স্বামী বিবেকানন্দের জন্মজয়ন্তীতে এবং জাতীয় যুব দিবসে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ বেলুড়মঠ সফর করেন। তিনি মঠের সন্ন্যাসীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এই উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশবাসীর জন্য বেলুড়মঠের এই পবিত্র ভূমিতে আসা কোনও তীর্থযাত্রার থেকে কম নয়, কিন্তু তাঁর জন্য এখানে আসা সবসময়েই নিজের বাড়িতে আসার মতোই। এই পবিত্র ভূমিতে তাঁর রাত্রিবাসের সৌভাগ্য হয়েছে। এখানে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব, মা সারদা দেবী, স্বামী ব্রহ্মানন্দ, স্বামী বিবেকানন্দ সহ সমস্ত গুরুদের সান্নিধ্য অনুভব করা যায়।
তাঁর আগের সফরের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেইসময় তিনি স্বামী আত্মস্হানন্দজির আর্শিবাদ পেয়েছিলেন, যিনি তাঁকে জনসেবার পথ দেখিয়েছিলেন।
‘আজ তিনি আমাদের মাঝে শারীরিক রূপে উপস্থিত নেই। কিন্তু তাঁর কাজ, তাঁর প্রদর্শিত পথ, সদাসর্বদা আমাদের চলার পথকে প্রশস্ত করে যাবে।’
তিনি বলেন, এখানের নবীন ব্রহ্মচারীদের সঙ্গে সময় কাটাবার তাঁর সুযোগ হয়েছে এবং যে ভাবনা-চিন্তার মধ্যে দিয়ে ওই ব্রহ্মচারীরা যাচ্ছেন একটা সময় তাঁরও ওই অনুভব হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই আজ এখানে জড়ো হয়েছি, কারণ বিবেকানন্দের ভাবনা, তাঁর বাণী, তাঁর ব্যক্তিত্ব আমাদের আকৃষ্ট করে। কিন্তু এই মাটিতে পা রাখার পর মা সারদা দেবীর আঁচল এখানে থাকার জন্য মায়ের ভালোবাসা সকলে পেয়ে থাকেন।
শ্রী মোদী বলেন, ‘জ্ঞাতসারে অথবা অজ্ঞাতসারে দেশের প্রতিটি যুবক-যুবতী বিবেকানন্দের সংকল্পের অংশ হয়ে ওঠেন। সময় বদলেছে, দশক বদলেছে, শতাব্দীও বদলে গেছে, কিন্তু স্বামীজির সেই সংকল্পকে বাস্তবায়িত করার দায়িত্ব আমাদের ওপর বর্তেছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপরও বর্তাবে।’
দেশের সেইসব তরুণ, যাঁরা মনে করেন এককভাবে তাঁরা জগতের পরিবর্তন ঘটাতে পারবেন না, তাঁদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ, ‘আমরা কখনোই একা ছিলাম না।’
তিনি বলেন, দেশ একবিংশ শতাব্দীর জন্য নতুন ভারত নির্মাণের জন্য বড় সংকল্প নিয়ে একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে। এই সংকল্পগুলি শুধুই সরকারের নয়, এই সংকল্পগুলি ১৩০ কোটি ভারতবাসীর, দেশের যুবসম্প্রদায়ের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখতে পাই যে, দেশের যুবসম্প্রদায় যে ঐকান্তিকতা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন, তার ফলে তাঁদের সাফল্য নিশ্চিত। ভারত পরিচ্ছন্ন হয়ে উঠতে পারে কিনা, তা নিয়ে বিগত পাঁচ বছরে একটা নিরাশার আবহ ছিল এবং ভারতে ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার সম্ভব কিনা, তা নিয়ে ৪–৫ বছর আগে অনেকের মনেই সন্দেহ ছিল। কিন্তু দেশের যুব সমাজ দায়িত্ব নেওয়ার পর আজ পরিবর্তন নজরে আসছে।
তিনি বলেন, যুব সম্প্রদায়ের উৎসাহ, উদ্দীপনা এবং প্রাণশক্তিই একবিংশ শতাব্দীর এই দশকে ভারতের পরিবর্তনের ভিত রচনা করেছে। যুব সম্প্রদায় সমস্যাগুলি নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করেন, তারপর সেগুলির সমাধান করেন। প্রত্যেক স্পর্ধার বিরুদ্ধে তাঁরা প্রতিস্পর্ধা গড়ে তোলেন। এই ভাবনা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারও দেশের অনেক দশক ধরে চলা পুরনো সমস্যাগুলিকে সমাধানের চেষ্টা করছে।
জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, প্রতিটি যুবক-যুবতীকে বোঝানো তাঁর দায়িত্ব, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিষয়ে তাঁদের বোঝাতে হবে এবং তাঁদের মনে যে দ্বিধা রয়েছে সেগুলি দূর করতে হবে। তিনি স্পষ্ট করে জানান, নাগরিকত্ব সংশোধন আইন দেশের নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য, কারুর নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য নয়। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন একটি সংশোধনী, যার মাধ্যমে যাঁরা দেশভাগ পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানে ধর্মীয় কারণে নিপীড়নের শিকার, তাঁদের এই আইনের মাধ্যমে সহজেই ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। মহাত্মা গান্ধী সহ বহু বড় বড় নেতাও সেই সময় এর পক্ষে মত দিয়েছিলেন। তাছাড়া আজও যেকোন ধরণের যে কেউ, তিনি ঈশ্বর বিশ্বাসীও হতে পারেন, নাও হতে পারেন… যাঁরা ভারতের সংবিধানের প্রতি আস্হা রাখেন, নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে তাঁরাও এদেশের নাগরিক হতে পারেন। তিনি বলেন, তাঁর সরকার এই আইনের ফলে উত্তরপূর্ব ভারতে যেন জন-বিন্যাসের কোনও বিরূপ প্রভাব না পড়ে, সেই লক্ষ্যে কিছু ব্যবস্হা গ্রহণ করেছে। কিন্তু স্পষ্টভাবে এগুলি সব জানানো সত্ত্বেও কিছু কিছু মানুষ তাঁদের রাজনৈতিক স্বার্থে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিষয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তিনি আরও বলেন, নাগরিকত্ব আইনের এই সংশোধনীটির কারণে যদি বিভ্রান্তির সৃষ্টি না হত তাহলে সারা বিশ্ব জানতেও পারতো না সংখ্যালঘুরা পাকিস্তানে কিভাবে নানা অপরাধের শিকার হন। আমাদের এই উদ্যোগের ফলশ্রুতিতে এখন পাকিস্তানকে জবাব দিতে হবে কেন তারা বিগত ৭০ বছর ধরে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সংস্কৃতি এবং সংবিধান আশা করে, নাগরিক হিসেবে সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে আমরা আমাদের কর্তব্যগুলি পালন করবো। প্রতিটি ভারতবাসীর দায়িত্ব-কর্তব্য সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আর এই পথ অনুসরণ করে আমরা বিশ্বমঞ্চে ভারতকে প্রকৃত অবস্হানে বসাতে পারবো। স্বামী বিবেকানন্দ প্রতিটি ভারতীয়ের কাছ থেকে এটি প্রত্যাশা করতেন এবং এই প্রতিষ্ঠানেরও এটিই মূল প্রত্যাশা। আর তাই তাঁর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে আমাদের সকলের সংকল্প গ্রহণ করা উচিত।
Tributes to Swami Vivekananda on his Jayanti. Live from Belur Math. https://t.co/yE8lOghIIQ
— Narendra Modi (@narendramodi) January 12, 2020
Swami Vivekananda lives in the hearts and minds of crores of Indians, especially the dynamic youth of India for whom he has a grand vision.
— Narendra Modi (@narendramodi) January 12, 2020
Today, on Vivekananda Jayanti and National Youth Day I am at the Belur Math, including the room where Swami Ji meditated. pic.twitter.com/UeWQkUk94C
The thoughts of Sri Ramakrishna emphasise on furthering harmony and compassion. He believed that a great way to serve God is to serve people, especially the poor and downtrodden.
— Narendra Modi (@narendramodi) January 12, 2020
At the Belur Math this morning, I paid tributes to Sri Ramakrishna. pic.twitter.com/Es9vPSH80q