প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মরুভূমিতে রূপান্তর, জমির অনুর্বরতা ও খরা প্রতিরোধের বিষয়ে রাষ্ট্রসংঘের উচ্চপর্যায়ের আলোচনার মূল ভাষণ দিয়েছেন। রাষ্ট্রসংঘের মরুভূমিতে রূপান্তর প্রতিহত করার কনভেনশন (ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন টু কমব্যাট ডেজার্টিফিকেশন – ইউএনসিসিবি) -এর অংশীদারদের সম্মেলনের চতুর্দশ অধিবেশনে সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য পেশ করেছেন।
সব জীবন ও জীবিকাকে ভূমি মৌলিক সহায়তা জোগায় বলে উল্লেখ করে জমি ও সম্পদের উপর যে বিপুল চাপ রয়েছে, শ্রী মোদী তা প্রশমনে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “ স্পষ্টতই আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। আমরা সেটা করতে পারি। আর আমরা একসঙ্গে এটা করবো।”
জমির অনুর্বরতা রোধে ভারত কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী সে বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক ফোরামে ভারত জমির অনুর্বরতার সমস্যাটিকে তুলে ধরেছে। ২০১৯ সালের দিল্লি ঘোষণা জমির উপর ন্যস্ত দায়িত্ব এবং আরো বেশি অধিকারের আহ্বান জানিয়েছে এবং লিঙ্গ সংবেদী সংস্কারমূলক প্রকল্পের উপর গুরুত্ব দিয়েছে। ভারতে বিগত ১০ বছরে প্রায় ৩০ লক্ষ হেক্টর জমিতে বনসৃজন হয়েছে। এর ফলে দেশের মোট ভূমির এক চতুর্থাংশে বনাঞ্চল গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে বলে শ্রী মোদী জানান।
প্রধানমন্ত্রী জানান, জমির অনুর্বরতা দূর করে অম্ল ক্ষারের সমতা আনার বিষয়ে আমরা আমাদের জাতীয় অঙ্গীকার অর্জন করতে চলেছি। “২০৩০ সালের মধ্যে ২ কোটি ৬০ লক্ষ হেক্টর জমিকে উর্বর করে তোলার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে আড়াইশো থেকে তিনশো কোটি টন অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ কমানোর যে প্রতিশ্রুতি ভারত দিয়েছে, সেই লক্ষ্য অর্জিত হবে”।
প্রধানমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে গুজরাটের কচ্ছের রণের বন্নি অঞ্চলের উদাহরণ দিয়েছেন। জমির উর্বরতা ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে মাটির সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত হয়, জমির উর্বরতা ও খাদ্য সুরক্ষা বাড়ায় এবং জীবিকার মানোন্নয়ন ঘটায়। এই অঞ্চলে জমির উর্বরতা ফিরিয়ে আনার জন্য ঘাস জমির ব্যবস্থা করা হয়। যার ফলে জমির অনুর্বরতার সমস্যা প্রাকৃতিকভাবে দূর হয়। এর সাহায্যে পশুচারণ ক্ষেত্র গড়ে ওঠে এবং পশুপালনকে জীবিকা হিসেবে মানুষ গ্রহণ করে। শ্রী মোদী বলেছেন, “একই মানসিকতায় আমাদের দেশীয় প্রযুক্তির সাহায্যে জমির উর্বরতা ফিরিয়ে আনতে ফলপ্রসূ কৌশল গ্রহণ করতে হবে”।
দক্ষিণ - দক্ষিণ সহযোগিতার মাধ্যমে ভারত, বন্ধুভাবাপন্ন উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলিকে জমির উর্বরতা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় কৌশল গ্রহণে সাহায্য করছে। বিজ্ঞান সম্মত পদ্ধতিতে জমির উর্বরতা ফিরিয়ে আনার জন্য ভারতে একটি উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন। তিনি তার ভাষণের শেষে বলেছেন, “মানুষের কাজের জন্য জমির যে ক্ষতি হয়েছে, সেটিকে পূরণ করে বিপরীত দিকে এগিয়ে চলা সমগ্র মানব জাতির সমষ্টিগত দায়িত্ব। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুন্দর এক পৃথিবী রেখে যাওয়া আমাদের পবিত্র কর্তব্য।“
সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন