বাণিজ্যের আরও সুবিধা হবে।  

        ভাই ও বোনেরা,

        আত্মনির্ভর ভারতের নতুন কেন্দ্র হিসেবে আগরতলার মতো শহরের সম্ভাবনা তৈরি হল। আগরতলাকে আরও উন্নত শহর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বেশকিছু প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস হয়েছে। উন্নত প্রযুক্তির মধ্য দিয়ে শহরের ব্যবস্থাপনাকে আরও ভালোভাবে পরিচালনার জন্য আজ থেকে সুসংহত কম্যান্ড কেন্দ্রটি সাহায্য করবে। যান চলাচলের বিভিন্ন সমস্যা, অপরাধ মূলক কাজকর্ম বন্ধ করার মতো নানা প্রকল্পের কারিগরি সহায়তা এই কেন্দ্র থেকে পাওয়া যাবে। একইভাবে আগরতলায় জীবনযাত্রা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধার জন্য বহুস্তরীয় পার্কিং ব্যবস্থা, বাণিজ্যিক কেন্দ্র এবং বিমান বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী সড়কটি চওড়া করা হয়েছে।

        ভাই ও বোনেরা,

        যখন এ ধরণের উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় তখন সেইসব মানুষের কথা উল্লেখ করতেই হয় যাঁরা বছরের পর বছর সহজ জীবনযাত্রার বিষয়টি ভুলে গিয়েছিলেন। উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলে বসবাসরত মানুষরা এবং ব্রু-উদ্বাস্তুরা সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে উপকৃত হচ্ছেন। এর অন্যতম কারণ ত্রিপুরায় দীর্ঘদিনের ব্রু-উদ্বাস্তুদের সমস্যার সমাধানে সরকার উদ্যোগী হয়েছে। হাজার হাজার ব্রু-উদ্বাস্তুদের জীবনে ৬০০ কোটি টাকার বিশেষ প্যাকেজ ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসবে।

        বন্ধুগণ,

        যখন ঘরে ঘরে জল, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছাচ্ছে তখন আমাদের উপজাতি অধ্যুষিত এলাকার মানুষরা উপকৃত হচ্ছেন। কেন্দ্র এবং ত্রিপুরা সরকার একযোগে এই কাজগুলি করছে। আগরতলা বিমান বন্দরের নাম মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মাণিক্যজির নামে করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তিনি ত্রিপুরার উন্নয়নের যে স্বপ্ন দেখতেন তাকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। শ্রী থাঙ্গা দারলংজি, শ্রী সত্যরাম রিয়াংজি এবং শ্রী বেণীচন্দ্র জামাতিয়াজি- যাঁরা ত্রিপুরার সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও সাহিত্য নিয়ে কাজ করছেন তাঁদের পদ্মশ্রী সম্মান দিতে পেরে আমরা নিজেদের ধন্য মনে করছি। সাহিত্য ও সংস্কৃতির এইসব উপাসকদের অবদান আমাদের ঋণী করে রেখেছে। বেণীচন্দ্র জামাতিয়াজি আজ আমাদের মধ্যে নেই। কিন্তু তাঁর কাজ আমাদের অনুপ্রাণিত করে।

        বন্ধুগণ,

        প্রধানমন্ত্রী বন ধন যোজনার আওতায় উপজাতি মানুষদের হস্তশিল্প ও বাঁশ ভিত্তিক শিল্পকলাকে উৎসাহ দেওয়ার ফলে উপজাতি সম্প্রদায়ের ভাই-বোনেরা আয়ের নতুন উৎসর সন্ধান পেয়েছেন। আমি জানতে পারলাম মূলী বাঁশের কুকি (বিস্কুট) প্যাকেটজাত করে এই প্রথম বিক্রি করা হচ্ছে। এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এর ফলে জনসাধারণ উপকৃত হবেন। এ বছরের কেন্দ্রীয় বাজেটে উপজাতি অধ্যুষিত এলাকার একলব্য মডেল স্কুল সহ অন্যান্য আধুনিক ব্যবস্থাগুলির জন্য সর্বাঙ্গীন উদ্যোগ নেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। আমি নিশ্চিত ত্রিপুরা সরকার আগামীদিনেও জনসাধারণের জন্য কাজ করে যাবে। আরও একবার ৩ বছর ধরে মানুষের সেবা করায় আমি বিপ্লবজি, তাঁর দলের সদস্যদের এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের ধন্যবাদ জানাই। আমি নিশ্চিত তাঁরা ভবিষ্যতেও মানুষের জন্য আরও কাজ করবেন এবং ত্রিপুরার ভাগ্য পরিবর্তন করবেন। এই আশা নিয়ে আমি আরও একবার আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই। আপনাদের জন্য আমার শুভেচ্ছা রইল।

        ধন্যবাদ !

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
When PM Modi Fulfilled A Special Request From 101-Year-Old IFS Officer’s Kin In Kuwait

Media Coverage

When PM Modi Fulfilled A Special Request From 101-Year-Old IFS Officer’s Kin In Kuwait
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Under Rozgar Mela, PM to distribute more than 71,000 appointment letters to newly appointed recruits
December 22, 2024

Prime Minister Shri Narendra Modi will distribute more than 71,000 appointment letters to newly appointed recruits on 23rd December at around 10:30 AM through video conferencing. He will also address the gathering on the occasion.

Rozgar Mela is a step towards fulfilment of the commitment of the Prime Minister to accord highest priority to employment generation. It will provide meaningful opportunities to the youth for their participation in nation building and self empowerment.

Rozgar Mela will be held at 45 locations across the country. The recruitments are taking place for various Ministries and Departments of the Central Government. The new recruits, selected from across the country will be joining various Ministries/Departments including Ministry of Home Affairs, Department of Posts, Department of Higher Education, Ministry of Health and Family Welfare, Department of Financial Services, among others.