আজ যে শ্রদ্ধেয়ব্যক্তিরা সম্মানিত হলেন, তাঁদের সকলকে আমি অন্তর থেকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।প্রেস কাউন্সিলের পঞ্চাশবর্ষ পূর্তি হচ্ছে, কিন্তু মাঝে এমন সময় এসেছিল যখন প্রেসকাউন্সিলকে শেষ করে দেওয়া হয়েছিল। এমনও হতে পারে, সেই সময়কে বাদ দিয়ে দু’বছর পরআবার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করা হচ্ছে। এমনিতে সম্ভবত ১৯১৬ সালে সুইডেনে এই সংস্থারযাত্রা শুরু। তখন নাম ছিল কোর্ট অফ অনার ফর দ্য প্রেস। সেই নামই পরবর্তীকালেপরিবর্তিত হতে হতে প্রেস কাউন্সিল নামধারণ করেছে। এই প্রেস কাউন্সিল একটি স্বাধীনব্যবস্থা, এই ক্ষেত্রের স্বাধীনতা বজায় থাকলে জনগণের অভিব্যক্তির স্বাতন্ত্র্যবজায় থাকলে, যে কোনও সমস্যায় ঝাঁপিয়ে পড়ে তার সমাধান এবং সময়ানুগ পরিবর্তন সম্ভব।এক্ষেত্রে আগের চাইতে এখন অনেক বেশি সমস্যা ও জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়।
অনেক অগ্রজসাংবাদিকের হাতে সময় থাকতো, তাঁরা চিন্তাভাবনা করে লিখে তাঁদের রিপোর্ট ফাইল করেবাড়ি ফিরতেন। তারপরও মাথায় চিন্তা থাকতো, ডেস্কের চিফ-এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন,যদি কোনও শব্দ নিয়ে দ্বিধা থাকে, তিনি ছাপার আগের মুহূর্তেও ফোনে বদল করে নিতেনকিংবা তারও আগে কাগজের অফিসের সঙ্গে টেলিফোন যোগাযোগ না থাকলে তিনি নিজে মাঝরাতেকাগজের অফিসে গিয়ে সেটা শুধরে দিতেন, যাতে জনমনে তার কুপ্রভাব না পড়ে!
আজযাঁরা এই পেশায় রয়েছেন, তাঁদের এই সুযোগ নেই। অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ছুটতে হচ্ছে।সংবাদের স্পর্ধা, শিল্প সংস্থাসমূহের স্পর্ধার মুখোমুখি হয়ে তাঁদের জীবনে অনেকসংকট উৎপন্ন হয়। বক্তা তো যা বলার বলে দিয়েছেন, সম্প্রচারকারীরা সম্প্রচারও করেদিয়েছেন। এখন মুদ্রণ মাধ্যম ছাপবে, অবশ্য আজকাল মুদ্রণ মাধ্যমও অনলাইন পরিষেবাশুরু করেছে। অর্থাৎ কত দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। এই পরিবর্তিত সময়ে সংবাদ মাধ্যমকে এইধরনের প্রতিষ্ঠান কিভাবে সাহায্য করতে পারে, কিভাবে এগুলি এই পেশায় সকলপ্রতিবন্ধকতা দূর করতে পারে? প্রবীণ সাংবাদিকরা একত্রে বসে নতুন প্রজন্মের উপযোগীব্যবস্থা গড়ে তোলার পরামর্শ দিন। কারণ, এই মাধ্যম এমন একটি ক্ষেত্র, মহাত্মাগান্ধী বলতেন যে, অনিয়ন্ত্রিত লেখনী সংকট সৃষ্টি করতে পারে, কিন্তু বাইরেরনিয়ন্ত্রণ তো সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে। আর সেজন্যই এই সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথেবাইরের নিয়ন্ত্রণের কল্পনাও করা উচিৎ নয়।
স্বাধীনতা,তার অভিব্যক্তি, সেই আদর্শকে আঁকড়ে থাকা! কিন্তু পাশাপাশি অনিয়ন্ত্রিত অবস্থা,আমরা যতই স্বাস্থ্যবান হই না কন, তবুও মা বলেন, আরে ভালো করে খা! মা তো আর শত্রুনয়। কিন্তু মা না সতর্ক করে বাইরের কেউ করলে সেই মা-ই বলবেন, ভাই আপনি আমার ছেলেরভালোমন্দ চিন্তা করার কে? আমি তো রয়েছি!
যেকোনও ব্যবস্থাকে সামলাতে হয় সেই পরিবারের সদস্যদেরই। সরকারের নাক গলানো উচিৎ নয়।আপনারই একসঙ্গে বসে, কাউন্সিলের মতো ব্যবস্থার মাধ্যমে, বর্ষীয়ানদের অভিজ্ঞতাকেকাজে লাগিয়ে, তাঁদের পরামর্শকে আলোকবর্তিকা করে, সমাজের সর্বস্তরের মানুষের হিতেআমরা কেমনভাবে বর্তমান অবস্থা থেকে ভবিষ্যৎ ব্যবস্থায় বিবর্তিত হব? এটা যদিওঅত্যন্ত কঠিন কাজ, নিজেদের মধ্যে কারও সমালোচনা কেমন করে করি? কিন্তু বাইরের কেউসমালোচনা করলে আমরা সহ্য করব না, তাই কঠিন হলেও এই দায়িত্বটা নিজেদের কাঁধেই তুলেনিতে হবে।
আত্মবলোকনঅত্যন্ত কঠিন কাজ। আমার স্পষ্ট মনে আছে, আমি আগে যখন দিল্লিতে থেকে পার্টির সাংগঠনিককাজ করতাম, তখনই কান্দাহার কান্ড ঘটেছিল। তাঁদের কোনও দোষ নেই, তখন ভারতেবৈদ্যুতিন মাধ্যমের শৈশবস্থাই বলা যেতে পারে। তখন বৈদ্যুতিন মাধ্যমের দ্বারাপ্রভাবিত হয়ে অপহৃত যাত্রীদের আত্মীয়রা বিক্ষোভ মিছিল বের করেছিল, সরকারেরবিরুদ্ধে শ্লোগান দিচ্ছিল, প্রত্যেক সংবাদ মাধ্যম সেই বিক্ষোভের রিপোর্টিং-ওনিজেদের মতো করে সম্প্রচার করেছে। ফলে সন্ত্রাসবাদীদের প্রত্যয় ও সাহস বেড়ে যায়,আচ্ছা, এভাবেই দেখছি ভারতকে উত্তাল করে তোলা যেতে পারে, যা খুশি করিয়ে নেওয়া যেতেপারে! তখনই, আমি যতটা জানি, প্রায় সকল সংবাদ মাধ্যমের শীর্ষ সাংবাদিকরা একটিআলোচনায় বসেছিলেন। এতে প্রেস কাউন্সিলকে না জড়িয়ে তাঁরা নিজেরাই ইন-হাউস বসেনিজেদের আত্মসমালোচনা করেছিলেন। কে কোথায় ভুল করেছেন, কোথায় কোথায় সংবাদ সম্প্রচারনিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিজেদের অজান্তেই সন্ত্রাসবাদীদের প্রত্যয় জোরদার করেছে, কিভাবেসেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে, এই সব বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর তাঁরা কিছুজরুরি সিদ্ধান্ত নেন। অরুণজি এখানে বসে আছেন, তিনি জানেন তখন কী হয়েছিল!সিদ্ধান্তগুলি দেশের সংবাদ মাধ্যমে নতুন ঐতিহাসিক মোড়ে এনে দাঁড় করায়।
পরবর্তীমোড় ২৬/১১-র সময়, অর্থাৎ যখন মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়, আফগানিস্তানপ্রসঙ্গও তখন আবার আলোচিত হয়। তখনও বর্ষীা্য়ান সাংবাদিকরা ইন-হাউস বসে আত্মমন্থনকরেন কিন্তু কোনও পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন মত এত জোরদার ছিল যে সেই আলোচনা থেকেতাঁরা নির্দিষ্ট কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেননি। কিন্তু এই একসঙ্গে বসেআলোচনা-সমালোচনা আত্মমন্থনের প্রক্রিয়া অত্যন্ত ইতিবাচক পদক্ষেপ। কোনও সরকারআপনাদের এসব করতে বলেননি, আপনারা নিজেরাই আত্মসমীক্ষা করেছেন। এই সংবেদনশীলমানসিকতা, নেতৃত্ব সং বাদ মাধ্যমের রয়েছে, সারা বিশ্বের রয়েছে। ভুল হতে পারে, যে কোনও সিদ্ধান্তইভবিষ্যতে ভুল প্রমণিত হতে পারে; ভুলের ভিত্তিতে সংবাদ মাধ্যমে অত্যন্ত পরিণতমানুষেরা রয়েছে, যাঁরা নিরন্তর আত্মমন্থনের মাধ্যমে ব্যবস্থার ত্রুটিগুলি চিহ্নিতকরে সেগুলিকে সমূলে উৎপাটন করতে চান, সংবাদ মাধ্যমকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে চান।আমি আপনাদের এই প্রয়াসকে অত্যন্ত ইতিবাচক বলে ভাবি, বাইরের নিয়ন্ত্রণ নয়, বাইরেরনিয়মে পরিস্থিতি বদলাবে না।
‘জরুরি অবস্থা’র সময় প্রেস কাউন্সিলকে শেষ করে দেওয়াহয়েছিল। একে এতই চাপের মধ্যে ফেলা হয়েছিল যে প্রয় দেড় বছর সংস্থাটি বন্ধ ছিল।তারপর ১৯৭৮ সালে মোরারজী ভাই দেশাইয়ের নেতৃত্বে জনতা সরকার ক্ষমতায় এলে এই সংস্থারপুনর্জন্ম হয়। সংবাদ মাধ্যমের প্রতি সরকারের উদার মনোভাবই এই সংস্থাকে পুনর্জীবিতকরে তোলে। সেই সময় যেভাআবে প্রেস কাউন্সিল গড়ে উঠেছিল, আজও সেই সাংগঠনিক কাঠামোনিয়েই এই সংস্থাটি চলছে।
এই প্রেস কাউন্সিলের সঙ্গে যুক্ত সংবাদ মাধ্যমেরসঙ্গে জড়িত মানুষদের দায়িত্ব হল সময়ানুকূল পরিবর্তনের জন্য কী কী করা যায়, তানিয়ে ভাবতে থাকা! নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে কী কী করা যায়! সরকার যা বলতে চায় –বলুক! সরকারের আওতার বাইরে স্বতন্ত্র ব্যবস্থাকে সঞ্জীবিত রাখার দায়িত্ব আপনাদের।সরকার যেসব বিষয়ে জানতে পারে না, সেই অজ্ঞানতার ফলে কী ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতেপারে? সেজন্য সরকারের কানে সমস্যা তুলে ধরার পদ্ধতি ৩০ বছর পুরনো হলে কেমন করেচলবে? সরকারের ঘুণ ধরা পদ্ধতিগুলি পরিবর্তনের জন্যও প্রেস কাউন্সিলের বর্ষীয়ানসদস্যরা এগিয়ে আসতে পারেন। আমরা কিভাবে সংবাদ সম্প্রচার পদ্ধতি বদলাতে পারি? এগুলিসবই অবশ্য সরকারগুলির দায়িত্ব।
এটি ঠিক যে সাংবাদিকতার একটি অনিবার্য কর্তব্য হল, যাদেখা যায়, যা শোনা যয়, তার বাইরেও অন্বেষণ চালিয়ে যাওয়া; এই গুরুত্বপূর্ণকর্তব্যটিকে অস্বীকার করলে চলবে না! কিন্তু যা স্পষ্ট দেখ যায়, শোনা যায় আর ঠিক সময়েদেখা যায়, তার কৃতিত্ব ক্ষমতাসীন সরকারের নেতৃত্বেরই। এক্ষেত্রে কিন্তু আমি স্পষ্টকমিউনিকেশন গ্যাপ দেখতে পাচ্ছি। রাজনৈতিক জীবনে আসার পর থেকেই আমার সংবাদ জগতেঅনেক বন্ধু রয়েছে। কিন্তু অনেক সময় আমি সংবাদ মাধ্যমগুলির রিপোর্ট ও সম্প্রচারদেখে বুঝতেই পারি না – কী চলছে! এটা ঠিক যে তাদের কেবল ১০ শতাংশ তথ্য সূচনাই চাই,তারপর তারা কোথায় কোথায় পৌঁছে গিয়ে ৯০ শতাংশ তথ্য সংগ্রহ করে আনবেন – সেই দক্ষতাতাঁদের রয়েছে! তাঁরা অভিযোগও আনেন সেই প্রাথমিক ১০ শতাংশ তথ্যসূত্রের প্রতি।সরকারগুলির সিলেক্টিভ লিকেজ-এর শখ অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তাঁদের ভালো লাগে, যাঁরাসরকারের কোনও পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে, তাদেরকে একটি বেশি ভেতরের খবর দিয়ে দেওয়ারমতো non-serious attitude- এ পরিবর্তন আনতে হবে।
সংবাদ মাধ্যমের নানা রিপোর্ট ও সম্প্রচার নিয়েসরকারের নানা ক্ষোভ থাকে, তেমনই সরকারর নানা পদক্ষেপ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের অনেকক্ষোভ থাকে। পরস্পরের এই ক্ষোভ সম্পর্কে যত দ্রুত জানতে পার যায়, সেগুলিকে টু অয়েচ্যানেল-এর মাধ্যমে জনগণের স্বার্থে নিরসন করার ক্ষেত্রে প্রেস কাআউন্সিল সদর্থনভূমিকা নিতে পারে। কোনও রাজনৈতিক দল কিংবা রাজনৈতিক ব্যক্তির স্বার্থে নয়, আপামরজনগণের স্বার্থে আপনারা এই ভূমিকা পালন করলে দেশের মানুষ, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম উপকৃতহবে।
সম্প্রতি সাংবাদিক হত্যার খবর আমাদের খুব কষ্টদিয়েছে। যে কোনও ব্যক্তির হত্যাই কষ্টদায়ক, কিন্তু যাঁরা সত্যকে জনসমক্ষে তুলেধরার চেষ্টা করেন, প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে ধুকে সংবাদ সংগ্রহ করে আনেন, তাঁদেরহত্যা অত্যন্ত দুশ্চিন্তার উদ্রেগ করে। মুখ্যমন্ত্রীদের এক সম্মেলনে আমি বলেছিলাম,আমরা যদি শুধুই স্বাতন্ত্র্য চাই, নিজেদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে যাই – সেটা যথেষ্ট নয়।
কেন্দ্রীয় সরকার ও সকল রাজ্য সরকারের দায়িত্ব সংবাদকর্মীদের বিরুদ্ধে যে কোনও অন্যায় আচরণকে প্রতিহত করা, তাঁদের নিরাপত্তাআসুনিশ্চিত করা। এটা যদি সরকারগুলির কাজের তালিকায় অগ্রাধিকার না পায়, তা হলে সত্যবিকৃত হয়ে ভয়ানকভাবে নিষ্পেষিত হবে – যার পরিণাম হবে ভয়ঙ্কর। এক-আধবার কেউরেগেমেগে সংবাদ মাধ্যমকে তুলোধোনা করলে তাকে আমি বাক্-স্বাধীনতা বলব, নেতিবাচকহলেও মানুষ একে ক্ষমা করতে পারেন। কিন্তু অন্যায়ভাবে হাত ওঠালে, শারীরিক আক্রমণকরলে, স্বাধীনতার উপর বর্বর আক্রমণ করা হয়। সেজন্য সরকারে ক্ষমতাসীন প্রত্যেকব্যক্তির উচিৎ এই বিষয়ে সংবেদনশীল হওয়া। আমি আনন্দিত, আজ এখানে আমাদের বেশ কয়েকটিপ্রতিবেশী দেশের শ্রদ্ধেয় সাংবাদিকরাও উপস্থিত রয়েছেন। আমাদের সম্মিলিত প্রয়াসআমাদের সকলের জীবনধারণকে অনেক বেশি স্বাধীন করে তুলবে বলে আমার বিশ্বাস।
নেপালের ভূমিকম্পের খবর শুনে ভারত দ্রুত পদক্ষেপনিয়েছিল, ভারতীয় সৈন্যরা নেপালে ছুটে গিয়েছিলেন। আমার মতে, এই তৎপরতা প্রত্যেকপ্রতিবেশী দেশের সরকার ও সাধারণ মানুষ পরস্পরের বিপদের সময় গ্রহণ করতে পারে –নেপালের ভূমিকম্পের খবর ভারতের সংবাদ মাধ্যম যে সংবেদনশীলতা নিয়ে ভারতে সম্প্রচারকরেছে – প্রত্যেক ভারতীয় সেই সংবেদনায় সাড়া দিয়ে নেপালের পাশে দাঁড়িয়েছে। মানবতারএই উজ্জ্বল দৃষ্টান্তকে আমরা ভবিষ্যৎ পাথেয় করতে পারি!
অনেক সময়, প্রত্যেক দেশে তো আর সকল সংবাদ মাধ্যমেরপ্রতিনিধি থাকে না, কিন্তু কারও কারও সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেই সাংবাদিকরা তাঁদেরসঙ্গে ফোনে বা ই-মেলে যোগাযোগ করে ঘোড়ার মুখের খবর পরিবেশন করতে পারেন। এই যোগাযোগযত বৃদ্ধি পাবে মানবতার পক্ষে, সত্যান্বেষণের পক্ষে ততই মঙ্গল।
আজ সংবাদ মাধ্যমে এক স্বাসৎ সমাজ জীবনে অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে । সম্প্রতি আমরা দেখেছি,ইন্ডিয়া টুডে রাজ্যগুলির মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে রেটিং পদ্ধতি চালু করেছে । ফলে ধীরে ধীরে রাজ্যগুলিরমধ্যে পারফরম্যান্সের একটি ব্যাচমার্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে সংবাদ মাধ্যম। সবাইএখন উন্নয়নের মাধ্যমে পরস্পর থেকে এগিয়ে যেতে চায়। আমি এই আবহ নির্মাণেরপ্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই। আজকাল সংবাদ মাধ্যম নিজেদের সীমা ছাড়িয়ে পরিচ্ছন্নতারক্ষেত্রে যারা ভালো কাজ করছেন তাদেরকে সম্মানিত করছে সমাজসেবীদের সম্মানিত করছে।এই ইতিবাচক আবহকে আমি স্বাগত জানাই।
আমি আগেও বলেছি, আজও বলছি, যা টিভির পর্দায় দেখ যায়,সেটাই শুধু জীবনের সত্য নয়, দেশের জনজীবন এর থেকে অনেক বড় । খবরের কাগজ যাদের বড় দেখায়,তারাই শুধু বড় নেতা নয়, যাদের নাম কোনওদিন খবরের কাগজে ছাপা হয়নি তেমন অনেকসমাজসেবী সত্যদর্শী জননায়ক রয়েছেন, তাআরাই এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন আধুনিকসভ্যতার পথে। সংবাদ মাধ্যম সেই ইতিবাচক সত্যদর্শী সদাচারী নেতাদের কাজকেও তুলেধরুক। তা হলে আমাদের উন্নয়নের আবহ আরও প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠবে। আমাদের সমাজ আরওপরিশুদ্ধ হবে।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আজকের এই দিনটি আমাদের প্রত্যেকেরআত্মমন্থন, আত্মসমালোচনার মাধ্যমে নিজেদের ভিত্তি সুদৃঢ় করার কাজে লাগবে, মানবিকমূল্যবোধকে রক্ষা করার কাজে লাগবে, ভারতের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মানবিক মূল্যবোধেজারিত করতে, নিরাপত্তার সহজ অনুভূতি স্নাত করতে কাজে লাগবে। আমি আরেকবার উপস্থিতশ্রদ্ধেয় ব্যক্তিবর্গকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই।
ধন্যবাদ।