আপনাদের সবাইকে প্রবাসী ভারতীয় দিবসের অনেক অনেক শুভেচ্ছা। প্রবাসী দিবসপালনের এই পরম্পরায় আজ প্রথম ‘প্রবাসী সাংসদ সম্মেলন’ নামক একটি নতুন অধ্যায় যুক্তহচ্ছে। আমি উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, ইউরোপ, এশিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত এবংপ্রশান্ত মহাসাগর তীরবর্তী এশিয়ার দেশগুলি থেকে এখানে আগত সমস্ত প্রবাসী বন্ধুদেরআন্তরিক স্বাগত জানাই।
ওয়েলকাম টু ইন্ডিয়া! ওয়েলকাম হোম!
আপনাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম, পুরনো স্মৃতি ভারতের নানাপ্রান্তের সঙ্গেযুক্ত। আপনাদের পূর্বজদের মধ্যে অনেকে ব্যবসা সূত্রে, আবার অনেকে শিক্ষা সূত্রেঐসব দেশে গিয়েছিলেন। আবার অনেককে জোর করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কিংবা ভুলিয়ে-ভালিয়ে।তাঁদের শরীর দেশ রেখে চলে গেলেও তাঁদের মন, তাঁদের আত্মার অংশ এই মাটিতেই ছেড়েগিয়েছিলেন। সেজন্য আজ আপনারা যখন ভারতের যে কোনও বিমানবন্দরে অবতরণ করেন, এই দেশেরমাটিতে আপনাদেরকে দেখে তাঁদের আত্মার সেই অংশটি প্রফুল্ল হয়।
সেই সময় গলা সামান্য বুজে আসে। কিছু আবেগ দু’চোখ থেকে অশ্রু হয়ে গড়িয়ে পড়ে।আপনারা তাকে আটকানোর চেষ্টা করেও আটকাতে পারেন না। আপনাদের চোখ অশ্রুসজল হলেওদৃষ্টিতে ভারতে আসার আনন্দ চক্চক্ করে ওঠে।
আপনাদের সেই অনুভূতি আমি বুঝতে পারি। সেই স্নেহ, ভালোবাসা, আদর, সম্মান;এখানকার মাটি, এখানকার বাতাসের সুরভিতে তাঁদের আত্মার অংশ যেভাবে অনুভূত হয় – সেইঅনুভূতিকে আমি প্রণাম জানাই। আজ আপনাদেরকে এখানে দেখে আপনাদের পূর্বজদের আত্মারাকত না আনন্দ পাচ্ছেন, আমি তা অনুভব করতে পারি। তাঁরা যে অবস্থাতেই থাকুন না কেন,আপনাদেরকে এখানে দেখে সবচাইতে বেশি খুশি হচ্ছেন, প্রসন্ন হচ্ছেন।
বন্ধুগণ,
হাজার হাজার বছর ধরে যাঁরা ভারত থেকে বিদেশে গিয়েছেন, তাঁদের মন থেকে ভারতকখনও বেরিয়ে যায়নি। তাঁরা বিশ্বের যে ভূখন্ডেই গিয়েছেন, সেখানেই তাঁরা ভারতীয়সভ্যতা এবং মূল্যবোধকে জীবিত রেখেছেন। এটা কোনও আশ্চর্যের বিষয় নয় যে তাঁরাসেদেশের মানুষের সঙ্গে মিশে সেই দেশকেই আপন করে নিয়েছেন।
তাঁরা একদিকে নিজেদের মধ্যে ভারতীয়ত্ব সঞ্জীবিত রেখেছেন, আর অন্যদিকে সেসবঅঞ্চলের ভাষা, খাদ্যাভাস, পোশাক-আশাকও আপন করে নিয়ে তাঁদের সঙ্গে মিশে গেছেন।
ক্রীড়াজগতে, কলা ও সংস্কৃতি, সিনেমা – প্রায় সকল ক্ষেত্রেই ভারতীয়বংশোদ্ভূতরা বিশ্ব মঞ্চে কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। আর রাজনীতির ক্ষেত্রে যদি বলি,আমি দেখতেই পাচ্ছি কিভাবে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের একটি ক্ষুদে বিশ্ব সংসদ আমার সামনেউপস্থিত হয়েছেন। আজ ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা মরিশাস, পর্তুগাল এবং আয়ারল্যান্ডেরপ্রধানমন্ত্রী পদে আসীন। আরও অনেক দেশে ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা ইতিপূর্বে দেশ কিংবাসরকারের নেতৃত্ব দিয়েছেন। যেমন আজ আমাদের জন্য বিশেষ সম্মানের বিষয় হ’ল – গুয়ানারপ্রাক্তন রাষ্ট্রপতি শ্রী ভরত জগদেব মহোদয় আজ আমাদের মধ্যে রয়েছেন। আপনারা সকলেইবিশিষ্ট এবং প্রত্যেকেই নিজের নিজের দেশে বিশেষ রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করছেন।
বন্ধুগণ,
আপনাদের পূর্বজদের মাতৃভূমি ভারত আপনাদের জন্য গর্ববোধ করে। আপনাদেরউপলব্ধি, অভিজ্ঞতা ও সাফল্য আমাদের জন্য অত্যন্ত সম্মানের বিষয়। কোনও গুরুত্বপূর্ণপদে আপনারা যখন আসীন হন কিংবা কোথাও নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন পত্র জমা দেন, সেইখবরের দর্শক ও পাঠক ভারতে অনেক বেশি হয়। আপনারা কিভাবে নিজেদের এলাকারভূ-রাজনীতিকে প্রভাবিত করেছেন, সেই দেশের নীতি প্রণয়নে অংশগ্রহণ করেছেন, এসব খবরআমাদের দেশের পাঠকরা অত্যন্ত আগ্রহ সহকারে পড়েন। এটাও আলোচনা করেন যে, দেখো আমাদেরইএকজন অমুক গুরুত্বপূর্ণ পদে পৌঁছে গেছেন। আমাদেরকে এই আনন্দ দেওয়ার জন্য, আমাদেরগৌরব বৃদ্ধির জন্য আপনাদের প্রত্যেককে অভিনন্দন।
ভাই ও বোনেরা,
আপনারা দীর্ঘকাল ধরে ভিন্ন ভিন্ন দেশে বসবাস করছেন। আপনারা হয়তো অনুভবকরেছেন যে, সারা পৃথিবীতেই বিগত তিন-চার বছরে ভারতের প্রতি মনোভাব অনেক বদলে গেছে।এর মূল কারণ হ’ল যে, ভারত নিজেকে বদলাচ্ছে, রূপান্তরিত হচ্ছে। এই পরিবর্তনআর্থ-সামাজিক স্তরের পাশাপাশি ভাবনাচিন্তার জগতেও হচ্ছে। ‘আগে যেমন ছিল, তেমনইচলতে থাকবে, কিছুই বদলাবে না”, কিছুই হবে না – এই মনোভাব থেকে বেরিয়ে ভারত অনেকএগিয়ে গেছে। ভারতের জনগণের আশা-আকাঙ্খা এই সময়ে উচ্চতম স্তরে রয়েছে। ব্যবস্থায় যেসম্পূর্ণ পরিবর্তন আসছে, তা এক সময়ে উচ্চতম স্তরে রয়েছে। ব্যবস্থায় যে সম্পূর্ণপরিবর্তন আসছে, এক অপরিবর্তনীয় পরিবর্তনের পরিণাম আপনারা সর্বক্ষেত্রে দেখতেপাবেন।
এর পরিণামস্বরূপ ভারতে ২০১৬-১৭ সালে ৬০ বিলিয়ন ডলারের অভূতপূর্ব প্রত্যক্ষবিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে। ‘ইজ অফ ডুইং বিজনেস’-এর র্যাঙ্কিং-এ বিগত তিন বছরে আমরা ৪২স্থান উপরে উঠেছি। গত দু’বছরে “ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম’-এর ‘গ্লোবাল কমপিটিটিভনেসইনডেক্স’-এও ৩২ স্থান উপরে উঠেছে, ‘গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স’-এ ২১ স্থান আর‘লজিস্টিকস্ পারফরম্যান্স ইনডেক্স’-এ ১৯ স্থান উপরে উঠেছি।
আজ বিশ্ব ব্যাঙ্ক, আইএমএফ, মুডিস্-এর মতো সংস্থাগুলি এখন অনেক ইতিবাচকভাবেভারত’কে দেখছে। নির্মাণ শিল্প, বিমান পরিবহণ, খনি শিল্প, কম্প্যুটার সফট্ওয়্যার-হার্ডওয়্যার,বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি উৎপাদনের ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত ভারতে যত বিদেশি বিনিয়োগহয়েছে তার অর্ধেকরও বেশি বিনিয়োগ হয়েছে বিগত তিন বছরেই।
এই পরিবর্তনের কারণ হ’ল, আমরা ভারতীয় অর্থ ব্যবস্থার প্রতিটি অংশেসুদূরপ্রসারী নীতি সংস্কারে জোর দিয়েছি। আমাদের নিয়ন্ত্রক নীতি হ’ল – রূপান্তরেরজন্য সংস্কার, ‘রিফর্ম টু ট্রান্সফর্ম’। আমরা গোটা ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিকরে তুলতে চাই, দুর্নীতিকে মূল থেকে উৎপাটিত করতে চাই।
বন্ধুগণ,
পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) প্রণয়নের মাধ্যমে আমরা দেশ থেকে হাজারো করের জালউৎপাটিত করেছি। দেশে আর্থিক ঐক্য স্থাপনও করেছি। খনি শিল্প, সার কারখানা,বস্ত্রশিল্প, বিমান পরিবহণ, স্বাস্থ্য, প্রতিরক্ষা, নির্মাণ শিল্প, গৃহনির্মাণশিল্প, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ – এমন কোনও ক্ষেত্র নেই, যেখানে আমরা সংস্কারসাধনকরিনি।
বন্ধুগণ,
ভারত আজ বিশ্বের সর্বাধিক নবীন দেশ। নবীনদের অসীম স্বপ্ন, আশা-আকাঙ্খারয়েছে। তাঁরা যাতে নিজেদের শক্তি সঠিক ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারেন, নিজের ক্ষমতায়রোজগার করতে পারেন, সেদিকে লক্ষ্য রেখে সরকার নিয়মিত কাজ করে চলছে।
দক্ষ ভারত মিশন, স্টার্ট আপ প্রকল্প, স্ট্যান্ড আপ প্রকল্প, মুদ্রা যোজনা –এজন্যই শুরু করা হয়েছে। মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে স্বরোজগার সুনিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই১০ কোটি ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে। কোনও রকম ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি ছাড়াই ৪ লক্ষ কোটিটাকারও বেশি ঋণ প্রদান করা হয়েছে। শুধু এই একটি প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে ৩ কোটিনতুন স্বউদ্যোগী সংস্থা গড়ে উঠেছে। একবিংশ শতাব্দীর ভারতের প্রয়োজন মাথায় রেখেসরকার পরিকাঠামো নির্মাণ এবং পরিবহণ ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করছে। নীতি প্রণয়নেরসময় একথা মাথায় রাখা হচ্ছে যে ভবিষ্যতে দেশ কী ধরনের সৈন্য চলাচল ও পণ্য সরবরাহব্যবস্থার প্রয়োজন পড়বে! সড়ক পথ, রেলপথ, বিমান বন্দর, জলপথ ও বন্দরগুলিকে এমনভাবেউন্নত করা হচ্ছে, যাতে তারা পরস্পরের পরিপূরক হয়ে ওঠে, পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্তথাকে।
বন্ধুগণ,
আজ ভারত আগের তুলনায় দ্বিগুণ গতিতে নতুন রেল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে,দ্বিগুণের চাইতেও বেশি গতিতে পূর্ববর্তী লাইনের পাশাপাশি দ্বিতীয় ও পরিবর্ত রেললাইন পাতা হচ্ছে। দ্বিগুণ গতিতে জাতীয় সড়ক নির্মাণ হচ্ছে। দ্বিগুণের চাইতেও বেশিগতিতে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির নতুন ক্ষমতাকে গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে।
আগে জাহাজ পরিবহণে কার্গো হ্যাণ্ডলিং ক্ষেত্রে ‘গ্রোথ’ ঋণাত্মক ছিল,বর্তমান সরকারের আমলে সেই নীতি বদলে ইতি হয়েছে, ১১ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি হয়েছে। এইসকল প্রচেষ্টার মাধ্যমে কর্মসংস্থানের নতুন নতুন সুযোগ গড়ে উঠেছে । স্থানীয় স্তরে ছোটছোট শিল্পগুলি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে গরিব মহিলারা শুধুবিনামূল্যে রান্নার গ্যাস সংযোগ পান নি, ইতিমধ্যেই ৩ কোটিরওবেশি মহিলা নৈমিত্তিক উনুনের ধোঁয়ার জ্বালা থেকে মুক্তি পেয়েছেন, বেশ কিছু রাজ্যনিজেদের কেরোসিন ব্যবহার মুক্ত ঘোষণা করেছে। এর মাধ্যমে আরেকটি লাভ হয়েছে, দেশেরান্নার গ্যাসের অনেক নতুন ডিলার হয়েছেন, বাড়িতে বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডারসরবরাহকারীদের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে। অর্থাৎ এক্ষেত্রেও অনেক নতুন কর্মসংস্থানহয়েছে, সামাজিক সংস্কারের পাশাপাশি মানুষের আর্থিক ক্ষমতায়নও সুনিশ্চিত হয়েছে।
ভাই ও বোনেরা,
আমাদের দেশ ‘বসুধৈব কুটুম্বকম্’ আদর্শের পরম্পরায় বিশ্বাস রেখে বিশ্বকেঅনেক কিছু দিয়েছে। আমি যখন প্রথমবার রাষ্ট্রসঙ্ঘে গিয়েছিলাম, তখন বিশ্ববাসীর সামনে‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ পালনের প্রস্তাব রেখেছিলাম। আপনারা সবাই জানেন যে, মাত্র৭৫ দিনের মধ্যে এই প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়েছে আর রেকর্ড সংখ্যক১৭৭টি দেশে একে ‘কো-স্পনসর’ করেছে। আজ সারা বিশ্বে ২১ জুন তারিখে যেউৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে কোটি কোটি মানুষ এই ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ পালন করেন, তাআপনাদের ও আমাদের জন্য গর্বের বিষয় হয়ে উঠেছে।
‘হলিস্টিক লিভিং’-এর এই পদ্ধতি ভারত তার সম্পন্ন পরম্পরা থেকে উপহারদিয়েছে।
বন্ধুগণ,
আবহাওয়া পরিবর্তন নিয়ে প্যারিস চুক্তির সময় আমি ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতিরসঙ্গে এক সাথে আন্তর্জাতিক সৌর সংঘ গড়ে তোলার প্রস্তাব রেখেছিলাম। এখন তা বাস্তবেরূপান্তরিত হয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা সৌরশক্তিতে ধনী দেশগুলির সঙ্গে সমবেতভাবে সৌরপ্রযুক্তি আর বিনিয়োগের জন্য বিশ্ব মঞ্চ গড়ে তুলেছি।
প্রাচীনকাল থেকেই ভারত বিশ্বকে প্রকৃতির সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে চলারশৈলী শিখিয়েছে।
ভাই ও বোনেরা,
নেপালের প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্পের সময় কিংবা শ্রীলঙ্কায় ভয়ঙ্কর বন্যায় অথবামালদ্বীপে নিদারুণ জলকষ্টের সময় ভারত-ই প্রথম ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজে ঝাঁপিয়েপড়েছে। ইয়েমেনে সঙ্কটের সময় আমরাই সাড়ে চার হাজার ভারতীয় নাগরিকদের পাশাপাশি ৪৮টিদেশের ২ হাজারেরও বেশি নাগরিককে সুরক্ষিতভাবে উদ্ধার করে এনেছি। বিপ্রতীপপরিস্থিতিতে মানবিক মূল্যবোধের সংরক্ষণের এই প্রক্রিয়া ভারতের ‘বসুধৈব কুটুম্বকম্’পরম্পরারই অংশ।
বন্ধুগণ,
২০১৮ সালে প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ সমাপ্তির ১০০ বছর পূর্ণ হবে। প্রথম ও দ্বিতীয়বিশ্ব যুদ্ধে দেড় লক্ষেরও বেশি ভারতীয় সৈনিক শহীদ হয়েছিলেন। ঐ দুই বিশ্ব যুদ্ধেভারত কিংবা ভারতীয়দের কোনও স্বার্থ ছিল না। ভারতীয় সৈনিকরা অন্যের এক ইঞ্চি জমিদখল করার জন্য সেই যুদ্ধে যাননি। বিশ্ববাসীকে একথা মানতেই হবে যে, মানবতা রক্ষারস্বার্থে ভারতীয়রা কত বড় আত্মবলিদান দিয়েছেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও সেই পরম্পরাজারি রয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তি সেনায় অদ্যাবধি সর্বাধিক অংশগ্রহণকারী সৈনিকরা হলেনভারতীয়। এভাবেই মানবতা ও বিশ্ব শান্তি রক্ষার স্বার্থে ভারত এই আত্মবলিদানেরমাধ্যমে বিশ্বকে শান্তির বার্তা প্রদান করে এসেছে।
মনবতার এই নিঃস্বার্থ সেবা ও ত্যাগের ভাবনাই আমাদের পরিচয়। এই মানবিকমূল্যবোধের জন্যই বিশ্ববাসীর কাছে ভারতের একটি বিশেষ গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। আরভারতের সঙ্গে ভারতীয় সমাজের মূলস্রোতের পাশাপাশি আপনাদের মতো ভারতীয় বংশোদ্ভূতদেরওগ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
বন্ধুগণ,
আমি যখনই কোনও দেশ সফরে যাই, তখন সেখানে বসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ওপ্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে মিলিত হওয়ার চেষ্টা করি। এভাবেই আপনাদের মধ্যে অনেকেরসঙ্গে আমার সাক্ষাতের সৌভাগ্য হয়েছে। আমার এই প্রচেষ্টার মূল উদ্দেশ্য হ’ল,প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে নিয়মিত সম্পর্ক রক্ষা করা এবং যতটা সম্ভব তাঁদের সমস্যারসমাধান করা। কারণ আমি মনে করি যে, ভারতের সঙ্গে অন্যান্য রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিকসম্পর্কের ক্ষেত্রে সত্যিকরের স্থায়ী রাষ্ট্রদূত হলেন সেদেশে বসবাসকারী ভারতীয়বংশোদ্ভূত ও প্রবাসী ভারতীয়রা।
আগে প্রবাসী ভারতীয়দের জন্য একটি স্বতন্ত্র মন্ত্রক ছিল। কিন্তু আমিপ্রবাসী ভারতীয়দের কাছ থেকে জানতে পারি যে, এতে অনেক ক্ষেত্রেই বিদেশ মন্ত্রকেরসঙ্গে কিছু সমন্বয়ের অভাব দেখা যায়। একথা জানার পর আমরা এই দুটি মন্ত্রককে এক করেদিই। আপনাদের হয়তো মনে আছে যে, আগে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ও বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয়নাগরিকদের জন্য আলাদা-আলাদা প্রকল্প চালু ছিল। আর অধিকাংশ মানুষই এই দুইয়ের মাঝেপার্থক্য সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না। আমরা এই প্রক্রিয়াকে সরল করি আর উভয়কে মিলিয়েদিয়ে একটি প্রকল্প গড়ে তুলি।
আমাদের বিদেশ মন্ত্রী শ্রীমতী সুষমা স্বরাজ শুধু ভারতীয় নাগরিক নয়, প্রবাসীভারতীয়দের সমস্যা নিয়েও ২৪ X৭ নজর রাখেন। তাঁর এই সক্রিয়তারফলে তাঁর নেতৃত্বে বিদেশ মন্ত্রক ‘কন্স্যুলার গ্রিভেন্সেস্’গুলির প্রত্যক্ষতদারকি এবং দ্রুত সাড়া দেওয়ার জন্য ‘মদত’ নামে একটি পোর্টাল চালু করেছেন। এখনপ্রতি দু’বছরে একবার প্রবাসী ভারতীয় দিবসের আয়োজন করা হচ্ছে। পাশাপাশি, ক্ষেত্রীয়প্রবাসী ভারতীয় দিবসও পালন করা হচ্ছে। সম্প্রতি বিদেশ মন্ত্রী সিঙ্গাপুরে এমনইএকটি সম্মেলনের আয়োজন করে এসেছেন।
ভাই ও বোনেরা,
আজ আমরা এখানে যে ভবনে এসে উপস্থিত হয়েছি, গত ২০০৬ সালের ২ অক্টোবর এইভবনটি প্রবাসী ভারতীয়দের নামে সমর্পিত করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত সুখের কথা যে, এত কমসময়ের মধ্যেই এই কেন্দ্র প্রবাসী ভারতীয়দের জন্য একটি ‘হাব’ রূপে গড়ে উঠেছে। এখানেমহাত্মা গান্ধীর জীবন নিয়ে একটি প্রদর্শনীও চালু করা হয়েছে। আমি আপনাদের অনুরোধকরব যে, আপনারা এটি ঘুরে দেখবেন।
প্রবাসী ভারতীয়দের নতুন প্রজন্মকে ভারত সম্পর্কে অবহিত করতে আমরা ‘ভারত কেজানুন’ বা ‘নো ইন্ডিয়া’ ক্যুইজ প্রতিযোগিতা চালু করেছি। এই প্রতিযোগিতায় প্রায়১০০টি দেশের ৫ হাজার ৭০০-রও বেশি প্রবাসী যুবক-যুবতী অংশগ্রহণ করেছে। ভারতের প্রতিতাঁদের উৎসাহ ও উদ্দীপনা আমাদের সবার জন্য অত্যন্ত উৎসাহজনক। সেই উৎসাহ থেকেই আমরাএ বছর এই প্রতিযোগিতাকে আরও ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি।
বন্ধুগণ,
নিজের নিজের কর্মভূমির উন্নয়নের জন্য আপনাদের অবদান ভারতের মাথা উঁচু করে।আর ভারতের উন্নয়ন ও অগ্রগতি প্রবাসে ভারতীয় সমাজের মাথা উঁচু রাখে। ভারতেরউন্নয়নের জন্য আমাদের প্রচেষ্টাসমূহে আমরা প্রবাসী ভারতীয়দের অংশীদার হিসাবে গ্রহণকরেছি। নিতি আয়োগ ভারতের উন্নয়নে ২০২০ সাল পর্যন্ত যে ‘অ্যাকশন এজেন্ডা’ বানিয়েছে,তাতে প্রবাসী ভারতীয়দের বিশেষ স্থান রয়েছে।
ভাই ও বোনেরা,
ভারতের উন্নয়ন যাত্রায় অংশগ্রহণ করার জন্য প্রবাসী ভারতীয়দের সামনে বেশকিছু সুযোগ রয়েছে। সারা বিশ্বে প্রবাসী ‘রেমিটেন্সেস’-এর সবচেয়ে বড় গ্রহীতা হ’লভারত। ভারতের অর্থ ব্যবস্থায় এই গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য আমরা বিদেশে বসবাসকারীপ্রত্যেক ভারতীয়র কাছে অত্যন্ত ঋণী। এবার আপনারা ভারতে বিনিয়োগের মাধ্যমে ভারতীয়অর্থ ব্যবস্থার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হতে পারেন। এখন বিশ্বে প্রত্যক্ষ বিদেশিবিনিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বাধিক আকর্ষণীয় অর্থ ব্যবস্থা হ’ল ভারত। এই বার্তা সারাপৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে এবং এই বিনিয়োগ সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রবাসী ওভারতীয়রা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন বলে আমি মনে করি। আপনারা যে দেশেথাকেন, সেখানকার সমাজে এক্ষেত্রে আপনারা অনুঘটকের ভূমিকা পালন করতে পারে। বিশেষকরে, ভারতে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে প্রবাসী ভারতীয় ও ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা অনেক বড়অবদান রাখতে পারেন।
বিশ্বের অনেক বড় কোম্পানিগুলির সিইও এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রবাসীভারতীয়রা রয়েছেন। তাঁরা ভারতীয় অর্থ ব্যবস্থাকে খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারেন। সেজন্যভারতের উন্নয়ন যাত্রায় তাঁদের এই আস্থার জন্য আমরা তাঁদের কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। আজপ্রবাসী ভারতীয়রা নিজেদের দেশের উন্নয়নে ‘স্টেক হোল্ডার’ মনে করেন। তাঁরা এইপরিবর্তনের অংশীদার হতে চান, নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে চান।
বিশ্বের আকাশে আপনারা ভারত’কে উজ্জ্বল নক্ষত্র রূপে দেখতে চান। আমি জানিযে, আপনাদের অভিজ্ঞতা সেসব দেশের সামাজিক ও আর্থিক পরিবর্তনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ!আপনাদের সেই অভিজ্ঞতাকে আমরা ভারতের উন্নয়নেও কাজে লাগানোর জন্য বজ্র অর্থাৎ‘ভিজিটিং অ্যাডজাঙ্কট জয়েন্ট রিসার্চ ফ্যাকাল্টি’ প্রকল্প শুরু করেছি। এইপ্রকল্পের মাধ্যমে আপনারা ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলিতে এক থেকে তিন মাস পর্যন্ত কাজকরতে পারেন।
আজ এই মঞ্চ থেকে আমি আপনাদের সবাইকে এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্যআহ্বান জানাচ্ছি। আর আপনারা নিজ নিজ দেশে ফিরে অন্য ভারতীয়দেরও এই প্রকল্পের সঙ্গেযুক্ত হওয়ার জন্য প্রেরণা যোগাবেন। আপনাদের অভিজ্ঞতায় ভারতের নবীন প্রজন্ম ঋদ্ধহলে আপনারাও মনে অনেক তৃপ্তি পাবেন। ভারতের প্রয়োজনসমূহ শক্তি এবং বৈশিষ্ট্যবিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষমতা আপনাদের মধ্যে যতটা রয়েছে, আর কারও মধ্যেঅতটা নেই।
এই বিশ্বকে বৈরিতাপূর্ণ অস্থির পরিবেশ থেকে রক্ষা করার ক্ষমতা ভারতীয়সভ্যতা ও সংস্কৃতির রয়েছে। আমরা বিশ্বকে শান্তি ও সম্প্রীতির পথ দেখাতে পারি। সারাপৃথিবীতেই এখন স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে চিন্তা বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনারা বিশ্বকেপ্রাচীন ভারতীয় ‘পরস্পর পরিপূরক’ জীবন যাপনের পরম্পরা সম্পর্কে বলতে পারেন। যেখানেবিশ্ব সমাজ ভিন্ন ভিন্ন স্তর এবং বিচারধারায় বিভাজিত, সেখানে আপনারা ভারতের সবাইকেসঙ্গে নিয়ে চলার সমন্বয়ধর্মী দর্শন ‘সবার সঙ্গে সবার উন্নয়ন’-এর উদাহরণ দিতেপারেন। যেখানে বিশ্বে সন্ত্রাসবাদ ও মৌলবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তা বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেখানেবিশ্বকে ভারতীয় সংস্কৃতি ‘সর্ব পন্থ সমভাব’-এর বার্তা দিতে পারেন।
বন্ধুগণ,
আপনারা সবাই জানেন যে, ২০১৯ সালে এলাহাবাদের প্রয়াগ-এ কুম্ভমেলা আয়োজিতহবে। আমাদের সকলের জন্য এটা গর্বের বিষয় যে, সম্প্রতি কুম্ভমেলা ইউনেস্কো’র ‘মানবসভ্যতার অধরা সাংস্কৃতিক পরম্পরা’ তালিকায় স্থান পেয়েছে। ইতিমধ্যেই উত্তর প্রদেশসরকার এই মহাসমারোহ আয়োজনে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। আমার অনুরোধ যে, আপনারাআগামী বছর এই প্রয়াগ দর্শনের প্রস্তুতি নিয়ে ভারতে আসুন। প্রতিবেশী ওবন্ধুবান্ধবদেরও আপনারা এই মহা আয়োজনের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলবেন, আপনাদের সঙ্গেতাঁদেরকেও আনবেন, যাতে তাঁরা ভারতীয় সংস্কৃতির এই ঐতিহ্য সম্পর্কে পরিচিত হন।
ভাই ও বোনেরা,
বিশ্ববাসীর সঙ্গে এখন বেশ কিছু বড় প্রতিস্পর্ধা রয়েছে। যেগুলির মোকাবিলায়গান্ধীজির দর্শন আজও প্রাসঙ্গিক। অহিংসা এবং সত্যাগ্রহের পথে যে কোনও বিবাদ মেটানোযায়। সন্ত্রাসবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য বিশ্ববাসীর সামনে সর্বোত্তমউপায় হ’ল গান্ধীজির দর্শন এবং ভারতীয় মূল্যবোধের স্মরণাপন্ন হওয়া।
বন্ধুগণ,
এক উন্নত ভারত নির্মাণের জন্য নতুন ভারতের স্বপ্ন সাকার করার স্বার্থে আমরাআপনাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। এই সম্মেলনে আমরা আপনাদেরঅভিজ্ঞতা থেকে উপকৃত হতে চাই। ‘নতুন ভারত’-এর উন্নয়ন সম্পর্কে আপনাদের জানাতে ওযুক্ত হতে চাই। আপনারা যে দেশেই থাকুন না কেন, এই উন্নয়ন যাত্রায় আপনাদেরকেওঅংশীদার করে তুলতে চাই।
বন্ধুগণ,
একবিংশ শতাব্দীকে এশিয়ার শতাব্দী বলা হচ্ছে। এক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবেই ভারতগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই ভূমিকার প্রভাব ভারতের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রভাবআপনারা যেখানেই থাকুন না কেন অনুভব করবেন। ভারতের ক্রমবর্ধমান অর্থ ব্যবস্থা,ক্রমবর্ধমান শক্তি দেখে যখন আপনাদের মাথা উঁচু হবে, তখন আমরা আরও বেশি পরিশ্রমকরার জন্য প্রেরণা পাব।
ভাই ও বোনেরা,
ভারত সর্বদাই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে। আমরা কোনওদেশের প্রতি নিজেদের নীতিকে লাভ-লোকসানের দাঁড়িপাল্লায় পরিমাপ করিনি। আমরা সেইসম্পর্ককে মানবিক মূল্যবোধের প্রিজম-এর মাধ্যমে দেখেছি।
আমাদের অন্য দেশকে উন্নয়ন সামগ্রী প্রদানের মডেলও ‘দেওয়া ও নেওয়া’রভিত্তিতে গড়ে ওঠেনি। গ্রহীতা দেশগুলির প্রয়োজনীয়তা এবং অগ্রাধিকারই এক্ষেত্রেসর্বাগ্রে বিবেচিত হয়। আমরা কোনও দেশের কাঁচামাল শোষণ করার চিন্তা থেকে কোনওপদক্ষেপ নিই না, অন্য কোনও দেশের ভূমি দখলের কথাও আমরা ভাবি না। আমরা সর্বদাই সামর্থ্যেরবিকাশ এবং সম্পদ উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিই, তা সে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক হোক কিংবাবহুদেশীয় মঞ্চ হোক, কমনওয়েথ হোক কিংবা ইন্ডিয়া-আফ্রিকা শিখর সম্মেলন, ফোরাম ফরইন্ডিয়া পেসিফিক আইসল্যান্ড কো-অপারেশন – প্রতিটি মঞ্চেই আমরা প্রত্যেককে সঙ্গেনিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। আসিয়ান দেশগুলির সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককেআমরা আরও নিবিড় করেছি। ভারত-আসিয়ান সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কতটা উজ্জ্বল, তার নিদর্শনকিছুদিন পরই আমাদের প্রজাতন্ত্র দিবসে গোটা বিশ্ব দেখতে পাবে।
বন্ধুগণ,
ভারত সর্বদাই গোটা পৃথিবীতে সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ,পারস্পরিক সহযোগ এবং সৌভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখার পক্ষে। সেই একই সূত্র আপনাদেরজনপ্রতিনিধিরূপে নিজের নিজের ভোটারদের সঙ্গেও যুক্ত রাখে।
আমরা চাই যে, ভারত সর্বদাই সারা পৃথিবীতে সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধির ক্ষেত্রেঅবদান রাখবে, এটাই আমাদের অঙ্গিকার।
বন্ধুগণ,
আমাদের নিমন্ত্রণ গ্রহণ করে, নিজেদের কর্মব্যস্ত জীবন থেকে কিছু অমূল্যমুহূর্ত বের করে এখানে আসার জন্যে, আমি আরেকবার আপনাদের হৃদয় থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।আমার বিশ্বাস, আপনাদের সক্রিয় সহযোগিতায় এই সম্মেলন সফল হবে!
আমি আশা করি, আগামী বছর প্রবাসী ভারতীয় দিবসে আপনাদের সবার সঙ্গে আরেকবারসাক্ষাতের সুযোগ হবে। অনেক অনেক ধন্যবাদ!!! জয় হিন্দ!!!