মহামান্য প্রেসিডেন্ট উইডোডো,
বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ,
নমস্কার,
আরও একবার পূর্ব এশিয়া শিখর সম্মেলনে যোগ দিতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে। আমি প্রেসিডেন্ট উইডোডো-কে তাঁর অসামান্য নেতৃত্বের জন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। এই সম্মেলনে পর্যবেক্ষক হিসেবে টিমর-লেস্টের প্রধানমন্ত্রী শানানা গুসমাও-কে আমি আন্তরিক স্বাগত জানাচ্ছি।
পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলন এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ। ভারত – প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কৌশলগত বিষয়ে আলোচনা ও সহযোগিতার এটিই একমাত্র ব্যবস্থাপনা, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন এখানকার নেতারা। এছাড়া, এশিয়ার আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও এর এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আশিয়ান কেন্দ্রিকতা হ’ল এর সাফল্যের চাবিকাঠি।
মহামান্য, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ,
ভারত – প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আসিয়ানের দৃষ্টিভঙ্গীকে ভারত সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করে। এক্ষেত্রে ভারত ও আসিয়ানের দৃষ্টিভঙ্গী অভিন্ন। পূর্ব এশিয়া শিখর সম্মেলন ভারত – প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়নের এক গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ। চতুর্দেশীয় অক্ষরেখা বা কোয়াডের ক্ষেত্রেও আসিয়ান কেন্দ্রীয় ভূমিকায় রয়েছে। আসিয়ানের বিভিন্ন ব্যবস্থাপনার পরিপূরক হ’ল – কোয়াডের ইতিবাচক কর্মসূচি।
মহামান্য, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ,
বর্তমান বিশ্বের চালচিত্র নানা অনিশ্চয়তা ও প্রতিকূলতায় পরিপূর্ণ। সন্ত্রাসবাদ, উগ্রপন্থা ও ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব আমাদের সকলের কাছে এক বড় চ্যালেঞ্জ। এর মোকাবিলায় বহুপাক্ষিকতা এবং নিয়মনিষ্ঠ আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা অপরিহার্য।
আন্তর্জাতিক আইনসমূহ যে অবশ্যমান্য, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সব দেশের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখন্ডতাকে শক্তিশালী করতে সকলের অঙ্গীকার ও যৌথ প্রয়াসও প্রয়োজন। আমি আগেও বলেছি যে, বর্তমান যুগ যুদ্ধের নয়, আলোচনা ও কূটনীতিই সমাধানের একমাত্র পথ।
মহামান্য, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ,
আসিয়ানের দৃষ্টিভঙ্গী বিবেচনা করেই ভারত মায়ানমার সংক্রান্ত নীতি প্রণয়ন করেছে। একই সঙ্গে, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে সীমান্তে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ভারত – আসিয়ান সংযোগ বাড়ানোও আমাদের লক্ষ্য। ভারত – প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধি আমাদের সকলেরই স্বার্থ রক্ষা করবে।
আজ আমাদের এমন এক ভারত – প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গড়ে তুলতে হবে, যেখানে ইউএনসিএলওএস সহ আন্তর্জাতিক আইনসমূহ সব দেশের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হবে; যেখানে নৌ ও বিমান চলাচলের স্বাধীনতা থাকবে এবং যেখানে সকলের সুবিধার্থে নিরবচ্ছিন্ন বৈধ বাণিজ্য করা যাবে। ভারত মনে করে যে, ইউএনসিএলওএস - এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দক্ষিণ চীন সাগরে আচরণবিধি কার্যকর হওয়া উচিৎ। আলোচনায় যেসব দেশ সরাসরি যোগ দিতে পারেনি, তাদের স্বার্থের কথাও বিবেচনা করা উচিৎ।
মহামান্য, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ,
জলবায়ু পরিবর্তন, সাইবার নিরাপত্তা, খাদ্য সুরক্ষা, স্বাস্থ্য ও জ্বালানী সংক্রান্ত সমস্যাগুলি বিশেষভাবে দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলির উপর প্রভাব ফেলছে। জি-২০’তে আমাদের সভাপতিত্বকালে আমরা এইসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির উপর মনোযোগ দিয়েছি।
মহামান্য, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ,
আমি পূর্ব এশিয়া শিখর সম্মেলনের প্রক্রিয়ায় ভারতের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি। পরবর্তী সভাপতি হিসেবে লাও পিডিআর-কে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি এবং তাঁদের ভারতের পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দিচ্ছি।
ধন্যবাদ।