শ্রী কুমার মঙ্গলম বিড়লাজি, আদিত্য বিড়লা গ্রুপের চেয়ারম্যান,
থাইল্যান্ডের শ্রদ্ধেয় অতিথিবৃন্দ,
বিড়লা পরিবার ও গোষ্ঠীর সদস্যগণ,
থাইল্যান্ড ও ভারতের শিল্পপতিগণ,
বন্ধুগণ,
নমস্কার,
আজ আমরা থাইল্যান্ডের সুবর্ণ ভূমিতে আদিত্য বিড়লা গ্রুপের সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ উদযাপন উপলক্ষে একত্রিত হয়েছি। এটা প্রকৃতপক্ষেই এক বিশেষ মুহূর্ত। আমি আদিত্য বিড়লা গ্রুপের সকলকে অভিনন্দন জানাই। থাইল্যান্ডে আদিত্য বিড়লা গ্রুপ যে সমস্ত প্রশংসনীয় কাজকর্ম করছে তার কথা আমরা শ্রী কুমার মঙ্গলম বিড়লার কাছ থেকে শুনলাম। আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীর বিবিধ কাজকর্মের ফলে এই দেশে যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে, তেমনই সমৃদ্ধও হয়ে উঠছে।
বন্ধুগণ,
আমরা যারা থাইল্যান্ডে রয়েছি, তাদের সঙ্গে ভারতের মজবুত সাংস্কৃতিক যোগসূত্র রয়েছে। আমরা এই দেশে ভারতের এক অগ্রণী শিল্প গোষ্ঠীর ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করছি। এই ঘটনা আমার মনে দৃঢ় প্রত্যয় জাগায় যে সংহতির ক্ষেত্রে বাণিজ্য ও সংস্কৃতির এক সহজাত শক্তি রয়েছে। বহু শতাব্দী ধরে সাধু-সন্ন্যাসী ও ব্যবসায়ীরা বহু দূরদুরান্তে পাড়ি দিয়েছেন। নিজের বাড়ি থেকে বহু দূরে গিয়ে তাঁরা বিবিধ সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে গেছেন। সংস্কৃতির এই বন্ধন ও বাণিজ্যের প্রতি প্রবল আগ্রহ আগামী দিনগুলিতে বিশ্বকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসবে।
বন্ধুগণ,
ভারতে এখন বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সমস্ত ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটছে, আমি তার কয়েকটি ছবি আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। আমি পূর্ণ আস্থা নিয়ে একথা বলতে চাই যে, ভারতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এটাই সেরা সময়। বর্তমান ভারতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উত্থান ও পতন ঘটছে। একদিকে যেমন সহজে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ গড়ে উঠেছে, অন্যদিকে তেমনই জীবনযাপনের মানোন্নয়ন ঘটছে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে। দেশে বনানীর পরিধি বাড়ছে। পেটেন্ট ও ট্রেডমার্কের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। উৎপাদনশীলতা ও দক্ষতার বিকাশ ঘটছে। পরিকাঠামো গড়ে তোলার গতি ক্রমশ বাড়ছে। উন্নতমানের স্বাস্থ্য পরিষেবার সুবিধা আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে। একইসঙ্গে, সংখ্যার দিক থেকে কর আরোপের সংখ্যা কমছে। কর হারও হ্রাস পাচ্ছে। লাল ফিতের ফাঁস ক্রমশ আলগা হচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে অন্তরঙ্গ বন্ধুর সংখ্যা কমছে। দুর্নীতি হ্রাস পাচ্ছে। দুর্নীতি পরায়ণরা পালানোর জায়গা খুঁজছে। ক্ষমতার অলিন্দে মধ্যসত্বভোগীদের ভূমিকা এখন অতীত।
বন্ধুগণ,
ভারত বিগত পাঁচ বছরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বহু সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে। এর পেছনে কেবল সরকারি কর্মপ্রচেষ্টাই নয়, ভারতে প্রচলিত ধারা মেনে কাজকর্ম সম্পাদন প্রথা দূর করা হয়েছে। আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থাতেও সংস্কার করা হয়েছে। উচ্চাকাঙ্খীমূলক উদ্যোগ গ্রহণের দরুন পরিবর্তন ঘটে চলেছে। এই উচ্চাকাঙ্খীমূলক উদ্যোগগুলি সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে গতি পেয়েছে। এর ফলে, এই উদ্যোগগুলি এখন অনেক বেশি প্রাণবন্ত আন্দোলনের রূপ নিয়েছে। এই সমস্ত গণ-আন্দোলনের দরুন বিস্ময়কর পরিবর্তন এসেছে। আগে যে সমস্ত কাজকর্ম অসম্ভব বলে মনে হত, এখন তা সম্ভব হয়ে উঠেছে। জীবনযাপনের মৌলিক সুযোগ-সুবিধা প্রায় ১০০ শতাংশ মানুষের কাছে পৌঁছেছে। এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হল ‘জন ধন যোজনা’। এই যোজনার মাধ্যমে প্রায় ১০০ শতাংশ আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ সম্ভব হয়েছে। আরও একটি দৃষ্টান্ত হল ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’। এই অভিযানের সফল রূপায়ণের দরুন প্রায় প্রতিটি পরিবারেই শৌচাগার গড়ে উঠেছে।
বন্ধুগণ,
ভারতে আমাদের সবথেকে বড় যে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে তা হল পরিষেবা প্রদান ক্ষেত্রে অসাধুতা। কিছু মানুষের অসাধু পন্থা অবলম্বনের জন্য দরিদ্ররা সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আপনারা একথা জেনে বিস্মিত হবেন যে, বহু বছর ধরে গরিবদের কল্যাণে বরাদ্দকৃত অর্থের কোন সুফলই তাঁদের কাছে পৌঁছয়নি। আমার সরকার প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তর কর্মসূচির মাধ্যমে এই কূপ্রথার অবসান ঘটিয়েছে। এই কর্মসূচির ফলে মধ্যস্থতাকারী ও অপচয়ের সংস্কৃতি দূর হয়েছে। প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তর ব্যবস্থা এমনভাবে রূপায়িত হচ্ছে যেখানে ভুল-ত্রুটির সম্ভাবনা কম। এই কর্মসূচি চালু হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাশ্রয় হয়েছে। আপনারা বাড়িতে নিশ্চয়ই এলইডি বাতি দেখেছেন। আপনারা জানেন এ ধরনের বাতি অনেক বেশি কার্যকর ও বিদ্যুৎসাশ্রয়ী। কিন্তু আপনারা জানেন কি এই বাতি ব্যবহারের ফলে ভারতে কি ধরনের প্রভাব পড়েছে? বিগত কয়েক বছরে আমরা ভারতে ৩ কোটি ৬০ লক্ষেরও বেশি এলইডি বাতি বন্টন করেছি। আমরা রাস্তা আলোকিতকরণের জন্য ১ কোটি এলইডি বাতি লাগিয়েছি। এই ধরনের বাতি ব্যবহারের ফলে আমরা ৩.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাশ্রয় করেছি। এমনকি, এ ধরনের বাতি ব্যবহারের ফলে কার্বন নিঃসরণের হারও কমেছে। এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস, অর্থ সাশ্রয় থেকেই অর্থ উপার্জন হয়। শক্তি সঞ্চয় হলেই পক্ষান্তরে শক্তির উৎসও হয়। সাশ্রয় হওয়া অর্থ এখন বিভিন্ন কার্যকর কর্মসূচির মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষের ক্ষমতায়নে সদ্ব্যবহার করা হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
বর্তমান ভারতে কঠোর পরিশ্রমী করদাতাদের ভূমিকার প্রশংসা করা হচ্ছে। করক্ষেত্র হল এরকমই একটি বিষয় যেখানে আমরা লক্ষ্যণীয় সংস্কার করেছি। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে ভারত এখন বিশ্বের অন্যতম জন-বান্ধব কর ব্যবস্থার দেশ হয়ে উঠেছে। করক্ষেত্রে আরও সংস্কারের প্রতি আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। বিগত পাঁচ বছরে আমরা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের ওপর থেকে করের বোঝা উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়েছি। আমরা এখন এমন এক কর নিরূপণ ব্যবস্থা চালু করতে চলেছি যেখানে বৈষম্য বা হয়রানির কোন প্রশ্নই থাকবে না। আপনারা ইতিমধ্যেই ভারতে কর্পোরেট ক্ষেত্রে কর ছাড়ের কথা শুনেছেন। আমাদের অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা কর ব্যবস্থা ভারতের অর্থনৈতিক সংহতিকরণের স্বপ্ন পূরণ করেছে। আমরা কর ব্যবস্থাকে আরও বেশি জন-বান্ধব করে তোলার লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছি। এখনও পর্যন্ত আমি যে সমস্ত প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছি সেগুলি সবই বিনিয়োগের দিক থেকে ভারতকে বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত করেছে।
বন্ধুগণ,
প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ ক্ষেত্রে ভারতে বিগত পাঁচ বছরে ২৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লগ্নি হয়েছে। লগ্নির এই পরিমাণ ভারতে বিগত ২০ বছরে মোট লগ্নির প্রায় অর্ধেক। এই লগ্নির ৯০ শতাংশই এসেছে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে। লগ্নির ৪০ শতাংশই হয়েছে ‘গ্রিনফিল্ড’ হিসেবে। ভারতের যাত্রাপথের অগ্রগতি একাধিক পরিসংখ্যানে প্রতিফলিত হয়েছে। ইউএনসিটিএডি-র প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত ক্রমতালিকায় ভারত অগ্রণী ১০টি দেশের মধ্যে রয়েছে। বিগত পাঁচ বছরে ডব্লিউআইপিও-র বিশ্ব উদ্ভাবন সূচকে ভারত ক্রমতালিকায় ২৪ ধাপ অগ্রগতি করেছে। সাফল্যের এই পরিসংখ্যান সত্ত্বেও আমি দুটি বিষয়ের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে চাই। প্রথমত, ভারত বিগত পাঁচ বছরে বিশ্বব্যাঙ্কের সহজে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ২০১৪-র ১৪২তম স্থান থেকে ৭৯ ধাপ উঠে এসে ২০১৯-এ ৬৩তম স্থানে পৌঁছেছে। ক্রমতালিকায় এই উন্নতি ভারতের পক্ষে এক বড় সাফল্য। বিগত তিন বছর ধরে বিশ্বের অগ্রণী ১০টি সংস্কারমূলক দেশের মর্যাদা ভারত ধরে রেখেছে। আমরা এক বৃহৎ ও বৈচিত্র্যময় দেশ। এই দেশে কেন্দ্র, রাজ্য ও স্থানীয় সরকার রয়েছে। বিশালতার দিক থেকে তাই সংস্কারমূলক উদ্যোগগুলি আমাদের অঙ্গীকারকেই প্রতিফলিত করে। সরকার ও জনগণ একত্রিত হয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই অনুকূল বাতাবরণ গড়ে উঠেছে।
বন্ধুগণ,
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ভ্রমণ ও পর্যটন সংক্রান্ত প্রতিযোগিতামূলক সূচকেও ভারতের লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি হয়েছে। ভারত ২০১৩-র ৬৫তম স্থান থেকে ২০১৯-এ ৩৪তম স্থানে উঠে এসেছে। এই অগ্রগতি নিঃসন্দেহে এক বড় সাফল্য। ভারতে আগত বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা ৫০ শতাংশ বেড়েছে। আপনারা জানেন, একজন পর্যটক মানসিক দিক থেকে সন্তুষ্ট ও নিরাপদ বোধ না করলে কোন জায়গায় যেতে চাইবেন না। তাই একথা উল্লেখ করা প্রয়োজন, ভারতে যখন বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে, তখন এটাই প্রমাণ করে যে পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমাদের প্রয়াসগুলির সুফল মিলছে।
বন্ধুগণ,
আজ বিভিন্ন ক্রমতালিকায় ভারতের যে অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা সংস্কারমূলক পদক্ষেপের প্রভাবস্বরূপ। ক্রমতালিকায় ভারতের স্থান বাস্তব এবং এটা সম্ভব হয়েছে দেশে বাস্তবিক দিক থেকে যে সমস্ত কাজ হয়েছে তার পরিণতিস্বরূপ।
বন্ধুগণ,
ভারত এখন আরও একটি উচ্চাকাঙ্খী লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এটি হল পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি হয়ে ওঠা। ২০১৪ সালে যখন আমার সরকার ক্ষমতায় আসে তখন ভারতের জিডিপি ছিল প্রায় ২ লক্ষ কোটি ডলার। বিগত ৬৫ বছরে কেবল ২ লক্ষ কোটি ডলার! কিন্তু কেবল পাঁচ বছরেই আমরা জিডিপি-তে আরও ৩ লক্ষ কোটি ডলার যোগ করতে পেরেছি। এই পরিসংখ্যান আমাকে দৃঢ় প্রত্যয়ী করে তুলছে যে আমরা শীঘ্রই ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি হয়ে উঠব। আমরা পরবর্তী প্রজন্মের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চলেছি।
বন্ধুগণ,
ভারতে যে একটি বিষয়ের প্রতি আমি বিশেষভাবে গর্ব অনুভব করি তা হল আমাদের দেশের দক্ষ ও মেধাসম্পন্ন মানববন্ধন। কোন সন্দেহ নেই যে ভারত আজ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ‘স্টার্ট-আপ’-এর উপযোগী দেশ হয়ে উঠেছে। দেশে বর্তমানে ১ বিলিয়ন স্মার্ট ফোন ব্যবহারকারী রয়েছেন। এমনকি, ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মানুষের সংখ্যা ৫০ কোটির বেশি। আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি। আমরা সেই সমস্ত আধুনিক প্রযুক্তি সদ্ব্যবহারের পরিকল্পনা নিচ্ছি যেগুলি উন্নয়ন ও প্রশাসনের বিভিন্ন চাহিদা পূরণে সক্ষম হয়ে উঠবে। এই সুযোগ-সুবিধাগুলিকে কাজে লাগিয়ে আমরা বিশ্বের ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখছি।
বন্ধুগণ,
থাইল্যান্ড তার পরিবর্তনের লক্ষ্যে ‘থাইল্যান্ড ফোর পয়েন্ট জিরো’ সংক্রান্ত যে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে তার উদ্দেশ্য হল এমন এক মূল্যভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তোলা যার ভিত্তি প্রোথিত থাকবে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতার ওপর। থাইল্যান্ডের এই উদ্যোগের সঙ্গে ভারতের রূপান্তরমূলক পদক্ষেপগুলির সামঞ্জস্য রয়েছে। ভারতের ডিজিটাল ইন্ডিয়া, স্কিল ইন্ডিয়া, গঙ্গা পুনরুজ্জীবন প্রকল্প, স্বচ্ছ ভারত অভিযান, স্মার্ট সিটি এবং জল জীবন অভিযানে অংশগ্রহণের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
বন্ধুগণ,
ভারতের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি ঘটলেই বিশ্বেরও সমৃদ্ধি ঘটবে। ভারতের সার্বিক উন্নয়নে আমাদের এমন এক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে যার ফলে সমগ্র বিশ্বের কল্যাণ হবে। আমরা যখন আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচির মাধ্যমে ৫০ কোটি ভারতীয়কে সুলভে গুণগত মানের চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছি, তখন পক্ষান্তরে সমগ্র বিশ্বই আরও স্বাস্থ্যকর হয়ে উঠবে। আমরা ২০২৫-এর মধ্যে দেশ থেকে যক্ষ্মা রোগ দূরীকরণের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছি। আমাদের এই অঙ্গীকার বিশ্ব থেকে ২০৩০-এর মধ্যে যক্ষ্মা দূরীকরণের সময়সীমার তুলনায় পাঁচ বছর কম। যক্ষ্মা দূরীকরণে আমাদের এই অঙ্গীকার নিঃসন্দেহে সমগ্র বিশ্বকে এই রোগ দূরীকরণের লড়াইয়ে আরও ক্ষমতা যোগাবে। একইসঙ্গে, আমরা আমাদের সাফল্য ও সেরা পন্থাপদ্ধতিগুলি বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে ভাগ করে নিতেও প্রস্তুত। আমাদের দক্ষিণ এশিয়া উপগ্রহটি এই অঞ্চলের বহু মানুষকে সাহায্য করছে। বিশেষভাবে উপকৃত হচ্ছেন ছাত্রছাত্রী ও মৎস্যজীবীরা।
বন্ধুগণ,
আমাদের ‘পুবে তাকাও নীতি’র অঙ্গ হিসেবে আমরা এই অঞ্চলে যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর বিশেষ অগ্রাধিকার দিচ্ছি। থাইল্যান্ডের উপকূলীয় বন্দরগুলি থেকে ভারতের পূর্ব উপকূলীয় বন্দর যেমন চেন্নাই, বিশাখাপত্তনম ও কলকাতার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা দুই দেশের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বকে আরও মজবুত করবে। পারস্পরিক স্বার্থবাহী এই সুযোগ-সুবিধাগুলিকে আমাদের অবশ্যই কাজে লাগাতে হবে। আমাদের মধ্যে যে ভৌগোলিক নৈকট্য রয়েছে, তাও আমাদের পূর্বসূরীদের মতো একইভাবে কাজে লাগাতে হবে।
বন্ধুগণ,
আমাদের অর্থনীতি একে অপরের সমতুল – এই বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে আমাদের সংস্কৃতি ও সৌজন্যবোধের ক্ষেত্রেও অভিন্নতার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই যে আমরা আমাদের ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব, পারস্পরিক স্বার্থে আরও বাড়াতে পারি। আমি একথা বলে শেষ করতে চাই, বিনিয়োগ ও সহজে ব্যবসা করতে চাইলে ভারতে আসুন। উদ্ভাবন ও স্টার্ট-আপ স্থাপনের জন্য ভারতে আসুন। বিশ্বের সেরা কিছু পর্যটন স্থান ও ভারতের মানুষের উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য এখানে আসুন। ভারত দু’হাত প্রসারিত করে আপনাদের স্বাগত জানানোর অপেক্ষায় রয়েছে।
ধন্যবাদ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।