“সরকারের প্রতি বার বার আস্থা ব্যক্ত করায় আমি দেশের প্রতিটি নাগরিকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে এসেছি ’’
“বহু আইনি প্রস্তাব নিয়ে যতটা আলোচনা দরকার ছিল তা হয়নি, কারণ বিরোধীরা সেসবের চেয়ে রাজনীতিকেই ওপরে রেখেছেন ’’
“একবিংশ শতকের এই সময়কাল দেশের আগামী হাজার বছরের ভবিষ্যতের ওপর প্রভাব ফেলতে চলেছে। আমাদের একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে মনোযোগ দেওয়া উচিত।’’
“ ভারতের তরুণ প্রজন্মকে আমরা একটি দুর্নীতিমুক্ত সরকার উপহার দিয়েছি’’
“আজ নিজের স্বপ্নের বাস্তবায়নের প্রশ্নে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন দেশের দরিদ্র মানুষ’’
“বিরোধীরা মানুষের এই আস্থার আবহ প্রত্যক্ষ করতে পারছেন না, কারণ তাঁরা অবিশ্বাসের বাতাবরণে বিশ্বাসী ’’
“ ২০২৮-এ আপনারা যখন অনাস্থা প্রস্তাব আনবেন, তখন দেশ বিশ্ব তালিকায় প্রথম তিন-এর মধ্যে থাকবে’’
“বিরোধীরা নাম পরিবর্তনে আগ্রহী কিন্তু তাঁদের কর্মসংস্কৃতি পাল্টাতে ব্যর্থ’’
“স্বাধীনতা সংগ্রামীরা এবং দেশের পিতৃতুল্য প্রতিষ্ঠাতারা সবসময়ই পরিবারতন্ত্রের রাজনীতির বিরোধিতা করেছেন’’
“মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না এবং কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার দোষীদের শাস্তিবিধান নিশ্চিত করবে ’’
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় জবাবি ভাষণ দিলেন।
ঠিক একইভাবে বিরোধীদের আনা এবারের অনাস্থা প্রস্তাবও সরকারের কাছে সৌভাগ্যজনক হয়ে উঠবে। প্রধানমন্ত্রী প্রত্যয়ী যে এনডিএ এবং বিজেপি ২০২৪-এর নির্বাচনে সাধারণ মানুষের আর্শীবাদ পেয়ে নজিরবিহীন জয়লাভ করবে।
দেশের প্রায় ১৩ দশমিক ৫ কোটি মানুষ দারিদ্রের কবল থেকে মুক্তি পেয়েছেন বলেও নীতি আয়োগের প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
অবিশ্বাসের আবহে নিমজ্জিত বিরোধীরা আস্থার এই পরিবেশ প্রত্যক্ষ করতে পারছেন না এবং বিরোধীদের এই আচরণ উটপাখির সমতুল্য বলে প্রধানমন্ত্রী কটাক্ষ। কুভাষা প্রয়োগের প্রশ্নেও বিরোধীদের সমালোচনা করেন তিনি।
তাঁর তৃতীয় মেয়াদে ভারত বিশ্বের ৩টি বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের মধ্যে জায়গা করে নেবে বলে আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধীদের উচিত গঠনাত্মক আলোচনায় সামিল হওয়া। কিন্তু বাস্তবে ছবিটা ঠিক উল্টো। বিরোধীরা ভারতের ক্ষমতা সম্পর্কে আদৌ ওয়াকিবহাল নন।
স্বচ্ছ্ব ভারত, জনধন যোজনা, যোগ-আয়ুর্বেদ, স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া, ডিজিটাল ইন্ডিয়া, কিংবা মেক ইন ইন্ডিয়ার মতো কর্মসূচির প্রতিও নেতিবাচক মনোভাবে জারিত বিরোধীরা আস্থাশীল নন বলে প্রধানমন্ত্রীর কটাক্ষ।
বিরোধীদের জোটকে কটাক্ষ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নাম পাল্টে তাঁরা ভাগ্য পরিবর্তনে সফল হবেন না, পারবেন না নিজেদের কাজের ধারা বদলাতে। ওই জোট স্ববিরোধিতায় দীর্ণ বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘I.N.D.I.A’-র প্রথম আই হল ২৬ টি রাজনৈতিক দলের আত্মম্ভরিতা এবং দ্বিতীয় আই হল একটি পরিবারের আত্মম্ভরিতা।

    প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় জবাবি ভাষণ দিলেন। 
    সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বার বার সরকারের প্রতি আস্থা ব্যক্ত করায় তিনি দেশের প্রতিটি নাগরিককে কৃতজ্ঞতা জানাতে এসেছেন। এই অনাস্থা প্রস্তাব সরকারের কোনো পরীক্ষা নয়, বরং ২০১৮-তেও যাঁরা অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন তাঁদেরই পরীক্ষা। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ২০১৯-এর নির্বাচনে বিরোধীদের প্রতি অনাস্থা দেখিয়েছেন সাধারণ মানুষ। এনডিএ এবং বিজেপি জিতেছে আরো বেশি আসন। ঠিক একইভাবে বিরোধীদের আনা এবারের অনাস্থা প্রস্তাবও সরকারের কাছে সৌভাগ্যজনক হয়ে উঠবে। প্রধানমন্ত্রী প্রত্যয়ী যে এনডিএ এবং বিজেপি ২০২৪-এর নির্বাচনে সাধারণ মানুষের আর্শীবাদ পেয়ে নজিরবিহীন জয়লাভ করবে। 
    অধিবেশনের শুরু থেকে সভার কাজকর্মে বিরোধীরা যথাযথ আগ্রহ দেখালে ভালো হত বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। গত কয়েকদিনে গুরুত্বপূর্ণ নানা আইনি প্রস্তাব সভায় গৃহীত হয়েছে, কিন্তু রাজনীতিকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়ায় বিরোধীরা  সেসব নিয়ে আলোচনায় আগ্রহ দেখাননি। মৎস্যজীবী, দরিদ্র ও বঞ্চিত মানুষ, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কল্যাণ কিংবা ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা সংক্রান্ত এই সব বিল, বিরোধীদের কাছে কোনো গুরুত্বই পায়নি বলে তাঁর মন্তব্য। এই আচরণ দলকে দেশের ওপরে রাখার এক বিপজ্জনক প্রবণতা বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশের মানুষ বিরোধীদের কাজকর্মের ওপর নজর রাখছেন। মানুষকে হতাশ করেছেন বিরোধীরা। 
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসবই ঘটছে এমন একটা সময়ে যখন দেশ পুরনো প্রতিবন্ধকতা ঝেড়ে ফেলে নতুন উদ্যম ও প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে চলেছে। একবিংশ শতকের এই অধ্যায়টি আমাদের যাবতীয় আশা আকাঙ্খা পূরণের সময় বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সময়ে যা ঘটবে তা আমাদের দেশের ওপর প্রভাব ফেলে চলবে আগামী হাজার বছর ধরে। কাজেই আমাদের দায়িত্ব অনেকখানি এবং অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র হওয়া উচিত একটাই – দেশের বিকাশ এবং মানুষের স্বপ্নপূরণ। এই লক্ষ্যে পৌঁছনো সম্ভব মানুষের শক্তিকে পাথেয় করে। 
    প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ২০১৪-র পর পূর্ণ সংখ্যা গরিষ্ঠতায় বলিয়ান সরকার মানুষের স্বপ্নপূরণের চাবিকাঠি খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছে। দেশের তরুণ প্রজন্ম পেয়েছে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন। বিশ্বের দরবারে উজ্জ্বলতর হয়েছে ভারতের ভাবমূর্তি। অনাস্থা প্রস্তাব এনে বিরোধীরা মানুষের বিশ্বাস ভেঙে দেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করছেন। উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে প্রসারিত হয়েছে স্টার্টআপ বাস্তুতন্ত্র, এসেছে নজিরবিহীন বিদেশী বিনিয়োগ, রপ্তানির পরিমাণ পৌঁছেছে নতুন উচ্চতায়। দেশের প্রায় ১৩ দশমিক ৫ কোটি মানুষ দারিদ্রের কবল থেকে মুক্তি পেয়েছেন বলেও নীতি আয়োগের প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। 
    আইএমএফ-এর একটি প্রতিবেদন তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চরম দারিদ্র প্রায় নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছে ভারত। সরাসরি সুবিধা হস্তান্তর এবং আরো নানা কল্যাণমূলক প্রকল্প জাদুমন্ত্রের মতো কাজ করেছে। জলজীবন মিশন ৪ লক্ষ এবং স্বচ্ছ্ব ভারত অভিযান ৩ লক্ষ মানুষের প্রাণ রক্ষায় সহায়ক হয়েছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বহু দরিদ্র মানুষ শহরাঞ্চলের ঝুপড়িতে বসবাস করেন। ইউনিসেফকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী জানান, স্বচ্ছ্ব ভারত অভিযানের কল্যাণে দেশের দরিদ্র পরিবারগুলির বছরে ৫০ হাজার টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। 
অবিশ্বাসের আবহে নিমজ্জিত বিরোধীরা আস্থার এই পরিবেশ প্রত্যক্ষ করতে পারছেন না এবং বিরোধীদের এই আচরণ উটপাখির সমতুল্য বলে প্রধানমন্ত্রী কটাক্ষ। কুভাষা প্রয়োগের প্রশ্নেও বিরোধীদের সমালোচনা করেন তিনি। 
ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্র নিয়েও বিরোধীরা ভুয়ো খবর ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কগুলির নিট মুনাফা ২ গুণ বেড়েছে বলে জানান তিনি। আগের জমানায় এই ক্ষেত্র দুর্নীতির শিকার হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। HAL- নিয়েও বিরোধীরা অপপ্রচার চালিয়েছেন অথচ ওই সংস্থা সাফল্যের সোপান বেয়ে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং রেকর্ড রাজস্ব আয় করেছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। বিরোধীদের যাবতীয় অভিযোগ নস্যাৎ করে LIC দিনের পর দিন আরো শক্তিশালী হয়ে উঠছে বলে তাঁর মন্তব্য।
তাঁর তৃতীয় মেয়াদে ভারত বিশ্বের ৩টি বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের মধ্যে জায়গা করে নেবে বলে আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধীদের উচিত গঠনাত্মক আলোচনায় সামিল হওয়া। কিন্তু বাস্তবে ছবিটা ঠিক উল্টো। বিরোধীরা ভারতের ক্ষমতা সম্পর্কে আদৌ ওয়াকিবহাল নন। 
    ১৯৯১ নাগাদ ভারত দারিদ্রের ফাঁদে পড়ে দেউলিয়া হওয়ার দোরগোড়ায় পৌঁছেছিল বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪-র পর এই দেশ অর্থনৈতিক প্রশ্নে বিশ্ব তালিকায় প্রথম ৫ এর মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। এর পেছনে রয়েছে ‘সংস্কার, সম্পাদন এবং পরিবর্তন’-এর মন্ত্র। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে এবং ২০২৮-এ বিরোধীরা ফের অনাস্থা প্রস্তাব আনার সময় ভারত পৌঁছে যাবে প্রথম ৩ –এর মধ্যে। 
স্বচ্ছ্ব ভারত, জনধন যোজনা, যোগ-আয়ুর্বেদ, স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া, ডিজিটাল ইন্ডিয়া, কিংবা মেক ইন ইন্ডিয়ার মতো কর্মসূচির প্রতিও নেতিবাচক মনোভাবে জারিত বিরোধীরা আস্থাশীল নন বলে প্রধানমন্ত্রীর কটাক্ষ।     
    কংগ্রেস জমানায় কাশ্মীরে জঙ্গি অনুপ্রবেশের বাড়বাড়ন্তের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৎকালীন সরকার পাকিস্থানের তালে তাল মেলানো এবং শান্তি আলোচনার দ্বিমুখী নীতি নিয়ে চলেছে। কাশ্মীরের মানুষের চেয়ে তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল হুরিয়ত। সার্জিকাল স্ট্রাইক নিয়েও বিরোধীরা সরকারের পাশে থাকার বদলে শত্রুপক্ষের মিথ্যাচারেই আস্থা রেখেছেন বলে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য। 
    যারা ভারতের কুৎসা রটায় বিরোধীরা তাদেরই বিশ্বাস করেন বলে প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন ভারত খাদ্য নিরাপত্তার অভাবে ভুগতে চলেছে বলে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার অসত্য প্রতিবেদন ঘিরে বিরোধীরা নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে চেয়েছেন। করোনার সময় ভারতের তৈরি প্রতিষেধকের চেয়ে তারা বেশি ঝুঁকেছেন বিদেশি টিকার দিকে। বিরোধীরা ভারত এবং তার মানুষের প্রতি অনাস্থা দেখিয়ে এসেছেন আর দেশের মানুষের মনে  বিরোধীদের প্রতি আস্থা তলানিতে এসে ঠেকেছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন। 
    বিরোধীদের জোটকে কটাক্ষ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নাম পাল্টে তাঁরা ভাগ্য পরিবর্তনে সফল হবেন না, পারবেন না নিজেদের কাজের ধারা বদলাতে। ওই জোট স্ববিরোধিতায় দীর্ণ বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘I.N.D.I.A’-র প্রথম আই হল ২৬ টি রাজনৈতিক দলের আত্মম্ভরিতা এবং দ্বিতীয় আই হল একটি পরিবারের আত্মম্ভরিতা। 
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামীরা এবং পিতৃপ্রতিম দেশের প্রতিষ্ঠাতারা সনবসময়ই পরিবারতন্ত্রের রাজনীতির বিরোধিতা করে গেছেন। পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি সাধারণ মানুষের ক্ষতি করেছে এবং দেশমাতৃকার বহু কৃতী সন্তানকে অসম্মান করেছে। সংসদ ভবনে এই অবহেলিত কৃতী সন্তানদের ছবি বসেছে অকংগ্রেস সরকারের আমলে। তিনি তুলে ধরেন স্ট্যাচু অফ ইউনিটি এবং প্রধানমন্ত্রী সংগ্রহালয়ের প্রসঙ্গ- যা উৎসর্গীকৃত স্বাধীন ভারতের সব কজন প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে। সেখানে দলীয় রাজনীতির কোনো জায়গা নেই।
    ৩০ বছর পর পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় বলিয়ান একটি সরকার পরপর ২ বার নির্বাচিত হওয়ার পরেও বিরোধীরা দরিদ্র পরিবারের একজন সদস্যের প্রধানমন্ত্রীর কুর্শিতে বসা মেনে নিতে পারছেন না বলে প্রধানমন্ত্রী কটাক্ষ করেন। 
    প্রধানমন্ত্রী জনমোহিনী রাজনীতির তীব্র সমালোচনা করে বলেন, প্রতিবেশী অনেক দেশ চরম দুর্দশায় পড়েছে। অবাস্তব প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটের বৈতরণী পার হওয়ার প্রবনতায় আসলে বিপদে পড়েন সাধারণ মানুষ, কারণ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ অকুলান হয়ে ওঠে।
    মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধীরা কখনওই আলোচনায় আগ্রহ দেখাননি বলে অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি নিয়ে ধৈর্য সহকারে নিরপেক্ষ ও বিশদ বক্তব্য পেশ করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। সমস্যার সমাধানে আন্তরিকভাবে সচেষ্ট হয়েছেন তিনি। 
    মণিপুরের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখের এবং মহিলাদের প্রতি অপরাধ কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না বলে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট জানান। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্র ও ওই রাজ্যের সরকার একযোগে কাজ করবে বলে তিনি আশ্বাস দেন। মণিপুরে শান্তি ফিরবে বলে প্রধানমন্ত্রী বার্তা দিয়েছেন। সারাদেশ এবং আইনসভার পক্ষ থেকে তিনি  মণিপুরের মানুষ, বিশেষত মহিলাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। ওই রাজ্যকে বিকাশের পথে ফেরাতে সরকার চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখবে না বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দেন। 
    ভারতের ঐক্য ও অখণ্ডতা নিয়ে সংসদে বিরোধীদের তরফ থেকে যেসব মন্তব্য করা হয়েছে তার তীব্র সমোলোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই বক্তারা দেশভাগের জন্য দায়ীদের উত্তরসূরি। বন্দেমাতরমের প্রতিও তারা উপযুক্ত সম্মান দেখাননি।  
    উত্তর পূর্বাঞ্চল সম্পর্কিত ৩টি ঘটনার উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথমটি ১৯৬৬-র ৫ মার্চের – যেদিন মিজোরামের মানুষের ওপর হামলা চালাতে ব্যবহার করা হয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনাকে। দ্বিতীয়টি ১৯৬২-র –যখন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নেহেরু এক বেতার বার্তায় চিনের আগ্রাসনের সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্ব কার্যত তাঁদের কাঁধেই ঠেলে দিয়েছিলেন। ওই অঞ্চলের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছিলেন বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব রামমনোহর লোহিয়া- একথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা সদরের ৪০০টি রাত্রি অতিবাহিত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নিজে সেখানে গেছেন ৫০ বার। 
    প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, মণিপুরে সংঘাতের সূত্রপাত খুব সম্প্রতি হয়েছে বলে যে প্রচার চলছে তা ঠিক নয়। যাবতীয় সমস্যার মূল কারণ হল কংগ্রেস এবং তার রাজনীতি। কংগ্রেস জমানায় মণিপুরে প্রশাসন চলত চরমপন্থী বিভিন্ন সংগঠনের অঙ্গুলিহেলনে এবং সরকারি দফতরে মহাত্মা গান্ধীর ছবি রাখা বারণ ছিল। মৈরাং-এ আজাদ হিন্দ ফৌজের সংগ্রহালয়ে নেতাজি সুভাষ চন্দ্রের মূর্তির ওপর বোমা ফেলা হয়েছিল। মণিপুরের স্কুলগুলিতে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া মানা ছিল। গ্রন্থাগারে বই পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। কংগ্রেস জমানায় ওই সব এলাকায় চরমপন্থীদের এতটাই বাড়বাড়ন্ত ছিল যে মন্দিরের দরজা বন্ধ হয়ে যেত বিকেল ৪টেয়। ইম্ফলে ইস্কনের মন্দিরে বোমায় প্রাণ হারিয়েছিলেন বহু মানুষ এবং সরকারি আধিকারিকদের জঙ্গিদের হাতে টাকা তুলে দিয়ে নিরাপত্তা কিনতে হত। 
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আগামী দিনগুলিতে উত্তর পূর্বাঞ্চল বিকাশের একটি কেন্দ্র হয়ে উঠতে চলেছে। আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনায় যে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে তার প্রভাব পড়বে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া এবং আশিয়ান দেশগুলির ওপরে। বাদ পড়বে না ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চল। এজন্যই তাঁর সরকার উত্তর পূর্বের উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। ওই অঞ্চলে পরিকাঠামো খাতে বিনিয়োগের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আধুনিক মহাসড়ক, রেলপথ এবং বিমানবন্দর উত্তর পূর্বাঞ্চলের বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠছে। আগরতলা রেল সংযোগের আওতায় এসেছে প্রথমবার। মণিপুরে পণ্যবাহী ট্রেন পরিষেবা চালু হওয়ার ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে। শুধু তাই নয়, উত্তর পূর্বে চালু হয়ে গেছে বন্দে ভারত ট্রেন। অরুণাচল প্রদেসে তৈরি হয়েছে প্রথম গ্রীণফিল্ড বিমানবন্দর। সিকিম এসেছে বিমান সংযোগের আওতায়। উত্তর পূর্বে চালু হয়েছে প্রথম এইমস। মণিপুরে খোলা হয়েছে জাতীয় ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয়, মিজোরামে ইন্ডিয়ান ইন্সস্টিটিউট অফ মাস কমিউনিকেশন। মন্ত্রিসভায় উত্তর পূর্বাঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব বেড়েছে। প্রথমবার রাজ্যসভায় এসেছেন নাগাল্যান্ডের একজন মহিলা সাংসদ। পদ্মপুরস্কার প্রাপকদের তালিকায় উত্তর পূর্বাঞ্চলের এত বেশি মাত্রায় প্রতিনিধিত্ব আগে কখনও দেখা যায়নি। সাধারণতন্ত্র দিবসের উদযাপনে সম্মানিত করা হয়েছে উত্তর পূর্বের কৃতী সন্তান বীর লাচিত বরফুকনকে। রানি গাইডিনলিউ-র জীবন ও অবদানের ওপর তৈরি হয়েছে সংগ্রহশালা। 
সবকা সাথ সবকা বিশ্বাস- তাঁর এবং তাঁর সহযোগীদের কাছে শুধুমাত্র একটি স্লোগান নয়, বিশ্বাস ও ধারণার এক ভিত্তি, একথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। 
তিনি বলেন, সংসদ কোনো একটি রাজনৈতিক দলের আঙিনা বা পরিসর নয়।  তা হল দেশের সর্বোচ্চ মঞ্চ। এবিষয়টি প্রত্যেক সাংসদের গুরুত্ব দিয়ে ভাবা উচিত। তেমনটা না হলে রাজনীতি চালানো যেতে পারে, কিন্তু দেশ চলবে না। 
বিগত ৯ বছরে দেশের সাধারণ মানুষের আত্মবিশ্বাস নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন। আজকের ভারত চাপের কাছে নতিস্বীকার করে না বলে তাঁর মন্তব্য। দেশের মানুষের প্রতি আস্থা এবং অঙ্গীকারকে পাথেয় করে এগিয়ে চলার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে উঠলে সারা বিশ্ব ভারতের প্রতি সম্ভ্রমের দৃষ্টিতে তাকাবে। 
গত কয়েক বছরে সরকার বিকশিত ভারতের ভিত্তি স্থাপনে সফল হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। ২০৪৭ নাগাদ ভারত উন্নত দেশের তকমা পেয়ে যাবে বলে তিনি প্রত্যয়ী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, একতার মন্ত্রকে সামনে রেখে ভারত বহু নেতিবাচক পরিস্থিতি পেরিয়ে এসেছে। রাজনৈতিক স্বার্থে মণিপুরের মাটিকে ব্যবহার না করার জন্য তিনি রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি আহ্বান জানান। সেখানকার মানুষের যন্ত্রণা অনুভব করা এবং পুনরুজ্জীবন ও বিকাশের পথে এগিয়ে যাওয়াতেই রয়েছে সমাধান সূত্র- একথা বলেন তিনি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Click here to read full text speech

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Income inequality declining with support from Govt initiatives: Report

Media Coverage

Income inequality declining with support from Govt initiatives: Report
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Chairman and CEO of Microsoft, Satya Nadella meets Prime Minister, Shri Narendra Modi
January 06, 2025

Chairman and CEO of Microsoft, Satya Nadella met with Prime Minister, Shri Narendra Modi in New Delhi.

Shri Modi expressed his happiness to know about Microsoft's ambitious expansion and investment plans in India. Both have discussed various aspects of tech, innovation and AI in the meeting.

Responding to the X post of Satya Nadella about the meeting, Shri Modi said;

“It was indeed a delight to meet you, @satyanadella! Glad to know about Microsoft's ambitious expansion and investment plans in India. It was also wonderful discussing various aspects of tech, innovation and AI in our meeting.”