মহামান্য রাষ্ট্রনায়কগণ,
আমি আরও একবার আপনাদের সকলের বহুমূল্য ভাবনার প্রশংসা করতে চাই। আপনারা সবাই যেভাবে খোলা মন নিয়ে নিজেদের বক্তব্য পেশ করেছেন, তার জন্য আমি অন্তর থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।
আমরা ‘নতুন দিল্লি ডিক্লারেশন’-এ বেশ কিছু ক্ষেত্রে সমবেত দায়বদ্ধতা প্রকাশ করেছিলাম।
আজ আমরা সেই দায়বদ্ধতাগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আরও একবার সঙ্কল্প গ্রহণ করেছি।
আমরা উন্নয়নমূলক পরিকল্পনাগুলি ছাড়াও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি আর সেগুলির আর্থিক এবং সামাজিক প্রভাব নিয়ে পরস্পরের মতামত শুনেছি ও বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
পশ্চিম এশিয়ার কঠিন পরিস্থিতি নিয়ে আপনাদের সকলের বক্তব্য শোনার পর বলতে পারছি যে জি-২০-তে অনেক বিষয় নিয়ে মতৈক্য রয়েছে।
প্রথমত, আমরা সবাই সন্ত্রাসবাদ এবং হিংসাকে কঠোরভাবে নিন্দা জানিয়েছি। ‘দিস ইজ জিরো টলারেন্স টু টেরোরিজম’। অর্থাৎ, সন্ত্রাসবাদকে আমরা কেউ সহ্য করব না।
দ্বিতীয়ত, অসহায় এবং নিরপরাধ মানুষের বিশেষ করে, শিশু ও মহিলাদের মৃত্যু একেবারেই মেনে নেওয়া হবে না।
তৃতীয়ত, মানবিক সহায়তা যত দ্রুত সম্ভব কার্যকরভাবে এবং নিরাপদভাবে পৌঁছে দিতে হবে।
চতুর্থত, ‘হিউম্যানিটেরিয়ান পজ’ বা যুদ্ধে মানবিক বিরতি নিয়ে আমরা সবাই সহমত, আর যুদ্ধবন্দীদের মুক্তির খবরকে স্বাগত জানিয়েছি।
পঞ্চমত, ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইনের বিবাদকে ‘টু স্টেট সলিউশন’-এর মাধ্যমে স্থায়ী সমাধানের পথে নিয়ে যাওয়া জরুরি।
ষষ্ঠত, আঞ্চলিক শান্তি এবং স্থৈর্য বহাল করা অত্যন্ত প্রয়োজন।
আর সপ্তমত, কূটনীতি এবং আলাপ-আলোচনাই ভূ-রাজনৈতিক সমস্ত অস্থিরতা দূর করার একমাত্র পথ।
এক্ষেত্রে জি-২০ সমস্ত ধরনের সম্ভাব্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত।
মহামান্য রাষ্ট্রনায়কগণ,
আমি আরও একবার আমার প্রিয় বন্ধু এবং ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি লুলা-কে জি-২০-র সভাপতিত্বের জন্য অনেক শুভকামনা জানাই।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে ব্রাজিলের সভাপতিত্বে আমরা মানব-কেন্দ্রিক দৃষ্টিকোণ নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকব।
‘বসুধৈব কুটুম্বকম’-এর ভাবনা নিয়ে, সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে বিশ্ব শান্তি, স্থৈর্য এবং সমৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করব।
গ্লোবাল সাউথ-এর প্রত্যাশাগুলি পূরণের জন্য সমবেতভাবে কাজ করতে থাকব।
আমরা খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং সুদূরপ্রসারী উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেব।
মাল্টি-ল্যাটারাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কস আর গ্লোবাল গভর্ন্যান্স-এর ক্ষেত্রে সংস্কারের দিকে অবশ্যই এগিয়ে যাব। ক্লাইমেট অ্যাকশন বা নানা পরিবেশ-বান্ধব পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি আমরা যথাযথ, সহজ এবং সুলভ পরিবেশ-বান্ধব অর্থ লগ্নিও সুনিশ্চিত করব।
ডেট রিস্ট্রাকচারিং বা ঋণ পুনর্গঠনের জন্য স্বচ্ছ পদ্ধতিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
মহিলা পরিচালিত উন্নয়ন, ‘স্কিলড মাইগ্রেশন পাথওয়েজ’ বা দক্ষ শ্রমিকের আদান-প্রদানের উপায় নির্ধারণ, মাঝারি এবং ক্ষুদ্র ও অণু শিল্পোদ্যোগের উন্নয়নে জোর দেওয়া - আমি ‘ট্রোইকা’র সদস্য হিসেবে সম্মিলিত দায়িত্বকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমাদের এই দৃঢ় সঙ্কল্পগুলিকে পুনরুচ্চারণ করছি।
আমি ব্রাজিলকে তার জি-২০ সভাপতিত্বে সাফল্যের জন্য ভারতের পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দিচ্ছি।
আরও একবার ভারতের জি-২০ সভাপতিত্বকালীন সমস্ত সাফল্যের ক্ষেত্রে আপনাদের সকলের অকুন্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানাই।
আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ!