রোয়া টোটকা ও যোগ – আয়ুর্বেদ করোনা মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে : প্রধানমন্ত্রী
ভারতের আরোগ্য লাভের ধারণা নিছক রোগ নিরাময়ের থেকেও বেশি : প্রধানমন্ত্রী
যে ভাষায় মানুষ বুঝতে পারে বিশ্বের কাছে সেভাবে যোগ এবং আয়ুর্বেদকে উপস্থাপিত করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী ভারতকে আধ্যাত্মিকতা ও রোগ নিরাময়ের পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করার আহ্বান জানিয়েছেন

নমস্কার,

 

শ্রী রাম চন্দ্র মিশনের ৭৫ বছর সম্পূর্ণ হওয়ায় আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা, অনেক অনেক শুভকামনা। দেশ নির্মাণে সমাজকে শক্তিশালী করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ৭৫ বছরের এই সময়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লক্ষ্যের প্রতি আপনাদের সমর্পণেরই পরিণাম হল আজ এই যাত্রা ১৫০টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বসন্ত পঞ্চমীর এই পবিত্র পার্বনে আজ আমরা গুরু রাম চন্দ্রজির জন্ম জয়ন্তী উৎসব পালন করছি। আপনাদের সবাইকে শুভেচ্ছার পাশাপাশি আমি বাবুজিকে সাদর শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করছি। আমি আপনাদের অদ্ভূত যাত্রার পাশাপাশি আপনাদের নতুন প্রধান কার্যালয় কানহা শান্তিবনমের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। আমাকে বলা হয়েছে, যেখানে কানহা শান্তিবনম গড়ে উঠেছে, সেখানে আগে একটি নিষ্ফলা ঊষর জমি ছিল। আপনাদের উদ্যম এবং সমর্পণের মাধ্যমে এই ঊষর জমিকে কানহা শান্তিবনমে পরিবর্তিত করে দিয়েছেন। এই শান্তিবনম বাবুজির শিক্ষার জলজ্যান্ত উদাহরণ।

 

বন্ধুগণ,

 

আপনারা সবাই বাবুজির প্রেরণাকে নিবিড়ভাবে অনুভব করেছেন। জীবনকে সার্থক করে তোলার ক্ষেত্রে তাঁর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা, মনে শান্তি অর্জনের জন্য তাঁর প্রচেষ্টা আমাদের সকলের জন্য অনেক বড় প্রেরণা। আজকের এই ২০২০-র দ্রুতগামী বিশ্বে গতির ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়। মানুষের হাতে সময় কম। এক্ষেত্রে সহজ পথে আপনাদেরকে স্বতঃস্ফূর্ত এবং আধ্যাত্মিক রূপে সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে অনেক বড় অবদান রাখছেন। আপনাদের হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক এবং প্রশিক্ষকরা গোটা বিশ্বকে যোগ এবং ধ্যানের কৌশলগুলির সঙ্গে পরিচিত করাচ্ছেন। এটি মানবতার অনেক বড় সেবা। আপনাদের প্রশিক্ষক এবং স্বেচ্ছাসেবকরা বিদ্যার প্রকৃত অর্থকে সাকার করে তুলেছেন। আমাদের কমলেশজি তো ধ্যান এবং আধ্যাত্মের বিশ্বে 'দা-জি’ নামে বিখ্যাত। আমি ভাই কমলেশজি সম্পর্কে একথা বলতে পারি যে তিনি পশ্চিম এবং ভারতের যা কিছু ভালো সেগুলির সঙ্গমসাধন করেছেন। আপনার আধ্যাত্মিক নেতৃত্বে শ্রী রাম চন্দ্র মিশন গোটা বিশ্বে, বিশেষ করে যুব সম্প্রদায়কে সুস্থ শরীর এবং সতেজ মনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রেরণা জোগাচ্ছে। 

বন্ধুগণ,

 

আজ বিশ্ব দৌড়-ধাপের জীবনশৈলী থেকে জন্ম নেওয়া নানা অসুখ-বিসুখ, অবসাদ ও মহামারীর মতো আতঙ্কের ফলে বিভিন্ন সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এহেন পরিস্থিতিতে 'সহজ মার্গ', 'হার্টফুলনেস' কর্মসূচি আর যোগ, বিশ্বের জন্য আশার কিরণের মতো। সম্প্রতি সাধারণ মানুষের জীবনে ছোট ছোট সতর্কতা মেনে চললে কিভাবে বড় সঙ্কট থেকে রক্ষা পাওয়া যায় তার উদাহরণ গোটা বিশ্ব দেখেছে। আমরা সবাই এই পরিণামের সাক্ষী। কিভাবে ১৩০ কোটি ভারতবাসীর সতর্কতা করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গোটা বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এই লড়াইয়ে আমাদের বাড়িতে শেখানো বিষয়গুলি, আমাদের জীবনশৈলী, স্বভাব এবং যোগ-আয়ুর্বেদ অনেক বড় ভূমিকা পালন করেছে। এই মহামারীর গোড়ার দিকে ভারতের পরিস্থিতি কত ভয়ানক হতে পারে, তা নিয়ে গোটা বিশ্ব চিন্তিত ছিল। কিন্তু আজ করোনার বিরুদ্ধে ভারতের লড়াই গোটা বিশ্বকে প্রেরণা জোগাচ্ছে।

 

বন্ধুগণ,

 

ভারত বিশ্বের মঙ্গলকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি মানবকেন্দ্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করছে। এই মানবকেন্দ্রিক পদ্ধতির স্বাস্থ্যকর ভারসাম্য – ‘ওয়েলফেয়ার ওয়েল-বিইং ওয়েলথ'-এর ভারসাম্য। গত ছয় বছরে ভারত বিশ্বের বৃহত্তম জনকল্যাণমূলক কর্মসূচিগুলি সম্পাদন করেছে। এই প্রচেষ্টা গরীবদের আত্মসম্মান রক্ষা করা এবং তাঁদের জীবনে সুযোগ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কার্যকর হয়েছে। সার্বজনীন স্যানিটেশন কভারেজ থেকে শুরু করে আরও নানা সমাজকল্যাণ প্রকল্প যেমন ধোঁয়াহীন রান্নাঘর থেকে শুরু করে ব্যাঙ্কে না গিয়ে ব্যাঙ্কিং পর্যন্ত, প্রযুক্তির ব্যবহার থেকে শুরু করে সকলের জন্য আবাসন পর্যন্ত। ভারতের এই জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলি দেশের অধিকাংশ মানুষের জীবন স্পর্শ করেছে। বিশ্বব্যাপী মহামারী আসার আগেও আমাদের দেশ সুস্থতার দিকে মনোযোগ বাড়িয়েছিল।

 

বন্ধুগণ,

 

আমাদের সুস্থতার ধারণা শুধুই একটি রোগ নিরাময়ের ঊর্ধ্বে। প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য পরিষেবা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যাপক কাজ হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ফ্ল্যাগশিপ স্বাস্থ্য সেবা প্রকল্প – আয়ুষ্মান ভারত আমেরিকা এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলির মোট জনসংখ্যার থেকে বেশি মানুষকে সুবিধাপ্রদান করেছে। এটি বিশ্বের বৃহত্তম স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রকল্প। এর মাধ্যমে ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের দাম কমিয়ে আনা হয়েছে। যোগের জনপ্রিয়তা সম্পর্কে আপনারা সকলেই অবহিত। আমাদের জনগণ, বিশেষ করে যুব সমাজের সুস্থতার জন্য এর গুরুত্ব অপরিসীম। সুস্থ থাকলে তাঁদের জীবনে অন্যান্য রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে না। কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশ্বের প্রয়োজনে ভারত অনেক দেশে ওষুধ পাঠিয়েছে। সেজন্য আমরা গর্বিত। এখন সারা পৃথিবীতে টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারত কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করছে। সুস্থতার ক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি যতটা আন্তর্জাতিক, ততটাই দেশীয়।

 

বন্ধুগণ,

 

কোভিড-১৯-উত্তর বিশ্ব স্বাস্থ্য ও সুস্থতার দিকে বিশেষভাবে জোর দিচ্ছে। এক্ষেত্রে ভারতের অনেক কিছু দেওয়ার আছে। আসুন, আমরা ভারতকে আধ্যাত্মিক ও সুস্বাস্থ্যের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করি। আমাদের যোগ ব্যায়াম এবং আয়ুর্বেদ পৃথিবীকে একটি সুস্থ মানবজাতির গ্রহে পরিণত করার ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে। এগুলিকে আমরা যে ভাষায় বুঝি তাকে বিশ্বের কাছে বোধগম্য করে তোলার মতো ভাষায় রূপান্তরণ আমাদের লক্ষ্য। এই পদ্ধতিগুলির মাধ্যমে যেসব সুবিধা মানুষ পেতে পারে, তা বৈজ্ঞানিকভাবে বিশ্লেষণ করে বোঝাতে হবে এবং বিশ্বকে ভারতে আসার এবং পুনর্জীবনের পথ বেছে নেওয়ার আমন্ত্রণ জানাতে হবে। আপনাদের নিজস্ব 'হার্টফুলনেস মেডিটেশন' অনুশীলন সেই পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

 

বন্ধুগণ,

 

করোনা-উত্তর বিশ্বে এখন যোগ এবং ধ্যান নিয়ে গোটা বিশ্বে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শ্রীমদ্ভাগবদ্‌ গীতায় লেখা আছে -

 

“সিদ্ধ্য সিদ্ধ্যোঃ সমো ভূত্বা সমত্বং যোগ উচ্চতে”

 

অর্থাৎ, সিদ্ধি এবং অসিদ্ধিতে সমভাব নিয়ে যোগে রমনের মাধ্যমে কেবল কাজ করে যাও। এই সমভাবকেই যোগ বলা হয়। আজ বিশ্বে যোগের পাশাপাশি ধ্যানেরও অনেক বেশি প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। বিশ্বের অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান দাবি করছে যে অবসাদ মানবজীবনে অনেক বড় সমস্যা হয়ে উঠছে। এক্ষেত্রে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আপনারা আপনাদের এই 'হার্টফুলনেস' কর্মসূচির মাধ্যমে যোগ এবং ধ্যান প্রক্রিয়ায় এই সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে মানবতার সেবা করবেন।

 

বন্ধুগণ,

 

আমাদের বেদ-এ বলা হয়েছে -

 

“যথা দয়োশ্‌ চ, পৃথিবী চ, ল বিভীতো, ল রিষ্যতঃ।

এভা মে প্রাণ মা বিভেঃ।।”

 

অর্থাৎ, যেভাবে আকাশ এবং পৃথিবী কখনও ভীত হয় না, এদের বিনাশ হয় না, তেমনই আমার প্রাণ! তুমিও ভয়মুক্ত থাক। যে স্বতন্ত্র, সেই ভয়মুক্ত থাকতে পারে। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, সহজ মার্গে এগিয়ে চলার পথে আপনারা মানুষকে শারীরিক এবং মানসিক রূপে ভয়মুক্ত করে যাবেন। নানা রোগ থেকে মুক্ত জনগণ, মানসিকরূপে শক্তিশালী মানুষ ভারতকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এ বছর আমরা আমাদের স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষে পা রাখতে চলেছি। আপনাদের প্রচেষ্টা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, এই আশা রেখে আরেকবার আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভকামনা।

 

ধন্যবাদ!

 

 

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
In young children, mother tongue is the key to learning

Media Coverage

In young children, mother tongue is the key to learning
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 11 ডিসেম্বর 2024
December 11, 2024

PM Modi's Leadership Legacy of Strategic Achievements and Progress