মাননীয়েষু, আমার ভ্রাতৃপ্রতিম,
আজকের ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলনে উষ্ণ স্বাগত। সর্বপ্রথম, আমি আপনাকে এবং সংযুক্ত আরব আমীরশাহীকে অভিনন্দন জানাতে চাই। কোভিডের প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও, এক্সপো ২০২০-র অসাধারণ আয়োজন করেছেন আপনারা। দুর্ভাগ্যবশত, এক্সপোতে যোগ দেওয়ার জন্য,আমি সংযুক্ত আরব আমীরশাহী যেতে পারিনি এবং আমাদের মুখোমুখি বৈঠকের পর দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেছে। কিন্তু আজকের ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলন বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, সমস্ত চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নতুন উচ্চতার দিকে অপ্রতিহত গতিতে এগিয়ে চলেছে।
মাননীয়েষু,
আমাদের সম্পর্ককে শক্তিশালী করতে আপনার ব্যক্তিগত ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোভিড অতিমারী চলার সময়েও আপনি যেভাবে সংযুক্ত আরব আমীরশাহীতে বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ের খেয়াল রেখেছেন, তার জন্য আমি সর্বদা আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকব। আমরা সংযুক্ত আরব আমীরশাহীতে হওয়া সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। ভারত এবং সংযুক্ত আরব আমীরশাহী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সর্বদা ঐক্যবদ্ধ থাকবে।
মাননীয়েষু,
এই বছরটি আমাদের উভয় দেশের জন্য বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। আপনি সংযুক্ত আরব আমীরশাহী প্রতিষ্ঠার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছেন এবং সংযুক্ত আরব আমীরশাহীর পরবর্তী ৫০ বছরের যাত্রাপথের দিশানির্দেশও করেছেন। আমরা এ বছর আমাদের স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপন করছি এবং আগামী ২৫ বছরের জন্য উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। দুই দেশের ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গির অনেক মিল রয়েছে।
মাননীয়েষু,
আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আমাদের উভয় দেশ আজ সার্বিক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তিতে স্বাক্ষর করছে। এটি লক্ষণীয় যে আমরা তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির বিষয়ে আলোচনা শেষ করতে পেরেছি। সাধারণত এই ধরনের চুক্তির জন্য কয়েক বছর সময় লাগে। এই চুক্তি দুই দেশের গভীর বন্ধুত্ব, অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি এবং আস্থার প্রতিফলন। আমি নিশ্চিত এটি আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্কের নতুন যুগের সূচনা করবে এবং আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আগামী পাঁচ বছরে ৬০ বিলিয়ন ডলার থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে।
মাননীয়েষু,
বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি এবং নাগরিক সংযোগ আমাদের সহযোগিতার স্তম্ভ। একই সঙ্গে অনেক নতুন ক্ষেত্রেও আমাদের সহযোগিতা প্রসারিত করার সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের মধ্যে ফুড করিডোর নিয়ে নতুন সমঝোতাপত্র খুবই ভালো একটি উদ্যোগ। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং লজিস্টিক খাতে U.A.E এর বিনিয়োগকে আমরা স্বাগত জানাই। এটি সংযুক্ত আরব আমীরশাহীর খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভারতকে এক বিশ্বস্ত অংশীদার করে তুলবে।
স্টার্ট আপের ক্ষেত্রে ভারত অভূতপূর্ব উন্নতি করেছে। গত বছর, ভারতে ৪৪টি ইউনিকর্ন স্থাপিত হয়েছে। আমরা যৌথ পরিচর্যা এবং অর্থের যৌথ যোগানের মাধ্যমে উভয় দেশের স্টার্ট-আপগুলিকে উৎসাহিত করতে পারি। একইভাবে, আমাদের নাগরিকদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য, আমরা যৌথ উদ্যোগে আধুনিক উৎকর্ষকেন্দ্র স্থাপনেও উদ্যোগী হতে পারি।
গত মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের উপরাজ্যপালের সফল সংযুক্ত আরব আমীরশাহী. সফরের পর আরব আমীরশাহীর বেশ কিছু সংস্থা জম্মু - কাশ্মীরে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। আমরা জম্মু-কাশ্মীরের লজিস্টিক, স্বাস্থ্য পরিষেবা, আতিথেয়তা সহ সব ক্ষেত্রে সংযুক্ত আরব আমীরশাহীর বিনিয়োগকে স্বাগত জানাই । আপনার দেশের সংস্থাগুলিকে সব ধরনের সুযোগসুবিধা প্রদান করা হবে।
মাননীয়েষু,
পরের বছর, ভারত G-20 শীর্ষ সম্মেলন এবং সংযুক্ত আরব আমীরশাহী, COP-28 এর আয়োজন করবে। জলবায়ু সংক্রান্ত সমস্যা বিশ্বমঞ্চে ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। এক্ষেত্রে কর্মপন্থা নিরূপণে আমরা পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে পারি। সমমনস্ক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে আমাদের উভয় দেশেরই ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে। আমি আত্মবিশ্বাসী যে "ভারত-ইউ.এ.ই.-ইসরায়েল-ইউএসএ", জোটবন্ধন বিশেষ করে প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আমাদের যৌথ লক্ষ্য অর্জনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
মাননীয়েষু,
এই ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলন সফলভাবে আয়োজনের জন্য আবারো আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।