ইন্ডিয়ান মার্চেন্ট চেম্বার মহিলা শাখারসুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে আমি অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। যে কোন সংস্থার ক্ষেত্রেই ৫০বছর একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। এই কালখণ্ডে যে কোন ব্যক্তি কিংবা সংস্থার উত্তপ্ত সোনার মতো উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। সেজন্যইহয়তো ৫০ বছর পূর্ণ হলে সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করা হয়। আপনারা যে সংস্থার সদস্য, তারঅনেক গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। স্বাধীনতা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সংস্থা স্থাপনকরা হয়েছে। আর বিগত ৫০ বছর ধরে এর মহিলা শাখাও অনেক প্রশংসনীয় কাজ করেছে। বিগত ৫০বছরে যাঁরাই এর নেতৃত্ব দিয়েছেন, সংস্থাটিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, তাঁরা সবাইঅভিনন্দনযোগ্য ব্যক্তিত্ব।
আজ যখন মহিলাদের আর্থিক সামর্থ্য,সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির প্রসঙ্গ ওঠে, যে সব ক্ষেত্রে মহিলারা যথাযথসুযোগ পেয়েছেন, তাঁরা পুরুষদের থেকে দু’পা এগিয়ে গেছেন।
আজ আমাদের দেশের মেয়েরা যুদ্ধবিমানচালাচ্ছেন, মহাকাশে পাড়ি দিচ্ছেন, অলিম্পিকে দেশকে পদক এনে দিচ্ছেন। পঞ্চায়েত থেকেশুরু করে পার্লামেন্ট পর্যন্ত, গ্রামের কুঁয়ো থেকে শুরু করে সিলিকন ভ্যালি পর্যন্তভারতীয় নারী সাফল্য পেয়েছে। কেউ যদি ভারতীয় নারীকে শুধু ঘরোয়া ভাবেন, তাহলে ভুলকরবেন। আমরা যদি ভারতের কৃষি, পশুপালন ও ডেয়ারি ক্ষেত্রের কথা ভাবি, তাহলে অনুভবকরবো এসব ক্ষেত্রে পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের অবদান অনেক বেশি।
আপনারা যদি আদিবাসী এলাকায় যান, পুরুষদেরচালচলন দেখেন, বিশেষ করে সন্ধ্যার পর তাদের যে অবস্থা হয়, মহিলারাই তখন তাদেরদেখাশোনা করেন, বাড়ি-ঘর সামলান, হাতের কাজ করেন, সেই কুটির শিল্পজাত জিনিস বাজারেনিয়ে গিয়ে বিক্রি করেন। তাঁদের দক্ষতা, শিল্পকর্মে ঐতিহ্য ও পরম্পরার পাশাপাশিসময়োপযোগী উদ্ভাবনও থাকে। আমার মতে, প্রত্যেক ভারতীয় মহিলা এক একজন শিল্পপতি ওব্যবসায়ী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। শুধু তাঁদের সঠিক পথ প্রদর্শন আরযথাযথ সুযোগ দিতে হবে।
দেশের অনেক জায়গায় মহিলারা ডেয়ারিব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। এখন তাঁদের লভ্যাংশ সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্কঅ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাচ্ছে। এখন যেখানে যেখানে ডেয়ারি শিল্প-সংশ্লিষ্ট মানুষদেরসঙ্গে দেখা হয়, আমি বলি, দুধ ভরতে যে সব মহিলারা আসেন তাঁদের হাতে টাকা না দিয়েতাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করুন। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হলে,মহিলাদের জোর বাড়বে। গ্রামের পশুপালক একজন মহিলার অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হলে তাঁরবুকের বল বাড়ে, তাঁর গলার আওয়াজ দৃপ্ত হয়, পরিবার ও প্রতিবেশিরা সেই ক্ষমতায়নঅনুভব করেন।
আজ দেশে মহিলারা হাজার হাজার দুগ্ধ সমিতিপরিচালনা করেন। মহিলাদের অবদানে অনেক নতুন ব্র্যান্ড মানুষের আস্থা ও বাণিজ্যিকসাফল্য অর্জন করেছে। এই ব্র্যান্ডগুলি আজ গোটা বিশ্বের ম্যানেজমেন্ট স্কুলগুলিতে‘কেস স্টাডি’র বিষয় হয়ে উঠেছে। উদাহরণস্বরূপ, আমি ‘লিজ্জত পাপড়’-এর কথা বলতে পারি।কয়েকজন আদিবাসী মহিলা মিলে এই লিজ্জত পাপড়ের উ ৎ পাদনশুরু করে। কুটির শিল্পের মাধ্যমে এই পাপড় উ ৎ পাদন শুরু হয়েছিল। আজ লিজ্জত পাপড়ের চাহিদা সারা পৃথিবীতে।‘আমূল’ ও তেমনই একটি ব্র্যান্ড। গোটা বিশ্বে এর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। এর পেছনেও হাজারহাজার মহিলা পরিচালিত দুগ্ধ সমিতিগুলিরই অবদান রয়েছে। আমাদের দেশের সংযম ওসামর্থ্য এবং লড়াকু উদ্যমই এই সাফল্য এনেছে। আপনাদের মতো সফল সংস্থার সদস্যরাতাঁদেরকে সঠিক পথ দেখিয়ে সাহায্য করতে পারেন।
ইন্ডিয়ান মার্চেন্ট চেম্বারের একটিঅনন্য গর্বের জায়গা রয়েছে। সেটি হল, স্বয়ং মহাত্মা গান্ধী এই সংস্থার সদস্য ছিলেন।যাঁরা গান্ধীজির জীবন ও কর্ম নিয়ে বিস্তারিত অধ্যয়ন করেছেন, তাঁরা জানেন যতক্ষেত্রে তাঁর নাম উল্লেখযোগ্য, সব ক্ষেত্রে তা উল্লেখ করা হয় না। আর আজ আমি এমনএকজনের কথা বলবো, তাঁর কথা অনেকেই জানেন না। ‘গুগল’-এ খুঁজে দেখতে পারেন। আমি যাঁরকথা বলছি, তিনি হলেন গঙ্গা বা।
মহাত্মা গান্ধী দক্ষিণ আফ্রিকা থেকেভারতে ফেরার পর সবরমতী আশ্রমে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। সেই সবরমতী গ্রামেরমানুষের কাছে শুনেছি। আজ থেকে একশ’ বছর আগের কথা। ঐ গ্রামের মেয়ে গঙ্গা বা ছিলেনবাল্য বিধবা। মাত্র ৮-১০ বছর বয়সেই তিনি বিধবা হয়েছিলেন। মহাত্মা গান্ধী বলতেন,গঙ্গা বা অত্যন্ত সাহসী। তিনি ত ৎ কালীন সামাজিক রীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে পড়াশোনা শুরু করেন।গান্ধীজির কথা শুনে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে সবরমতী আশ্রমে যান। তিনি গান্ধীজিকে একটিঅনন্য উপহার দেন।
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বপ্রদানে গান্ধীজির পাশাপাশি যে চরকাটির ছবি আমরা দেখি, প্রথম দর্শনেই গঙ্গা বামহাত্মা গান্ধীকে সেই চরকাটি উপহার দিয়েছিলেন। ঐ চরকার মাধ্যমে তিনি মহাত্মাগান্ধীকে ‘নারী ক্ষমতায়ন’ সম্পর্কে নিজস্ব মতামত প্রকাশ করার প্রেরণা যোগান।সেজন্যই আজ গঙ্গা বা-র নামে নারী ক্ষমতায়ন পুরস্কার দেওয়া হয়, তাঁর জীবন নিয়ে একটিবইও লেখা হয়েছে।
আমার বলার তা ৎ পর্য হল, ১০০ বছর আগেও একজন গ্রামীণ মহিলার এত সামর্থ্য ছিলযে মহাত্মা গান্ধীর মতো মানুষের চোখে চোখ রেখে নারী ক্ষমতায়ন নিয়ে আলোচনা করতেপারেন। এটা আমাদের দেশের নারী শক্তির প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
আমাদের সমাজে আজ এমন একটিই নয়, কোটিকোটি গঙ্গা বা রয়েছেন, যাঁদের ক্ষমতায়ন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আধুনিক ভারতেমা-বোনেদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমেই দেশ এগিয়ে যেতে পারে। আর এই ভাবনা নিয়েই দেশেরসরকার নানা প্রগতিশীল সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। যেখানে আইনে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন, সেখানেসংশোধনী বিল এনে নতুন আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। সম্প্রতি কর্মরত মহিলাদেরপ্রসূতিকালীন ও প্রসব-পরবর্তী ছুটি ১২ সপ্তাহ থেকে বাড়িয়ে ২৬ সপ্তাহ করার আইনপ্রণয়ন করা হয়েছে। বিশ্বের অনেক বড় বড় দেশেও আজ এমন নিয়ম নেই।
ফ্যাক্টরি অ্যাক্টে পরিবর্তন এনেরাজ্যগুলিকে পরামর্শ দিয়েছি যাতে মহিলাদের রাতে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়। ডিজেবিলিটিআইনে পরিবর্তন এনে ‘অ্যাসিড’ আক্রমণে পীড়িত মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করাহয়েছে। যে সংরক্ষণ ‘দিব্যাঙ্গ’ ভাই-বোনেরা পান। তাছাড়া, মোবাইল ফোনের মাধ্যমেমহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সমস্ত থানাগুলির সঙ্গে ‘প্যানিক বটন’-এ মাধ্যমেনেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। ইউনির্ভাসাল হেল্পলাইন, 181 সম্পর্কে এখন মহিলারা প্রত্যেকেই সচেতন।
কেন্দ্রীয় সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণসিদ্ধান্ত নিয়েছে। যে সব পরিবার নানা সরকারি প্রকল্পের সাহায্য পায়, সেগুলির প্রথমদাবিদার হবেন সেই পরিবারের বয়ঃজ্যেষ্ঠ মহিলা সদস্য। যেমন, প্রধানমন্ত্রী আবাসযোজনার ক্ষেত্রে পরিবারের মহিলা সদস্যের নামে রেজিস্ট্রি করাকে অগ্রাধিকার দেওয়াহয়েছে। আমরা জানি, এতদিন আমাদের সমাজে মহিলারা বাড়ি-গাড়ি সবকিছু বাবার নামে,স্বামীর নামে কিংবা ছেলের নামেই রেজিস্ট্রি হতে দেখে এসেছেন। আমরা এই ব্যবস্থাবদলাতে চেয়েছি। নারী-কেন্দ্রিক কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেগুলির সুফলও পাচ্ছি।পাসপোর্টের নিয়মেও আমরা পরিবর্তন এনেছি। এখন পাসপোর্টের জন্য মহিলাদের আগের মতোবিয়ে ও বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত কোনও শংসাপত্র জমা দিতে হবে না। পাসপোর্টে মহিলাতাঁর বাবার নাম লেখাবেন না কি মায়ের নাম লেখাবেন সেটা তাঁর ইচ্ছা। সরকার প্রত্যেকস্তরে, প্রতিটি ধাপে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে। মহিলাদের কর্মসংস্থান,আত্মনির্ভরতা, স্বরোজগার ইত্যাদি ক্ষেত্রে সাহায্যের মাধ্যমে ‘নারী ক্ষমতায়ন’কেঅগ্রাধিকার দিচ্ছে।
আপনারা সাবাই জানেন, বিগত তিন বছরধরে ‘প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা’ চালু হয়েছে। গত দু’বছরে ব্যাঙ্কের মাধ্যমেকোনরকম গ্যারান্টি ছাড়াই প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। আপনারা শুনে খুশিহবেন, প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে এই টাকা যে ৭ কোটি নাগরিককে দেওয়াহয়েছে, তার মধ্যে ৭০ শতাংশই হলেন মহিলা। যে কোন ভারতবাসী একথা গর্ব করে বলতেপারেন। কেন্দ্রীয় সরকার’ স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের মাধ্যমেও মহিলাশিল্পোদ্যোগীদের কোনরকম গ্যারান্টি ছাড়াই ১০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ারব্যবস্থা করেছে। এতে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত হয়েছে।
গরিব মহিলারা যাতে বাড়ি থেকে বেরিয়েকাজে যেতে পারেন, রান্নাঘরের ধোঁয়া থেকে মুক্তি পান, একটু আগেই দীপকজি এই নিয়েবলছিলেন, ইতিমধ্যেই ‘উজ্জ্বলা যোজনা’র মাধ্যমে ২ কোটিরও বেশি মহিলাকে বিনামূল্যেরান্নার গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
আমি এ ব্যাপারে আপনাদের একটু খুলেবলতে চাই। আমি যখন লালকেল্লার প্রাকার থেকে দেশের সম্পন্ন মানুষদের রান্নারগ্যাসের সিলিন্ডারে ভর্তুকি ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছিলাম, সেই আহ্বানে আশাতীতসাড়া দিয়ে দেশের ২০ লক্ষেরও বেশি পরিবার স্বেচ্ছায় তাদের ভর্তুকি পরিত্যাগ করেন।তারপর এই অতিরিক্ত গ্যাস সংযোগ আমি দেশের দরিদ্র পরিবারগুলিকে দেওয়ার কথা ঘোষণাকরি।
একটা সময় ছিল যখন দেশের সংসদেপ্রত্যেক সাংসদকে বছরে ২৫টি করে গ্যাস সংযোগের কুপন দেওয়া হত যাতে তাঁরা নিজেরএলাকার অগ্রাধিকার অনুসারে বিবেচনা করে দিতে পারেন। সেজন্য অনেক এলাকার মানুষসাংসদের বাড়ির সামনে ঘন্টা পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়াতেন। গ্যাস সংযোগের কুপনকালোবাজারে বিক্রিও হত। ২০১৪-র সাধারণ নির্বাচনে একটি দলের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতিছিল জিতলে তাঁরা বছরে ৯টি সিলিন্ডার থেকে বাড়িয়ে ১২টি সিলিন্ডার দেবেন। আর আজপরিস্থিতি এমন বদলেছে যে বিগত ১১ মাসে সরকার ১ কোটি ২০ লক্ষ পরিবারের গৃহিনীদেরকাছে রান্নার গ্যাস সংযোগ পৌঁছে দিয়েছে।
যে মায়েরা, বোনেরা ওখানে বসে আছেন,তাঁরা কল্পনা করতে পারেন যখন কাঠের উনুনে রান্না করতে হত তখন প্রতিদিন একজন মাকিংবা বোনের ফুসফুসে ৪০০টি সিগারেটের ধোঁয়ার সমান বিষ ঢুকতো? যে বাচ্চারা ঘরে খেলতোতাদের ফুসফুসেও ধোঁয়া ঢুকতো? এসব কথা মাথায় রেখেই আমাদের এই অভিযান। দেশে মোট ২৫কোটি পরিবার রয়েছে। এর মধ্যে দরিদ্র পরিবার ৫ কোটি। ঐ ৫ কোটি পরিবারকে আমরা ধোঁয়ারহাত থেকে মুক্তি দেওয়ার সঙ্কল্প নিয়ে কাজ করছি। ১১ মাসে ১ কোটি ২০ লক্ষ পরিবারেগ্যাস সংযোগ পৌঁছে দিতে পেরেছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আগামী দু’বছরে ঐ ৫ কোটিপরিবারেই গ্যাস সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হবে। নির্দিষ্ট রোডম্যাপ রচনা করেসেই অনুসারে কাজ করা হচ্ছে, নিয়মিত তদারকি হচ্ছে।
এ বছর পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়েরজন্মশতবার্ষিকী চলছে। সেজন্য দীনদয়াল অন্ত্যোদয় যোজনার মাধ্যমে গত আড়াই বছরে ১০লক্ষেরও বেশি মহিলা স্বনির্ভর দল গঠন করে প্রায় সাড়ে তিন কোটিরও বেশি মহিলাকেযুক্ত করা হয়েছে। এ বছর বাজেটেও মহিলা শক্তিকেন্দ্রগুলি স্থাপনা-বাবদ ৫০০ কোটি টাকাবরাদ্দ করা হয়েছে। মেয়েরা টাকা জমালে যাতে বেশি সুদ পান তা সুনিশ্চিত করতে‘সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা’ চালু করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১ কোটিরও বেশি কন্যা এইপ্রকল্পের মাধ্যমে টাকা জমাতে শুরু করেছেন।
আমাদের দেশে প্রসবকালে মায়েদেরমৃত্যুহার, প্রসূতি মায়েদের মৃত্যুহার, শিশু মৃত্যুহার এবং কখনও গর্ভাবস্থায় উভয়েরমৃত্যুহার বেশি। যত বেশি মায়েদের প্রসবের সময় হাসপাতালে আনা যাবে, তত বেশি মায়েদেরআমরা বাঁচাতে পারবো। আর সেজন্য আমরা গরিব গর্ভবতী মায়েদের অ্যাকাউন্টে ৬ হাজারটাকা তিন কিস্তিতে ট্রান্সফার করার পদ্ধতি চালু করেছি।
এই সিদ্ধান্তগুলি আলাদা আলাদাভাবেদেখলে কল্পনা করা যাবে না যে ভারত সরকার নারী ক্ষমতায়ন এবং সাধারণ মেয়েদের জীবনের উ ৎ কর্ষ বৃদ্ধিতে কত ধরনের সুচিন্তিতপদক্ষেপ নিচ্ছে যেগুলির সুদূরপ্রসারী প্রভাব সামগ্রিকভাবে দেশের নারী ক্ষমতায়নকেঅনেকটাই এগিয়ে দেবে।
বন্ধুগণ, আজ দেশের জনসংখ্যার ৬৫শতাংশেরও বেশি মানুষের বয়স ৩৫ বছরের কম। তাঁদের নিজস্ব স্বপ্ন, আশা-আকাঙ্ক্ষারয়েছে। তাঁরা কিছু করে দেখাতে চান। সরকার তাঁদের স্বপ্ন সাকার করার জন্য, তাঁদেরমেধা ও যোগ্যতানুসারে যথাযথ কর্মসংস্থানের মাধ্যমে সর্বস্ত্রে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতেচায়। এক্ষেত্রে আপনাদের মতো সম্পন্ন সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।সরকারের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে আখেরে লাভ হবে আপনাদেরও।
আপনাদের আহ্বান জানাই, আগামী ২০২২-এদেশ যখন স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উদযাপন করবে। হাতে আর মাত্র পাঁচ বছর সময়। এইসময়ের মধ্যে আসুন, আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেক ব্যক্তি, প্রতিটি পরিবার, প্রতিটিসংগঠন, প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান, প্রতিটি গ্রাম ও শহরের প্রত্যেক সামাজিক ব্যবস্থায়দেশের জন্য কাজ করার লক্ষ্য স্থাপন করি। আজ আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। নিজেরাইনিজেদের ভালো-মন্দ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। ১২৫ কোটি ভারতবাসী নিজেরাই নিজেদেরভাগ্য নির্ধারণ করি। কিন্তু এই স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যে উন্মাদ সংগ্রামীরানিজেদের জীবন উ ৎ সর্গকরেছিলেন, জীবন-যৌবন কারান্তরালে কাটিয়েছেন, হাসি মুখে ফাঁসি কাঠে ঝুলে পড়েছেন,আন্দামানে নির্বাসিত হয়েছে, তাঁরা যেরকম ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলেন, দারিদ্র্যমুক্তপরিচ্ছন্ন ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেসব স্বপ্ন এতদিনেও বাস্তবায়িত হয়নি। আজআমাদের দায়িত্ব সেই স্বপ্নের পূর্ণ রূপে বাস্তবায়ন। এটা শুধুই সরকারের দায়িত্ব নয়,১২৫ কোটি ভারবাসীরও দায়িত্ব।
মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে যেস্বাধীনতা সংগ্রামীরা স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু করেছিলেন, তাঁরা দেশকে অপরিচ্ছন্নতাথেকেও মুক্তি দিতে চেয়েছিলেন। এক দল ঝাড়ু হাতে সাফাই অভিযানে নেমে পড়তেন, আরেক দলচরকা হাতে সুতো বুনে খাদি বস্ত্র নির্মাণের মাধ্যমে স্বদেশি অর্থ ব্যবস্থাকে মজবুতকরার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। কেউবা দেশকে সুযোগ্য নেতৃত্ব দিতে পড়াশোনায় মনদিয়েছিলেন। আসুন, আমরাও তেমনই নিজের মতো করে তাঁদের স্বপ্ন সাকার করতে নিজস্বসঙ্কল্প স্থাপন করে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুসারে এগিয়ে যাই। দেশের নানা প্রান্তেযেমন মহিলা শিল্পোদ্যোগীরা মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প পরিচালনা করেন, তাঁদের উ ৎ পাদিত পণ্যকে কিভাবে বাজারজাত করবেন,স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় স্তরে কিংবা আন্তর্জাতিক স্তরে আপনাদের উ ৎ পাদিত পণ্য বিক্রি করা যায় কি না?কিভাবে বাজারে আপনাদের পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি সুনিশ্চিত করবেন? এজন্য ২০২২-এর মধ্যেকোনও লক্ষ্যসীমা স্থির করেছেন? এই বিষয়গুলি মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় সরকার আগামীদিনেদেশের নানা প্রান্তে ১০০ থেকে ৫০০টি শিবিরের আয়োজন করবে। এটা একটা সামান্যপরামর্শ। আপনাদের এক্ষেত্রে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করতে হবে। আপনারা যথারীতি এ কাজকরছেন। আপনারা মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির উন্নয়নের কাজে হাত লাগান। আপনাদেরকর্পোরেট হাউজে তাঁরা যাতে হাতে-কলমে কাজ করে দক্ষতা উন্নয়ন করতে পারেন, নতুন নতুনউদ্ভাবনের পথে হাঁটতে পারেন। পাশাপাশি ওঁদেরকে কাঁচামাল যোগান দিয়ে ওঁদেরস্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে যতটা উ ৎ পাদন সুনিশ্চিত করে আপনাদের পরিকাঠামো ব্যবহার করে বিজ্ঞাপনও বাজারজাত করার কাজ করুন। দেখবেন, এভাবে উভয়েই লাভবান হবেন।
সরকার ন্যাশনাল আন্ত্রেপ্রেনিউরশিপপ্রোমোশন স্কিমের মাধ্যমে ৫০ লক্ষ যুবক-যুবতীকে স্পনসর করাতে চায়। আপনাদের সংস্থা,আপনাদের কোম্পানিগুলি কি এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হয়ে সচেতনতার অভিযানে সামিল হতেপারে? যাতে বেশি সংখ্যক যুবক-যুবতী কর্মসংস্থানের সুযোগ পান। দক্ষতা উন্নয়নপ্রশিক্ষণ নিতে থাকা যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির স্বার্থে সরকারবেসরকারি কোম্পানিগুলির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে। যত বেশি কোম্পানি এই প্রকল্পেরসঙ্গে যুক্ত হবে ততই ভালো। এক্ষেত্রে কি আপনাদের সংস্থা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেপারে? আপনারা ভেবে দেখুন!
রাজ্যস্তরের ব্যাঙ্কার্স কমিটিগুলিকেমজবুত করার জন্য আপনাদের সংস্থা কি সহযোগিতার হাত বাড়াতে পারে? এভাবে ব্যাঙ্কগুলিরপ্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিতে আপনাদের সংস্থার প্রতিনিধিরা গিয়ে অংশগ্রহণ করতে পারেনকি? ইন্ডিয়ান মার্চেন্ট চেম্বার-এর মহিলা শাখার প্রত্যেক সদস্য ব্যবসার খুঁটিনাটিসম্পর্কে ভালোভাবে জানেন। নতুন ব্যবসা শুরু করতে হলে কত ধরনের সমস্যার সম্মুখীনহতে হয়, সেগুলির সমাধান কিভাবে সম্ভব, এসব বিষয় নিয়ে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা জানালেনবীন প্রজন্মের শিল্পোদ্যোগীরা লাভবান হবেন।
আশা করি, আপনারা আপনাদের সংগঠনেরমাধ্যমে সমাজের সাধারণ মানুষ, যাঁদের সঙ্গে আপনাদের নৈমিত্তিক ওঠা-বসা সম্ভব নয়,তাঁদের মাঝে গিয়ে তাঁদের নতুন উ ৎ সাহ ও প্রেরণা যোগাতে পারেন।
একটু আগে দীপকজি জিএসটি সম্পর্কে কথাবলছিলেন। সময় থাকতে আপনারা কি মহিলা শিল্পোদ্যোগীদের ছোট ছোট অধ্যায়ন শিবিরের আয়জনকরে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারবেন? আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার কিভাবে বাড়াবেন?জিএসটি-কে কিভাবে স্ট্রিমলেস করে তুলবেন? নতুন কর ব্যবস্থা কিরকম? এতে সাধারণমানুষ কিভাবে উন্নত পরিষেবা পাবেন? এই জিএসটি কত বছরের প্রতীক্ষার পর আমরা বাস্তবায়িতকরতে যাচ্ছি! দলমত নির্বিশেষে সকলের ইচ্ছা ও আগ্রহে আমরা এই অভিন্ন কর ব্যবস্থাবাস্তবায়িত করতে পারছি। এই বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও সকলের সহযোগিতা অত্যন্তপ্রয়োজনীয়।
গণতন্ত্রকে আমরা যেভাবে জেনেছি,বুঝেছি, এই ব্যবস্থায় সামান্য পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে। পাঁচ বছরে একবার বোতামটিপে ভোট দিলাম, আঙুলে কালো দাগ লাগিয়ে নিলাম – এটুকুই শুধু গণতন্ত্র নয়। গণতন্ত্রহল প্রতি মুহূর্তে অংশীদারিত্বের যাত্রা। প্রতিটি স্তরে প্রত্যেক ব্যক্তিরঅংশীদারিত্ব না থাকলে একে গণতন্ত্র বলা যায় না। সরকার কোনও ঠিকাদার সংস্থা নয় যেপাঁচ বছরের জন্য ঠিকাদারি দিয়ে দিলাম আর তারা আমাদের ভাগ্য বদলে দেবে। সরকারেরসঙ্গে জনতার প্রতিনিয়ত মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমেই উন্নয়ন যাত্রাকে অব্যাহত রাখা সম্ভব।
এখন যেভাবে পরিবেশ বদলেছে, একবিংশশতাব্দীর নাগরিকদের কথা ভেবে, তাঁদের ভবিষ্যতকে সুন্দর করে তুলতে আসুন, আমরা সকলেনতুন ভারতের সঙ্কল্প নিয়ে সময়-নির্দিষ্ট রোডম্যাপ ছকে নিয়ে কাজ করি। আমি আজ যেসবপরামর্শ দিলাম, এগুলি থেকেও উন্নত চিন্তাভাবনা আপনাদের থাকতে পারে। আমার আবেদন,দেশ ও জাতির উন্নয়নের স্বার্থে আপনারা সেই চিন্তাভাবনাকেও প্রয়োগ করুন। নতুন নতুনসিদ্ধিতে পথ খুঁজে বের করুন। আসুন, আমরা মিলেমিশে কাজ করি। এই আশা নিয়েই আজকেরবক্তব্য সম্পূর্ণ করব।
ইন্ডিয়া মার্চেন্ট চেম্বার মহিলাশাখার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে আরেকবার আপনাদের সকলকে শুভেচ্ছা জানাই। সময়েরসীমাবদ্ধতা থাকায় আমি শারীরিকভাবে আপনাদের মাঝে যেতে পারিনি। তবুও আপনারা আমাকেকথা বলার সুযোগ দিয়েছেন। আপনাদের দর্শন লাভ করার সুযোগ পেয়েছি। সেজন্য আপনাদেরঅনেক অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই।
ধন্যবাদ।
The 50th year is special for any organisation & I congratulate your institution on this occasion: PM @narendramodi
— narendramodi_in (@narendramodi_in) April 13, 2017
Any sector we look at today, women are excelling and performing better day by day: PM @narendramodi
— narendramodi_in (@narendramodi_in) April 13, 2017
From Panchayats to Parliament, wells in villages to Silicon Valley, women are leading from the front: PM @narendramodi
— narendramodi_in (@narendramodi_in) April 13, 2017
Women of our country have the potential and they strive hard for success in their field: PM @narendramodi
— narendramodi_in (@narendramodi_in) April 13, 2017
Mahatma Gandhi advocated women empowerment. At the time when he returned to India, Bapu met Ganga Baa who gifted him the 'Charkha': PM
— narendramodi_in (@narendramodi_in) April 13, 2017
We have recently passed the Maternity Bill. Number of leaves have been more than doubled from 12 to 26 weeks: PM @narendramodi
— narendramodi_in (@narendramodi_in) April 13, 2017
We are initiating measures to empower the women. We want them to shine. Over 70% people who have got loans under Mudra Yojana are women: PM
— narendramodi_in (@narendramodi_in) April 13, 2017
Over 1.20 crore women belonging to weaker sections in rural areas have benefitted through Ujjwala Yojana. We aim to achieve 5 crore mark: PM
— narendramodi_in (@narendramodi_in) April 13, 2017
Let us resolve as an individual or organisation to make the country more prosperous by 2022 when India marks 75 years of independence: PM
— narendramodi_in (@narendramodi_in) April 13, 2017
Democracy is about people's participation. Government and people must together work and script a roadmap for a 'New India': PM
— narendramodi_in (@narendramodi_in) April 13, 2017