প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী এবং ভারতের অন্যতম একজন শ্রদ্ধেয় নেত্রী শ্রীমতি সুষমা স্বরাজজীর প্রয়াণে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলী সভায় যোগ দেন। শ্রীমতি সুষমা স্বরাজজীকে এক কঠোর পরিশ্রমী নেত্রী হিসেবে বর্ণনা করে শ্রী মোদী বলেন, তিনি অক্লান্তভাবে দেশের সেবা করেছেন এবং জনজীবনের বিভিন্ন দিকগুলি তুলে ধরেছেন।
শ্রীমতি সুষমা স্বরাজজীর সঙ্গে যাঁরা ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে কাজ করতেন তাঁরা ছিলেন প্রত্যেকেই সৌভাগ্যবান।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্রীমতি স্বরাজজীর অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে কাজ করার জন্য আমরা সকলেই সৌভাগ্যবান। ‘সুষমাজী ছিলেন বহু প্রতিভাসম্পন্ন ব্যক্তিত্বের অধিকারী এবং যাঁরা তাঁর সঙ্গে কাজ করেছেন তারা প্রত্যেকেই সুষমাজীর অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ও ক্ষমতার সাক্ষী থেকেছেন’ বলেও প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন।
শ্রীমতি সুষমা স্বরাজজী কখনও চ্যালেঞ্জ নিতে দ্বিধাবোধ করতেন না
শ্রীমতি সুষমা স্বরাজজী কখনও চ্যালেঞ্জ নিতে দ্বিধাবোধ করতেন না বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী ১৯৯৯-এ বেল্লারি লোকসভা কেন্দ্র থেকে তাঁর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতার ব্যাপারে সিদ্ধান্তের কথা স্মরণ করেন। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে পড়ছে আমি এবং ভেঙ্কাইয়া নাইডুজি সুষমাজীর কাছে গিয়েছিলাম এবং তাঁকে কর্ণাটক থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতার জন্য বলেছিলাম। নির্বাচনের পরিণাম জানাই ছিল। কিন্তু তিনি এমন একজন ব্যক্তিত্ব, যিনি সর্বদাই চ্যালেঞ্জ গ্রহণে প্রস্তুত থাকতেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রীমতি সুষমা স্বরাজজী ছিলেন এক অসাধারণ বক্তা। তাঁর বাগ্মিতায় ছিল অন্যকে প্রভাবিত ও অনুপ্রাণিত করার এক অনন্য ক্ষমতা।
প্রোটোকল ভেঙে শ্রীমতি সুষমা স্বরাজজী পররাষ্ট্রমন্ত্রককে জনগণ বান্ধব করে তুলেছিলেন
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, শ্রীমতি সুষমা স্বরাজজী যে মন্ত্রকের দায়িত্বই তিনি সামলেছেন, সেখানেই কর্মসংস্কৃতিতে পরিবর্তন নিয়ে এসেছেন। ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রকে যে কেউ প্রথাগত প্রোটোকলের সাজুজ্য খুঁজে পাবেন কিন্তু সুষমাজী এক কদম এগিয়ে মন্ত্রককে জনগণ বান্ধব করে তুলেছিলেন’ বলে শ্রী মোদী অভিমত প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শ্রীমতি সুষমা স্বরাজজীর মেয়াদকালে পাসপোর্ট কার্যালয়ের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শ্রীমতি সুষমা স্বরাজজীর পাঁচ বছরের মেয়াদকালে দেশে পাসপোর্ট কার্যালয়ের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন।
শ্রীমতি সুষমা স্বরাজজীর কথাবার্তায় ছিল হরিয়ানভি উচ্চারণের ছাপ
শ্রীমতি স্বরাজজীর সম্পর্কে এক স্বল্প জানা দিকের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর উচ্চারণে ছিল হরিয়ানার ছাপ। শ্রী মোদী আরও বলেন, আমরা সাধারণত রাজনৈতিক দিক থেকে সঠিক বিষয়গুলি মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করি, কিন্তু সুষমাজী ছিলেন এদিক থেকে সম্পূর্ণ পৃথক। তিনি মনের কথা বলতে কখনও দ্বিধাবোধ করতেন না এবং যখন বলতেন, তখন দৃঢ়তার সঙ্গেই বলতেন। এদিক থেকে তিনি ছিলেন এক স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ব।
শ্রীমতি সুষমা স্বরাজজী এমনকি প্রধানমন্ত্রীকেও পরামর্শ দিতেন কি করতে হবে
রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভায় তাঁর প্রথম ভাষণ দেওয়ার আগে এক ঘটনার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে শ্রীমতি স্বরাজজী কিভাবে সাহায্য করেছিলেন এবং কি করতে হবে তা স্পষ্টভাবে জানিয়েছিলেন। রাষ্ট্রসঙ্ঘে তাঁর ভাষণের বক্তব্য প্রস্তুত করতেও শ্রীমতি স্বরাজজী তাকে সাহায্য করেছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
বাঁশুরির মধ্যে শ্রীমতি সুষমা স্বরাজজীর ছাপ
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রীমতি সুষমা স্বরাজের কন্যা বাঁশুরির মধ্যে তিনি শ্রীমতি স্বরাজের ছাপ দেখতে পেয়েছেন এবং তিনি তাঁর প্রয়াসের প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি সুষমা স্বরাজজীর স্বামী স্বরাজ কৌশল এবং কন্যা বাঁশুরির প্রতি তাঁর সমবেদনা প্রকাশ করেন।
এই প্রার্থনা সভায় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে উপস্হিত ছিলেন, অভদেশানন্দ গিরি মহারাজ, প্রাক্তন মন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী, সাংসদ পিনাকী মিশ্র, মন্ত্রী শ্রী রামবিলাস পাসওয়ান, সাংসদ সতীশ চন্দ্র মিশ্র, সাংসদ রাজীব রঞ্জন, সাংসদ তিরুচী শিবা, সাংসদ নাম্মা নাগেশ্বরা রাও, প্রাক্তন সাংসদ শারদ যাদব, মন্ত্রী অরবিন্দ সাওয়ন্ত, সাংসদ প্রেমচাঁদ গুপ্ত, সাংসদ অনুপ্রিয়া প্যাটেল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ্, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, ডঃ কৃষ্ণগোপাল, শ্রী জে পি নাড্ডা প্রমুখ।