প্রধানমন্ত্রীর প্রধান সচিব শ্রী পি কে মিশ্র আজ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলার বিষয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রক বৈঠকে পৌরোহিত্য করেন। প্রথম বৈঠকটি ২৫শে জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আজকের বৈঠকে সর্বশেষ পরিস্থিতির পর্যালোচনা করা হয়। এই বৈঠকে ক্যাবিনেট সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, স্বাস্থ্য, অসামরিক বিমান পরিবহণ, তথ্য ও সম্প্রচার, জাহাজ চলাচল ও পর্যটন দপ্তরের আধিকারিকরা ছাড়াও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, সীমান্ত ব্যবস্থাপনার সচিব সহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, সেনাবাহিনী, জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, নীতি আয়োগ এবং প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের পদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এই ভাইরাসের সংক্রমণের কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি হওয়া সত্ত্বেও ভারতের মতো বিপুল জনসংখ্যার দেশে তা প্রতিহত করার জন্য যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সকলে তার প্রশংসা করেছেন। একইসঙ্গে, রাজ্যগুলির সাথে সরকারি স্তরে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তা আরও প্রসারিত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা হয়েছে। গতকাল থেকে যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে তার মধ্যে একটি হল সমস্ত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং সমুদ্র বন্দরে সকলকে থার্মাল ইমেজরি ব্যবস্থার মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং বিদেশ থেকে আসা প্রত্যেক পর্যটককে একটি ফর্ম পূরণ করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ঐ ফর্মে তিনি বিদেশে কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন তা উল্লেখ করতে হবে। আমাদের স্থল বন্দরগুলির সুসংহত চেকপোস্টে পরীক্ষা করার জন্য যাবতীয় পন্থাপদ্ধতি সঠিকভাবে মেনে চলার জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার এবং জেলা প্রশাসনের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সমন্বয় বজায় রেখে চলেছে। ব্যুরো অফ ইমিগ্রেশন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে ন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স সেন্টার প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করবে।
বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় দেশের বিভিন্ন অংশে এবং জেলাস্তরে যথাযথ স্বাস্থ্য পরীক্ষা কেন্দ্র, আইসোলেশন ও কোয়ার্যান্টাইনের ব্যবস্থা দ্রুত করা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, রেল মন্ত্রক এবং শ্রম দপ্তর এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রককে তাদের পরিকাঠামো ও হাসপাতালের সুবিধা দিয়ে সহায়তা করবে।
সময়ে সময়ে সাধারণ মানুষের কাছে তথ্য পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে এবং কি করা উচিৎ ও করা উচিৎ নয় সে সম্পর্কে সচেতন করার জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রককে স্বাস্থ্য মন্ত্রক, মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক এবং এনডিএমএ-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে কাজ করতে বলা হয়ছে। সাধারণ মানুষের কাছে সর্বশেষ তথ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রক রোজ বিবৃতি প্রকাশ করবে। রোগের ভৌগোলিক অবস্থান জানার জন্য এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রক জিআইএস ম্যাপিং ব্যবস্থা চালু করা ও এনডিএমএ সহ অন্যান্য সরকারি দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয়সাধন করছে। ২৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ২৪ ঘন্টার হেল্পলাইনে এখনও পর্যন্ত ৬ হাজারটি ফোন এসেছে বলে জানানো হয়।
ভাইরাস প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণের অংশগ্রহণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি সংস্থাগুলির ব্যাপক অংশগ্রহণের বিষয়টিও ভাবা হয়েছে।
বড় জনসমাগম এড়াতে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা যে পরামর্শ দিয়েছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে কোন সম্মেলন বা আন্তর্জাতিক বৈঠক আয়োজনের আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি বলে বৈঠকে মত প্রকাশ করা হয়েছে।
উল্লেখ করা যেতে পারে, আজ প্রধানমন্ত্রী একটি ট্যুইটে জানিয়েছেন, “বিশ্ব জুড়ে বিশেষজ্ঞরা কোভিড-১৯ নোভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে বড় জমায়েত নিষেধ করায় আমি এ বছর কোন হোলি মিলন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবো না বলে স্থির করেছি।”