মহামহিম, আমার বন্ধু রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম সোলিহ্,
মালদ্বীপে আমাদের বিশিষ্ট বন্ধুগণ,
সহকর্মীবৃন্দ,
নমস্কার।
রাষ্ট্রপতি সোলিহ্, আপনার সঙ্গে মুখোমুখী হওয়া সর্বদাই আনন্দের। আপনি এবং সমস্ত মালদ্বীপবাসী সর্বদাই আমাদের হৃদয় ও মন জুড়ে রয়েছেন।
দিন কয়েক আগেই আপনার রাষ্ট্রপতি পদে প্রথম বার্ষিকী পূর্ণ হওয়ায় আমি আপনাকে অভিনন্দন জানাতে চাই। মালদ্বীপে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের দিক থেকে চলতি বছর মাইলফলক হয়ে উঠেছে। ভারত – মালদ্বীপ সম্পর্কের ক্ষেত্রেও এই বছরটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
আমার সরকারের ‘প্রতিবেশী সর্বাগ্রে নীতি’ এবং আপনার সরকারের ‘ভারতই প্রথম নীতি’ সমস্ত ক্ষেত্রেই আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে মজবুত করেছে। আমাদের সিদ্ধান্তগুলি রূপায়ণের দরুণ মালদ্বীপের অর্থনীতি, পরিকাঠামো ও দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অগ্রগতি ঘটেছে।
দুই দেশের সম্পর্কের দিক থেকে মালদ্বীপের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ও প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলিতে সাফল্য অর্জিত হওয়ায় তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
আজ, সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে ভারতে নির্মিত একটি অত্যাধুনিক দ্রুতগামী জলযান ‘ফাস্ট ইন্টারসেপ্টর ক্র্যাফট্ – কামিয়াব’ সেদেশের উপকূল রক্ষীবাহিনীকে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমার নিজের রাজ্য গুজরাটে অগ্রণী সংস্থা এল অ্যান্ড টি এই আধুনিক জলযানটি নির্মাণ করেছে। অত্যাধুনিক এই জলযানের ফলে মালদ্বীপের নৌ-নিরাপত্তা যেমন বাড়বে, তেমনই নীল অর্থনীতি ও পর্যটনের বিকাশেও সহায়ক হবে। আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাই যে, এই জলযানের নামকরণ হয়েছে ‘কামিয়াব’, যার অর্থ হ’ল – সাফল্য।
ভদ্রমহোদয়গণ,
আপনার সরকার আদ্দু’র উন্নয়নে যে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, আমার সেই কথা বারবার মনে পড়ছে। এই দ্বীপ রাষ্ট্রবাসী মানুষের জীবনযাপনকে আরও সহজ-সরল করে তুলতে অত্যন্ত কার্যকর ও ফলপ্রসূ যে সর্বজনীন উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, ভারত তার অংশ হয়ে উঠতে পেরে খুশি।
বন্ধুগণ,
আমাদের দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হ’ল – মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ। মালদ্বীপে আগত ভারতীয় পর্যটকের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। এই দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে পর্যটক আগমনের দিকে থেকে ভারতের স্থান পঞ্চম থেকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। চলতি সপ্তাহে দিল্লি, মুম্বাই ও বেঙ্গালুরু থেকে সরাসরি বিমান পরিষেবা চালু হয়েছে।
রুপেকার্ডের কার্ডের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন চালু হওয়ায় মালদ্বীপে আগত ভারতীয়রা লাভবান হবেন। ব্যাঙ্ক অফ মালদ্বীপের মাধ্যমে এ ধরনের আর্থিক লেনদেন শুরু হওয়ায় আমি অত্যন্ত আনন্দিত।
মহামহিম,
আজ আমরা মালদ্বীপবাসীকে এলইডিবাতির সাহায্যে সড়ক আলোকিতকরণ কর্মসূচি উৎসর্গ করছি। পরিবেশ-বান্ধব সড়ক আলোকিতকরণের এ ধরনের কর্মসূচিতে মালদ্বীপবাসী লাভবান হবেন। ভারত এজন্য অত্যন্ত আনন্দিত। এ ধরনের বাতিব্যবহারের ফলে ৮০ শতাংশ খরচ সাশ্রয় হবে।
মহামহিম,
আমরা মালদ্বীপে একটি ক্যান্সার হাসপাতাল ও হুলহুলমালে’তে একটি ক্রিকেট স্টেডিয়াম গড়ে তোলার কাজ করছি।
আমাকে জানানো হয়েছে যে, খুব শীঘ্রই আদ্দু’তেজল, সড়ক ও স্বাস্থ্ যসম্পর্কিত কর্মসূচি শুরু হবে।
আগামী বছরগুলিতে ভারতের সহায়তায় রূপায়িত হতে চলা এই প্রকল্পগুলির ফলে মালদ্বীপবাসী আরও বেশি করে লাভবান হবেন।
জলসীমাবেষ্টিত ঘনিষ্ঠবন্ধু হিসাবে মালদ্বীপের গণতন্ত্র ও সার্বিকউন্নয়নে অংশীদারিত্ব বজায় রাখতে ভারত অঙ্গীকার বদ্ধ। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলেশান্তি ও পারস্পরিক নিরাপত্তাগত সহযোগিতা বাড়াতেও আমরা একযোগে কাজ করবো।
মহামহিম,
দিল্লিতে আপনার সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যাপারে আমি অত্যন্ তআশাবাদী। শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্ যআমি বন্ধু মনোভাবাপন্ন মালদ্বীপবাসী কে উষ্ণ শুভেচ্ছা জানাই।
অসংখ্য ধন্যবাদ।