উত্তর প্রদেশে ৬০ হাজার কোটি টাকার ৮১টি প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী
একটি দরদী সরকার হিসাবে আমাদের উদ্দেশ্যই হল সাধারণ মানুষের জীবনের দুঃখ-দুর্দশাকে লাঘব করে তাঁদের জীবনযাত্রাকে আরও সহজ করে তোলা: প্রধানমন্ত্রী মোদী
বর্তমান সরকারের অধীনে উত্তর প্রদেশে প্রকল্পগুলি মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যেই যে গতিতে এগিয়ে গেছে, তা এক কথায় অভূতপূর্ব: প্রধানমন্ত্রী মোদী
এই সমস্ত প্রকল্প থেকে একদিকে যেমন বহু নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, অন্যদিকে তেমনই সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ নানাভাবে উপকৃতও হবেন: প্রধানমন্ত্রী মোদী
ভদ্র মহিলা ও ভদ্র মহোদয়গণ,
ভগবান শিবের প্রিয় শ্রাবণমাস শুরু হয়েছে। দেশের নানা প্রান্ত থেকে শিভ ভক্তরা বাঁক কাঁধে নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে। বলা যেতে পারে, এখন থেকে দীপাবলী পর্যন্ত উৎসবের মরশুম। আগামী উৎসবের দিনগুলির জন্য আপনাদের সকলকে এবং দেশবাসীকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
বন্ধুগণ, উৎসবের পাশাপাশি দেশের বড় অংশে এখন ভালো বৃষ্টি হচ্ছে। বর্ষার আশীর্বাদে চাষবাস, অর্থ ব্যবস্থা আশায় ভরপুর। কিন্তু ভারী বর্ষার ফলে অনেক জায়গায় মানুষের সমস্যাও হচ্ছে। সরকার সমস্ত পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে। রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে মিলে সঙ্কটাপন্ন দেশবাসীকে সাহায্য সুনিশ্চিত করা হয়েছে।
বন্ধুগণ, একটি সংবেদনশীল সরকার হিসাবে সাধারণ মানুষের জীবনকে সঙ্কটমুক্ত, সরল ও সুগম করে তোলা রাজ্য সরকারগুলির প্রাথমিক দায়িত্ব এবং আমাদেরও একমাত্র উদ্দেশ্য। বিগত চার বছরে এই ভাবনা নিয়ে আমরা এগিয়ে চলেছি এবং আজ এখানে লক্ষ্ণৌর এই সভাগৃহে একত্রিত হওয়াও এই প্রক্রিয়ার একটি অংশ। গতকালও এখানে লক্ষ্ণৌ নগরীকে স্মার্ট এবং উন্নত পরিষেবাসম্পন্ন গড়ে তোলার জন্য আয়োজিত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের শহর এবং শহর সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের শিলান্যাস আর গরিব গৃহহীন ভাই-বোনদের হাতে তাঁদের নিজস্ব বাড়ির চাবি তুলে দেওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। আর আজ অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে উত্তর প্রদেশের প্রতিটি প্রান্তকে উন্নত করতে, পরিবর্তন আনার জন্য এখানে আজ আমরা সবাই মিলে সংকল্প গ্রহণ করে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছি।
বন্ধুগণ, পাঁচ মাসের মধ্যে এই দ্বিতীয়বার শিল্প জগতের সঙ্গে যুক্ত বন্ধুদের সঙ্গে লক্ষ্ণৌতে দেখা হচ্ছে। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে ইউপি বিনিয়োগকারী শিখর সম্মেলনের জন্যও আমি এসেছিলাম। আর আমাকে বলা হয়েছে যে, ঐ শিখর সম্মেলনের সময় ইউপি-তে ৪ লক্ষ ২৫ হাজার কোটিরও বেশি বিনিয়োগের ইচ্ছা প্রকাশ করা হয়েছে। আর আমি আনন্দিত যে, সেই সংকল্পের বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আজ একটি বড় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
আমাদের সতীশবাবু না জানি কেন আজ সংকোচ নিয়ে কথা বলছিলেন। অত্যন্ত নম্রতা এবং আবেগ নিয়ে বলছিলেন, ৬০ হাজার, মাত্র ৬০ হাজার কোটি! আপনার কাজ করার খিদে বেশি, আমার তা ভালো লাগছে, কিন্তু আমি দীর্ঘকাল মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে রাজ্যের শিল্পোন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। ৬০ হাজার কোটি কম নয়। ৬০ হাজার কোটি – অনেক টাকা। আপনি বুঝতে পারছেন না যে কতটা সাফল্য এসেছে।
আমি এখানকার অফিসারদেরকেও কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনারা অসাধারণ কাজ করেছেন। আমি জানি যে, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কেমন ধরণের প্রতিবন্ধকতা আসে। যে কোনও একটি বিষয় আদালতে চলে গেলে বছর দুয়েক কাজ আটকে যায়, পরিবেশ বিভাগের অনুমোদন পেতে সময় লাগে, আর কোনও বিষয় নিয়ে যদি খবরের কাগজ লিখতে শুরু করে, তা হলে তো সরকারও ভয় পেয়ে যায়। দ্বিধায় পড়ে যায়, কোনও সংস্থাকে কাজ করতে দেওয়া হবে কি হবেনা, কারণ প্রতিযোগী সংস্থার লোকেরা নানারকম খেলা খেলতে থাকে। এই সমস্ত সঙ্কট নিরসন করে পাঁচমাসের মধ্যে এই অগ্রগতি, ৬০ হাজার কোটি টাকা পুঁজি নিবেশের কাজ শুরু হওয়া – একটি অদ্ভুত সফলতা মশাই। আমি অনুভব করতে পারি বলেই বলছি। আপনাদের পুরো টিমকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। আমি সেই কৃষকদেরও ধন্যবাদ জানাই, যাঁরা প্রয়োজনীয় জমি দিয়েছেন। আমি সমস্ত সাধারণ কর্মচারি, সেখানকার পাটোয়ারি যিনি অনাবশ্যক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেননি – সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। দেশ পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রী থেকে পাটোয়ারি প্রত্যেকের ভূমিকা রয়েছে। সেজন্য এত কম সময়ে সাফল্য পেতে মুখ্যমন্ত্রী থেকে পাটোয়ারি পর্যন্ত, গোটা টিম একই লক্ষ্য স্থির করে কাজ করে চলেছেন।
আমি খুশি যে, আপনারা এইসব কিছু কোনও ব্যক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি। আপনারা সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য নীতি প্রণয়ন করেছেন। সাদা-কালো অক্ষরে সবকিছু অনলাইনে দেখা যায়, আর তা দেখে বুঝে কারও যদি মনে হয় যে তিনি পারবেন, তাহলেই তিনি যুক্ত হবেন। সেজন্য নীতি মেনে চলা রাজ্য উত্তরপ্রদেশের এই সফলতা, ৬০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ একটি অদ্ভুত সাফল্য। আমি দীর্ঘকাল ধরে এই ধরণের কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আমি জানি এতে কতটা উদ্যোগ নিয়ে কেমন পরিশ্রম করতে হয়, কতজনের অনুমোদন নিতে হয়, বকা খেতে হয়। কিন্তু রাজ্যের উন্নয়নের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকলে পথও বেরিয়ে আসে।
আমি ভারসাম্য দেখেও খুশি, দেখুন সাইকেলের টিউবে হাওয়া ভরার সময় মেশিনের মিটারে অমুক পর্যন্ত ভরলে সাইকেল ভালো চলে, কখনও টায়ারের কোনও অংশ হাল্কা হয়ে গেলে হাওয়া সেখানে গিয়ে বেশি ফুলে উঁচু হয়ে যায়, সাইকেলের চাকা ঘোরে না। আমি আনন্দিত যে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সর্বাঙ্গীন উন্নয়নের দিকে লক্ষ্য রেখেছেন। উত্তর প্রদেশের প্রত্যেক ভূ-ভাগকে সুযোগ দিয়ে, উন্নয়নে ভারসাম্যের প্রয়োজন। শুধু নয়ডা, গাজিয়াবাদের উন্নয়ন করলে চলবে না, এই দুই শহর বিশ্বমানের উন্নয়নে এগিয়ে। এখানে যেভাবে গোটা রাজ্যের উন্নয়ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জনগণের সামনে সূক্ষাতিসূক্ষভাবে বলা হয়েছে, যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা প্রশংসার যোগ্য।
কেউ কেউ এই অনুষ্ঠানকে ‘গ্রাউন্ড ব্রেকিং সেরিমোনি’ বলছেন। কিন্তু এই সব উদ্যোগ দেখে আমি একে ‘রেকর্ড ব্রেকিং সেরিমোনি’ বলতে পারি। পুরনো পদ্ধতি বদলে এত কম সময়ে যেভাবে উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, আগে কখনও উত্তরপ্রদেশে এমন কাজ হয়েছে বলে আমার মনে হয় না, কেউ উঠে দাঁড়িয়ে বলতে পারবেন, আজ যে আস্থার আবহ গড়ে উঠেছে তা এ রাজ্যের জন্য অভিনব ব্যাপার। আমি খুশি যে আদিত্যনাথ যোগীর নেতৃত্বে সরকার বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে নিয়মিত সম্পর্ক বজায় রেখেছে আর তাঁদের আগ্রহকে বিনিয়োগে পরিণত করার আবহ তৈরি করেছে। অনলাইন মউ, ট্র্যাকার হোক কিংবা অনুমোদনের জন্য ‘নিবেশ মিত্র’ নামক সিঙ্গল উইন্ডো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং পরিবর্তিত কর্মসংস্কৃতি ইউপি-তে ব্যবসার অনুকূল পরিবেশের পরিচায়ক। কর্মসংস্থানের সুযোগ, ব্যবসার পরিবেশ, ভালো সড়ক ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত পরিমাণ বিদ্যুৎ – উন্নততর বর্তমান ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতীক। আজকের এই আয়োজন ইউপি-তে ভরসার প্রতীক, উত্থানের প্রতীক, উন্নয়নের প্রতীক। আশা করি, যে গতিতে কাজ এগোচ্ছে, তাতে উত্তরপ্রদেশকে এক ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির রাজ্যে পরিণত করে তুলতে বেশি সময় লাগবে না। উত্তরপ্রদেশের শিল্প জগতের সমস্ত অংশগ্রহণকারীদের দায়বদ্ধতার জন্য আমি অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
আমরা তেমন মানুষ নই, যাঁরা শিল্পপতিদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে ভয় পান, অথচ আপনারা এমন নেতাদের দেখেছেন, যারা শিল্পপতিদের সঙ্গে ফটো তুলতে রাজি হতেন না, অথচ এমন কোনও শিল্পপতি নেই যাদের বাড়িতে গিয়ে তাঁরা সাষ্টাঙ্গ প্রণাম করেন নি! এখানেই শ্রদ্ধেয় অমর সিংহ বসে আছেন, তাঁর কাছে সমস্ত হাঁড়ির খবর আছে। কিন্তু নিয়ত সাফ থাকলে, সৎ উদ্দেশ্য হলে কারও পাশে দাঁড়ালে দুর্নীতির দাগ লাগে না। মহাত্মা গান্ধীর জীবন এত পবিত্র ছিল যে, তাঁর বিরলার বাড়িতে গিয়ে থাকতেও সঙ্কোচ হয়নি। কিন্তু যাঁরা জনসমক্ষে দেখা না করে, পর্দার পেছনে সবকিছু করেন, তাঁদের ভয় পাবার কারণ থাকে। দেশ গঠনে একজন কৃষক, কারিগর, ব্যাঙ্কার, বিনিয়োগকারী, সরকারি কর্মচারী, মজুরদের পরিশ্রম যতটা কাজে লাগে, তেমনই রাষ্ট্র নির্মাণে একজন শিল্পপতির ভূমিকাও কম নয়। আমরা যদি তাঁদের অপমানিত করি, চোর-ডাকাত বলিন – এটা অন্যায়। হ্যাঁ, অন্যায় করলে তাঁকে দেশ থেকে বিতাড়িত করতে হবে অথবা জেলে ভরতে হবে। কিন্তু আমাদের পূর্ববর্তীরা এসব করতেন না, পর্দার পেছনে অনেক কিছু হ’ত, কে কাঁর বিমানে ঘুরতেন – তা কি আমরা জানি না!
সেজন্য দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রত্যেকের অবদান ও সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। আর দেশের ১২৫ কোটি নাগরিককে সম্মান দেওয়া আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব। আজ এখানে যে প্রকল্পগুলির সূত্রপাত হ’ল এগুলিতে ভবিষ্যতে ২ লক্ষেরও বেশি নবীন প্রজন্মের মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এছাড়া, যেখানে এই কারখানা স্থাপন হবে, সেখানকার স্থানীয় মানুষদের রোজগার অপ্রত্যক্ষভাবে বৃদ্ধি পাবে। ফলে, এই প্রকল্পগুলি থেকে কৃষক, শ্রমিক, যুবক-যুবতী প্রত্যেকেই উপকৃত হবেন।
বন্ধুগণ, আমি ইউপি-র ২২ কোটি জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে, তাঁদের ভালোবাসাকে সুদ সমেত ফিরিয়ে দেব। আজ এখানে যে প্রকল্পগুলির শুভ সূচনা হ’ল, সেগুলি সেই প্রতিশ্রুতি পূরণের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই প্রকল্পগুলি উত্তর প্রদেশের আর্থিক এবং শিল্প ক্ষেত্রে ভারসাম্যহীনতা দূর করতে সহায়ক হবে। কারণ, এই প্রকল্পগুলি রাজ্যের কিছু বিশেষ ক্ষেত্রেই সীমিত নেই, এগুলির বিস্তার নয়ডা, গ্রেটার নয়ডা, মীরাট, মুজাফফরনগর থেকে শুরু করে ঝাঁসি, হরদোই, আমেথি, রায়বেরিলি, জৌনপুর, মির্জাপুর, গোরখপুর পর্যন্ত বিস্তারিত। এই প্রকল্পগুলি ডিজিটাল ইন্ডিয়া এবং মেক ইন ইন্ডিয়া অভিযানকে নতুন মাত্রা প্রদানের লক্ষ্যে অনেক বড় পদক্ষেপ বলে পরিগণিত হবে।
গোটা উত্তর প্রদেশে ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছে দিতে অপটিক্যাল ফাইবার পাতা কিংবা তথ্য প্রযুক্তি কেন্দ্র স্থাপন করার কাজ, এই ডিজিটাল পরিকাঠামো উত্তর প্রদেশের উন্নয়নকে নতুন লক্ষ্যে পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি নবীন প্রজন্মের সামনে নতুন নতুন সুযোগ তুলে ধরবে। এগুলি আমাদের সরকারের সেই ব্যাপক পরিকল্পনার অংশ, যার মাধ্যমে আমরা ডিজিটালাইজেশনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জীবনকেও সহজ করে তুলতে চাই। একটি এমন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই, যেখানে কোনও প্রকার বৈষম্য থাকবে না। কর্মপ্রক্রিয়ায় গতি থাকবে, সংবেদনশীলতাও থাকবে। আপন-পর, ছোট-বড় বাছবিচার না করে সবার সঙ্গে সমান ব্যবহার; অর্থাৎ সব মিলিয়ে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’।
বন্ধুগণ, পরিষেবাকে দ্রুত এবং স্বচ্ছ করে তুলতে ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া অভিযান’ এখন ব্যাপকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। গ্রামে গ্রামে প্রসারিত ৩ লক্ষেরও বেশি কমন সার্ভিস সেন্টারগুলি আজ আমাদের গ্রামীণ জীবনকে বদলে দিচ্ছে। টিকিট বুকিং, বিদ্যুৎ, টেলিফোনের বিল, টেলি মেডিসিন, জনঔষধি, আধার পরিষেবার মতো অসংখ্য পরিষেবার জন্য এখন গ্রামের মানুষকে আর জেলা বা মহকুমা সদরে সরকারি অফিসে ঘুরে ঘুরে জুতোর শুকতলা ক্ষয় করতে হয় না। গ্রামের কমন সার্ভিস সেন্টারের মতো শহরগুলিতে চালু হওয়া ফ্রি ওয়াইফাই হটস্পট, সস্তা মোবাইল ইন্টারনেট, গরিব ও মধ্যবিত্তদের জীবনকে সহজ করে তুলতে সাহায্য করছে।
বন্ধুগণ, তথ্য প্রযুক্তি শিল্প অনেক বছর ধরেই আমাদের বিশেষ শক্তি হয়ে উঠেছে। আজ তথ্য প্রযুক্তি রপ্তানির মাধ্যমে দেশ রেকর্ড পরিমাণ অর্থ লাভ করছে। ৪০ লক্ষেরও বেশি মানুষ এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু দেশের এই শক্তি এখনও পর্যন্ত মেট্রো শহরগুলি ও অন্যান্য বড় শহরগুলির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আমাদের সরকার এই শক্তিকে দেশের ছোট ছোট শহর ও গ্রামগুলিতে পৌঁছে দেওয়ার সংকল্প নিয়ে কাজ করছে।
বন্ধুগণ, বিচ্ছিন্নভাবে ভাবার সরকারি পরম্পরা এখন তামাদি হয়ে গেছে। এখন ঢিমেতেতালের দিন শেষ করে সমাধানগুলিকে আরও সুসংহত করার উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে। সরকারের একটি প্রকল্পের সঙ্গে অন্যটির সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন করা হচ্ছে। উদাহরণ হিসাবে আমি ডিজিটাল ইন্ডিয়া অভিযান এবং মেক ইন ইন্ডিয়া অভিযানের সম্পর্কের কথা বলতে পারি। আজ দেশে ডিজিটাল ইন্ডিয়া অভিযানের ফলস্বরূপ ডিজিটাল লেনদেন প্রসারের পেছনে সস্তা দরে মোবাইল ফোন কিনতে পারা একটি বড় কারণ। ভারতে মোবাইল ফোন উৎপাদন শুরু হওয়ায় মোবাইল ফোনের দাম হ্রাস পেয়েছে। এখন ভারত মোবাইল ফোন নির্মাণের হাব হয়ে উঠেছে। বিশ্বে মোবাইল ফোন উৎপাদনে আমরা ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় স্থানে পৌঁছে গেছি। আর এই নির্মাণ বিপ্লবের নেতৃত্ব দিচ্ছে উত্তর প্রদেশ। আজ এই রাজ্যে ৫০টিরও বেশি মোবাইল ফোন নির্মাণকারী কারখানা চালু হয়েছে। সম্প্রতি বিশ্বের সর্ববৃহৎ মোবাইল ফোন উৎপাদনকারী কারখানাও উত্তর প্রদেশে চালু হয়েছে। আজও এখানে যে তিনটি নতুন কারখানার শিলান্যাস হ’ল, তার মধ্যে মোবাইল ফোন নির্মাণ সংশ্লিষ্ট কারখানা রয়েছে।
বন্ধুগণ, বিগত চার বছরে সরকারের অনেক সিদ্ধান্তের ফলেই আজকের এই আবহ গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত দেশে নির্মাণ শিল্প গড়ে তোলার জন্য অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত কিংবা সকল প্রক্রিয়াকে সহজ করার সিদ্ধান্ত এই সবকটি শিল্প স্থাপনের জন্য অনুকূল পরিবেশ গড়ে তুলতে সহায়ক হয়ে উঠেছে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে জিএসটি সংসদে ঝুলে ছিল। আমরা সেটিকে বাস্তবায়িত করে দেশকে করের জাল থেকে মুক্তি দিতে পেরেছি, আর এর দ্বারাও শিল্প জগৎ উপকৃত হয়েছে।
গত বছর দেশে নির্মাণ শিল্পকে উৎসাহ প্রদানের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সরকারি অফিসে ক্রয়ের ক্ষেত্রে মেক ইন ইন্ডিয়া পণ্যকে অগ্রাধিকার প্রদানের আদেশ দিয়ে সরকারের সমস্ত বিভাগ ও সংস্থানগুলির প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনার ক্ষেত্রে অন্তর্দেশীয় উৎস থেকে কিনতে বলা হয়েছে। মেক ইন ইন্ডিয়াকে গুরুত্ব দেওয়ার ফলে এই আদেশ দ্বারা দেশের ক্ষুদ্র শিল্পগুলি লাভবান হচ্ছে।
গত এক বছরে আদিত্যনাথ যোগীর নেতৃত্বে যে পরিবর্তন এসেছে, নতুন নতুন নীতি প্রণয়ন হয়েছে, অপরাধ নিয়ন্ত্রিত হয়েছে, তার ফলে, উত্তর প্রদেশ দ্বিগুণ লাভবান হয়েছে। বন্ধুগণ, বিজেপি সরকার ‘হলিস্টিক ভিশন, ইনক্লুসিভ অ্যাকশন – হলিস্টিক ভিশন, ইনক্লুসিভ অ্যাকশন’ – এই দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে কাজ করছে।
এই মঞ্চ থেকে এখানে উপস্থিত শিল্প জগতের সমস্ত বন্ধুদের এবং সকল বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, আমাদের এই উন্নয়নের যাত্রা আমার জন্য সূত্রপাত মাত্র। এখনও অনেক সফর বাকি, দ্রুতগতিতে ছুটতে হবে। আপনারাও রাষ্ট্র নির্মানে এক একজন গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। আপনাদের সংকল্প দেশের কোটি কোটি যুবক-যুবতী স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করবে। এই স্বপ্নগুলিকে বাস্তবায়িত করতে যে সিদ্ধান্তই নিতে হোক না কেন, ভবিষ্যতেও আমরা তেমনই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ইচ্ছা রাখি।
পরিকাঠামো সংশ্লিষ্ট আমাদের বড় প্রকল্পগুলি যেভাবে যেভাবে তৈরি হতে থাকবে, দেশে বিনিয়োগের প্রক্রিয়াও আরও সহজ হতে থাকবে। বিশেষ করে, পরিবহণ খরচ আরও অনেক কমে যাবে, পরবর্তী প্রজন্মের পরিকাঠামোর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শিল্প জগৎ-ও অনেক লাভবান হবে।
বন্ধুগণ, তথ্য প্রযুক্তি, কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স, ইলেক্ট্রনিক্স ম্যানুফ্যাকচারিং এর জন্যে উত্তরপ্রদেশে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। এখানকার ক্ষুদ্র-অতি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্রও আগামীদিনে এই নতুন পরিকাঠামো দ্বারা উপকৃত হবে। এখানকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, ছোট এবং মাঝারি শিল্পপতিদের আমার অনুরোধ এখনও যারা নগদ লেনদেন করছেন, তাঁরা ডিজিটাল লেনদেনে এগিয়ে আসুন।
বন্ধুগণ, স্থায়ী উন্নয়ন এবং নিরন্তর প্রচেষ্টাই ১২৫কোটি দেশবাসীর স্বপ্ন বাস্তবায়িত করবে। স্থায়ী উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শস্তা ও নিরন্তর বিদ্যুৎ জীবনের মৌলিক প্রয়োজন, কৃষি ও শিল্পের জন্য বিদ্যুৎ ততটাই অনিবার্য। তাই সরকার বিদ্যুতকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। এখন দেশ পারম্পরিক বিদ্যুৎ থেকে পরিবেশ-বান্ধব বিদ্যুতের দিকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। বিশেষ করে, সৌরশক্তিকে সরকার বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছে। আমাদের দেশের উদ্যোগে গড়ে ওঠা আন্তর্জাতিক সৌর সংঘ এখন সারা পৃথিবীর সমর্থন পাচ্ছে। এই সৌরশক্তির ক্ষেত্রেও উত্তর প্রদেশ একটি বড় হাব হয়ে উঠবে। এই তো কয়েক মাস আগে আমি মির্জাপুরে একটি বড় সৌরশক্তি প্রকল্প উদ্বোধন করেছিলাম, আজ এখানে আরেকটি প্রকল্পের শিলান্যাস হয়েছে।
ভাই ও বোনেরা, আজ শুধু ভারত নয়, আফ্রিকা সহ বিশ্বের অনেক উন্নয়নশীল দেশও সৌর প্রযুক্তি ও সৌর পাম্পের মতো যন্ত্রেরও প্রয়োজন রয়েছে। আপনাদের অনুরোধ জানাই যে, পরিবেশ-বান্ধব শক্তি ক্ষেত্রে ভারতে গড়ে ওঠা অভূতপূর্ব পরিবেশ আর বিশ্ব পরিস্থিতির সুযোগ নিতে শিল্পপতি বন্ধুরা এগিয়ে আসুন।
বন্ধুগণ, বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে শুরু করে প্রত্যেক বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কাজ আজ অভূতপূর্ব গতিতে এগিয়ে চলেছে। ২০১৩-১৪ সালে দেশে শক্তি ঘাটতি ছিল ৪.২ শতাংশ। বিগত চার বছরে এখন আমাদের জাতীয় শক্তি ঘাটতি ১ শতাংশেরও কম। যে কয়লা এক সময়ে দেশে অনেকের সাদা জামায় কালি ছেটানোর কারণ হয়ে উঠেছিল, তাও আজ রেকর্ড পরিমাণ খনন হচ্ছে। আজ কয়লার অভাবে কোথাও পাওয়ার গ্রিড ফেল করে না।
শুধু তাই নয়, বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে যে সংস্কার করা হয়েছে, তার দ্বারা দেশ এবং দেশের সাধারণ মানুষের হাজার হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে।
‘উদয় যোজনা’ বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলিতে নতুন প্রাণ সঞ্চারিত করেছে। ‘উজালা’র মাধ্যমে বাড়িতে বাড়িতে এলইডি বাল্ব লাগানো হয়েছে। তার মাধ্যমে আমরা যখন সরকারের দায়িত্ব নিয়েছি, তখন ৩০০-৪৫০ টাকা দিয়ে একেকটি এলইডি বাল্ব কিনতে হ’ত। আজ এর দাম ৪০-৪৫ টাকা এবং ইতিমধ্যে সারা দেশে ১০০ কোটি এলইডি বাল্ব বিক্রি হয়েছে। শুধু তাই নয়, ৫০০-রও বেশি নগর প্রশাসন ৬২ লক্ষেরও বেশি এলইডি রাস্তার আলো লাগিয়েছে। তাঁদের বার্ষিক খরচে অনেক সাশ্রয় হয়েছে। ফলে, বিগত তিন বছরে দেশে ৫০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে।
বন্ধুগণ, আজ দেশে বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া অনেক সহজ হয়েছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কে ‘সহজে বিদ্যুৎ প্রাপ্তি’ র্যাঙ্কিং-এ ভারত বিগত চার বছরে প্রায় ৮২ ধাপ এগিয়েছে, এতটাই উন্নতি হয়েছে। ইতিমধ্যে দেশে প্রতিটি গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, আগামী বছর মার্চ মাসের আগেই দেশের প্রত্যেক বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা দ্রুতগতিতে কাজ করছি।
আমি অবাক হই, যখন কিছু মানুষ বলেন, এখানে বিদ্যুৎ যায়নি ওখানে বিদ্যুৎ যায়নি – এসব। আরে মশাই, ৭০ বছর ধরে যে কাজ বাকি রয়েছে, মাত্র চার বছরে, সে কাজ আমরা প্রায় শেষ করেছি, কিছু তো বাকি থাকবেই। এবার প্রত্যেক বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার আগেই সেসব শূন্যস্থান পূরণ করা হবে। শুধু বিদ্যুৎ পৌঁছলেই হবে না, আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য ২৪ ঘন্টা অবাধ বিদ্যুৎ সরবরাহ। সেজন্য আমরা ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করা হচ্ছে।
আজ যে ঘাটমপুর – হাপুড় ট্রান্সমিশন লাইনের শিলান্যাস করা হ’ল, তাও এই প্রকল্পেরই অংশ। উত্তর প্রদেশে পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে বিদ্যুৎ ট্রান্সমিশন ব্যবস্থা কতটা দুর্বল ছিল, তা আপনারা জানেন। আদিত্যনাথ যোগীর নেতৃত্বাধীন সরকার সেই ট্রান্সমিশন ব্যবস্থা নবীকরণ করেছে।
বন্ধুগণ, উত্তর প্রদেশ থেকে দীর্ঘকাল সংসদে প্রতিনিধিত্ব করা আমাদের শ্রদ্ধেয় দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী বলতেন যে, তিনি এমন ভারত দেখতে চান, যা হবে সমৃদ্ধ, সক্ষম ও সংবেদনশীল। যেখানে শহর ও গ্রামের মধ্যে পার্থক্য থাকবে না। যেখানে কেন্দ্র ও রাজ্যে শ্রম ও পুঁজির মধ্যে এবং প্রশাসন ও নাগরিকের মধ্যে দূরত্ব থাকবে না!
শ্রদ্ধেয় অটল বিহারী বাজপেয়ী শুধু স্বপ্ন দেখেই ক্ষান্ত থাকেন নি, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারের ‘রোড ম্যাপ’-ও স্পষ্ট ছিল। তিনি কখনও বলেছিলেন, সড়ক ব্যবস্থা হাতের রেখার মতো। এই ভাবনার পরিণামস্বরূপ তিনি পরিকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছেন। তাঁর সেই ভাবনাকে আমরা একবিংশ শতাব্দীর প্রয়োজন অনুসারে পরবর্তী পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্যে যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।
উত্তর প্রদেশে পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেসওয়ের মতো দেশের সর্ববৃহৎ এক্সপ্রেসওয়ে, বুন্দেলখন্ডে ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডর স্থাপন, এরকম অনেক প্রকল্প নির্মাণের কাজ আমরা দ্রুতগতিতে সম্পন্ন করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। বন্ধুগণ, বিশ্বের যে কোনও স্থানে যত ভালো পরিষেবা রয়েছে, তা আমাদের নবীন প্রজন্ম তথা ১২৫ কোটি ভারতবাসীকে পৌঁছে দিতে চাই। কোটি কোটি মানুষের আশা-আকাঙ্খা গণঅংশীদারিত্বের মাধ্যমে সম্পন্ন করাই আমাদের পথ, নতুন ভারতের রোড ম্যাপ। উত্তর প্রদেশ তথা দেশের জন্য আপনারা সকলে যা করছেন, সেজন্য আপনাদেরকে হৃদয় থেকে অভিনন্দন জানাই।
কয়েক মাস আগে আমি মুম্বাই গিয়েছিলাম, সেখানে মুম্বাই শিল্প জগতের নেতাদের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। অনেকেই এরকম শিল্প জগতের মানুষদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করেন কিন্তু প্রকাশ্যে বলার হিম্মত নেই। আমার আছে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আমি বলি, আপনারা এতো সম্পদশালী, এতো বড় শিল্প পরিচালনা করেন, ব্যবসা করেন, কিন্তু আমাদের দেশের কৃষিতে কর্পোরেট জগতের বিনিয়োগ মাত্র ১ শতাংশ; বিশ্বের কোনও দেশে এরকম নেই। আমি প্রায় অর্ধেক দিন তাঁদের সঙ্গে বসে আমাদের দেশের কৃষিতে বড় কর্পোরেট হাউসগুলি কিভাবে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে পারে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি। যেমন – ট্রাক্টর নির্মাণ, ইউরিয়া উৎপাদন – এসব ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধি হলে কৃষকরা প্রত্যক্ষভাবে লাভবান হবেন। তাছাড়া আমি তাঁদের সঙ্গে কথা বলে কিভাবে কৃষিতে প্রযুক্তির প্রয়োগ বৃদ্ধি করা যায়, যেমন – গুদামঘর, হিমঘর, প্যাকেজিং ইত্যাদি মূল্য সংযোজনের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন ক্ষেত্র লাভবান হবে আর কৃষিতে বিনিয়োগ বাড়ানো যেতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করি। আমি তাঁদের অনুরোধ জানাই, যাতে এই বিষয়ে ব্রেন স্টর্মিং টিম গড়ে তুলে ভাবনাচিন্তা করেন – তা হলে কৃষকদের উৎপাদিত ফসল তাড়াতাড়ি নষ্ট হবে না, তাঁরা যথাসময়ে অধিক মূল্যে বিক্রি করতে পারবেন এবং কর্পোরেট সেক্টরও এই সাহায্যের বিনিময়ে তাঁদের রোজগার বৃদ্ধি করতে পারবে। একটু আগেই সূরীবাবু বলছিলেন যে, এখন আমরা দেশে যে ফল উৎপন্ন হয়, তা থেকে জুস তৈরি করে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে কৃষক যেমন লাভবান হবেন, তেমনই যাঁরা জুস পান করবেন, তাঁরাও লাভবান হবেন।
একথা বলার তাৎপর্য হ’ল আমাদের গ্রামীণ জীবনে আমরা এই শিল্পের সুফল কিভাবে নিয়ে আসব? আপনাদের ব্যবসার উন্নতির স্বার্থেই নিজেদের উৎপাদনকে গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে দেওয়া লাভজনক হবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, আজ যেমন ৬০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে চলেছে, তেমনই আরও সাফল্য আসবে। একটু আগেই আমাকে আদিত্যনাথ যোগী বলছিলেন, এর মধ্যে ৫০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পথে। আমি মনে করি যে, আপনারা সত্যিই খুব ভালো কাজ করছেন, সেজন্য আমি আপনাদের টিমকে আরেকবার অভিনন্দন জানাই।
আমার পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমি এই উত্তর প্রদেশের একজন নির্বাচিত সাংসদ হিসাবে উত্তর প্রদেশের উন্নয়নের খবরে অত্যন্ত আনন্দিত হই। উত্তর প্রদেশের উন্নয়ন সুনিশ্চিত করা আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তাই এক-দু’বার আসি কি ১৫ বার আসি, আমি আপনাদেরই মানুষ। আমি আসি না, আমি আপনাদেরই আছি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।