আমার মন্ত্রী পরিষদের সমস্ত সদস্য, ভারতের শিল্প জীবনকে গতি প্রদানকারী, তথ্যপ্রযুক্তি পেশাকে শক্তিশালী করে তোলা সমস্ত অভিজ্ঞ সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত আমাদের নবীন প্রজন্ম, গ্রামের কমন সার্ভিস সেন্টারগুলিতে অনেক আশা, অনেক স্বপ্ন সাজিয়ে বসে থাকা আমাদের স্কুল-কলেজ ও আইআইটি সহ অনেক প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী, আমার জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয় হল আমার সবচেয়ে প্রিয় কাজটি করার জন্য আজ আপনাদের মাঝে আসার সুযোগ পেয়েছি।
আমাদের মাননীয় রবিশঙ্করজি সরকারের কাজের বর্ণনা দিচ্ছিলেন। কিন্তু আমি সেজন্য আপনাদের মাঝে আসিনি। যে কোন ব্যক্তি নিজের জীবনে যতই সাফল্য পেয়ে থাকুন না কেন, যতই ঐশ্বর্য ও পদ-প্রতিষ্ঠা অর্জন করুন না কেন, জীবনে যে সব স্বপ্ন দেখেছেন তা একে একে বাস্তবায়িত হওয়ার পরও তাঁর মনে সন্তুষ্টির জন্য একটা আকুতি থাকে। আমি অনুভব করেছি, অনেক কিছু পাওয়ার পরও কেউ যদি আরও কিছু করে, তাহলে তাঁর তৃপ্তির মাত্রা গুণিতক হারে বৃদ্ধি পায়।
একটু আগেই এখানে প্রদর্শিত তথ্যচিত্রে আজিমজি প্রেমজির কথা শুনছিলাম। ২০০৩-০৪-এ যখন আমি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম ব্যবসায়িক কারণে তিনি আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। কিন্তু তারপর আমি দেখেছি বিগত ১০-১৫ বছরে যতবারই তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছে, তিনি নিজের সম্পর্কে, কোম্পানি সম্পর্কে এবং কর্পোরেট কাজের কোন বিষয় নিয়ে আমার সঙ্গে কোন আলোচনা করেননি। তিনি আমার সঙ্গে শুধু নিজের লক্ষ্য নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি যে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে চলেছেন, তা হল শিক্ষার প্রচার ও প্রসার! আর এতটাই বুঁদ হয়ে তিনি তাঁর লক্ষ্য নিয়ে কাজ করেন যা হয়তো তাঁর নিজের কোম্পানির জন্যও করেন না। এ থেকে আমার ভাবনা আরও পোক্ত হয়, তিনি সারা জীবন পরিশ্রম করে যে এত বড় কোম্পানি গড়ে তুলেছেন সেই সাফল্য থেকে তিনি যে আনন্দ পেয়েছেন, এই বয়সে তার থেকেও অনেক বেশি আনন্দ তিনি পান নিজের লক্ষ্য পূরণের জন্য কাজ করে! তার মানে হল এই যে, ব্যক্তি নিজের জীবনে পেশাগত কাজের মাধ্যমে সমাজের সেবা অবশ্যই করেন। যেমন একজন চিকিৎসক মানুষের চিকিৎসা করেন। একজন বিজ্ঞানী গবেষণাগারে নিজের জীবন উৎসর্গ করে এমন আবিষ্কার করেন যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মানুষের জীবন বদলে দেয়। কিন্তু এই পেশাগত কাজের বাইরেও আমরা যদি এমন কিছু করতে পারি যা নিজের নামের জন্য আমরা করছি না, সমাজের জন্য করছি এবং চোখের সামনে তার সুফল দেখতে পাচ্ছি, সেটার আনন্দই আলাদা। সেই আনন্দই পরবর্তী সময়ে সেই ব্যক্তির বেঁচে থাকার মূল প্রেরণাশক্তি হয়ে ওঠে। আপনারা নিজের জীবনে এই প্রয়োগ করে দেখবেন ‘স্বান্তঃ সুখায়’। অনেকে বলেন এই আনন্দ এমনই যা ভেতর থেকে আমাদের প্রাণশক্তি যোগায়।
আমরা রামায়ণের গল্পে শুনেছি কাঠবিড়ালি রামসেতু নির্মাণে রামকে সাহায্য করেছিল। কাঠবিড়ালি যেমন নিজস্ব প্রেরণা থেকে এই পবিত্র কর্মে যুক্ত হয়েছিল, শ্রীরামচন্দ্রকেও তেমনই সাফল্য পেতে কাঠবিড়ালির প্রয়োজন হয়েছিল। সরকার যতই উদ্যোগ নিক, যতই বাজেট বরাদ্দ করুক, যতক্ষণ পর্যন্ত না কোন কাজে গণ-অংশীদারিত্ব থাকবে না, সাফল্যও সেই মাত্রায় আসবে না। কারোর জন্য ভারত অপেক্ষায় থাকতে পারে না। বিশ্ববাসীও এখন ভারতকে অপেক্ষমান অবস্থায় দেখতে চায় না। বিশ্ববাসী আমাদের যেভাবে দেখতে চায়, সেভাবে নিজেদের তৈরি করতে হলে আমাদের দেখতে হবে কিভাবে আমাদের কাজের মাধ্যমে ভারতের সাধারণ মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনা যাবে। আমাদের দক্ষতা, সামর্থ্য, শক্তি, অভিজ্ঞতা – এই সবকিছুর সম্মিলিত প্রয়োগে আমরা কী না করতে পারি? মনে করুন, এমন কোন লঙ্গরখানায় আপনি গেলেন যেখানে যে কোন গরিব মানুষ গেলে তাঁকে খাবার দেওয়া হয়। যাঁরা খাবার দেন তাঁরা অত্যন্ত নিষ্ঠা সহকারে দেন। যাঁরা খেতে যান, তাঁরা জানেন যে গেলেই খাবার পাবেন। এটা একটা প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা। এরকম কিছুদিন চলতে থাকার পর, যাঁরা খেতে যান তাঁরা আর এটা লক্ষ্য করেন না যে কারা খাবার পরিবেশন করছে। আর যাঁরা পরিবেশন করেন তাঁরাও আলাদা করে দেখেন না যে কাদের পরিবেশন করছেন। কিন্তু একজন গরিব আরেকজন গরিব পরিবারের দরজায় ক্ষুধার্ত অবস্থায় গিয়ে যখন দাঁড়ান তখন সেই গরিব গৃহস্থের তাঁকে অর্ধেক রুটি ছিড়ে খেতে দেওয়ার ঘটনা তাঁদের দু’জনেরই সারা জীবন মনে থাকে। যে কোন প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার জায়গায় ব্যক্তি বা গোষ্ঠী নিজের প্রেরণায় কোন কিছু করলে তা অনেক বড় পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়। এটা আমরা সবাই দেখেছি। আপনি বিমানে যাচ্ছেন। পাশের আসনে একজন বয়স্ক মানুষ বসে আছেন। তিনি জল খাবেন কিন্তু বোতলের ছিপি খুলতে পারছেন না। আপনি তাঁর বোতলের ছিপি খুলে তাঁকে জল খেতে সাহায্য করলেন। এতে আপনি যে তৃপ্তি পাবেন তা বলে বোঝানো যাবে না! অর্থাৎ, কারও জন্যে বেঁচে থাকার আনন্দই আলাদা হয়।
আমি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর একটি পরম্পরা গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি, যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম তখনও চেষ্টা করেছি। আমি যখনই কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যাই, আমাকে সেই অনুষ্ঠানের জন্য যারা আমন্ত্রণ জানাতে আসেন, তাদেরকে বলি যে আমার সঙ্গে ১০ জন বিশেষ অতিথি থাকবে এবং তাদেরকে সামনের সারিতে বসাতে হবে। সমাবর্তনের দিন আমি ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী দরিদ্র বস্তি অঞ্চলের কোন সরকারি স্কুল থেকে অষ্টম, নবম, দশম শ্রেণীতে পাঠরত ৫০ জন ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে যাই। সমাবর্তনের সময় কৃতি ছাত্রছাত্রীরা যখন বিশেষ আলখাল্লা ও টুপি পরে আচার্য কিংবা উপাচার্যের হাত থেকে ডিগ্রি গ্রহণ করেন, আমার বিশেষ অতিথিরা তখন বড় বড় চোখ করে সেই দৃশ্য দেখে। এ থেকে তারাও একদিন মঞ্চে উঠে সম্মান গ্রহণ করার প্রেরণা পায়। আমি তাদের মনে সেই ইচ্ছার বীজটাই বপন করতে চাই। সারা বছর শ্রেণীকক্ষে বসে পড়াশোনা করে তারা যতটা শিক্ষালাভ করে, আমার মনে হয় এই একটি ঘটনা তাদেরকে সেই তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে দিতে সাহায্য করে। আমাদের আনন্দজি এখানে বসে আছেন, তাঁর সঙ্গেও আমার গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সময় থেকে পরিচয়। কিন্তু তখন থেকেই একটা জিনিস লক্ষ্য করেছি যে, নিজের স্বার্থে তিনি কখনও আমার সঙ্গে একটা কথাও বলেন নি। যা কথা হয়েছে সবই গুজরাটের উন্নয়ন নিয়ে কিংবা রাজ্যের জন্যে বিনিয়োগ আনার বিষয় নিয়ে! তিনি সবসময়ই বলতেন, সাহেব, সামাজিক কাজের মাধ্যমে কত কিছুই না করা যায়! এই যে দৃষ্টিভঙ্গী, এই মেজাজই সমাজ ও দেশের অনেক বড় শক্তি হয়ে ওঠে। আজ এখানে এই কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমার তেমনই আনন্দ হচ্ছে। আমি সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত মানুষ। সেজন্য আমাকে যে তথ্য পরিবেশন করা হয়, আমি শুধুই সেসব তথ্যের শিকার হয়ে উঠি না। আমার যে সব তথ্য প্রয়োজন তা আমি নিজের মতো খুঁজে নিই। সেজন্য আমি প্রায়ই নতুন নতুন তথ্য খুঁজে পাই। আর প্রযুক্তির মঞ্চই আমাকে এই পরিষেবা দেয়। সেখানেও আমি দেখেছি, অনেক নবীন ছেলে-মেয়ে এত কাজ করে, তিন-চারজনের দল বানিয়ে শনি-রবিবার করে কোন প্রত্যন্ত গ্রামে চলে যায়, কিংবা শহরের বস্তিতে গিয়ে কাজ করে। সাধারণ মানুষের মধ্যে তাদের মতো করে থাকে, ছেলে-মেয়েদের পড়ায়। অর্থাৎ, বর্তমান ভারতের বিশেষ করে, ২৫ থেকে ৪০ বছর বয়সী যুবক-যুবতীদের যে প্রজন্ম তাঁদের মধ্যে এমন একটা সেবাপরায়ণতা আমি দেখেছি, সাধারণ মানুষের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার এই প্রবণতা একটি বিশেষ শক্তিতে পরিণত হয়ে উঠতে দেখেছি। সেই শক্তিকে আমদের কোন না কোন আন্দোলনের সঙ্গে জুড়ে দিতে হবে। সুগঠিত কোন ব্যবস্থার প্রয়োজন নেই। এমন কোন নমনীয় মঞ্চের সঙ্গে জুড়তে হবে যেখানে সকলেই নিজের ইচ্ছায় কাজ করে, কিন্তু যাই করুক না কেন, কোথাও না কোথাও পরিণাম সঞ্চিত হয় আর পরিবর্তন চোখে পড়তে শুরু করে। এরাই ভারতের ভাগ্য পরিবর্তন করে দিতে পারে। আপনাদের হাতে যে প্রযুক্তি রয়েছে তাতেই ভারতের ভাগ্য সুপ্ত রয়েছে। এই দুটোকে কি করে মেলানো যায়! মনে করুন একজন মালি খোলা মাঠে এমনি বীজ ফেলে দিল। যদি আবহাওয়া ঠিক থাকে, তাহলে এথেকে গাছ হবে। তাতে ফুলও ফুটবে। কিন্তু সেই মালিই যদি সেই মাঠে নির্দিষ্ট রঙের, নির্দিষ্ট আকারের ফুলের গাছগুলিকে সুন্দর করে সাজিয়ে লাগায় তাহলে ফুল ফোটার পর যে দৃশ্য তৈরি হবে, তা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসবে। তখন সেই বাগান প্রত্যেকের প্রেরণার উৎস হয়ে উঠবে। তেমনই আমাদের যে অসন্নিবিষ্ট সেবাশক্তি রয়েছে, তাকে সংহত রূপ দিতে পারলে সুফল অবশ্যই পাওয়া যাবে। আজকাল সোশ্যাল স্টার্ট-আপ-এর যুগ শুরু হয়েছে। আমি সেদিন কোন সোশ্যাল সাইটে ব্যাঙ্গালোরের এক তথ্যপ্রযুক্তি পেশাদার সম্পর্কে জানলাম যিনি নিজের কাজের পর গাড়ি চালিয়ে গরিব মানুষদের হাসপাতালে নিয়ে যান। এটা করে তিনি খুব আনন্দ পান।
আমি এরকম অটো-রিক্সাওয়ালাকে দেখেছি যিনি অটোর পিছনে লিখে রেখেছেন যে গরিবদের বিনামূল্যে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আমার দেশের গরিব অটো-রিক্সাওয়ালার কত বড় সিংহ হৃদয় দেখুন। মনে করুন একদিন তাঁর ভাগ্যে ছ’জনকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হলে সেদিন তাঁর নিজের বাড়ির লোকেদের না খেয়ে থাকতে হবে। তবুও এরকম ঘোষণা করতে তাঁর বুক কাঁপে না। মানুষের স্বভাবজাত এই যে গুণ, অপরের জন্য কিছু করার যে ইচ্ছা, সেটাই হল ‘ম্যাঁয় নেহি হম’। তার মানে এই নয় যে ‘আমি’ বলে কিছু থাকবে না। আমরা ‘আমি’কে প্রসারিত করতে চাই। ‘স্ব’ থেকে ‘সমষ্টি’র দিকে যাত্রা করতে চাই। ব্যক্তি কখন অন্যের দিকে নিজের হাত বাড়াবে, প্রত্যেকেই বৃহৎ পরিবারের আনন্দ পেতে চায়। এই বৃহৎ পরিবার থেকেও বড় পরিবার আমার গোটা সমাজ, গোটা দেশ – তখনই একটি মহাশক্তিতে পরিণত হয়। এই মনোভাব নিয়ে, এই সেবাভাব নিয়ে ‘আইটি টু সোসাইটি’র এই যাত্রা। সে আপনি ‘আইটি টু সোসাইটি’ বলুন বা ‘আইআইটি টু সোসাইটি’ই বলুন। আমাদের এই মনোভাব নিয়ে এগোতে হবে। আমি আপনাদের কথা শুনতে চাই। চলুন, একে একে আপনাদের কথা শুনি!
আমাদের দেশের সাধারণ চিত্র এটাই – বড়লোকদের, ব্যবসায়ীদের, শিল্পপতিদের সমালোচনা করা এখন ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই প্রবণতা দেখে আমি খুবই বিরক্ত। আমি এর ঘোর বিরোধী। দেশকে গড়ে তুলতে প্রত্যেকের অবদান রয়েছে। আজ এই অনুষ্ঠান থেকে বোঝা যাবে এই সমস্ত সংস্থাগুলি নিজেদের কর্পোরেট ক্ষেত্রের দায়িত্ব হিসেবে নিজেদের মেধাবী কর্মচারীদের বলছে যে চল পাঁচদিন জনসেবার জন্য যেতে হবে। কোম্পানির সমস্ত ব্যবস্থা তোমাদের সঙ্গে রয়েছে। তোমাদের চাকরিও জারি থাকবে। এটা কম কথা নয়। এটাও জারি থাকবে। সাধারণ মানুষের জীবনে এই সেবা অনেক বড় অবদান রাখতে পারে। আর আজ যখন আমরা সবাই একটি মঞ্চে এসেছি, তখন সবার চোখ খুলে গেছে। আচ্ছা, তার মানে দেশের প্রত্যেক প্রান্তে আমার দেশের মানুষ স্বেচ্ছায় এ ধরণের কাজ করছে। এই সমষ্টি মনোভাবের শক্তি অনেক বড় হয়। এই প্রেরণার মূলে রয়েছে ‘আমরা’। সেখানেও এই ‘স্ব’ আর ‘সেবা’র যে দৃষ্টিকোণ রয়েছে তা অনেক বড় অবদান রাখবে। আর আপনারা যোগাযোগ দুনিয়ার মানুষ, প্রযুক্তি বিশ্বের মানুষ। আপনাদের পক্ষে এ কাজ করা অন্যদের তুলনায় অনেক সহজ। এর প্রভাব, প্রচার ও প্রসার অনেক বেশি হতে পারে, অনেক সুলভে হতে পারে। আমরা যত বেশি এ কাজে এগিয়ে যাব, তত বেশি প্রেরণার কারণ হয়ে উঠব। আলাদা আলাদা করে ফুল পাওয়ার আনন্দ একরকম আর, ফুলের তোড়া পাওয়ার আনন্দ অন্যরকম। আমি মনে করি, আজ এই মঞ্চে ফুলের তোড়া গড়ে তোলার কাজ হয়েছে। আপনাদের এই প্রচেষ্টা, সেবাভাব, নতুন নতুন ক্ষেত্রে কর্মরত নবীন প্রজন্মের মানুষজন ভারতমাতার গর্ব। আপনাদের দেখে দেশবাসী অনুভব করবেন যে দেশে এমন সব ফুল ফুটেছে যারা নিরন্তর সৌরভ ছড়িয়ে যাচ্ছে। অনেকের জীবন বদলে দেওয়ার কাজ করে যাচ্ছে।
যাঁরা অত্যন্ত মনযোগ সহকারে নিষ্ঠার সঙ্গে এই কাজ করছেন, সেই সমস্ত নব যুবক-যুবতীদের আমি অন্তর থেকে অনেক শুভেচ্ছা জানাই। যে কোম্পানিগুলি নিজেদের আর্থিক বিকাশের পাশাপাশি সামাজিক দায়িত্ব পালনের জন্য নিজেদের ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়েছে, তাদের মেধা প্রয়োগ করেছে, সেই সমস্ত কোম্পানিকে আমি অভিনন্দন জানাই। আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রত্যেক মানুষের অংশীদারিত্ব অনিবার্য। ১২৫ কোটি ভারতবাসী যেদিন এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবে, সেদিন বিশ্বের কোন শক্তিই ভারতকে আটকে রাখতে পারবে না। ভারতকে এগিয়ে আসতে হবে। ১২৫ কোটি ভারতবাসীর সম্মিলিত শক্তিকে এগিয়ে আসতে হবে আর সঠিক লক্ষ্যে এগিয়ে আসতে হবে। সবাই নিজের নিজের মতো লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে গেলে পরিণাম আসবে না। সম্মিলিতভাবে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে এগোতে হবে। তবেই পরিণাম আসবে। আমি অত্যন্ত আশাবাদী মানুষ। আমার চার বছরের ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, দেশ এখন পর্যন্ত কেন এগোয়নি? এটা আমার জন্য একটা প্রশ্ন। কিন্তু এই প্রশ্ন কখনও আমার মনে জাগে না যে এই দেশ কি আদৌ এগোবে? আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে এই দেশ অনেক এগিয়ে যাবে। বিশ্বের সমস্ত সমস্যা পার করে আমাদের দেশ নিজের জায়গা তৈরি করে ছাড়বে। এই বিশ্বাস নিয়ে, এই কর্মসূচির পরিকল্পনার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাই। আপনারা সকলে বিপুল সংখ্যায় এসেছেন এবং এত দীর্ঘ সময় ধরে আমার কথা শুনেছেন। আবার, পাশাপাশি আপনাদের সঙ্গে কথা বলারও সুযোগ দিয়েছেন।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।