ভারত হল সেই দেশ যে, বিশ্বকে যুদ্ধ দেয়নি, বুদ্ধর শান্তির বানী দিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী মোদী #UNGA
সন্ত্রাসবাদকে বিশ্বে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ, মানবতার স্বার্থে সকল রাষ্ট্রকে এর বিরুদ্ধে একজোট হতে হবে: প্রধানমন্ত্রী মোদী #UNGA
ভারত একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক থেকে নিজেকে মুক্ত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: প্রধানমন্ত্রী মোদী #UNGA

নমস্কার,

মাননীয় মহাসচিব,

রাষ্ট্রসঙ্ঘের ৭৪তম অধিবেশনে ১৩০ কোটি ভারতীয়র পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখা আমার কাছে অত্যন্ত সম্মানের।

এই বছরটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ সারা পৃথিবী মহাত্মা গান্ধীর সার্ধ শতবার্ষিকী উদযাপন করছে।

বিশ্বের শান্তি, উন্নয়ন এবং প্রগতির জন্য তাঁর সত্য ও অহিংসার বাণী আজও আমাদের কাছে সমান প্রাসঙ্গিক।

মাননীয় সচিব,

এই বছর বিশ্বের বৃহত্তম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রে, সবথেকে বেশী ভোটদাতারা আমাকে ভোট দিয়েছে এবং আগের থেকে আরো বেশী জনমত নিয়ে আমার সরকার দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেছে, আর এই জনাদেশের জন্যই আমি আবারো আপনাদের সামনে এসেছি।

যদিও এই জনাদেশ আরো তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা বহন করে, যা অনুপ্রাণিত করবে।

মাননীয় সচিব,

যখন ৫ বছরে ১১ কোটির বেশি শৌচাগার নির্মাণের মাধ্যমে একটি বিকাশশীল রাষ্ট্র তার নাগরিকদের জন্য বিশ্বের সবথেকে বড় শৌচাগার প্রচার কর্মসূচি বাস্তবায়িত করে, তখন তা গোটা পৃথিবীর কাছে অনুপ্রেরণার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

যখন একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের ৫ কোটি মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য বছরে ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্হ্যবীমার আওতায় আসেন তখন সেই প্রকল্প সারা বিশ্বকে নতুন দিশা দেখায়।

যখন ৫ বছরের মধ্যে দরিদ্র মানুষেরা ৩৭ কোটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে একটি বিকাশশীল রাষ্ট্র বিশ্বের বৃহত্তম আর্থিক সমন্বয় প্রকল্প রূপায়িত করে, তখন তা সারা বিশ্বের দরিদ্র মানুষদের মধ্যে ভরসা জোগায়।

যখন একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্র বিশ্বের বৃহত্তম ডিজিটাল পদ্ধতিতে সনাক্তকরণ কর্মসূচি রূপায়ণের মাধ্যমে তার নাগরিকদের বায়োমেট্রিক সনাক্তকরণ পদ্ধতিতে তাঁদের অধিকার সুরক্ষিত করে, দুর্নীতি প্রতিরোধ করে ২ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের সমতুল অর্থ সাশ্রয় করে, তখন, বিশ্ব নতুন আশা দেখতে পায়।

মাননীয় সচিব,

আমি এই বাড়িতে ঢোকার সময় প্রবেশপথে একটি দেওয়ালে দেখলাম ‘আর নয় একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক’-এর একটি চিহ্ন আঁকা আছে। এই সভায় আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি ভারতকে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক থেকে মুক্ত করতে আমরা একটি বিরাট প্রচারাভিযান চালাচ্ছি।

আগামী ৫ বছরে জল সংরক্ষণ করে আমরা ১৫ কোটি বাড়িতে জল সরবরাহ নিশ্চিৎ করতে চলেছি।

আগামী ৫ বছরে আমরা ১ লক্ষ ২৫ হাজার কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ করবো।

২০২২ সালে ভারত যখন স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ উদযাপন করবে, আমরা পরিকল্পনা করেছি এই সময়ের মধ্যে দরিদ্রদের জন্য ২ কোটি গৃহ নির্মাণ করবো।

যদিও ২০৩০ সালের মধ্যে, বিশ্ব থেকে যক্ষ্মা রোগ নির্মূল করার পরিকল্পনা করা হয়েছে, ভারতে ২০২৫ সালের মধ্যে আমরা দেশ থেকে এই ব্যধি দূর করতে উদ্যোগী হয়েছি।

এখন প্রশ্ন উঠছে কিভাবে আমরা এই লক্ষপূরণ করবো। কিভাবে ভারতে এত দ্রুত পরিবর্তন আসবে ?

মাননীয় সচিব,

ভারতের সংস্কৃতি হাজার বছরের পুরানো। সেই সক্রিয় সংস্কৃতি, বিশ্বজুড়ে নানা স্বপ্নের বাস্তবায়নে পথ দেখায়। আমাদের মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি হল সকলের কল্যাণে একযোগে কাজ করা।

তাই জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনকল্যাণমূলক কর্মসূচী রূপায়ণ করা হল আমাদের প্রয়াস। আর এই জনকল্যাণমূলক উদ্যোগে শুধু ভারতই লাভবান হবেনা, সারা বিশ্ব উপকৃত হবে।

আর এসবের মধ্যেই আমরা আমাদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হই। এই আদর্শ হল ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস, সকলের বিশ্বাস অর্জনের মাধ্যমে উন্নয়ন। (সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস)।

আর এটিও শুধু ভারতের সীমানার মধ্যেই অবরুদ্ধ থাকবেনা, আমাদের উদ্দেশ্য কাউকে দয়াদাক্ষিণ্য দেখানো নয়, আমরা দায়িত্ববোধ থেকেই এই উদ্যোগগুলি নিয়ে থাকি।

আমাদের সমস্ত প্রয়াস ১৩০ কোটি ভারতবাসীর জন্য। কিন্তু যে স্বপ্নের মাধ্যমে আমরা এই উদ্যোগ রূপায়ণে ব্রতী হয়েছি, সেই একই স্বপ্ন সারা বিশ্ব দেখে। সব দেশ, সমাজ সেই স্বপ্নকে লালন করে।

উদ্যোগ আমাদের, কিন্তু তার সুফল পাবে সারা বিশ্ব। আর এর মাধ্যমে আমি বিশ্বাস করি ভারতের মতই বিভিন্ন দেশ তাদের মতো করে উন্নয়নমূলক কাজ করে চলেছে।

যখন আমি তাঁদের সুখ-দুঃখ, স্বপ্নের কথা জানতে পারি, আমি তখন সংকল্প নিয়ে থাকি, দেশের উন্নয়নকে কিভাবে আরো দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। যার মাধ্যমে ভারতের অভিজ্ঞতায় এই দেশগুলি উপকৃত হবে।

মাননীয় সচিব,

তিন হাজার বছর আগে বিশ্বের প্রাচীনতম ভাষা তামিলে, ভারতের মহান কবি পুঙ্গল-দ্রা-নার লিখেছিলেন :-

“ইয়া-দুম, ও-রে, ইয়াভ-রুম-কে-রির”

এর অর্থ সব জায়গা আমাদের সকলের জন্য

সীমানা ছাড়িয়ে এই ভাবনায় ভারত অনন্য। বিগত ৫ বছর ধরে রাষ্ট্রসঙ্ঘের মূল ভাবনা বজায় রেখে ভারত তার চিরাচরিত ঐতিহ্য মেনে সকল রাষ্ট্রের সঙ্গে একযোগে বিশ্বের উন্নয়নে কাজ করে চলেছে।

আন্তর্জাতিক স্তরে গুরুত্বপূর্ণ নানা সমস্যার সমাধানে ভারত নতুন মঞ্চ গড়েছে, যেখানে নানা বিষয় তুলে ধরা হচ্ছে।

মাননীয় সচিব,

আপনি খেয়াল করে দেখবেন, ভারতের মাথা পিছু কার্বন নিঃসরণের হার বেশ কম। কিন্তু এই সমস্যা মোকাবিলায় ভারত প্রথম সারিতে রয়েছে।

একদিকে আমরা যখন পুর্ননবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনে চারশো ৫০ গিগাওয়াট লক্ষমাত্রা ধার্য করেছি, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সৌরজোট গড়ার লক্ষে আমরা উদোগী হয়েছি।

বিশ্বজুড়ে উষ্ণায়ণের ফলে প্রাকৃতিক বিপর্যয় সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, আর এই বিপর্যয় নতুন জায়গায় নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করছে।

এই লক্ষে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবিলায় পরিকাঠামোর উন্নয়ণে ভারত “কোয়ালিশন ফর ডিজাস্টার রেজিলিয়ান্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার” গঠনে উদোগী হয়েছে।

মাননীয় সচিব,

রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তিরক্ষী মিশনে সবথেকে বেশী যে দেশের সৈনিকদের জীবন উৎসর্গ হয়েছে সেই দেশ হল ভারত। আমরা সেই দেশের মানুষ, যেই দেশ বিশ্বকে যুদ্ধ দেয়নি, বুদ্ধের শান্তির বাণী দিয়েছে।

আর সেই কারণেই আমরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার। গোটা বিশ্বকে এর বিপদ সম্পর্কে সাবধান করছি। আমরা বিশ্বাস করি এটি সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ, যেই সমস্যা কোন একটি দেশের মধ্যে আবদ্ধ নেই, সারা পৃথিবী এবং মানবতার কাছে যা বড় বিপদ।

সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় আমাদের মধ্যে একতা না থাকলে রাষ্ট্রসঙ্ঘের গঠনের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে।

আর তাই মানবিকতার কারণে, আমার দৃঢ় বিশ্বাস সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় সারা পৃথিবীকে একজোট হতে হবে।

মাননীয় সচিব,

বিশ্ব এখন দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে।

একবিংশ শতাব্দীতে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সামাজিক জীবন, ব্যক্তিগত জীবন, অর্থনীতি, নিরাপত্তা, যোগাযোগ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কে আমূল পরিবর্তন হচ্ছে।

এই পরিস্হিতিতে বিভাজিত বিশ্ব কারও স্বার্থ রক্ষা করবে না। রাষ্ট্রগুলির নিজেদের সীমানার মধ্যে আবদ্ধ হতে থাকার অবকাশ নেই।

এই নতুন যুগে বহুস্তরীয় ব্যবস্হা এবং রাষ্ট্রসঙ্ঘকে আমাদের নতুন উদ্যোগে নতুন দিশা দেখাতে হবে।

মাননীয় সচিব,

১২৫ বছর আগে মহান আধ্যাত্মিক গুরু স্বামী বিবেকানন্দ শিকাগোতে বিশ্বধর্ম মহাসভায় বার্তা দিয়েছিলেন ‘সৌহার্দ্য এবং শান্তি, অনৈক্য নয়।’

আজ বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে একই বার্তা দিচ্ছে ‘সৌহার্দ্য এবং শান্তি’।

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
5 Days, 31 World Leaders & 31 Bilaterals: Decoding PM Modi's Diplomatic Blitzkrieg

Media Coverage

5 Days, 31 World Leaders & 31 Bilaterals: Decoding PM Modi's Diplomatic Blitzkrieg
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister urges the Indian Diaspora to participate in Bharat Ko Janiye Quiz
November 23, 2024

The Prime Minister Shri Narendra Modi today urged the Indian Diaspora and friends from other countries to participate in Bharat Ko Janiye (Know India) Quiz. He remarked that the quiz deepens the connect between India and its diaspora worldwide and was also a wonderful way to rediscover our rich heritage and vibrant culture.

He posted a message on X:

“Strengthening the bond with our diaspora!

Urge Indian community abroad and friends from other countries  to take part in the #BharatKoJaniye Quiz!

bkjquiz.com

This quiz deepens the connect between India and its diaspora worldwide. It’s also a wonderful way to rediscover our rich heritage and vibrant culture.

The winners will get an opportunity to experience the wonders of #IncredibleIndia.”