‘কা হাল বা’?
আমার প্রিয়নেদারল্যান্ডবাসী ভারতীয় ভাই ও বোনেরা,
আমি এই শহরেরমেয়র মহোদয়া এবং ডেপুটি মেয়র’কে হৃদয় থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। তাঁরা আমাকে স্বাগতসম্মান জানিয়েছেন এবং স্বয়ং এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত রয়েছেন।
এই যে চারদিকথেকে আপনাদের কলরব শোনা যাচ্ছে, আপনাদের যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা আমি অনুভব করছি,যাঁরা ভারতে বসে টিভিতে এই অনুষ্ঠান দেখছেন, তাঁরাও হয়তো অবাক হচ্ছেন, একথা ভেবেযে, ছোট্ট হেগ শহরে ভারতীয়দের এত ক্ষমতা! আমি বিশেষ করে সুরিনাম থেকে আগতভারতীয়দের অভিনন্দন জানাতে চাই। অনেক বছর আগে আমার সুরিনাম যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল।
প্রতি বছর ৫জুন দিনটি সুরিনামবাসী গর্বের সঙ্গে পালন করেন। ১৫০ বছর আগে ব্রিটিশ শাসক ভারতথেকে সুরিনামে শ্রমিক হিসাবে ভারতীয় পুরুষ ও মহিলাদের নিয়ে এসেছিল। মরিশাস,সুরিনাম, গায়ানা – এসব দেশে তারপর থেকে ৪-৫ প্রজন্ম কেটে গেছে। কিন্তু আজও সেসবদেশের প্রবাসী ভারতীয়রা তাঁদের ভাষা, ভারতের সংস্কৃতি ও ঐ্তিহ্য অক্ষুণ্ন রেখেছেন।সেজন্য আমি তাঁদের লক্ষ লক্ষ শুভেচ্ছা জানাই, অভিনন্দন জানাই।
আর আমাদেরসেই পূর্বজদের প্রণাম জানাই, যাঁরা দেশের সমুদ্রতট ছেড়ে আসার পর আর ফেরার সুযোগপাননি, কিন্তু নিজেদের ভারতীয় সংস্কৃতিকে পূর্ণরূপে পরবর্তী প্রজন্মে সঞ্চারিতকরেছেন। যা ৪-৫-৬ প্রজন্ম পেরিয়ে গেলেই সবকিছু বদলে যায়, ভাষাও ভেঙে যায়, এমনকিঅনেক ক্ষেত্রে বাবা-মা গর্ব করে বলেন যে, তাঁদের সন্তান তো ভারতীয় ভাষা একদমই বলতেপারে না। আসলে যে এই ভাষা ও সংস্কৃতির নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে নিজের শেকড়ের সঙ্গেযুক্ত থাকা যায়, সেই জ্ঞানই তাঁদের নেই। লোহার গোলা যত বড়ই হোক না কেন, যত ওজনইহোক না কেন, আকার ও ওজন অনুযায়ী কয়েকজন মিলে ধাক্কা দিলে তা গড়াতে শুরু করবে।কিন্তু বৃক্ষ আর শেকড় মাটির যত গভীরে প্রোথিত করবে, তার শক্তি যত বৃদ্ধি পাবে।তাকে কেউ সরাতে পারবে না। সে ছায়া দেবে। সেজন্য শেকড়ের সঙ্গে যুক্ত থাকার মজাইআলাদা। আর ভাষা ও সংস্কৃতির মাধ্যমে শেকড়ের সঙ্গে যুক্ত থাকার ফলে কী হয়, তা সকলেসুরিনামবাসীদের কাছ থেকে শিখে নিতে পারেন। এদের মধ্যে অনেকেই আছেন, যাঁদেরপূর্বজরা ভারতের কোন্ গ্রাম থেকে গেছেন, তাঁদের আত্মীয়জনরা এখন কোথায় থাকেন – এসবকিছুই জানেন না। কিন্তু তারপরও তাঁদের হৃদয়ে ভারত আজও উপস্থিত। আজ আপনারা যেসাফল্য পেয়েছেন, তা আপনাদের পূর্বপুরুষদের পাশাপাশি নিজেদের উচ্চশিক্ষা ওপরিশ্রমের মাধ্যমে অর্জন করেছেন। তারপরও আপনারা মনে করেন যে, আপনাদের ভারতের কাছেসাংস্কৃতিক ঋণ রয়েছে, আর যে কোনও সুযোগে আপনারা সেই ঋণ পরিশোধ করতে ব্যগ্র থাকেন।আমার মতে, এর থেকে বড় কোনও ভক্তি কিংবা ভাবনা হতে পারে না।
এখানেদু’ধরনের মানুষ রয়েছেন। প্রথমত, যাঁরা ১৫০ বছর আগে আসা ভারতীয় শ্রমিকদেরউত্তরপুরুষ, যাঁরা সুরিনাম থেকে কর্মসূত্রে এখানে এসেছেন। আর দ্বিতীয়ত, যাঁরাকর্মসূত্রে সরাসরি ভারত থেকে উড়োজাহাজে বসে এদেশে এসেছেন। যাঁরা কর্মসূত্রে সরাসরিভারত থেকে এসেছেন, তাঁদেরকে আমি বলতে চাই যে, আপনারা কখনও ভেবে দেখেছেন যে, ১৫০বছর ধরে দেশের সঙ্গে সম্পর্ক না থেকেও নিজেদের মধ্যে দেশের ভাষা ও সংস্কৃতিকেঅক্ষুণ্ন রাখার পেছনে কতটা প্রগাঢ় ভালবাসা ও দেশভক্তি রয়েছে। সেজন্য আমি চাইব,আমাদের পাসপোর্টের রং যাই হোক না কেন, পাসপোর্টের রং বদলালে রক্তের সম্পর্ক বদলেযায় না। প্রত্যেক ভারতীয় বংশোদ্ভূত ও প্রবাসী ভারতীয়দের প্রতি আমার আবেদন যে,পাসপোর্টের রং দেখে সম্পর্ক জুড়বেন না। মনে রাখবেন, আপনাদের পূর্বজদের উৎস একই।তাঁরা যে মাটির পূজা করতেন, আমিও সেই মাটিরই পূজারী। তাঁদের দুর্ভাগ্য যে তাঁদেরকেপরিস্থিতির শিকার হয়ে বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়ে যেতে হয়েছিল। আমার সৌভাগ্য যে আমি এখনওদেশের মাটিতে বসবাস করি। কিন্তু আমারই উচিৎ দু’হাত বাড়িয়ে সুরিনামবাসী ভারতীয়বংশোদ্ভূতদের বুকে টেনে নেওয়া। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের মিলেমিশে অনুষ্ঠানকরতে হবে, কাজ করতে হবে। এখন আমাদের মধ্যে আর সামান্য দূরত্বও থাকা উচিৎ না। যাঁরাসরাসরি ভারত থেকে এখানে এসেছেন, অনভ্যাসে তাঁদের কারও কারও হিন্দি বলার ক্ষেত্রেঅসুবিধা হলেও হতে পারে। কিন্তু সুরিনামবাসী ভারতীয়রা অনর্গল হিন্দি বলতে পারেন।
ইউরোপ ছাড়াক্যারিবীয় দেশগুলিতেও আমরা সবাই মিলে এই মিলন উৎসবকে আমরা নতুন শক্তিভূমি গড়েতুলতে পারি। আজ প্রযুক্তি এত সরল হয়েছে যে, আপনারা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইউরোপ ওবিশ্বের সর্বত্র বসবাসকারী সকল পরিবারের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন, সংগঠনই শক্তি। আরসেজন্যই আমি আপনাদের শক্তি অনুভব করেছি। আমার এখানে আসার পরিকল্পনা তো হঠাৎ-ইহয়েছে। প্রস্তুতির কোনও সুযোগই আপনারা পাননি। গত দু-এক দিনে খবর পেয়েই নিজেদেরসমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ ফেলে আপনারা বিপুল সংখ্যায় এখানে এসে পৌঁছে গেছেন। সরকারেরপক্ষে দূতাবাস থাকে, দূতেরা থাকেন, অন্য বাবুরা থাকেন, কিন্তু আপনারা জানেন,তাঁদের বলা হয় রাজদূত। হিন্দি ভাষায় অ্যাম্বাসাডরকে তো রাজদূতই বলা হয়। কিন্তুএখানে আপনারা সবাই হচ্ছেন ভারতের রাষ্ট্রদূত। প্রত্যেক ভারতীয় বিশ্বের যেপ্রান্তেই তিনি থাকুন না কেন, তাঁকে আমি ভারতের রাষ্ট্রদূত বলে মনে করি। তাঁরাইভারতের ভালগুলির সঙ্গে বিশ্বকে পরিচয় করান। যখন বিশ্ববাসী জানতে পারেন, ভারত এরকম,যেখানে সবাই মিলেমিশে থাকেন, তখন সবাই আশ্চর্য হন। বিশ্বের ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতমসম্প্রদায়ও নিজেদের মধ্যে আলাদা থাকতে চান। কিন্তু ভারতে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-ভাষানির্বিশেষে সকলে একসঙ্গে মিলেমিশে থাকেন এবং তার জন্য সবাই গর্ব করেন। যখনবিশ্ববাসী জানতে পারেন যে, ভারতে ১০০টি ভাষা রয়েছে আর ১,৭০০-রও বেশি কথ্যভাষা তখনতাঁরা আশ্চর্য হন। তাঁরা ভাবেন, আমাদের ইউরোপে দেশ বদলালে, ভাষা বদলালে সমস্যা হয়েযায়। আপনারা ১০০ ভাষার মানুষ একসঙ্গে কেমন করে থাকেন। তখন ভারতীয়রা জবাব দেন,মাতৃভূমির প্রতি ভালবাসাই আমাদের ঐক্যের শক্তি। ঐ মাটির প্রতি, ইতিহাসের প্রতি,ত্যাগ-তপস্যা এবং ঐতিহ্যের প্রতি আমাদের ভালবাসা। আর সেজন্য যে কোনও ভারতীয় গর্বকরে বলতে বুক ফুলিয়ে বলতে পারেন, আমার দেশ বৈচিত্র্যময়।
বিশ্বে যাকিছু আপনারা অনুভব করেন, তা অত্যন্ত স্বাভাবিক রূপে আমাদের দেশে করা সম্ভব। বিশালদেশ, যখন বিশ্বের রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়, তখন বুঝতে পারি যে, ১২৫কোটি জনগণের নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তাঁরা আমার দিকে সমীহেরদৃষ্টিতে তাকান। তাঁরা হয়তো মনে মনে ভাবেন যে, একটি ছোট দেশ পরিচালনা করতে আমাদেরএত সমস্যা হয়, আর এই ভদ্রলোক এত বড় দেশ পরিচালনা করে হাসিমুখে থাকেন কী করে!গণতন্ত্রের এটাই শক্তি। ভারতে বিশেষ করে, যখন থেকে আমি প্রধান সেবক হিসাবে কাজকরার সুযোগ পেয়েছি, আমার সর্বাধিক চেষ্টা ছিল যে, দেশের প্রত্যেক কাজেগণঅংশীদারিত্বকে অগ্রাধিকার দেব। সবকিছু সরকার করবে, সকল সমস্যার সমাধান সরকারেরকাছেই রয়েছে, এটা ভাবা ভুল। ঈশ্বর যখন বুদ্ধিবিতরণ করছিলেন, তখন শুধু যাঁরারাজনৈতিক নেতা হবে, তাঁদেরই বুদ্ধি দিয়েছেন, তা নয়। সেজন্য আমি প্রথাগত ভাবনা থেকেবেরিয়ে অনুভব করেছি যে, গণঅংশীদারিত্বের মাধ্যমেই দেশ অনেক গুণ উন্নতি করতে পারবে,দ্রুতগতিতে উন্নতি করতে পারবে। সরকার যদি ভাবে, আমরা শৌচালয় তৈরি করে দিয়ে দেশেরসকল নাগরিককে উন্মুক্ত স্থানে প্রাকৃতিক কর্ম থেকে বিরত করতে পারব, তা হলে অনেকসময় লেগে যাবে। এই চেষ্টা তো ভারত সরকার তো গোড়া থেকেই চালিয়ে যাচ্ছিল। আমিদায়িত্ব নিয়ে বললাম, সরকারের সাহায্যে জনগণকেই গণঅংশীদারিত্বের মাধ্যমে এই কাজকরতে হবে। আর আপনারা জেনে খুশি হবেন, আমাদের দেশের মানুষ এক বছরের মধ্যেই দেশেরসকল বিদ্যালয়ে ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্য পৃথক পৃথক শৌচালয় গড়ে তোলার কাজ সম্পূর্ণকরেছে। গণতন্ত্রের অর্থ এখন অনেক সহজ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সবাই ভাবছিলেন, গণতন্ত্রমানেই পাঁচ বছরে একবার গিয়ে ইভিএম মেশিনে বোতাম টিপে দিতে হবে, ব্যাস, আর কোনও কাজনেই। পাঁচ বছরের জন্য কিছু লোককে যেন আমাদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের ঠিকা দিয়ে দিলাম।যদি তাঁরা ঠিকমতো কাজ না করতে পারেন, তা হলে পরের বার তাদেরকে সরিয়ে অন্যদেরক্ষমতায় আনব। এটা গণতন্ত্রের মর্যাদা নয়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার একটি সীমিতপর্যায় হ’ল নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন। কিন্তু একটি আদর্শ গণতান্ত্রিক সরকারপরিচালিত হওয়া উচিৎ, গণঅংশীদারিত্বের মাধ্যমে।
আমাদের দেশেকোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয় এলেই শুধু আমরা অনুভব করি যে, সরকারি ব্যবস্থা কত অপ্রতুল।তখন নানা সামাজিক সংস্থা, ধার্মিক সংস্থা খাবারের প্যাকেট ইত্যাদি নিয়ে ঝাঁপিয়েপড়েন। এটাই জনশক্তির আসল সামর্থ্য। বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টা হ’ল প্রত্যেক কাজেএই গণঅংশীদারিত্বকে ব্যবহার করা। ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় কেন্দ্রীয় সরকারএবং রাজ্য সরকারগুলি কিভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে, সেই প্রক্রিয়াকে সরল করারক্ষেত্রে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে।
আমিসুপ্রশাসন বলতে বুঝি, উন্নয়ন যুক্ত সুপ্রশাসন। তবেই সাধারণ মানুষের স্বপ্ন সফলহওয়া সম্ভব। একটি বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ করলে সেটা অবশ্যই উন্নয়ন কিন্তু সেখানে ঠিকসময়ে বাস আসছে কি না, বাসগুলিকে ভালভাবে পরিস্কার রাখা হচ্ছে কি না, ড্রাইভার ওকন্ডাক্টরদের ব্যবহার কেমন – এই সবকিছু মিলিয়ে হয় সুশাসন। তবেই সাধারণ মানুষ খুশিহন। মানুষের সমস্যার সমাধান হলে তবেই তাঁরা ভাবতে পারেন, এটা আমার দেশ, এখানেআমাদের সরকার শাসন করছে, আর এই সকল সরকারি সম্পত্তি আমাদেরই সম্পত্তি। এটাশুধুমাত্র গণঅংশীদারিত্বের মাধ্যমেই সম্ভব। আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেন, তিন বছরআগে আমরা যখন সরকার গঠন করেছি, তখন টিভিতে নিয়মিত খবর আসতো যে, ডালের দাম বেশি,ডালের দাম কেন কমছে না মোদী সরকার জবাব দাও। কিন্তু কিছুদিন পর থেকেই ডালের দামকমে গেল, তারপর থেকে সবাই চুপ। কিভাবে ডালের দাম কমল? আমি দেশের চাষীদের কাছেঅনুরোধ করলাম যে, আপনারা মাটি পরীক্ষা করিয়ে যে মাটিতে ডাল উৎপাদন হতে পারে,সেখানে ডালই ফলান। বাজারে ডালের এত চাহিদা যে এতে আপনাদেরই লাভ হবে। গোটা দেশেরকৃষকরা আমার ডাকে সাড়া দিয়ে বিপুল মাত্রায় নানা রকম ডাল উৎপাদন শুরু করলেন। ফলে আজসর্বত্র ডাল সস্তা হয়ে গেছে। মধ্যবিত্ত পরিবারে ডাল-ই তো প্রোটিনের প্রধান যোগানদার।আমার একথা বলার তাৎপর্য হ’ল, সরকারি প্রচেষ্টার সঙ্গে জনসাধারণের সামর্থ্যকে যুক্তকরতে পারলে অনেক গুণ সাফল্য পাওয়া যায়।
ভারতের বাইরেএমন ধারণা রয়েছে যে, ভারতের অধিকাংশ মহিলাই গৃহিনী। তাঁদের আর কোনও কাজ নেই।রান্নাঘরই তাঁদের জীবন। আজ ভারতের বাস্তব কিন্তু অন্যরকম। আজও ভারতে পশুপালন,ডেয়ারি, দুগ্ধ উৎপাদনের সম্পূর্ণ ক্ষেত্র এক প্রকার মহিলারাই সঞ্চালনা করেন।কৃষিতেও মহিলাদের অংশীদারিত্ব কম নয়। তাঁরা শারীরিকভাবে অংশগ্রহণ করেন কিন্তুআমাদের সামাজিক রচনা এমনই যে তাঁদেরকে পরিশ্রমকে টাকা-পয়সার নিরিখে বিচার করা যায়না। এর মানে এই নয় যে, ভারতের আর্থিক উন্নয়ন যাত্রায় মহিলাদের ভূমিকা কোনও অংশেকম। মহিলাদের সম্ভাবনার কথা ভেবে আমাদের সরকার নারী ক্ষমতায়নকে ‘নারী নেতৃত্বাধীন’উন্নয়নে রূপান্তরিত করার ইচ্ছে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা অভিযান শুরু করেছে।এই অভিযানের আগে আমাদের দেশের ৪০ শতাংশ মানুষ কখনও ব্যাঙ্কের দরজায় পা রাখেননি।তাঁরা দেশের নথিভুক্ত অর্থনীতির বাইরে ছিলেন। আমরা এই অভিযান শুরু করার পর দেখলাম,যত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলল তার মধ্যেই অধিকাংশই মহিলাদের। এর মানে, দেশ স্বাধীনহওয়ার প্রায় ৬৮ বছর পর ঐ মহিলারা অনুভব করতে শুরু করলেন যে, তাঁরাও দেশের অর্থব্যবস্থার অংশ। তারপর আমরা শুরু করলাম মুদ্রা যোজনা। এর মাধ্যমে আমরা স্ব-উদ্যোগীদেরউৎসাহ যোগালাম, যাতে আমাদের দেশের নবীন প্রজন্মের মানুষেরা কর্মপ্রার্থী না হয়েএকেক জন কর্মদাতা হয়ে ওঠেন। তাঁরা যাতে স্থানীয়ভাবে দুর্বল অংশের মানুষদেরকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারেন, সেজন্য আমরা ছোট ছোট ব্যবসাকে সাহায্য করারলক্ষ্যে বড় অভিযান শুরু করি।
এই মুদ্রাযোজনার মাধ্যমে কোনও রকম গ্যারান্টি ছাড়াই ব্যাঙ্কে গিয়ে স্ব-উদ্যোগীরা নিজেরসমস্ত তথ্য নথিভুক্ত করে তাঁদের প্রস্তাব অনুযায়ী ৫০ হাজার টাকা থেকে ১০ লক্ষ টাকাপর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন। ইতিমধ্যেই দেশের প্রায় ৭ কোটি স্ব-উদ্যোগী ঋণ পেয়েছেন।ব্যাঙ্কগুলি ইতিমধ্যেই প্রায় ৩ লক্ষ কোটিরও বেশি টাকা এদের ঋণ দিয়েছেন। আর আপনারাজেনে খুশি হবেন, এই ঋণ গ্রহণকারী স্ব-উদ্যোগীদের মধ্যে ৭০ শতাংশই হলেন মহিলা।
নারীক্ষমতায়ন কিভাবে হবে, নারী নেতৃত্বাধীন উন্নয়ন কিভাবে হবে, তা এই পরিসংখ্যান থেকেইআপনারা আঁচ করতে পারবেন। আজও বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে মাতৃত্বকালীন ছুটি গড়ে ১২সপ্তাহ। ভারতই প্রথম দেশ যারা সম্প্রতি সংসদে আইন পাশ করে কর্মরত মহিলাদের ২৬সপ্তাহ মাতৃত্বকালীন ছুটি মঞ্জুর করেছে। অর্থাৎ প্রায় ছ’মাস। শিশুর জন্মের আগে ওপরে এই ছ’মাস সবেতন ছুটি পেয়ে আমার দেশের মায়েরা তাঁদের শিশুকে নিয়ম-মাফিকমাতৃদুগ্ধ খাওয়াতে পারবেন। আমি এটাকে বিনিয়োগ হিসাবে দেখছি। এই ২৬ সপ্তাহ ধরে যেশিশুটি তাঁর মায়ের লালন-পালন পেয়ে পরিপুষ্ট হয়ে উঠবে, তার ভিত্তি মজবুত হবে, এভাবেদেশের প্রতিটি ভবিষ্যৎ নাগরিক যাতে সুস্থভাবে বড় হয়, স্বাস্থ্যবান হয়, এটাই আমরাসুনিশ্চিত করতে চেয়েছি। ভবিষ্যৎ নাগরিকরা স্বাস্থ্যবান হলে দেশও স্বাস্থ্যবান হবে।
যেবার ২৬জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রধান অতিথি হিসাবে আমেরিকার ভূতপূর্ব রাষ্ট্রপতিশ্রদ্ধেয় বারাক ওবামা ভারতে এসেছিলেন, যখন তাঁকে গার্ড অফ অনার দেওয়া হয়, স্থল, জলও বায়ুসেনার মহিলা সৈনিকরাই তাঁকে গার্ড অফ অনার দিয়েছিলেন। আর সেই অনুষ্ঠানেনেতৃত্ব দিচ্ছিলেন এক মহিলা আধিকারিক। আমেরিকার রাষ্ট্রপতি মঞ্চে পাশাপাশি বসেআমাকে বলেছিলেন ভারতের এই শক্তি দেখে আমি অবাক। আমি বললাম, এটা তো সবে শুরু,আগামীকাল দেখবেন। আর পরদিন, ২৬ জানুয়ারিপ্যারেডে গোটা দুনিয়া অবাক হয়ে দেখল যে, এত বড় প্যারেডে নেতৃত্বও দিলেন একজনমহিলা। পরদিন, সমস্ত কাগজে এটাই ছিল শিরোনাম। প্যারেডে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকটিদলের সকল অংশগ্রহণকারীরাই ছিলেন মহিলা। ভারতে নিরাপত্তা ক্ষেত্রে আমাদের দেশেরমহিলারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। আপনারা যদি দিল্লিতে আসেন কিংবাদেশের অন্য কোনও রাজ্যে যান, তা হলে দেখবেন যে, সর্বত্র ৩৩ শতাংশ মহিলা পুলিশতাঁদের দায়িত্ব পালন করছেন। আমরা অন্যান্য ক্ষেত্রেও নারী ক্ষমতায়ন বৃদ্ধিরক্ষেত্রে সাফল্য পেয়েছি।
আপনারাদেখেছেন, আমাদের দেশে এখন মহিলা বৈমানিকরা যুদ্ধ বিমান চালাচ্ছেন। আজ ভারত মহাকাশপ্রযুক্তিতে অনেক এগিয়ে গেছে। গত সপ্তাহেই একসঙ্গে ৩০টি ন্যানো-স্যাটেলাইটউৎক্ষেপণের কাজ সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে। তার কিছুদিন আগেই আমাদেরবৈজ্ঞানিকরা একসঙ্গে ১০৪টি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে বিশ্ব রেকর্ড করেছেন। গতমাসে মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে সর্বাধিক ভারী উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। খবরেরকাগজগুলিতে সেই উপগ্রহের ওজনের সঙ্গে কতকগুলি হাতির ওজনের সমতুল বলে লেখা হয়েছে।আপনারা শুনে খুশি হবেন যে, এই মহাকাশ বিজ্ঞান প্রকল্পগুলিতে তিনজন প্রধানবৈজ্ঞানিক হলেন মহিলা। এবার বলুন, আমার দেশের মা ও বোনেদের শক্তি ও সামর্থ্য নিয়েআমরা কেন গর্ব করব না। বিজ্ঞান, শিক্ষা, আরোগ্য – সকল ক্ষেত্রেই মহিলারা এখনএগিয়ে। দেশের যে কোনও রাজ্যে এখন শিক্ষকদের সম্মেলন হলে বোর্ড লাগাতে হয় যে,সভাগৃহের এই অংশটি পুরুষ শিক্ষকদের জন্য সংরক্ষিত। আজ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাটাইআমাদের মা ও বোনেরা সামলাচ্ছেন। ক্রীড়া প্রশাসন, নার্সিং, প্যারা-মেডিকেল, মেডিকেলসর্বত্র মহিলারা নিজেদের আধিপত্য কায়েম করেছেন। এবারের অলিম্পিকেও আমাদের দেশ যেক’টি মেডেল পেয়েছে, সবা আমাদের মেয়েরাই পেয়েছেন। তাঁরাই শুধু দেশের মুখ উজ্জ্বলকরেছেন। শুধু তাই নয়, শারীরিকভাবে যাঁদের সমস্যা রয়েছে সেই ক্রীড়াবিদদেরপ্যারা-অলিম্পিকেও তেরঙ্গা পতাকার মর্যাদা রেখেছেন আমাদের মহিলা খেলোয়াড়রা।
বর্তমানকেন্দ্রীয় সরকার এভাবেই দেশের উন্নয়ন যাত্রায় জনসংখ্যার ৫০ শতাংশের ক্ষমতায়নকেসুনিশ্চিত করে সমান অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে একের পর একপদক্ষেপ নিচ্ছে। তারই সুফল হিসাবে আমরা এই সাফল্যগুলি পাচ্ছি। সময় কারও জন্যঅপেক্ষা করে না। আমরা যে গতিতে এখানে পৌঁছেছি, তার থেকেও বেশি গতিতে এগোলেই সাফল্যত্বরান্বিত হবে। একথা প্রত্যেক ভারতীয়র মনে এখন ঢুকে গেছে। আগে মাঝে মধ্যে কিছুকাজ করলেই সরকারের সুনাম হ’ত। এখন প্রতিদিন কাজ করেও জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতেহিমশিম খেতে হয়। মানুষের প্রত্যাশা বেড়ে গেছে। দেশকে শুধু এগিয়ে নিয়ে গেলে হবে না,দেশকে আধুনিক করে তুলতে হবে। একবিংশ শতাব্দীর ভারত কোনও দিকে যাতে বিশ্বমানের থেকেপিছিয়ে না থাকে। আমাদের পরিকাঠামো যাতে বিশ্বমানের অনুকূল হয়, তা হলেই বিজ্ঞান ওপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশ্বের উন্নততম দেশগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাওয়ারসামর্থ্য ভারতীয়রা অর্জন করবে। আমরা এসব কথা মাথায় রেখে কাজ করে চলেছি। আজস্বাস্থ্য সচেতনতার পরিবেশ গড়ে উঠেছে। মানুষ পরিবেশ সচেতন হচ্ছেন। প্রত্যেকেইদূষণমুক্ত প্রশ্বাস নিতে চান, দূষণমুক্ত খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করতে চান। এইচিন্তাকে মাথায় রেখে আমরা জ্বালনি ক্ষেত্রে ১৭৫ গিগাওয়াট পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তিউৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছি। আপনাদের মধ্যে অনেকের কাছে গিগাওয়াট নতুনশব্দ। কারণ শতাব্দীকাল ধরে আমরা মেগাওয়াটের বাইরে ভাবিনি।
সৌরশক্তি,বায়ুশক্তি, পরমাণু শক্তি এবং বায়োমাস এনার্জির সমাহারে দেশের প্রয়োজন মেটানোরপাশাপাশি দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে দ্রুতগতিতে কাজ এগিয়ে চলেছে। আজ আমরাকয়লা থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের চাইতে সৌরশক্তি উৎপাদিত বিদ্যুৎ’কে সুলভ করে তুলতেপেরেছি। এভাবে এগিয়ে যেতে থাকলে আপনারা কল্পনা করতে পারেন, গোটা ব্যবস্থা যদিসৌরশক্তি-চালিত করে তোলা সম্ভব হয়, তা হলে দেশের অর্থনীতিতে কত বড় পরিবর্তন আসবে।
আজ ভারতকেউপসাগরীয় দেশগুলি থেকে তেল আমদানি করতে হয়। ভবিষ্যতে আমরা সৌরশক্তির উৎপাদনেস্বয়ংসম্পন্ন হয়ে উঠলে ঐ তেল কেনার টাকা সাশ্রয় হলে দেশ আরও আত্মনির্ভর হবে।
আমিপ্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর ডিজিটাল বিষয়ে অনেক কিছু শেখার চেষ্টা করেছি।সেজন্য আমি আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠকে বসতাম। একদিন বিদ্যুৎ বিভাগেরআধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে জানতে পারি যে, দেশের ১৮ হাজার গ্রামে তখনও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। শুনে তো আমি অবাক। দেশস্বাধীন হওয়ার সাত দশক পরেও এই একবিংশ শতাব্দীতে এসে এতগুলি গ্রামের মানুষসন্ধ্যার পর অষ্টাদশ শতাব্দীর মতো জীবনযাপন করতে বাধ্য হন। একথা শুনে আমরা আধুনিকভারতের স্বপ্ন কি করে সফল করব, তা নিয়ে ভাবতে শুরু করি। আমি তাঁদের জিজ্ঞেস করি, আপনারাকত দিনের মধ্যে এই ১৮ হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে পারবেন। তাঁরা হিসাব করেবললেন, ৭ বছর লাগবে। আমি তাঁদের সঙ্গে আরও কিছুক্ষণ কথা বললাম, তারপরই ১৫ আগস্টেলালকেল্লার প্রাকার থেকে ঘোষণা করলাম যে, আগামী ১ হাজার দিনের মধ্যে আমরা ১৮ হাজারগ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেব। আর তারপর থেকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু হয়। ১ হাজারদিন এখনও হয়নি। প্রায় ১৪ হাজার গ্রামে ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। বাকিগ্রামগুলিতে বিদ্যুৎ পোঁছনোর কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।
ভারতে আড়াইলক্ষ পঞ্চায়েত রয়েছে। সেই পঞ্চায়েতগুলির অধীনে ৬ লক্ষ গ্রাম রয়েছে। আপনারা বলুন,এই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে আপনারা কি একঘন্টা মোবাইল ফোন ছাড়া থাকতে পারবেন? তাহলে, ভারতের গরিব মানুষ এই সুবিধা কেন ব্যবহার করতে পারবেন না। ভাই ও বোনেরা, আমরাতাঁদের কথা মাথায় রেখেই ডিজিটাল ইন্ডিয়া’র কাজ শুরু করেছি। এর মাধ্যমে দেশের আড়াইলক্ষ পঞ্চায়েতে অপ্টিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক বিছানোর কাজ চালু হয়েছে। দ্রুতগতিতেকাজ এগিয়ে চলেছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই আমরা অপ্টিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কসংযুক্তিকরণের মাধ্যমে এমন ডিজিটাল ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম হব, যার দ্বারা ‘লংডিসট্যান্স এডুকেশন’ বাস্তবায়িত হবে। শহরে জ্ঞানার্জনের জন্য যে সমস্ত পরিষেবারয়েছে, সেগুলিকে আমরা এই ডিজিটাল মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামে পৌঁছে দিতে চাই। ভাই ওবোনেরা, এমনই অনেক কথা রয়েছে। আপনারা নিশ্চয়ই ভারতে আসতে চান। এখানে এত বিপুল সংখ্যায় ভারতীয়রা নেদারল্যান্ডথেকে এসেছেন, সুরিনাম থেকে এসেছেন । তাছাড়া , এখানে অনেকডাচ নাগরিকও রয়েছেন। আপনাদের কি ওসিআই কার্ড করতে কোনও অসুবিধা হচ্ছে? আমি অবাকহয়ে শুনলাম যে, এখানে এত বিপুল মাত্রায় ভারতীয়রা থাকেন, অথচ শুধু ১০ শতাংশেরই মাত্রওসিআই কার্ড রয়েছে।
আপনারা আমাকেবলুন, আগামী ২৬ জানুয়ারির আগেই আপনারা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই কাজ সম্পূর্ণ করবেন।আমি এখানকার দূতাবাসকেও বলে যাব, যাতে তারা এক্ষেত্রে আপনাদের সহায়তা করেন। এইওসিআই কার্ড ভারতের সঙ্গে শতাব্দী প্রাচীন সম্পর্কের একটি যোগসূত্র। আমি দু'’দিনআগে পর্তুগালে ছিলাম। সেদেশের প্রধানমন্ত্রী আমাকে সর্বসমক্ষে তাঁর ওসিআই কার্ডদেখিয়ে সগর্বে বলেন, আমি ভারতীয় বংশোদ্ভূত, আর আজ আমি এখানকার প্রধানমন্ত্রী।প্রত্যেক ভারতীয়র মনে এই গর্ববোধ থাকা চাই। এখানে আমাদের দূতাবাসে নতুন রাজদূতএসেছেন, আমি তাকে বলবো, তিনি সাহায্য করবেন, আমি নিয়মিত খোঁজ নিয়ে জানবো যে নতুনকতজনকে তাঁরা সাহায্য করতে পেরেছেন?
এই কাজ দ্রুতসম্পন্ন করতে হবে। দেখুন, যে ২০০০ জনের কাছে ডাচ পাসপোর্ট রয়েছে ২০১৫-তেই তাদেরজন্যে ই-ভিসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভারত এখন সকল ডাচ নাগরিককে আগামী পাঁচ বছরেরজন্য বিজনেস ভিসা দেওয়ার কথা ভাবছে। পাঁচ বছরের বিজনেস এবং পর্যটক ভিসা দিয়ে ভারতসকল ডাচ নাগরিকের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করতে চায়। আপনাদের প্রতি অনুরোধ আপনারা এইপ্রচেষ্টাকে সাফল্যমণ্ডিত করতে আমাদের পাশে থাকুন। কারণ, দেশের মন, মস্তিষ্ক এবংপরম্পরার সাথে আপনারা যুক্ত রয়েছেন। ভারতে ভাল কিছু হলে আপনাদের আনন্দ হয়। এহেনভারতময় আপনাদের জীবনে ভারতের সঙ্গে নৈকট্য বৃদ্ধির চেষ্টা চালিয়ে যান। আপনারাআমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে চান? পাক্কা?
আপনারা চানকি ভারতের প্রধানমন্ত্রী আপনাদের পকেটে থাকুক? চুপ হয়ে গেলেন কেন? আপনাদের পকেটেভারতের প্রধানমন্ত্রী থাকাটা কি অন্যায়? এটা সম্ভব, আপনি নিজের মোবাইলে নরেন্দ্রমোদী অ্যাপ ডাউনলোড করে নিন। আমি ২৪ ঘন্টা আপনার পকেটে থাকব। যখন খুশি আমাকেবার্তা পাঠাতে পারবেন। আর আমি আপনাদের প্রতি মুহূর্তে হৃদস্পন্দন টের পাব। আসুন,আমার আর আপনাদের মধ্যে ব্যবধান দূর করুন। আমার প্রতি আপনাদের সম্পূর্ণ অধিকাররয়েছে। এই অধিকার আপনাদের পাসপোর্টের রং দিয়ে বিচার করা হবে না। আপনাদের যাঁদেরঅন্তর থেকে ‘ভারতমাতা কি জয়’ ধ্বনি আকাশ-বাতাস আলোড়িত করে, তাঁদের জন্য আমার জীবনসমর্পিত। এত কম সময়ে এত বিপুল সংখ্যায় আপনারা সকলে এখানে এসে উপস্থিত হয়েছেন, আমিহৃদয় থেকে আপনাদের সকলকে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই।
অনেক অনেকধন্যবাদ।