প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী, জি৭ শীর্ষ সম্মেলনে আউটরিচ অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে – “মুক্ত সমাজ ও অর্থনীতি আবারও একসঙ্গে গড়ে তুলবো” এবং “জলবায়ু ও প্রকৃতির সবুজায়ন ঘটাবো” শীর্ষক দুটি আলোচনায় যোগ দিয়েছেন।
মুক্ত সমাজ শীর্ষক আলোচনায় শ্রী মোদী প্রধান বক্তা হিসেবে জানান, ভারতীয় সভ্যতায় গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতা অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। মুক্ত সমাজের বিষয়ে বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তিনিও সাইবার জগতের নিরাপত্তাহীনতা এবং ভুল তথ্য প্রচারের প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সাইবার জগতের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে ব্যবহার করার উপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেছেন, এর অপব্যবহার করলে চলবে না। বিশ্বের কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের অগণতান্ত্রিক ও অসাম্য নীতি অনুসরণ করে পরিচালনার দিকটির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী, মুক্ত সমাজে বহুপাক্ষিক ব্যবস্থাপনার সংস্কারকে সব থেকে ভালো অঙ্গীকার বলে মন্তব্য করেছেন। বৈঠকের শেষে নেতৃবৃন্দ একটি মুক্ত সামাজিক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছেন।
জলবায়ু পরিবর্তন শীর্ষক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই গ্রহের জলবায়ু, জীববৈচিত্র এবং মহাসাগর রক্ষা করতে হলে দেশগুলির একক উদ্যোগে সেটি সম্ভব নয়। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানের জন্য সমষ্টিগত উদ্যোগের আহ্বান জানিয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ভারতের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতীয় রেলের কার্বন নিঃসরণ সম্পূর্ণ বন্ধ করার প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়েছেন। প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়নে যে অঙ্গীকার করা হয়েছে, জি২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্যে ভারতই একমাত্র সঠিক পথে এগোচ্ছে। তিনি দুটি বৃহৎ আন্তর্জাতিক উদ্যোগে ভারতের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেছেন। এগুলি হল – সিডিআরআই এবং আন্তর্জাতিক সৌর জোট। জলবায়ুর পরিবর্তন রোধে আরো বেশি আর্থিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য একটি সমষ্টিগত উদ্যোগের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যার সমাধানের জন্য় একটি সর্বাঙ্গীন উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। যার সাহায্যে এই সমস্যাগুলির প্রশমন, এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রযুক্তি হস্তান্তর, সাম্য এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন ঘটাতে হবে।
মুক্ত ও গণতান্ত্রিক সমাজ এবং অর্থনীতিতে স্বাস্থ্য, জলবায়ু পরিবর্তন ও অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের মতো আন্তর্জাতিক সমস্যাগুলির মোকাবিলা করতে সহমর্মিতা ও ঐক্যের ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য পেশ করেন, তা সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী নেতৃবৃন্দের কাছে সমাদৃত হয়েছে।