প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরে দেরা বাবা নানকের কর্তারপুর করিডরের সুসংবদ্ধ চেক পোস্ট উদ্বোধন করবেন।
এই চেক পোস্ট উদ্বোধনের আগে প্রধানমন্ত্রী সুলতানপুর লোধিতে বের সাহিব গুরুদ্বারে শ্রদ্ধা জানাবেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী দেরা বাবা নানকে এক জনসমাবেশে যোগ দেবেন।
এই সুসংবদ্ধ চেক পোস্ট উদ্বোধনের ফলে ভারতীয় পূণ্যার্থীদের পাকিস্তানে গুরুদ্বার কর্তারপুর সাহিব ভ্রমণে সুবিধা হবে।
দেরা বাবা নানকে আন্তর্জাতিক সীমানায় জিরো পয়েন্টে কর্তারপুর সাহিব করিডর চালু করার পন্থাপদ্ধতি নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গত ২৪শে অক্টোবর এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
উল্লেখ করা যেতে পারে যে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার ২০১৮-র ২২শে নভেম্বরের বৈঠকে দেশে এবং বিদেশে শ্রী গুরু নানক দেবজির ৫৫০তম ঐতিহাসিক আবির্ভাব তিথি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে, সারা বছর ধরে ভারতীয় পূণ্যার্থীরা যাতে সুষ্ঠুভাবে ও সহজে গুরুদ্বার দরবার সাহিব কর্তারপুর যেতে পারেন তার জন্য দেরা বাবা নানক থেকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পর্যন্ত কর্তারপুর সাহিব করিডর নির্মাণ ও উন্নয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পূণ্যার্থীদের সুবিধার্থে ব্যবস্থাপনা
অমৃতসর-গুরুদাসপুর মহাসড়ক থেকে দেরা বাবা নানক পর্যন্ত সংযোগকারী ৪.২ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনবিশিষ্ট মহাসড়ক নির্মিত হয়েছে। এই মহাসড়ক নির্মাণে খরচ হয়েছে ১২০ কোটি টাকা।
পূণ্যার্থীদের সুবিধার্থে ১৫ একর জমির ওপর অত্যাধুনিক টার্মিনাল ভবন গড়ে তোলা হয়েছে। সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই ভবনে বিমানবন্দরের মতো ৫০টি অভিবাসন কাউন্টার রয়েছে, যেখান থেকে প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার পূণ্যার্থী প্রয়োজনীয় সুবিধা পাবেন।
মূল ভবনের অভ্যন্তরে পূণ্যার্থী ও সাধারণ মানুষের বিভিন্ন ধরনের মৌলিক সুযোগ-সুবিধা যেমন কিয়স্ক, শৌচাগার, চাইল্ড কেয়ার, ফার্স্ট এইড চিকিৎসা পরিষেবা, উপাসনা কক্ষ ও খাবারের দোকান রয়েছে।
এছাড়াও, নজরদারির জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা এবং গণজ্ঞাপন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সীমানায় ৩০০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট জাতীয় মনুমেন্টাল ফ্ল্যাগ উত্তোলন করা হচ্ছে।
পাকিস্তানের সঙ্গে গত ২৪শে অক্টোবর স্বাক্ষরিত চুক্তিতে কর্তারপুর সাহিব করিডর চালু করার জন্য প্রাথমিক কাঠামো গড়ে তোলার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
এই চুক্তির উল্লেখযোগ্য দিক :
· ভারতীয় বংশোদ্ভূত সমস্ত পূণ্যার্থীরা এই করিডর ব্যবহার করতে পারবেন।
· পূণ্যার্থীদের কর্তারপুর সাহিব করিডর দিয়ে পাকিস্তানে যাওয়ার জন্য কোন ভিসা লাগবে না।
· পূণ্যার্থীদের কেবল একটি বৈধ পাসপোর্ট সঙ্গে রাখতে হবে।
· ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তিদের অনাবাসী ভারতীয় নাগরিক কার্ড বা যে দেশে তিনি বসবাস করেন সেই দেশের পাসপোর্ট প্রয়োজন পড়বে না।
· এই করিডর সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খোলা থাকবে। পূণ্যার্থীরা সকালবেলায় রওনা দিলে তাঁদের সেদিনই ফিরে আসতে হবে।
· বিশেষভাবে ঘোষিত দিনগুলি ছাড়া (প্রয়োজনে আগেই ঘোষণা করা হবে) বছরভর এই করিডর খোলা থাকবে।
· পূণ্যার্থীরা পছন্দমতো ব্যক্তিগতভাবে বা দলবদ্ধভাবে যাওয়া-আসা করতে পারবেন। হেঁটেও ভ্রমণ করা যেতে পারে।
· ভ্রমণে যাওয়া পূণ্যার্থীদের তালিকা ভারত ১০ দিন আগেই পাকিস্তানকে পাঠিয়ে দেবে। পূণ্যার্থীদের ভ্রমণে অনুমতি মিলবে কিনা তা চারদিন আগেই জানিয়ে দেওয়া হবে।
· পাকিস্তানের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত সংখ্যায় ‘লঙ্গর’ খোলার এবং ‘প্রসাদ’ বিতরণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
নাম নথিভুক্তিকরণের জন্য পোর্টাল
কর্তারপুর সাহিব করিডর দিয়ে ভ্রমণের জন্য পূণ্যার্থীদের prakashpurb550.mha.gov.in পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করা বাধ্যতামূলক। পূণ্যার্থীরা নিজেদের পছন্দের দিনে ভ্রমণ করতে পারবেন। ভ্রমণে যাওয়ার ৩-৪ দিন আগে পূণ্যার্থীর রেজিস্ট্রেশন সফল হয়েছে কিনা তা এসএমএস বা ই-মেল মারফৎ জানিয়ে দেওয়া হবে। এই লক্ষ্যে একটি ইলেক্ট্রনিক ট্র্যাভেল অথারাইজেশন তৈরি করা হচ্ছে। পূণ্যার্থীরা যখন প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবনে এসে পৌঁছবেন তখন তাঁদের পাসপোর্টের পাশাপাশি ইলেক্ট্রনিক ট্র্যাভেল অথারাইজেশন সংক্রান্ত নথি সঙ্গে রাখতে হবে।