প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও মেসেজের মাধ্যমে কাড়ওয়া পতিদার সমাজের শততম বার্ষিকীতে ভাষণ দিয়েছেন।
সমাবেশের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী সনাতনী শতাব্দী মহোৎসব উপলক্ষে তাঁর শুভেচ্ছা জানান এবং বলেন যে এই প্রথম তিনি জগৎগুরু শঙ্করাচার্য স্বামী সদানন্দ সরস্বতীরজির উপস্থিতিতে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাড়ওয়া পতিদার সমাজের সমাজ সেবার ১০০ বছরের সঙ্গে সুন্দরভাবে সমাপতন হয়েছে যুব শাখার ৫০ বছর এবং মহিলা শাখার ২৫ বছরের। শ্রী মোদী বলেন, সমাজের যুব সমাজ এবং মহিলারা যখন তাঁদের কাঁধে দায়িত্ব তুলে নেন, তখন সাফল্য এবং অগ্রগতি নিশ্চিত।
প্রধানমন্ত্রী শ্রী অখিল ভারতীয় কচ্ছ কাড়ওয়া পতিদার সমাজের যুব ও মহিলা শাখার স্পষ্ট বিশ্বস্ততার কথা তুলে ধরে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ধন্যবাদ জানান কাড়ওয়া পতিদার সমাজকে তাঁকে সনাতনী শতাব্দী মহোৎসবের পরিবারের অঙ্গ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য। শ্রী মোদী বলেন, “সনাতন শুধুমাত্র একটা শব্দ নয়, এটি চির নবীন, চির পরিবর্তনশীল। এর অন্তর্লীন আকাঙ্ক্ষা আছে অতীতের থেকে আরও বেশি উন্নততর হওয়ার এবং সেজন্যই যে তিনি চিরন্তন ও অমর।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যে কোনও দেশের যাত্রাপথ প্রতিপালিত হয় সমাজের যাত্রাপথে।” তিনি বলেন, পতিদার সমাজের ১০০ বছরের পুরনো ইতিহাস এবং শ্রী অখিল ভারতীয় কচ্ছ কাড়ওয়া সমাজের ১০০ বছরের যাত্রা তার ভবিষ্যৎ দৃষ্টি নিয়ে, সেটি ভারত এবং গুজরাটকে বোঝার একটি মাধ্যম। কয়েকশ’ বছর ধরে ভারতীয় সমাজের ওপর বিদেশি শক্তির হামলা তাঁদের পরিচয়কে মুছে ফেলতে পারেনি এবং তাঁদের বিশ্বাসকে টুকরো টুকরো করতে পারেনি। শ্রী মোদী বলেন, “আমরা বহু শতাব্দী আগের আত্মবিসর্জনের প্রভাব দেখতে পাচ্ছি বর্তমান প্রজন্মের এই সফল সমাজে।” তিনি বলেন, কচ্ছ কাড়ওয়া পতিদার সম্প্রদায় তাঁদের শ্রম ও দক্ষতা দিয়ে কাঠ, প্লাইউড, হার্ডওয়্যার, মার্বল, বাড়ি তৈরির মাল-মশলা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে চলেছে। তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন যে, বহু বছরের শ্রদ্ধা এবং সম্মান গড়ে উঠেছে বছরের পর বছর ধরে। তিনি বলেন, এই সমাজ তার বর্তমানকে তৈরি করেছে এবং ভবিষ্যতের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছে।
নিজের রাজনৈতিক জীবন এবং সমাজের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বিভিন্ন বিষয়ে কাড়ওয়া পতিদার সমাজের সঙ্গে তাঁর কাজের কথা। কচ্ছ ভূমিকম্পে কিভাবে এই সম্প্রদায় তাঁদের ত্রাণ ও পুনর্নিমাণের কাজ চালিয়েছে। এই বিষয়টি তাঁর মনে আত্মবিশ্বাস যুগিয়েছে। সারা দেশের মধ্যে এক সময় সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া দেশের অন্যতম ছিল কচ্ছ যেখানে জল ছিল না, মানুষ অনাহারে থাকত, প্রাণীর মৃত্যু ঘটত, পরিযায়ী সমস্যা ছিল – এগুলিই তার পরিচয় হয়ে উঠেছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কিন্তু পরবর্তী কয়েক বছরে আমরা কচ্ছ-কে জাগিয়ে তুলেছি।” তিনি বলেন, কচ্ছ-এর জল সঙ্কটের সমাধান করতে আমরা কাজ করেছি, বিশ্বের একটি পর্যটন স্থল হিসেবে গড়ে তুলেছি এবং এটি ‘সবকা প্রয়াস’-এর একটি বড় উদাহরণ। শ্রী মোদী আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমানে কচ্ছ দ্রুত অগ্রগতিসম্পন্ন জেলা হিসেবে পরিচিত। প্রধানমন্ত্রী এখানকার উন্নত যোগাযোগ, বড় শিল্প এবং এই অঞ্চল থেকে কৃষিপণ্যের রপ্তানির উদাহরণ দেন।
শ্রী অখিল ভারতীয় কচ্ছ কাড়ওয়া পতিদার সমাজকে যাঁরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, সেইসব মানুষের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত যোগাযোগ এবং নারায়ণ রামজি লিম্বানির অনুপ্রেরণার ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি সব সময় এই সমাজের কাজ এবং অভিযান সম্পর্কে অবহিত থাকেন। করোনাকালে এই সমাজের অভিনন্দনযোগ্য কাজের তিনি প্রশংসা করেন। শ্রী মোদী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন যে এই সমাজ আগামী ২৫ বছরের দর্শন এবং সঙ্কল্প তুলে ধরেছে যা পূর্ণ হবে দেশ যখন স্বাধীনতার শতবর্ষ পূর্ণ করবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামাজিক সম্প্রীতিই হোক কিংবা পরিবেশ এবং জৈব চাষ, সেই সম্পর্কে যে সঙ্কল্প নেওয়া হয়েছে তা দেশে অমৃত সঙ্কল্পের সঙ্গেই যুক্ত। ভাষণের শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রী অখিল ভারতীয় কচ্ছ কাড়ওয়া সমাজের প্রয়াস দেশের সঙ্কল্প পূরণে শক্তি যোগাবে এবং দেশকে সাফল্যের পথে নিয়ে যাবে।