![Quote](https://staticmain.narendramodi.in/images/quoteIconArticle.jpg)
![Quote](https://staticmain.narendramodi.in/images/quoteIconArticle.jpg)
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে মধ্যপ্রদেশ রোজগার মেলায় ভাষণ দিয়েছেন।
সমাবেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আজ যাঁরা নিয়োগপত্র পাচ্ছেন, তাঁরা এই ঐতিহাসিক সময়ে শিক্ষকতার মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে যোগ দিচ্ছেন। দেশের উন্নয়নে জাতীয় চরিত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লার প্রাকার থেকে যে ভাষণ দিয়েছিলেন সে বিষয়ে আলোকপাত করে বলেন, আজ যাঁরা চাকরি পাচ্ছেন তাঁরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তৈরি করবে, তাঁদের আধুনিক করে তুলবে এবং তাঁদের এক নতুন দিশা দেখাবে। এই রোজগার মেলার মাধ্যমে আজ মধ্যপ্রদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি শিক্ষক নিয়োগপত্র পেয়েছেন, তাঁদের শুভেচ্ছাও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, যে গত তিন বছরে মধ্যপ্রদেশ সরকার প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করেছে। এই কৃতিত্বের জন্য রাজ্য সরকারকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।
নবনিযুক্ত চাকরিপ্রাপ্তরা জাতীয় শিক্ষানীতির বাস্তবায়নে মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন এবং এক উন্নত ভারত গঠনের অবদান রাখবেন বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ঐতিহ্যগত জ্ঞানের পাশাপাশি ভবিষ্যতের প্রযুক্তিকে সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন যে প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রেও একটি নতুন পাঠ্যক্রম প্রণয়ন করা হয়েছে। মাতৃভাষায় শিক্ষাদানে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। ইংরেজি না জানা শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষায় শিক্ষা না দিয়ে যে অবিচার হয়েছে সেকথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকার পাঠ্যক্রমে আঞ্চলিক ভাষার বইয়ের উপর জোর দিচ্ছে, যার উপর ভিত্তি করে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে।
“যখন ইতিবাচক চিন্তাভাবনা, সঠিক উদ্দেশ্য এবং পূর্ণ সততার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তখন সামগ্রিক পরিস্থিতি ইতিবাচক হয়ে ওঠে”, সেকথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমৃতকালের প্রথম বছরে দুটি ইতিবাচক খবর সামনে এসেছে, তা হল দারিদ্র্য হ্রাস পেয়েছে এবং দেশ উন্নতি করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন প্রথমত, নীতি আয়োগের প্রতিবেদন সামনে এসেছে। যেখানে বলা হয়েছে মাত্র ৫ বছরে দেশে ১৩.৫ কোটি ভারতীয় দারিদ্র্য সীমার উপরে উঠে এসেছে। দ্বিতীয়ত, প্রধানমন্ত্রী এবছরে আয়কর দাখিলের পরিসংখ্যান সম্পর্কে আরও একটি প্রতিবেদনের উপরে আলোকপাত করেন। সেখানে বলা হয়েছে, গত ৯ বছরে জনগণের গড় আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। আইটিআর তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেখানে ২০১৪ সালে গড় আয় ছিল প্রায় ৪ লক্ষ, ২০২৩ সালে তা বেড়ে ১৩ লক্ষ হয়েছে। তিনি আরও জানান যে, নিম্ন আয় গোষ্ঠী থেকে উচ্চ আয় গোষ্ঠীতে উন্নীত হওয়া লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই পরিসংখ্যানগুলি কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি এবং নিরন্তর উৎসাহের সঙ্গে দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করে তোলার নিশ্চয়তা দান করে।
আয়কর দাখিলের নতুন পরিসংখ্যান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁদের সরকারের প্রতি দেশের নাগরিকের আস্থা ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, এই কারণে নাগরিকরা সততার সঙ্গে আয়কর দাখিলে এগিয়ে এসেছেন। কারণ তাঁরা জানে যে, তাঁদের আয়করের প্রতিটি পয়সা দেশের উন্নয়নে ব্যয় করা হচ্ছে। এমনকি নাগরিকদের কাছে এও স্পষ্ট হয়েছে যে, ২০১৪ সালের আগে দেশের অর্থনীতি দশম স্থানে ছিল, তা এখন পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী আরও জানান যে, দেশের নাগরিকরা ২০১৪ সালের আগের সময়কালকে ভুলতে পারে না। তখন দুর্নীতিতে ভরে ছিল। তখন গরিবদের কাছে তাঁদের আধিকার পৌঁছনোর আগেই চুরি হয়ে যেতো। শ্রী মোদী বলেন, “আজ দরিদ্রদের প্রাপ্য সমস্ত অর্থ সরাসরি তাঁদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাচ্ছে।”
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি বন্ধ হওয়ায় সরকার দরিদ্রদের কল্যাণে ব্যয় বৃদ্ধিতে সক্ষম হয়েছে। তিনি আরও জানান যে, বৃহৎ পরিমাণে বিনিয়োগ দেশের প্রতিটি প্রান্তে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। এপ্রসঙ্গে তিনি কমন সার্ভিস সেন্টারের উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি জানান, ২০১৪ সাল থেকে ৫ লক্ষ নতুন কমন সার্ভিস সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। এই ধরনের প্রতিটি কেন্দ্র আজ বহু লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। তিনি বলেন, “এর অর্থ দরিদ্র মানুষ এবং গ্রামের কল্যাণের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।”
শ্রী মোদী বলেন, শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে গৃহীত সুদূরপ্রসারী নীতি এবং সিদ্ধান্ত এখন কাজ করতে শুরু করেছে। স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লার প্রাকার থেকে পিএম বিশ্বকর্মা যোজনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্প সুনির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন। তিনি জানান, পিএম বিশ্বকর্মা যোজনা বিশ্বকর্মাদের ঐতিহ্যগত দক্ষতাকে ২১ শতকের প্রয়োজনের সঙ্গে খাপখাইয়ে নিতে সাহায্য করবে। শ্রী মোদী আরও বলেন, এক্ষেত্রে ১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। এর ফলে ১৮টি বিভিন্ন ধরনের দক্ষতার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা উপকৃত হবেন। এই প্রকল্পটি সমাজের সেই অংশের মানুষকে উপকৃত করবে যাঁদের নিয়ে এতদিন শুধু আলোচনাই হয়েছে, কিন্তু তাঁদের অবস্থার উন্নতিতে সমন্বিত প্রয়াস নেওয়া হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বকর্মা যোজনার আওতায় প্রশিক্ষণের সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক সরঞ্জাম কেনার জন্য সুবিধাভোগীদের আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, “প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনার মাধ্যমে যুবরা তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ পাবেন।”
ভাষণের পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাঁরা আজ শিক্ষক হিসেবে কাজে যোগ দিচ্ছেন, তাঁরা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে এখানে পৌঁছেছেন। তাঁদের শিক্ষা গ্রহণের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। সরকারের তৈরি অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম - IGoT কর্মযোগী বিষয় তুলে ধরে তিনি নব নিযুক্তের এর সুবিধা গ্রহণের আহ্বান জানান।