আমানতকারী ও বিনিয়োগকারী- দুজনেরই আস্থা অর্জন এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় কাজ করা আমাদের মূল উদ্দেশ্য : প্রধানমন্ত্রী
অস্বচ্ছ ঋণদান সংস্কৃতি থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
আর্থিক সমন্বয়ের পর দেশ এখন আর্থিক ক্ষমতায়ণের দিকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আর্থিক পরিষেবার বিষয়ে বাজেটে প্রস্তাবগুলির যথাযথ রূপায়ণ সংক্রান্ত ওয়েবিনারে বক্তব্য রেখেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কিভাবে বেসরকারী ক্ষেত্রের অংশগ্রহণ আরও বাড়ানো যায় এবং রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থাগুলিকে শক্তিশালী করা যায় সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় বাজেটে স্পষ্ট পরিকল্পনা করা হয়েছে। দেশের আর্থিক ক্ষেত্রের জন্য সরকারের পরিকল্পনা অত্যন্ত স্পষ্ট। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হল স্বচ্ছভাবে আমানতকারীরা এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা যাতে অর্জন করা যায়। ব্যাঙ্কিং ও নন-ব্যাঙ্কিং প্রতিষ্ঠানগুলির সাবেক পদ্ধতি এবং পুরনো ব্যবস্থা বদলাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আগ্রাসী ঋণদানের নামে ১০-১২ বছর আগে দেশে ব্যাঙ্কিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির যথেষ্ট ক্ষতি করা হয়েছে। দেশকে অস্বচ্ছ ঋণদান ব্যবস্থা থেকে মুক্ত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে অনুৎপাদক সম্পদকে লুকিয়ে না রেখে প্রত্যেকদিন অনুৎপাদক সম্পদের পরিমাণ জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী ওয়েবিনারে অংশগ্রহণকারীদের আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন ব্যবসা-বাণিজ্যে অনিশ্চয়তার বিষয়টি সরকার উপলব্ধি করতে পারে এবং প্রতিটি ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত যে অসৎ উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়না সেই বিষয়ে সরকার একমত। এহেন পরিস্থিতিতে সচেতনভাবে বাণিজ্যিক সিদ্ধান্তগুলিকে সরকার সহায়তা করবে এবং ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে। ঋণদাতা এবং ঋণ গ্রহণকারীদের আস্থা অর্জনের জন্য ঋণ খেলাপী নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে।

সাধারণ নাগরিকদের আয়ের সুরক্ষা, দরিদ্র মানুষরা যাতে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের পুরো অর্থ পান সেটি নিশ্চিত করা এবং দেশের উন্নয়নের জন্য পরিকাঠামো সংক্রান্ত বিনিয়োগে উৎসাহিত করা সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকাভুক্ত বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন। বিগত কয়েক বছর ধরে আর্থিক সংস্কার গ্রহণ করা হয়েছে এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে। এবারের কেন্দ্রীয় বাজেটে দেশের আর্থিক ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করার জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছে। আর্থিক ক্ষেত্র সহ নতুন রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থাগুলির জন্য নীতি তৈরি করা হয়েছে। আমাদের অর্থনীতিতে ব্যাঙ্ক ও বীমা সংস্থাগুলির যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। এই সম্ভাবনাগুলিকে বিবেচনা করে এবারের বাজেটে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করা হয়েছে, যার মধ্যে আছে ২টি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের বেসরকারীকরণ, বীমা ক্ষেত্রে ৭৪ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের অনুমোদন, এলআইসি-র শেয়ার বিক্রি ইত্যাদি।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যেখানে যেখানে সম্ভব বেসরকারী শিল্পোদ্যোগীদের সেখানে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা হবে। দেশে ব্যাঙ্কিং ও বীমা ক্ষেত্রে বেসরকারী অংশীদারিত্বের প্রয়োজন।

রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থাগুলিকে শক্তিশালী করা, মূলধন যোগানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ব্যাঙ্কগুলির অনুপাদক সম্পদের হিসেব রাখার জন্য নতুন এআরসি তৈরি হয়েছে। এর ফলে লোন সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা যাবে। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কগুলিকে এর সাহায্যে শক্তিশালী করা হবে। পরিকাঠামো ও শিল্প সংস্থাগুলির উন্নয়নের জন্য একটি নতুন ডেভেলপমেন্ট ফিনানসিয়াল ইন্সটিটিউট তৈরি করা হবে। এর ফলে এই ধরণের প্রকল্পগুলির দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক চাহিদা পূরণ হবে। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে সোভেরিন ওয়েল্থ ফান্ড, পেনশন ফান্ড এবং বীমা সংস্থাগুলিকে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বড় বড় শিল্প এবং বড় বড় শহরগুলিই শুধু আত্মনির্ভর ভারত তৈরি করবে না। ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগী এবং সাধারণ মানুষের কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে গ্রামাঞ্চলে আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলা যাবে। আরও ভালো ফলনের মাধ্যমে কৃষকরা আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তুলবেন। একইভাবে অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ এবং স্টার্ট আপ সংস্থাগুলিও আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। করোনার সময়কালে অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগের জন্য আর্থিকভাবে বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। এর ফলে এইসব সংস্থাগুলি ২ লক্ষ ৪০ হাজার কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে। কৃষি, কয়লা এবং মহাকাশের জন্য সরকার বিভিন্ন সংস্কার গ্রহণ করেছে এবং এইসব ক্ষেত্রগুলিকে অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ঋণ দেওয়ার বিষয়টি আমাদের অর্থনীতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর মাধ্যমে অর্থনীতির বিস্তার ঘটে। তিনি ভারতের আর্থিক প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত নতুন উদ্যোগগুলির কাজের প্রশংসা করেছেন এবং বলেছেন, নতুন উদ্যোগগুলির জন্য আরও ভালো আর্থিক প্যাকেজ তৈরি করতে হবে। শ্রী মোদী আরও জানিয়েছেন আমাদের আর্থিক প্রযুক্তি সংক্রান্ত সংস্থা - ফিনটেক নতুন উদ্যোগগুলিতে বিপুলভাবে অংশগ্রহণ করছে। করোনার সময়েও এই ধারা অব্যাহত ছিল। ভারতে আর্থিক ক্ষেত্রগুলির জন্য এই বছরটি বিশেষভাবে সহায়ক হবে।

শ্রী মোদী বলেছেন, প্রযুক্তির ভালো ব্যবহার এবং নতুন ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার মধ্যে দিয়ে দেশে আর্থিক সমন্বয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আজ ভারতে ১৩০ কোটি মানুষের আধার কার্ড আছে। ৪১ কোটি মানুষ জনধন অ্যাকাউন্টের সুবিধা পান। এদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ মহিলা। ১ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা তাদের বিভিন্ন সময় দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন মুদ্রা যোজনায় অতি ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীদের কাছে ঋণ হিসেবে ১৫ লক্ষ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যেও ৭০ শতাংশ মহিলা এবং ৫০ শতাংশের বেশি দলিত, বঞ্চিত, আদিবাসী ও পিছিয়ে পরা সম্প্রদায়ভুক্ত শিল্পোদ্যোগী।

শ্রী মোদী জানিয়েছেন, পিএম কিষাণ সম্মান যোজনায় ১১ কোটি কৃষক পরিবার ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা তাদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি পেয়েছেন। রাস্তার হকারদের জন্য পিএম স্বনিধি প্রকল্প থেকে টাকার সংস্থান করা হয়েছে। ১৫ লক্ষ রাস্তার হকার ১০ হাজার কোটি টাকা পেয়েছেন। অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলির জন্য ট্রেডস, রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কগুলির ডিজিটাল ঋণদান প্ল্যাটফর্ম ঋণকে আরও সহজ করে দিয়েছে। ক্ষুদ্র চাষি, প্রাণী পালক ও মৎস্যজীবীদের প্রথা বর্হিভূত ঋণের কবল থেকে কিষাণ ক্রেডিট কার্ড উদ্ধার করেছে। প্রধানমন্ত্রী আর্থিক ক্ষেত্রকে উদ্ভাবনমূলক বিভিন্ন পণ্য তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছেন। উৎপাদন শিল্পে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির ক্ষমতার কথা উল্লেখ করে তিনি এই গোষ্ঠীগুলির পরিষেবা ও উৎপাদন ক্ষেত্রে অংশগ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছেন। গ্রামীণ পরিকাঠামোয় বিনিয়োগের জন্য তাদের আর্থিক শৃঙ্খলাকে আদর্শ বলে উল্লেখ করেছেন। এটি শুধুমাত্র কল্যাণমুখী উদ্যোগই নয়, এটি বাণিজ্যিক মডেলও।

শ্রী মোদী বলেছেন, আর্থিক সমন্বয়ের পর এখন দেশ দ্রুত গতিতে আর্থিক ক্ষমতায়ণের দিকে এগিয়ে চলেছে। আইএফএসসি গিফ্ট সিটিতে একটি বিশ্বমানের আর্থিক কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। আগামী ৫ বছরে ভারতে ৬ লক্ষ কোটি টাকার ফিনটেক বাজার গড়ে উঠবে। দেশে আধুনিক পরিকাঠামো তৈরি শুধুমাত্র আত্মনির্ভর ভারতের জন্য উচ্চাকাঙ্খাই নয়, সেটি দেশের চাহিদাও বটে। বিনিয়োগের জন্য পরিকাঠামোর গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আর্থিক ক্ষেত্রের সক্রিয় সহযোগিতার মাধ্যমে এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। আমাদের আর্থিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হলে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রকেও শক্তিশালী করতে হবে। সরকার এ বিষয়ে দায়বদ্ধ। এ পর্যন্ত ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে যেসব সংস্কার করা হয়েছে সেগুলি পরবর্তীতেও অব্যাহত থাকবে।

সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
When PM Modi Fulfilled A Special Request From 101-Year-Old IFS Officer’s Kin In Kuwait

Media Coverage

When PM Modi Fulfilled A Special Request From 101-Year-Old IFS Officer’s Kin In Kuwait
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Under Rozgar Mela, PM to distribute more than 71,000 appointment letters to newly appointed recruits
December 22, 2024

Prime Minister Shri Narendra Modi will distribute more than 71,000 appointment letters to newly appointed recruits on 23rd December at around 10:30 AM through video conferencing. He will also address the gathering on the occasion.

Rozgar Mela is a step towards fulfilment of the commitment of the Prime Minister to accord highest priority to employment generation. It will provide meaningful opportunities to the youth for their participation in nation building and self empowerment.

Rozgar Mela will be held at 45 locations across the country. The recruitments are taking place for various Ministries and Departments of the Central Government. The new recruits, selected from across the country will be joining various Ministries/Departments including Ministry of Home Affairs, Department of Posts, Department of Higher Education, Ministry of Health and Family Welfare, Department of Financial Services, among others.