ভারী শিল্প এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীশ্রী আনন্দ কীর্তি মহোদয়, প্রতিমন্ত্রী শ্রী বাবুল সুপ্রিয় মহোদয়, আমার সহযোগীশ্রী পি কে মিশ্র মহোদয়, শ্রী পি কে সিনহা মহোদয়, সারা দেশের কেন্দ্রীয় সরকারেরঅধীনস্থ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির শীর্ষ আধিকারিকবৃন্দ, এখানে উপস্থিত অন্যান্যশ্রদ্ধেয় ভদ্র মহিলা ও ভদ্র মহোদয়গণ!
আমাদের অনন্ত গীতেজি গান গান না আর বাবুলজি গান গান। আমাদের রাষ্ট্রায়ত্তসংস্থাগুলির ছোট পৃথিবীতে একটি নতুন সূচনা হ’ল আজকের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। আমিআপনাদের সকলকে এই সিপিএসই কনক্লেভ ২০১৮-তে স্বাগত জানাই। আপনাদের সকলকে অনেক অনেকশুভেচ্ছা জানাই।
গত এক-দেড় ঘন্টা ধরে এখানে যে ‘প্রেজেন্টেশন’ দেওয়া হয়েছে, তাতে আপনাদেরপরিশ্রম, উৎসাহ এবং চিন্তাভাবনার স্পষ্টতা অনুভূত হয়েছে। কর্পোরেট গভর্ন্যান্সথেকে শুরু করে উদ্ভাবন, প্রযুক্তি আর নতুন ভারত নিয়ে আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গী ও মতামতজানার সুযোগ পেয়েছি। পূর্ববর্তী কোনও প্রধানমন্ত্রীর এই সৌভাগ্য হয়েছিল কিনা জানিনা, কিন্তু আমার হয়েছে।
এই প্রেজেন্টেশন যে টিম তৈরি করেছে, সেই টিমের পাশাপাশি যাঁরা আলোচনায়অংশগ্রহণ করেছেন, সবাইকে আমি শুভেচ্ছা জানাই। অনেক চিন্তাভাবনা এবং ‘রেফারেন্স’যোগাড় করতে হয়েছে আর এভাবেই হয়তো দৈনন্দিন কাজের চৌহদ্দী থেকে কিছুক্ষণের জন্যবেরিয়ে এসে ভাবনাচিন্তা করার সুযোগ পেয়েছেন।
আমাকে বলা হয়েছে যে, বিগত মাসগুলিতে আপনারা সকলে একটি দীর্ঘ আলাপ-আলোচনারমন্থন প্রক্রিয়া চালু রেখেছিলেন। আপনাদের নিজস্ব ক্ষেত্রগুলি কেমন রূপান্তরণপ্রক্রিয়ার পরিবর্তিত হবে – সে সম্পর্কে ভাবনাচিন্তা করেছেন। আর আপনারা শুনে খুশিহবেন যে, আপনাদের এই মন্থন প্রক্রিয়ার গতিপ্রকৃতি এবং অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিতথাকার জন্য মাঝে মধ্যেই আপনাদের নেতৃস্থানীয় আধিকারিকদের ডেকে ডেকে আমিও তাঁদেরসঙ্গে বারবার বসেছি। যাতে আপনাদের অগ্রগতির সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রাখতে পারি – সেপ্রচেষ্টা জারি রেখেছি।
সেই সময় আপনারা দৈনন্দিন জীবনে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হন সে সম্পর্কেআমাকে অবহিত করা হয়েছে। সরকার সেই সমস্যাগুলি দূরীকরণের জন্য লাগাতার প্রচেষ্টাজারি রেখেছে। বিগত চার বছরে সরকারও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে পরিচালনা ও কাজেরস্বাধীনতা দিয়েছে, যাতে উন্নততর পারদর্শিতা দেখাতে পারে।
বন্ধুগণ,
স্বাধীনতার পর থেকে সার্বজনিক ক্ষেত্রের সংস্থা রাষ্ট্র নির্মাণে দেশেরঅর্থ-ব্যবস্থায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।
যখন দেশে অর্থের প্রয়োজন ছিল, প্রযুক্তির দরকার ছিল, ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রেবিনিয়োগের প্রয়োজন ছিল, অথচ এসব কিছু পাওয়া সহজ ছিল না, সেই সময় রাষ্ট্রায়ত্তসংস্থাগুলি দেশের প্রয়োজন মেটাতে যুদ্ধকালীন তৎপরতা নিয়ে কাজ করেছে। একের পর একনিজের ব্র্যান্ড গড়ে তুলেছিল। শক্তি উৎপাদন, শক্তি উৎপাদনকারী যন্ত্রপাতির নক্শাকরণ,ইস্পাত উৎপাদন, তেল, খনিজ পদার্থ, কয়লা অনেক ক্ষেত্রে তাঁরা নিজেদের প্রতিষ্ঠিতকরে তোলেন। তাঁরা সেই সময়ে তৎকালীন ভারতীয় অর্থ-ব্যবস্থাকে গতিশীল করেন যখনপ্রাইভেট সেক্টরের ভূমিকা এতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। আজও আপনাদের সংস্থাগুলিভারতীয় অর্থ-ব্যবস্থাকে শুধু শক্তিশালী করছে না, শিল্প সংক্রান্ত গতিবিধিতেঅনুঘটকের কাজও করছে।
বন্ধুগণ, আমরা যখন প্রাইভেট সেক্টরে সিইও-র কথা বলি, তাঁদের দক্ষতার মাপকাঠিহ’ল শেয়ার হোল্ডাররা কতটা লভ্যাংশ পেয়েছেন! লাভ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির জন্যওঅত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তার পাশাপাশি তাঁদের জীবনে সমাজ জীবনে কল্যাণকারীভূমিকা পালনের এবং নানা সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব থাকে।
আমরা যখন সামাজিক লাভের কথা বলি, তখন আপনাদের মতো আধিকারিকদের অবদান এবংরাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির কর্মচারীদের ত্যাগের কথা কেমন করে ভুলতে পারি!দূরদূরান্তের দুর্গম অঞ্চলগুলিতে যেখানে নাগরিক সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে আর অনেকসময়েই কঠিন পরিস্থিতিতে কাজ করতে হয়, অনেক সমস্যার মুখোমুখী হতে হয়, তবু আপনারাঅটল বিশ্বাসে দেশের স্বার্থে সকল কষ্ট সয়ে দৃঢ় প্রত্যয় নিজের নিজেদের কর্ম সম্পাদনকরেন।
আপনাদের সাহস সম্বল করেই সরকার আজ বড় বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারছে। দেশেরপ্রতিটি গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যেক গরিব মা-বোনেদেররান্নাঘর পর্যন্ত রান্নার গ্যাস সংযোগ, আপনাদের সংস্থানগুলির সঙ্গে যুক্ত লক্ষলক্ষ কর্মচারীদের কঠিন পরিশ্রম ছাড়া এসব সম্ভব হ’ত না। আমরা এই ফিল্মটিতেও দেখেছি,আপনাদের প্রেজেন্টেশনগুলিও দেখেছি, কত বড় কর্মপরিধি এবং সময়সীমার মধ্যে এসব কাজসম্পন্ন হয়েছে।
বন্ধুগণ, শুধু ইতিহাস গৌরবময় এবং সমৃদ্ধ হলেই চলবে না। বর্তমানেরসমস্যাগুলি সমাধানের জন্য কর্মপদ্ধতিতে পরিবর্তনেরও প্রয়োজন হয়। আর আমি স্বীকারকরি যে অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে আশীর্বাদ গ্রহণে আদর্শবাদ আর আদর্শই যথেষ্ট নয়।বাস্তবধর্মীতা এবং কার্যকারিতারও প্রয়োজন রয়েছে। ক্ষেত্র যা-ই হোক না কেন, একবিংশশতাব্দীর অর্থ ব্যবস্থায় প্রত্যেকের চলার পথে মূলমন্ত্র হওয়া উচিৎ কর্মোদ্যোগ এবংউদ্ভাবন।
সরকারি কিংবা বেসরকারি সাফল্যের চাবিকাঠি ভিন্ন হয় না। যখন আমি সাফল্যেরকথা বলি, তখন তিনটি ‘আই’-এর ভাবনা সামনে আসে। ‘ইনসেন্টিভস্’, ‘ইমাজিনেশন’ এবং‘ইন্সটিটিউশনাল বিল্ডিং’। ইনসেন্টিভস্-এর ক্ষেত্রে আমাদের অর্থনীতিবিদরা বলেন যে,মানুষের স্বভাব পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এটাই সবচেয়ে বড় উপায়। শুধু ব্যবসার ক্ষেত্রেইনয়, জীবনের ক্ষেত্রেও আমরা প্রায়শই দেখি যে যখনই কোনও ব্যক্তিকে দিয়ে তাঁর ক্ষমতাঅনুসারে কাজ করাতে হয়, তাঁকে আমাদের নিরন্তর উৎসাহ যুগিয়ে যেতে হয়। তেমনই আপনাদেরওকর্মক্ষেত্রে থেমে পড়া আর নিষ্ক্রিয়তা থেকে মুক্ত থাকতে নানা ‘ইউনিক ইন্সেন্টিভমডেল’ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অবশ্য সব ক্ষেত্রে এই ইনসেন্টিভ অর্থনৈতিকই হতে হবেতার কোনও মানে নেই। দক্ষ কর্মচারীদের ফটো বুলেটিং বোর্ডে টাঙানো কিংবাচেয়ারম্যানের পিঠ চাপড়ানিও শত শত কর্মচারীদের কাজে উৎসাহ যোগাতে পারে।
আমার মনে আছে যে, বরোদার একটি ওষুধ নির্মাণ সংস্থায় গিয়েছিলাম। সেখানে কোনওনতুন ওষুধ জনসমক্ষে আনার আগে এর নামকরণের দায়িত্ব দেওয়া হ’ত কর্মচারীদের। তাঁদেরমধ্যে প্রতিযোগিতা হ’ত। বিজ্ঞানী নয়, এমন সাধারণ কর্মচারীরাও এই প্রতিযোগিতায়অংশগ্রহণ করে ওষুধটির গুণাবলী বিচার করে নামকরণ করতেন। বড় অনুষ্ঠান করে যাঁর দেওয়ানাম গৃহীত হ’ত, তাঁকে বা যাঁরা যাঁরা মিলে এই নাম দিয়েছেন সবাইকে পুরস্কৃত করাহ’ত। পরিবারের মধ্যেও আমরা এরকম ছোটদের উৎসাহিত করে অনেক সুফল পেতে পারি। এতেঅংশীদারিত্ব বাড়ে, ঐক্য বৃদ্ধি হয়।
দ্বিতীয় বিষয়টি আমি বলেছিলাম ‘ইমাজিনেশন’। এই কল্পনা নিয়ে কথা বলার মানে আজআর সেদিনের মতো নেই, যখন অধিকাংশ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা গড়ে উঠেছিল। আজ এগুলিরস্বরূপ ভিন্ন। আজ পরিস্থিতি এমন যে অনেক সফল প্রাইভেট কোম্পানি দু’দশকেরও বেশিটেকে না। এটাই সত্য। এর অনেক কারণ হতে পারে কিন্তু সবচেয়ে বড় কারণ হ’ল নিকটভবিষ্যতেই যে পরিবর্তন এসে যাচ্ছে, বিশেষ করে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যে পরিবর্তনআসছে তার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পারা। এখানেই নেতৃত্বের কল্পনা শক্তি গুরুত্বপূর্ণহয়ে ওঠে। আমি বেশ কয়েক বছর আমেদাবাদে ছিলাম। একটা সময় ছিল, যখন সেখানকার বড় বড়কারখানার চিমনিগুলি ঐ শহরের অহঙ্কার রূপে পরিগণিত হ’ত। কিন্তু নতুন প্রযুক্তি এসেসেই কারখানাগুলি তামাদি হয়ে গেছে। আজ একটিও চিমনি থেকে ধোঁয়া বের হয় না কেন?কল্পনার অভাব ছিল। আমাদের অধিকাংশেরই প্রবাহিত জলে স্নান করার অভ্যাস রয়েছে। চালুজিনিসই আমরা চালাতে পারি। যাঁদের দূরদৃষ্টি নেই, সময়ানুকূলে যাঁরা পরিবর্তন আনতেপারেন না, সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না, তাঁরা সেখানেই থেমে যান আর ধীরে ধীরে নিঃশেষহয়ে যান। আর আজকের বিশ্বে কর্মকাণ্ড বা উৎপাদনের বিস্তার বা বৈচিত্র্যসাধন ও ভাঙনেরগুরুত্ব বেড়ে গেছে।
তৃতীয়ত, ইন্সটিটিউশন বিল্ডিং। এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলাই সম্ভবত নেতৃত্বেরসবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। আমি রাজনৈতিক নেতৃত্বের কথা বলছি না। আমরা যাঁরাএখানে বসে আছি প্রত্যেকেই নিজের নিজের কর্মক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিই। কিন্তু আমরাযেক্ষেত্রে কাজ করি, সেই ক্ষেত্রের অন্তর্বর্তী নেতৃত্বেরও প্রয়োজন হয়। সেইব্যবস্থার কেন্দ্রে থাকে একটি টিম। না হলে, ব্যক্তি-কেন্দ্রিক এবং ব্যক্তি আধারিতব্যবস্থা চলতে পারে না।
বন্ধুগণ, এতদিন আমরা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে নবরত্ন রূপে শ্রেণি বিভাগকরতাম। কিন্তু এখন সময় এসে গেছে, আমরা এখন এর চেয়ে এগিয়ে ভাবি। আমরা কি এখন ‘নতুনভারত রত্ন’ ঘোষণা করার ব্যাপারে ভাবতে পারি! যেগুলি নতুন ভারত নির্মাণেগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনারা কি প্রযুক্তি এবং প্রক্রিয়া পরিবর্তনেরমাধ্যমে নতুন ভারত রত্ন হিসাবে নিজেদের সংস্থাকে গড়ে তুলতে প্রস্তুত?
আমি মনে করি যে, নতুন ভারত নির্মাণে আপনাদের অংশগ্রহণ ৫টি ‘পি’ ফর্মুলা ধরেচললে অগ্রগতি হতে পারে। এই ৫টি হ’ল – পারফরম্যান্স, প্রসেস, পার্সোনা,প্রকিওরমেন্ট এবং প্রিপেয়ার।
বন্ধুগণ, আপনাদের সবাইকে নিজের প্রতিষ্ঠানকে অপারেশনাল এবং ফিনান্সিয়ালপারফরমেন্সে সাধারণ মানদন্ডের ওপরে নিয়ে যেতে হবে। নিজের নিজের ক্ষেত্রে বিশ্বেসবচেয়ে ভালো যা, তার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখতে হবে।
আজ সারা পৃথিবীতে আলোচনা চলছে যে, ভারত কয়েক বছরের মধ্যেই ৫ ট্রিলিয়ন ডলারঅর্থনীতিতে পরিবর্তিত হবে। এই পরিবর্তনের জন্য জিডিপি’তে যে প্রবৃদ্ধির প্রয়োজন,তা হাসিল করতে ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকারয়েছে।
বন্ধুগণ, আমাকে বলা হয়েছে যে, গত ২০১৭-১৮ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিরপক্ষ থেকে জিডিপি’তে মোট মূল্যসংযোজন ছিল প্রায় ৫ শতাংশ। সময়ের চাহিদা হ’ল এইমূল্য সংযোজনকে দ্বিগুণ করতে হবে। আপনাদের সকলের মিলিত প্রচেষ্টায় এই রাষ্ট্রায়ত্তসংস্থাগুলি প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ করের পর দেশে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে তৃতীয় হাতহয়ে উঠুক।
আমাদের দেশে বলা হয় যে, ‘উদ্যোগসম্পন্ন সমুপৈতি লক্ষ্মী’ অর্থাৎ‘শিল্পসম্পন্ন মানুষের কাছেই লক্ষ্মী আসেন।
রাষ্ট্রের স্বার্থেই শিল্প এবং আমাদের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি সম্পন্ন হয়েউঠতে হবে। আর রাষ্ট্রকেও সম্পন্ন করে তুলতে হবে।
আজ আমরা যদি কেন্দ্রীয় সরকারের সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে একটি এন্টিটিরূপে দেখি, তা হলে রিটার্ন অন ইক্যুইটি প্রায় ১১ শতাংশ হয়। বেসরকারি ক্ষেত্রেরতুলনায় এবং ভালো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের হিসাবে এটি কম। আমার হিসাবেও অনেক কম। আরসেজন্য আমি চাইব যে, সিপিএসই ম্যানেজমেন্ট এদিকে নজর দিক এবং একটি নির্দিষ্টরণনীতি নিয়ে একে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিক।
দ্বিতীয় ‘পি’ অর্থাৎ প্রক্রিয়া এমন হওয়া উচিৎ, যাতে স্বচ্ছতা এবংজবাবদিহিতা বৃদ্ধি পায়। আর আন্তর্জাতিক স্তরে উন্নত পদ্ধতিতে সরবরাহ করতে পারে।
আমাদের নিজেদেরকেই প্রশ্ন করতে হবে যে, নতুন ভারতে ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্তসংস্থাগুলি কিভাবে আগামী ৫-১০ বছরের মধ্যে বিশ্বের সর্বোত্তম হিসাবে নিজেদেরপ্রতিস্থাপিত করতে পারে। জিডিপি বৃদ্ধির স্বার্থে তাঁরা কিভাবে নিজেদেরপুনঃসংজ্ঞায়িত করবে, প্রক্রিয়া ও নীতিসমূহে কি সংস্কার করলে কর সংগ্রহ বৃদ্ধিরপাশাপাশি কর্মসংস্থানও বৃদ্ধি পেতে পারে। আমার মতে, এই সকল বিষয়ে ভাবারপ্রয়োজনীয়তা রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলির আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে প্রতিযোগী হয়েওঠা। আজ ইউরোপের অনেক দেশে দেখবেন যে, রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলি শক্তি উৎপাদনে, পারমাণবিকসৌরশক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ করছে। তাঁদের ওয়ার্কিং মডেল থেকেই আমরাঅনেক কিছু শিখতে পারি।
বন্ধুগণ, যেভাবে আন্তর্জাতিক ব্যবসা ক্ষেত্রে পরিবর্তন এসেছে, সেদিকেতাকিয়ে সময়ের চাহিদা হ’ল সিদ্ধান্ত গ্রহণের দ্রুততার পাশাপাশি নমনীয়তার অবলম্বন। বিগতকিছু সময় ধরে বিশ্বে এমন কিছু উদাহরণ সামনে উঠে এসেছে, যেখানে কোনও রকম ঝুঁকি নানেওয়ার ভাবনার কারণে সরকারি সংস্থাগুলি লোকসানে চলছে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন হ’লপ্রতিটি স্তরে সিদ্ধান্ত গ্রহণকে সংহত করতে হবে। সেজন্য তৃতীয় ‘পি’ অর্থাৎপার্সোনা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
উন্নততর সিদ্ধান্ত গ্রহণ তখনই কার্যকরি হবে, যখন আমাদের কাছে প্রতিভাবানমানবসম্পদ থাকবে। আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে আমরা সঠিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতেপারি আর নিজেদের মেধার যোগান অক্ষুণ্ন রাখবে।
নমনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ভালো প্রতিভা এবং প্রযুক্তি – এই তিনটি বিষয়ে কোনওসংস্থার সঙ্গে যুক্ত হলে তার উন্নতি কেউ আটকাতে পারে না। আর আমাকে বলা হয়ে যে,প্রযুক্তির ক্ষেত্রে উদ্ভাবনকে উৎসাহ যোগাতে আপনারা একটু আগেই প্রেজেন্টেশনে যাবলেছেন, ‘টেক আপ ইন্ডিয়া মিশন’কে অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। আমিএই উদ্যোগের প্রশংসা করি আর সাফল্য কামনা করি।
আরেকটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা হ’ল ‘প্রকিওরমেন্ট’ বা কাঁচামাল ওঅন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনা; আপনাদের সংস্থায় এই প্রকিওরমেন্ট নীতিতেপরিবর্তন আনতে পারলে দেশের অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ক্ষেত্রগুলি আরওসমৃদ্ধশালী হয়ে উঠতে পারে। আমি আপনাদের সামনে একটি তথ্য রাখতে চাই। ২০১৬ সালেদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি ১ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি প্রকিওরমেন্টকরেছিল। এর মধ্য থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকার উপাদানই কেবলমাত্র ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্রও মাঝারি শিল্প ক্ষেত্রগুলি থেকে কেনা হয়েছিল।
আপনারা সবাই মিলে এমন একটি পদ্ধতি কি গড়ে তুলতে পারেন না, যাতে দেশেরঅতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পদ্যোগগুলি থেকে যত বেশি সম্ভব কাঁচামাল ওঅন্যান্য সামগ্রী কেনা যায়। বিশেষ করে, দেশের পিছিয়ে পড়া অঞ্চলগুলিতে যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, আপনাদের বদান্যতাতেই সেগুলিকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।
আপনারা হয়তো জানেন আর আপনাদের একটি প্রেজেন্টেশনে উল্লেখও রয়েছে যে, ভারতসরকার গভর্নমেন্ট ই-মার্কেট বা জিইএম নামে একটি পোর্টাল গড়ে তুলেছে। এই পোর্টালঅতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলিকে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছে। অত্যন্তকম সময়ে এই অনলাইন মঞ্চে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। আপনারাওযদি এই মঞ্চটিকে যথাসম্ভব ব্যবহার করেন, তা হলে ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আসবে আরঅতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগুলিও উপকৃত হবে। এর ফলে, দেশের প্রান্তিকঅঞ্চলগুলিতে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ওমাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলির ক্ষমতায়ন আপনাদের অন্যতম লক্ষ্য হওয়া উচিৎ। সম্ভবত আজকেআপনারা নিজেদের গৃহীত সংকল্পে এর উল্লেখও করেছেন। আপনারা নিজেদের অভিজ্ঞতাকে এইছোট শিল্প ক্ষেত্রগুলিতে যত বেশি পৌঁছে দেবেন, ততটাই দেশকে আত্মনির্ভর করে তুলতেএবং তীব্রগতিতে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবেন।
আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ যে, এই অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারিশিল্পোদ্যোগগুলির বকেয়া টাকা যত দ্রুত সম্ভব দিয়ে দেবেন। দেরীতে টাকা দিলে এদেরকাজের সমস্যা হবে।
দেশের নির্মাণ ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির মাধ্যমেশক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। গ্রামে গৃহ নির্মাণ, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি, সৌরশক্তি,বস্ত্র শিল্প, ওষুধ এবং পর্যটনের মতো অনেক ক্ষেত্রের কায়াকল্পে আপনাদের সক্রিয়অবদান রাখতে পারেন।
আমি আরও অনুরোধ করব যে, আপনাদের সাধারণ সভাগুলির আয়োজন কোনও পর্যটনক্ষেত্রে করুন। কোনও বিখ্যাত পর্যটন ক্ষেত্র নয়, ছোট ছোট পর্যটন ক্ষেত্র। নিজেদেরসাধারণসভায় বসে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন যে, এরপর থেকে আপনারা ছুটিতে বিখ্যাত পর্যটনক্ষেত্রগুলি থেকে অন্যান্য অজানা অঞ্চলগুলিকে অগ্রাধিকার দেবেন। এভাবে যদি আপনারাবছরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ২৫টি স্থানে সভা করেন, তা হলে প্রায় ৩০০টি কোম্পানির আধিকারিকরাঐ অঞ্চলগুলিতে গেলে সেখানকার পর্যটন পরিকাঠামোও উন্নত হবে। আপনাদেরও মন ভালো হয়েযাবে। আগ্রা, মুম্বাই, ব্যাঙ্গালোর, চেন্নাইয়ের ফাইভ স্টার হোটেলে গিয়ে সাধারণসভানা করে প্রকৃতির কোলে যান। এরকম অতিরিক্ত কিছু করতে পারলে তবেই দেশের লক্ষ্য আরআপনাদের লক্ষ্য একসঙ্গে চলবে। তবেই আপনারা নতুন ভারত নির্মাণে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকেরাষ্ট্র নির্মাণে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এদেশে পর্যটন ক্ষেত্রের মতো সম্ভাবনাময়ক্ষেত্র আর একটাও নেই। সবচেয়ে কম পুঁজিনিবেশে সর্বাধিক কর্মসংস্থানের সম্ভাবনারয়েছে। বিশ্বের কাছে যা নেই, তা দেখানো ও তুলে ধরার সামর্থ্য এই দেশে রয়েছে।কিন্তু আমরা কখনও সেভাবে তা তুলে ধরিনি। এখন কিভাবে তুলে ধরতে পারি, তা ভাবতে হবে।
বন্ধুগণ, ভবিষ্যতের জন্য আমাদের প্রস্তুতি আমাদের পঞ্চম ‘পি’র দিকে নিয়েযায় – প্রিপেয়ার! ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে প্রযুক্তিগত বিনির্মাণেরক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোয়ান্টাম কম্প্যুটিং, বৈদ্যুতিক যানবাহন এবংরোবোটিক্সকে মাথায় রেখে নিজেদের তৈরি করতে হবে।
একটি অনুমান অনুসারে ২০২০ সালের মধ্যে ‘গ্লোবাল ইন্টারনেট অফ থিংস’ বাজারেভারতের অংশীদারিত্ব প্রায় ২০ শতাংশ থাকবে। এটি প্রায় ২০ লক্ষ কোটি টাকার বাজার।এটাও অনুমান করা হয়েছে যে, শিল্প উৎপাদনের ক্ষেত্রে ‘ইন্টারনেট অফ থিংস’-এরঅংশীদারিত্ব হবে প্রায় ৬০ শতাংশ। ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি কি এই সম্ভাবনারকথা মাথায় রেখে নিজেদের রণনীতি গড়ে তুলছে? আপনারা কি তথ্য বিশ্লেষণ করছেন?
বন্ধুগণ, আপনাদের এই প্রচেষ্টাসমূহের মধ্যে ডিজিটাইজেশন, অ্যানালাইটিক্স,ই-মোবিলিটি এবং ব্লক চেনের মতো নতুন নতুন প্রযুক্তি আপনাদের সহায়ক হয়ে উঠবে। এইপ্রযুক্তিসমূহ নতুন ব্যবসা ক্ষেত্রে আপনাদের জন্য সুযোগ তৈরি করতে পারে।
আজকের তারিখে অর্থ বাজারে যে নতুন উদ্ভাবন দেখা যাচ্ছে, বিনিয়োগের জন্য যেবৃহৎ ক্যাপিটাল পুল আজ বর্তমান তাকেও কাজে লাগানো উচিৎ।
বন্ধুগণ, যখন আপনারা দেশের প্রয়োজন এবং অগ্রাধিকারের সঙ্গে তাল মিলিয়েএগিয়ে যাবেন, তখন ভালো পরিণাম সুনিশ্চিত। আর আমি নিশ্চিত যে, আমাদের দেশেরাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি নতুন ভারত নির্মাণে পরিবর্তনের অনুঘটক হয়ে ওঠার সম্পূর্ণক্ষমতা রয়েছে।
আজ এখানে আপনাদের সামনে ৫টি প্রশ্নের মাধ্যমে আমি ৫টি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে যেতেচাই। আপনারা এখানে যা যা বলেছেন, তার বাইরে না গিয়ে সেগুলি থেকেই নিজের মতো করে এইপ্রশ্নগুলি রাখব। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে আপনারা এগুলি করতে পারবেন। এই ৫টি চ্যালেঞ্জনতুন ভারত নির্মাণে আপনাদের অংশগ্রহণকে পুনঃসংজ্ঞায়িত করবে। আমি খুব বেশিপুঙ্খানুপুঙ্খ না বলে এই প্রশ্নগুলির মাধ্যমে আপনাদের সামনে একটি চিত্র তুলে ধরতেচাই।
আমার প্রথম প্রশ্ন : ২০২২ সালে স্বাধীনতার ৭৫ বছরপূর্তি হবে। ২০২২ সালের মধ্যে ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি কি নিজেদেরকর্মক্ষেত্রকে জিও স্ট্র্যাটেজিক রূপকে যথাসম্ভব বাড়াতে পারবে? যদি পারে, তা হলেকিভাবে বাড়াবে?
আমার দ্বিতীয় প্রশ্ন, ২০২২ সালের মধ্যে ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিদেশের মোট আমদানী খরচ হ্রাস করার ক্ষেত্রে কিভাবে সাহায্য করবে? আপনাদের মনে হতেপারে, এটা কার কাজ? আমি আপনাদের উদাহরণ দিতে চাই। আমি হরিয়ানার কৃষকদের কাছেতাঁদের ক্ষেতে গিয়েছিলাম।২৫-৩০ বছর আগের কথা বলছি। তখন ৩০-৩৫ বছর বয়সী এক কৃষকআমাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, আসুন, আসুন, নতুন কিছু করেছি, দেখে যান! খুব উৎসাহ! তিনিঠিক করেছিলেন যে দিল্লির পাঁচটি স্টার হোটেলে যে যে সব্জি আমদানি করা হয় – ছোটভুট্টা, ছোট টোম্যাটো ইত্যাদির চাষ শুরু করে দিল্লিতে এই সব্জিগুলির আমদানি বন্ধকরিয়ে দেবেন! আপনারা শুনলে অবাক হবেন যে, ঐ সমস্ত সব্জি দিল্লির সমস্ত বড় হোটেলে সস্তাদরে সরবরাহ করে তিনি পাঁচবছরের মধ্যেই ঐ সব্জিগুলির আমদানি বন্ধ করাতে পেরেছিলেন।একজন কৃষকের ছেলে একার চেষ্টায় যদি এরকম কাজ করতে পারেন, তাহলে আমাদের দেশের গর্বএতগুলি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা চেষ্টা করলে পারবে না? ভারতকে অনেক ক্ষেত্রেআত্মনির্ভর করে তোলার কৃতিত্ব আপনাদের। আজদেশ যতটাই উন্নত হয়েছে সেই অবস্থায় পৌঁছতে আপনাদের অবদান অনস্বীকার্য। এখন সময়এসেছে বিশ্ব অর্থনীতিতে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করার। আপনারানিজেদের প্রেজেন্টেশনেও একথা উল্লেখ করেছেন কিন্তু আমি একে জোর দিয়ে বলতে চাই,আমরা কি করলে, কোন পরিবর্ত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা এমন যন্ত্রপাতি তৈরি করতেপারব, যেগুলি বিদেশ থেকে আমদানিকৃত যন্ত্রপাতি থেকে কম খরচে বেশি উৎপাদনে সক্ষম।
আমার তৃতীয় প্রশ্ন হ’ল – ২০২২ সালের মধ্যে ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকিভাবে নিজেদের মধ্যে উদ্ভাবন ও গবেষণার ঐক্যসাধন করবে। আজ আমরা নিজের নিজের মতোকরে কাজ করে যাচ্ছি। এরফলে, আমাদের মানবসম্পদের সর্বাধিক উপযোগিতা থেকে আমরাবঞ্চিত হচ্ছি। কোনও একটি কোম্পানিতে যে কাজ এগিয়ে গেছে, যোগাযোগ বা যথাযথ সমন্বয়েরঅভাবে দ্বিতীয় কোম্পানিতে সেই কাজ আবার শূন্য থেকে শুরু করতে হচ্ছে। এক্ষেত্রেসর্বাধিক ঐক্যসাধন সম্ভব হলে আপনারা কল্পনা করতে পারেন, দেশে প্রযুক্তি ও উৎপাদনকত বড় উল্লম্ফন সম্ভব।
আমার চতুর্থ প্রশ্ন – নতুন ভারতের স্বপ্ন অনুসারে দেশের অগ্রাধিকার বিচারকরে আমরা ২০২২ সালের মধ্যে দেশকে যে সমস্যাগুলি থেকে মুক্ত করতে চাই, সেগুলি কিআমাদের সিএসআর ফান্ডের যথাযথ উপযোগিতার মাধ্যমে করতে পারব? এর রোড ম্যাপ কি হবে? আমরাএই কাজগুলি সম্মিলিতভাবে কিভাবে করতে পারি? যেমন আপনারা দুটো প্রয়োগের কথা উল্লেখকরেছেন, শৌচাগারের ক্ষেত্রে আপনাদের অবদান দেশকে নতুন পথ দেখিয়েছে এবং দেশেউল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। এভাবেই এক একেকটি জিনিসকে ধরে তাকে নিয়ে কিভাবে এগিয়েযাওয়া যেতে পারে?
আমার পঞ্চম প্রশ্ন – ২০২২ সাল পর্যন্ত ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিদেশকে উন্নয়নের কোন নতুন মডেল দেবে, যা আমাদের গতানুগতিক ব্যবস্থাকে পরিচালনা করারপাশাপাশি নতুন কিছু নিয়ে আসবে?
আমি এই প্রশ্নগুলির মাধ্যমে আপনাদেরকে যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলাম, কারণসিদ্ধান্ত আপনাদের নিতে হবে, নীতি রচনাও আপনারাই করবেন, রণনীতিও আপনারাই গড়েতুলবেন আর সেই রণনীতিকে আপনাদেরই বাস্তবায়িত করতে হবে। রাষ্ট্রনির্মাণের বড়লক্ষ্যকে সামনে রেখে আপনারা নিজের নিজের সংস্থার বোর্ড মিটিং-এ এই প্রশ্নগুলি নিয়েআলাপ-আলোচনা করুন। তবেই নতুন পথ বেরিয়ে আসবে।
বন্ধুগণ, নতুন বিশ্ব পরিস্থিতিতে ভারতের ‘জিও স্ট্র্যাটেজিক রিচ’ বৃদ্ধিরক্ষেত্রে আপনাদের অংশগ্রহণও বাড়াতে হবে। আজ এমন সুযোগ গড়ে উঠেছে যে, আপনারাওবিভিন্ন দেশে যেতে পারছেন, তাঁদের সঙ্গে পরিচিত হতে পারছেন, আগে এরকম সুযোগ হয়তোখুবই কম এসেছিল। এই সুযোগকে আপনারা হেলায় হারাবেন না। নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে ভালোভাবেপরিচিত হন আর ভাবুন কিভাবে আপনাদের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির প্রভাব অন্যান্য দেশেবৃদ্ধি করতে পারেন।
বিশ্বের ৫০০টি বড় কোম্পানির এক-চতুর্থাংশ কোনও না কোনও দেশের রাষ্ট্রায়ত্তসংস্থা। এই কোম্পানিগুলি নিজের নিজের দেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও বড় মাধ্যম, সেজন্যআপনাদের সংস্থার বিস্তার কিভাবে বৃদ্ধি করবেন, তা নিয়েও নিরন্তর ভাবনাচিন্তা করেযেতে হবে। যেমন বর্তমান সময়ে সরকারের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে – এইসুযোগে আপনারা অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধির কাজত্বরান্বিত করুন।
আজ ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি ব্রাজিল থেকে শুরু করে মোজাম্বিক,রাশিয়া থেকে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত নিজের জয়ধ্বজা উড়িয়েছে। কিন্তু এখনসময়ের চাহিদা হ’ল এই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির বিদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সংহতকৌশল নির্মাণ করে এগিয়ে যাওয়া। কৌশল গঠনের সময়ে আপনাদের নিজের নিজের কোম্পানির‘রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট’ যত বেশি করা যায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তবেই তাদেশের জিও স্ট্র্যাটেজিক রিচ-কে বাড়িয়ে দেবে। আমাদের সরকার বিভিন্ন দেশের বড় বড়শহরে অসংখ্য মউ স্বাক্ষর করেছে। অনেক সিস্টার সিটিতে কাজ হচ্ছে। আমাদেররাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি কি সেই নগরীগুলির শিল্প সংস্থাগুলির সঙ্গে পদ্ধতিগত এবংপরিকল্পিতভাবে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’কে প্রোমোট করতে পারে না?
আসলে কি হয়, একটি দেশের সঙ্গে অন্য দেশের বন্ধুত্ব হয়, সেই বন্ধুত্বকে অধিককার্যকরি করে তুলতে উভয় দেশের বিভিন্ন সংস্থা, উভয় দেশের সিস্টার নগরীগুলির মধ্যেপ্রযুক্তির লেনদেন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে বন্ধুত্বের বিষয়টি তাদের ওপরই ছেড়ে দেওয়াহয়। উভয় দেশের মধ্যে মউ স্বাক্ষরকে নেহাতই কূটনৈতিক প্রকৌশল কিংবা সৌজন্যেরপর্যায়ে ছেড়ে না দিয়ে নানারকম আদান-প্রদানের মাধ্যমে উভয়েই উপকৃত হতে পারেন। তেমনই,আমাদের সামনে একটা বড় চ্যালেঞ্জ হ’ল আমদানির খরচ কমানো। এরকম অনেক কিছু আমরাআমদানি করি যেগুলি আমাদের দেশে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারলে আমদানি খরচ কমে যাবে।কিছু ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার আমদানি খরচ হ্রাস করার ক্ষেত্রে সফল হয়েছে। কিন্তুএখনও অনেক কাজ বাকি। আপনারা এই সুযোগ গ্রহণ করুন, এটা কোনও বড় চ্যালেঞ্জ নয়, শুধুলেগে থাকতে হবে দেখবেন পরিবর্তন আসবেই।
আপনাদের পক্ষ থেকে একটা সময়সীমা ধার্য করে এমনভাবে কাজ করুন যাতে আগামী দু-তিন বছরে কোন কোন পণ্যের আমদানি ১০%,১৫%,২০%যতটা আপনাদের ঠিক মনে হয়, ততটা হ্রাস করাতে পারবেন!
আমরা যদি এমন পণ্যগুলিকে বেছে নিই, যেগুলির আমদানিতে বাধ্যতা রয়েছে, আরসেগুলির উতকর্ষ বৃদ্ধি সুনিশ্চিত করতে পারি, উৎকৃষ্ট পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধিরমাধ্যমে এর মূল্য হ্রাস করতে পারি, তাহলে আমদানি ব্যয়ও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাসপাবে।
বন্ধুগণ, আমি আপনাদের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের উদাহরণ দিতে চাই। বিগত ৬০-৭০বছরে ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় অস্ত্র আমদানিকারক দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। আমাদেরপূর্বরতী সরকারগুলির কি নীতি ছিল, তা নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না। তখন তো এটাও কেউভাবতে পারতেন না, ভারতের কোনও সরকার প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও প্রত্যক্ষ বিদেশিবিনিয়োগের পথ খুলে দিতে পারে।
আমি স্বীকার করি, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আমাদের যে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিরয়েছে, তাঁরা এই সুযোগ হাত ছাড়া করেননি। তাঁরা যতটা প্রযুক্তি হস্তান্তরে জোর দিয়েযৌথ উৎপাদনের পথে যাবে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ ততই শক্তিশালী হবে। আর দেশের প্রতিরক্ষাক্ষেত্রও তত বেশি আত্মনির্ভর হবে।
আজ ভারত ‘তেজস’-এর মতো যুদ্ধ বিমান উৎপাদন করছে, বিশ্ব মানের ডুবো জাহাজনির্মাণ করছে, যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণ করছে। আমরা প্রযুক্তিগতভাবে সক্ষম ও সমর্থ-ও।এবার অভ্যন্তরীণ প্রয়োজন মেটানোর পর আমাদের বিদেশি বাজারের ওপরও লক্ষ্য রাখতে হবে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হ’ল উদ্ভাবন ও গবেষণার ঐক্যসাধন। আমাদের কাউন্সিলঅফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেলরিসার্চ এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চের মতো বৈজ্ঞানিকসংস্থানগুলিতে দেশের সর্বোৎকৃষ্ট গবেষণা এবং উন্নয়নের পরিকাঠামো রয়েছে। কেন্দ্রীয়রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির কাছেও তেমনই নিজ নিজ ক্ষেত্রে গবেষণার আধুনিক পরিকাঠামোরয়েছে।
আপনারা নিজেদের প্রয়োজন অনুসারে অনেক প্রযুক্তি এবং গবেষণালব্ধ পণ্যওউৎপাদন করছেন। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, বিভিন্ন কোম্পানিরগবেষণাগারে যে আবিষ্কার হচ্ছে, তা সেখানেই সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিবদলে আপনারা কিভাবে ২০২২ সালের মধ্যে গবেষণা ও আবিষ্কারের একটি সংহত পরিকাঠামো গড়েতুলতে পারেন, সে বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করাও আজ সময়ের চাহিদা।
কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির সঙ্গে যখন সরকারি বিভাগগুলির তথ্যআদান-প্রদান বৃদ্ধি পাবে, নতুন নতুন গবেষণা ও উদ্ভাবনের তথ ্য পরস্পরকে জানানো হবে, তখন গবেষণার খরচ হ্রাস পাবে, ব্যবস্থাগুলিও আরওদক্ষ হয়ে উঠবে। এই আদান-প্রদান শুধু পরিকাঠামোই নয়, পরস্পরের দক্ষতা ব্যবহার এবংউন্নত যন্ত্রপাতির ব ্যবহার ও প্রযুক্তির আদান-প্রদানেও উন্নীত হতে পারে।
বন্ধুগণ, বিগতকয়েক বছরে সরকারি ক্ষেত্রের ব্যালেন্সশিট অনেক উজ্জ্বল। গত বছর কেন্দ্রীয়রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির নীট লাভ ১.২৫ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। এর ২ শতাংশ অর্থাৎ প্রায়২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি বাবদ খরচ করা যেতে পারে।
এই টাকা দেশেরঅগ্রাধিকারের কথা মাথায় রেখে কিভাবে খরচ করা যেতে পারে, সে ব্যাপারে ভাবা যেতেপারে। ২০১৪-১৫ সালে আপনারা বিদ্যালয়গুলিতে শৌচালয় নির্মাণের জন্য যে টাকা সিএসআরফান্ড থেকে দান করেছিলেন, তার পরিণাম আজ সকলের সামনে, আপনাদের প্রেজেন্টেশনে তুলেধরেছেন। আমার পরামর্শ হ’ল – ২০১৪ সালে যেভাবে আপনারা স্কুলে শৌচালয় নির্মাণকে বেছেনিয়েছিলেন, তেমনই প্রতি বছর একটি করে থিম ভেবে নিয়ে সিএসআর-এর একটা বড় অংশ শুধুসেক্ষেত্রে উন্নয়নের কাজে বিনিয়োগ করা হোক।
আপনারা হয়তোজানেন যে, নিতি আয়োগ দেশের ১১৫টি জেলাকে পিছিয়ে পড়া বলে চিহ্নিত করেছে। আমি সেইজেলাগুলিকে উন্নয়ন অভিলাষী জেলা হিসাবে আখ্যা দিয়েছি। আপনারাকি এই জেলাগুলির উন্নয়নকে আপনাদের এ বছরের থিম হিসাবে বেছে নিতে পারেন?
আপনাদের সংস্থা কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি পালনে দরিদ্রযুবসম্প্রদায়ের দক্ষতা উন্নয়নের কাজও হাতে নিতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ এবংআইটিআইগুলিকে আপনাদের সংস্থার সঙ্গে যুক্ত করে দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় অভিযানশুরু করতে পারেন।
তাছাড়া, ন্যাশনাল অ্যাপ্রেন্টিসশিপ স্কিমকে আপনারা যত সমর্থন করবেন, দেশেরনবীন প্রজন্ম ততই লাভবান হবেন। আমি চাই যে, আপনারা ফিরে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারেরপ্রকল্পগুলি নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নিজের মতো করে টিম গড়ে তুলুন এবং সেগুলিবাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে কিছু পদক্ষেপ নিন। আমি নিশ্চিত যে, আপনাদের এই উদ্যোগেসাড়া দিয়ে নবীন প্রজন্মের মানুষেরা দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে আপনাদের কাছে কাজ শিখতেআসবেন। ভবিষ্যতে এরা আপনাদের ট্যালেন্ট পুল হইয়ে উঠবে।
এজন্য আপনাদের অনেক বেশি ইনকিউবেটার এবং টিঙ্কারিং ল্যাব গড়ে তুলতে হবে।যাতে আমরা কম বয়সী ছাত্রছাত্রীদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার কাছে পৌঁছতে পারি এবংসেগুলিকে কাজে লাগাতে পারি। নবীন প্রজন্মের শক্তিকে কাজে লাগানোর প্রয়োজন রয়েছে,অনেক সময়ে তাঁরা এমন সমাধান দিতে পারেন, যা প্রচলিত ব্যবস্থা দিতে পারে না।
বন্ধুগণ, আপনাদের অভিজ্ঞ এবং সমৃদ্ধ সংস্থাগুলি দেশের উন্নয়নের নতুন মডেলগড়ে তুলতে পারে। দেশের দূরদূরান্তের এলাকাগুলিতে আপনাদের সংস্থার অবদান এমনপ্রাণশক্তি সঞ্চার করতে পারে, যা চারপাশের অনেকটা এলাকাকে আলোকিত করতে পারবে।
আপনারা সবাই চাইলে আগামী দেড় বছরে দেশ কয়েকশো নতুন মডেল স্মার্টসিটি পেতেপারে।
কাগজ বিহীন কর্মসংস্কৃতি, নগদ বিহীন লেনদেন আর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতোঅনেক বিষয়ে আপনাদের মতো সংস্থাগুলি রোল মডেলের মতো কাজ করতে পারে।
আমার অনুরোধ আপনারা সমস্ত রকম গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে দক্ষতাকেঅগ্রাধিকার দিয়ে কর্পোরেট গভর্ন্যান্সে জোর দিয়ে নিজস্ব সামর্থ্যের সঠিক ব্যবহারকরলে দেশ ও সমাজ উপকৃত হবে।
বন্ধুগণ, নিজের সামর্থ্যকে বিশ্বাস করা ছাড়া কেউ এগিয়ে যেতে পারেন না। কোনওসংস্থা বা দেশের পক্ষেও তা সম্ভব নয়। ভারতে উপদান ও সামর্থ্যের অভাব নেই। আমাদেরইচ্ছে শক্তি ও নিজেদের ওপর ভরসা আছে। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করলে দেশকে অবশ্যইনতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারব।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, আপনারা যে উদ্যোগগুলি নিয়েছেন, সেগুলি ভবিষ্যতেও চালুরাখবেন আর এবারে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যে নতুন নতুন ভাবনার জন্ম নেবে, সেগুলিকেশুধুই বাস্তবায়িত করবেন না, তার যথাযথ তদারকির ব্যবস্থাও থাকবে। তবেই প্রাণশক্তি,অভিজ্ঞতা, উদ্যোগ ও উৎসাহের সঙ্গমে অভূতপূর্ব ফল পাওয়া যাবে। আমার কাছে পিএসইউমানে প্রগতি-সেবা-শক্তি। তার কেন্দ্রে রয়েছে ‘এস’। এর মানে সেবা। নতুন ভারতেরস্বপ্ন নিয়ে নতুন প্রাণশক্তি এবং সেবাভাব নিয়ে আপনাদের কাজ দেশের উন্নয়নকেত্বরান্বিত করবে বলে আমার বিশ্বাস।
আপনাদের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নীতি ও সিদ্ধান্ত সফল হোক, নতুন ভারতের সংকল্পকেসিদ্ধ করার পথে আপনাদের যথাসম্ভব অবদান থাকুক – এই ইচ্ছা প্রকাশ করে নিজের কথাসম্পূর্ণ করার আগে আমি অনুরোধ করব যে আমরা সবাই ১০০ দিন পর আরেকবার এক সঙ্গে বসতেপারি কি? ১০০ দিন পর আজকে যা বলা হয়েছে, যা শুনেছি আর যা দেখিয়েছেন – সেগুলিবাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কে করবে, কিভাবে করবে এবং কবে সম্পূর্ণ হবে – তারসময়নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে কিভাবে আপনারা এগোচ্ছেন, সে সম্পর্কে ১০০ দিন পরআমাকে যদি অবগত করেন, তা হলে খুব খুশি হব। আমি আপনাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতেচাই। আপনাদের মধ্যে যদি একটু বেশি সময় কাটাই, তা হলে যা কিছু শিখব তা আমি সরকারপরিচালনার ক্ষেত্রেও কাজে লাগাব। আশা করি আজ থেকে ১০০ দিন পর আজ যা যা বলা হ’ল তাররোড ম্যাপ নিয়ে দায়িত্ব অর্পণ করে এই সুন্দর আবহকে, এই অসংখ্য মানুষের উৎসাহকেকাজে লাগিয়ে আমরা নিশ্চিত পরিণামের দিকে এগিয়ে যাব। আপনারা কর্পোরেট দুনিয়ায়রয়েছেন। আপনাদের আমি নতুন করে কিছু শেখাতে চাই না। আপনাদের মধ্যে অনেকেই অনেক টাকাফি দিয়ে ম্যানেজমেন্ট পড়ে এসেছেন। আমি অবশ্য এ সম্পর্কে কিছু জানি না। এতপুঙ্খানুপুঙ্খ জানার আমার প্রয়োজনও নেই। কিন্তু আজকের আলাপ-আলোচনা থেকে আপনারাকতটা লাভবান হলেন এবং তা থেকে দেশের কতটা লাভ হবে, তা নিয়ে আমার উৎসাহ রয়েছে।আজকের প্রেজেন্টেশন বিষয়-নির্দিষ্ট ছিল। তার সঙ্গে আমি চাই রোড ম্যাপ, লক্ষ্য এবংসেই লক্ষ্য যেন পরিমাপযোগ্য হয়। তা হলেই দেখবেন পরিবর্তন ত্বরান্বিত হবে।
আপনাদের সকলকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।