দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শ্রদ্ধেয় রাজনাথ সিংজি, হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী জয়রাম ঠাকুরজি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী, হিমাচলের সুপুত্র অনুরাগ ঠাকুর, হিমাচল সরকারের মন্ত্রী ভাই গোবিন্দ ঠাকুরজি, অন্যান্য সাংসদ, বিধায়ক ও জন-প্রতিনিধিগণ এবং আমার প্রিয় হিমাচল প্রদেশের ভাই ও বোনেরা।
![](https://cdn.narendramodi.in/cmsuploads/0.90354100_1601798044_3-pm-modi-addresses-public-meeting-at-solang-valley-in-himachal-pradesh-1.jpg)
আপনাদের সবাইকে আমাদের প্রিয় প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীজির ভাবনার ফসল, কুলু, লাহৌল, লেহ, লাদাখ ও জনগণের জন্য এই সুড়ঙ্গপথের উপহার আপনারা সবাই পেয়েছেন। সেজন্য আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
মা হিড়িম্বা ও অসংখ্য ঋষি-মুনিদের তপোভূমি যেখানে ১৮ কোটি দেব-দেবী, অর্থাৎ গ্রামে গ্রামে সেই দেব-দেবীদের জীবন্ত এবং অনুপম পরম্পরা রয়েছে। এহেন দিব্যভূমিকে আমি প্রণাম জানাই আর কাঞ্চননাগের এই ভূমি, একটু আগেই আমাদের মুখ্যমন্ত্রী জয়রামজি বর্ণনা করছিলেন যে আমার প্যারা-গ্লাইডিং-এর সখ ছিল, উড়তে তো খুবই ভালোই লাগত, কিন্তু যখন সম্পূর্ণ কিট নিয়ে ওপর পর্যন্ত যেতে হত, তখন শ্বাস ফুলে উঠত। আরেকবার, জানিনা বিশ্বে আর কেউ এরকম করেছেন কিনা, অটলজি মানালী এসেছিলেন, আমি এখানে সংগঠনের ব্যবস্থাপক ছিলাম বলে একটু আগেই এসেছিলাম, তখন আমি একটি কর্মসূচি তৈরি করি। ১১ জন প্যারা-গ্লাইডার পাইলটকে একসঙ্গে মানালীর আকাশে উড়িয়ে দিই। আর যখন অটলজি এখানে পৌঁছন, তখন তাঁরা আকাশ থেকে ফুল বর্ষণ করতে থাকেন। হয়তো বিশ্বে প্যারা-গ্লাইডিং-এর এরকম ব্যবহার আগে কখনও হয়নি। কিন্তু সন্ধ্যায় আমি অটলজির সঙ্গে দেখা করতে গেলাম, তখন তিনি বলেন, ভাই একটু বেশিই সাহস করছো। এরকম কেন কর? কিন্তু সেদিন আমার মানালীর জীবনে একটা বড় সুযোগ আসে, প্যারা-গ্লাইডিং-এর মাধ্যমে বাজপেয়ীজিকে ফুল বর্ষণ করার কল্পনার বাস্তবায়ন আমার জীবনের অত্যন্ত আনন্দদায়ক ঘটনা হয়ে থেকে গেছে।
আমার হিমাচলের ভাই ও বোনেরা, আপনাদের সবাইকে আজ অটল সুড়ঙ্গপথ উদ্বোধনের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। আর, আগে যেরকম বলেছি, আজকের এই সভায় আমি এটা দেখে অত্যন্ত আনন্দিত যে দর্শকদের মধ্যে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং-এর যথাযথ পরিকল্পনা করা হয়েছে। যতদূর চোখ যায়, সবাই যথাযথ সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং-এর মাধ্যমে নিজেদের হাত উঠিয়ে আমাকে অভিবাদন জানাচ্ছিলেন। আমিও আপনাদের সবাইকে এভাবে অভিবাদন জানিয়ে অত্যন্ত খুশি। এইসব অঞ্চল আমার অত্যন্ত পরিচিত। এমনিতে আমি কোনও জায়গায় বেশিদিন থাকতাম না। অত্যন্ত দ্রুতগতিতে সফর করতাম। কিন্তু যখন অটলজি আসতেন, তখন তিনি যতদিন থাকতেন, আমিও ততদিন থাকতাম। সেজন্য আপনাদের সকলের সঙ্গে আমার খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তখন তাঁর সঙ্গে যখনই মানালী আসতাম, হিমাচলের উন্নয়ন নিয়ে অনেক দীর্ঘ আলোচনা হত।
অটলজি এখানকার পরিকাঠামো, এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং এখানকার পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্যও অনেক চিন্তা করতেন।
তিনি প্রায়ই এখানে তাঁর একটি বিখ্যাত কবিতা শোনাতেন। মানালীর জনগণ অনেকবার তাঁর মুখে এই কবিতাটি শুনেছেন। ভাবুন, তিনি যতবারই এসেছেন, পরিণি গ্রামে সময় কাটাতে খুব পছন্দ করতেন। এই জায়গাটাকে তাঁর নিজের গ্রাম বলে মনে হত। এখানকার মানুষকেও তিনি খুব ভালোবাসতেন। অটলজি যেমন বলতেন, তেমন কবিতাতেও লিখেছেন –
মানালী যেও না,
রাজার রাজত্বে।
যদি যেতে চাও যেও,
উড়ে উড়ে যেও না,
তাহলে অন্ধকারে ঝুলে থাকবে,
বায়ুদূত বিমানে।
যেতে হলে যেও,
কোনও খবর পাবে না,
টেলিফোন খারাপ,
মির্ধা মহারাজের রাজত্বে।
বন্ধুগণ,
অটলজি মানালীকে এত বেশি পছন্দ করতেন, সেজন্য তিনি চাইতেন যে এখানকার পরিস্থিতি বদলাক, এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হোক। এই ভাবনা থেকেই তিনি রোহতাং-এ সুড়ঙ্গপথ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আজ অটলজি-র এই সঙ্কল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। এই অটল সুড়ঙ্গপথের ওপর এতবড় পাহাড়ের বোঝা রয়েছে ,অর্থাৎ, সুড়ঙ্গপথের প্রায় ২ কিলোমিটার ওপর পর্যন্ত উঁচু পাহাড় রয়েছে। যে বোঝা কখনও লাহৌল-স্পিতি এবং মানালীর মানুষ নিজেদের কাঁধে ওঠাতেন, এতবড় বোঝা আজ এই সুড়ঙ্গপথ ওঠাচ্ছে। এভাবে এই সুড়ঙ্গপথ উভয় প্রান্তের নাগরিকদের অনেক বোঝা থেকে মুক্ত করে দিয়েছে। সাধারণ মানুষদের এতবড় বোঝা থেকে মুক্ত করা, তাঁদের লাহৌল-স্পিতি আসা-যাওয়াকে সহজ করে তোলা একটি অত্যন্ত আনন্দের, গর্বের এবং সন্তুষ্টির বিষয়।
এখন সেইদিন দূরে নেই, যখন পর্যটকরা কুলু-মানালী থেকে সিড্ডু ঘি দিয়ে প্রাতঃরাশ সেরে বেরোবেন আর লাহৌলে গিয়ে 'দু-মার’ আর 'চিলড়ে’ দিয়ে লাঞ্চ করতে পারবেন। এটা আগে সম্ভব ছিল না।
ঠিক আছে। এখন করোনা আছে। কিন্তু এখন ধীরে ধীরে দেশ আনলক হচ্ছে। আশা করি দেশের অন্যান্য শিল্পক্ষেত্রের মতো এখন পর্যটন শিল্পও ধীরে ধীরে নিজস্ব গতিতে ফিরে আসবে। সেজন্য কুলু-তে পরম্পরা অনুসারে দশহরার প্রস্তুতি সোৎসাহে শুরু হয়েছে।
বন্ধুগণ,
অটল সুড়ঙ্গপথের পাশাপাশি, হিমাচলের জনগণের জন্য আরেকটি বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হামিরপুরে ৬৬ মেগাওয়াটের ধৌলাসিদ্ধ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটিকেও মঞ্জুর করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশবাসী যেমন বিদ্যুৎ পাবেন, তেমনই হিমাচলের অনেক যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থান হবে।
বন্ধুগণ,
আধুনিক পরিকাঠামো নির্মাণের যে অভিযান গোটা দেশে চলছে, সেখানে হিমাচল প্রদেশের অনেক বড় অংশীদারিত্ব রয়েছে। হিমাচলের গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ, মহাসড়ক প্রশস্তিকরণ, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন, মহাসড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার বৃদ্ধি – এইসব কিছুর জন্য অনেক প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।
কীরতপুর-কুলু-মানালী রোড করিডর থেকে শুরু করে জীরকপুর-পরওয়াণু-সোলাং-কৈথলীঘাট করিডর, নাঙ্গাল বাঁধ, তলোয়ারা রেলপথ, ভানুপল্লী-বিলাসপুর-বেরী রেলপথ – এ সবক'টির কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। আমারা আশা করছি যাতে এই প্রকল্পগুলি দ্রুত সম্পন্ন হয় আর হিমাচল প্রদেশের জনগণকে পরিষেবা প্রদান করতে শুরু করে।
![](https://cdn.narendramodi.in/cmsuploads/0.49040800_1601798051_3-pm-modi-addresses-public-meeting-at-solang-valley-in-himachal-pradesh-2.jpg)
বন্ধুগণ,
হিমাচল প্রদেশের জনগণের জীবনকে সহজ করে তুলতে সড়কপথ, বিদ্যুতের মূল প্রয়োজনগুলির পাশাপাশি মোবাইল এবং ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আর যে অঞ্চলগুলি পর্যটন গন্তব্য হিসেবে বিখ্যাত, সেখানে তো আজকাল এগুলি বড় প্রয়োজন হয়ে উঠেছে। পার্বত্য প্রদেশ হওয়ার ফলে হিমাচল প্রদেশে অনেক জায়গায় নেটওয়ার্কের সমস্যা থাকে। এর স্থানীয় সমাধানের জন্য সম্প্রতি দেশের ৬ লক্ষ গ্রামে অপটিক্যাল ফাইবার পাতার কাজ শুরু করা হয়েছে। আগামী এক হাজার দিনে এই কাজ মিশন মোডে সম্পূর্ণ করা হবে। এর মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে ওয়াই-ফাই হটস্পটও চালু হবে এবং বাড়িতে বাড়িতে ইন্টারনেট সংযোগও পাওয়া যাবে। এর ফলে, হিমাচল প্রদেশের ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা, অসুস্থ মানুষদের চিকিৎসা এবং পর্যটনের মাধ্যমে রোজগার বৃদ্ধি – এই সমস্ত ধরনের লাভ হতে চলেছে।
বন্ধুগণ,
সরকার নিরন্তর চেষ্টা করে যাচ্ছে যাতে সাধারণ মানুষের জীবনের সমস্যাগুলিকে নিরসন করা যায়, আর তাঁরা তাঁদের সমস্ত অধিকার অর্জনে সক্ষম হন। সমস্ত সরকারি পরিষেবা সুনিশ্চিত করার জন্য সেই পরিষেবাগুলিকে ডিজিটালাইজ করে দেওয়া হয়েছে। এখন কর্মচারীদের বেতন, পেনশনের মতো অনেক পরিষেবার জন্য বারবার সরকারি দপ্তরে চক্কর কাটতে হয় না।
আগে হিমাচলের দূর প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতে শুধু নথিপত্র অ্যাটেস্টেশনের জন্য আমাদের নবীন বন্ধুদের, অবসরপ্রাপ্ত মানুষদের অনেক আধিকারিক ও নেতাদের বাড়িতে গিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হত। এখন কোনও নথি অ্যাটেস্টেশন করার প্রয়োজনই আমরা সমাপ্ত করে দিয়েছি।
আপনারা স্মরণ করুন, আগে বিদ্যুৎ এবং টেলিফোনের বিল ভরার জন্য সারাদিন লেগে যেত। আজ এই কাজ আপনারা বাড়িতে বসে নিজের মোবাইল ফোনে ক্লিক করে, আঙুলের চাপে করে ফেলতে পারছেন। এখন ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত অনেক পরিষেবা, যা আগে ব্যাঙ্কে গিয়ে লাইন দিয়ে নিতে হত তা এখন বাড়িতে বসেই সেই পরিষেবার সুযোগ নিতে পারছেন।
বন্ধুগণ,
এরকম অনেক সংস্কারের মাধ্যমে এখন প্রত্যেক নাগরিকের সময় ও পয়সা যেমন সাশ্রয় হচ্ছে, তেমনই দুর্নীতির অবসান ঘটেছে। এই করোনাকালেই হিমাচল প্রদেশের ৫ লক্ষেরও বেশি পেনশনভোগী এবং প্রায় ৬ লক্ষ বোনেদের জন ধন অ্যাকাউন্টে কয়েকশ' কোটি টাকা এক ক্লিকের মাধ্যমে জমা করা হয়েছে। ১ লক্ষ ২৫ হাজারেরও বেশি গরীব বোনকে উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে বিনামূল্যে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার দেওয়া হয়েছে।
বন্ধুগণ,
দেশে আজ যে সংস্কারগুলি করা হচ্ছে, সেগুলি এক ধরনের মানুষকে সমস্যায় ফেলেছে যাঁরা সবসময় শুধু নিজেদের রাজনৈতিক হিতের কথা ভেবে কাজ করতেন। শতাব্দী বদলে গেছে কিন্তু তাঁদের ভাবনা বদলায়নি। এখন শতাব্দী বদলেছে, ভাবনাও বদলাতে হবে এবং নতুন শতাব্দীর হিসেবে দেশকেও পরিবর্তনের মাধ্যমে গড়ে তুলতে হবে। আজ যখন সাধারণ মানুষ কোনরকম দালালের সাহায্য ছাড়াই কাজ করতে পারছেন, তখন তাঁদের দুর্নীতিতন্ত্রে আঘাত লাগছে। সেজন্যই তাঁরা ক্ষেপে উঠেছেন। দালালদের যাঁরা উৎসাহ দেন, সেই মানুষেরা দেশের কৃষকদের কী অবস্থা করে রেখেছিল এটা হিমাচল প্রদেশের জনগণ থেকে ভালোভাবে আর কারা জানে!
এটা আপনারাও জানেন যে হিমাচল প্রদেশ দেশের সবথেকে বড় ফল উৎপাদক রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম। এখানকার ফল ছাড়াও টোমাটো, মাশরুমের মতো সব্জি দেশের অনেক শহরের প্রয়োজন মেটায়। কিন্তু, বাস্তব পরিস্থিতি কেমন? কুলু, সিমলা কিংবা কিন্নরের আপেল বাগানগুলি থেকে ৪০-৫০ টাকা কেজি হিসেবে আপেল কিনে নেওয়া হয়, আর দিল্লিতে যাঁরা থাকেন তাঁদের বাড়িতে ১০০-১৫০ টাকা দরে কিনতে হয়। মাঝে প্রায় ১০০ টাকার যে হিসাব তা কৃষকরাও পান না, আর যাঁরা কেনেন তাঁরাও পান না। তাহলে সেই টাকা কোথায় যায়? কৃষকদের লোকসান হয়, আর শহরের ক্রেতাদেরও লোকসান হয়। শুধু তাই নয়, এখানকার বাগিচা কৃষক বন্ধুরা জানেন যে নির্দিষ্ট ঋতুতে যখন এখানকার আপেলের ফলন সবচাইতে বেশি হয়, তখন এর দাম হঠাৎ করে পড়ে যায়। এর ফলে, সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন সেই কৃষকরা, যাঁদের ছোট বাগান রয়েছে।
বন্ধুগণ,
যাঁরা কৃষি আইনের বিরোধিতা করছেন, তাঁরা বলছেন যে এই পরিস্থিত বজায় থাকুক, বিগত শতাব্দীর পরিস্থিতি নিয়েই কৃষকরা বেঁচে থাকুন! কিন্তু দেশ আজ পরিবর্তনের জন্য দৃঢ় সঙ্কল্প নিয়েছে। আর সেজন্যই কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়নের জন্য আইনে ঐতিহাসিক সংস্কার করা হয়েছে। আর এই সংস্কার যা তাঁরাও আগে ভেবেছিলেন, তাঁরাও জানতেন, এই ভাবনাটা তাঁদেরও ছিল, আমাদেরও ছিল। কিন্তু তাঁদের মনে হিম্মতের অভাব ছিল, আর আমাদের এই পরিবর্তনের হিম্মত আছে। তাঁদের জন্য সামনে নির্বাচন, আর আমাদের জন্য সামনে দেশ, দেশবাসীর প্রয়োজন। আমাদের জন্য দেশের কৃষকরা সামনে দাঁড়িয়ে আছেন, আমাদের দেশের কৃষকদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ আমাদের সামনে রয়েছে। সেজন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের কৃষকদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।
এখন যদি হিমাচল প্রদেশের ছোট ছোট বাগিচা কৃষকরা নিজেদের সমবায় তৈরি করে তাঁদের উৎপাদিত আপেল অন্যান্য রাজ্যে নিয়ে গিয়ে সরাসরি বিক্রি করতে চান, তাহলে নতুন আইনের মাধ্যমে তাঁরা সেই স্বাধীনতা পেয়েছেন। হ্যাঁ, যদি তাঁরা স্থানীয় মান্ডিতে সেই লাভ পান, আগের ব্যবস্থা থেকেই লাভবান হন, তাহলে সেই বিকল্প তো খোলা রইলই। কেউ সেই ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়নি। কিন্তু কৃষক এবং বাগিচা চাষীরা যাতে সমস্ত রকমভাবে লাভবান হন, সেজন্য এই সংস্কার করা হয়েছে।
![](https://cdn.narendramodi.in/cmsuploads/0.12934700_1601798066_3-pm-modi-addresses-public-meeting-at-solang-valley-in-himachal-pradesh-4.jpg)
বন্ধুগণ,
কেন্দ্রীয় সরকার কৃষকদের আয় বৃদ্ধি, কৃষির সঙ্গে যুক্ত তাঁদের ছোট ছোট প্রয়োজনগুলি পূর্ণ করার জন্য দায়বদ্ধ। পিএম-কিষাণ সম্মান নিধির মাধ্যমে দেশের ২৫ লক্ষ কৃষককে, তাঁদের পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এখন পর্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা জমা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে হিমাচল প্রদেশের ৯ লক্ষ ২৫ হাজার কৃষক পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় ১ হাজার কোটি জমা করা হয়েছে।
কল্পনা করুন, যদি আগের সরকারের সময় ১ হাজার কোটি টাকার কোনও প্যাকেজ হিমাচলের জন্য ঘোষিত হত, তাহলে সেই টাকা না জানি কোথায় কোথায়, কার কার পকেটে পৌঁছে যেত। সেজন্য রাজনৈতিক লাভ ওঠাতে কত না চেষ্টা হত। কিন্তু এখানে ছোট কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এই টাকা সরাসরি জমা করা হয়েছে, আর কোনরকম হৈ-হল্লা করা হয়নি।
বন্ধুগণ,
সম্প্রতি আরেকটি বড় সংস্কারের মাধ্যমে আমাদের দেশের শ্রমশক্তিকে, বিশেষ করে বোন ও বেটিদের অধিকার প্রদানের জন্য বাস্তবায়িত করা হয়েছে। হিমাচলের বোন ও মেয়েরা এমনিতেই প্রত্যেক ক্ষেত্রে কঠিন থেকে কঠিনতর কাজের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু এখন এই পরিস্থিতি হয়েছিল যে দেশের অনেক ক্ষেত্র এমন ছিল যেখানে বোনেদের কাজ করার সুবিধা ছিল না। সম্প্রতি আমরা যে শ্রম আইনে সংস্কার এনেছি তার ফলে এখন মহিলারাও বেতন থেকে শুরু করে কাজের ক্ষেত্রে সেই অধিকার পাবেন যা তাঁদের পুরুষ সঙ্গীরা আগে থেকেই পান।
বন্ধুগণ,
দেশের প্রত্যেক ক্ষেত্র, প্রত্যেক নাগরিকের আত্মবিশ্বাস জাগানোর জন্য, আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলার জন্য সংস্কার, একের পর এক সংস্কার আমরা আনতে থাকব। বিগত শতাব্দীর নিয়মকানুনগুলি দিয়ে পরবর্তী শতাব্দী চলতে পারে না। সমাজ এবং ব্যবস্থায় সার্থক পরিবর্তনের বিরোধীরা যতই নিজেদের স্বার্থ নিয়ে রাজনীতি করুন না কেন, এই দেশ থেমে থাকবে না।
হিমাচল প্রদেশ, আমাদের এখানকার যুব সম্প্রদায়, দেশের সমস্ত যুব সম্প্রদায়ের স্বপ্ন এবং আকাঙ্ক্ষাগুলি আমাদের জন্য সর্বোপরি। আর সেই সম্ভাবনাগুলিকে নিয়ে আমরা দেশকে প্রগতির পথে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করে যাব।
বন্ধুগণ,
আমি আজ আরেকবার অটল সুড়ঙ্গপথের জন্য আপনাদের শুভেচ্ছা জানাই। আপনারা কল্পনা করতে পারেন যে কতবড় পরিবর্তন আসবে, কত সম্ভাবনার দরজা খুলে যাবে? আপনারা এই সম্ভাবনা থেকে অনেক লাভবান হবেন। আমি আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। আমার অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।
করোনার সঙ্কটকালে, হিমাচল প্রদেশ খুব ভালোভাবেই প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। কিন্তু তবুও আপনারা সবাই সংক্রমণ থেকে নিজেদের নিরাপদ রাখবেন।
দেবভূমি হিমাচল প্রদেশকে প্রণাম জানাই, কাঞ্চননাগজির এই মাটিকে প্রণাম জানাই, আপনাদের সবার সঙ্গে আরেকবার মিলিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি, আরেকবার আপনাদের দর্শন পেয়েছি। খুব ভালো হত যদি করোনার এই সঙ্কটকাল না থাকত, তাহলে অত্যন্ত নিবিড়ভাবে ভালোবাসা বিনিময় করতে পারতাম। আমার অনেক পরিচিত চেহারা সামনে বসে আছেন। কিন্তু আজ এমন পরিস্থিতি যে আপনাদের জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গন করতে পারছি না। কিন্তু আপনাদের সাক্ষাৎ দর্শনের সুযোগ পেয়েছি এটাও আমার জন্য খুব আনন্দের বিষয়। আমাকে এখান থেকে দ্রুত বেড়িয়ে যেতে হবে, সেজন্য আপনাদের থেকে অনুমতি নিয়ে, আরেকবার আপনাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে –
অনেক অনেক ধন্যবাদ।