প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ইন্ডিয়া গেটে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর একটি হলোগ্রাম মূর্তি উন্মোচন করেছেন। নেতাজির মূর্তি নির্মাণের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই হলোগ্রাম মূর্তি থাকবে। বছরব্যাপী নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে মূর্তিটি এই জায়গায় উন্মোচন করা হবে।
 
প্রধানমন্ত্রী এদিন ২০১৯, ২০২০, ২০২১ এবং ২০২২ সালের জন্য সুভাষ চন্দ্র বসু আপদা প্রবন্ধ পুরস্কার প্রদান করেন। দুর্যোগ মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রে ব্যক্তি ও সংস্থার অমূল্য অবদান এবং নিঃস্বার্থ সেবার স্বীকৃতি ও সম্মান জানানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এই পুরস্কারটি চালু করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী ভারত মাতার সাহসী পুত্র নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুকে তাঁর ১২৫ তম জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। সমাবেশের ভাষণে তিনি বলেন, যিনি ভারতের মাটিতে প্রথম স্বাধীন সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং যিনি আমাদের একটি সার্বভৌম ও শক্তিশালী ভারত গঠনের আস্থা জুগিয়েছিলেন, তাঁর প্রতি সম্মান জানিয়ে ইন্ডিয়া গেটের কাছে ডিজিটাল আকারে এই মূর্তি স্থাপন করা হচ্ছে। শীঘ্রই এই হলোগ্রাম মূর্তিটি পরিবর্তন করে গ্রানাইট মূর্তি প্রতিস্থাপিত হবে। তিনি বলেন, এই মূর্তিটি প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে দেশবাসী কৃতজ্ঞ চিত্তে স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়কের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। পাশাপাশি এর মাধ্যমে দেশের প্রতিষ্ঠান ও পরবর্তী প্রজন্মকে জাতীয় কর্তব্যের প্রতি স্মরণ করিয়ে দেবে বলেও তিনি জানান। 
 
প্রধানমন্ত্রী দেশে দুর্যোগ মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক পরিবর্তনের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বছরের পর বছর ধরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিষয়টি কৃষি বিভাগের আওতায় ছিল। এর মূল কারণ বন্যা, অতিবৃষ্টি, শিলাবৃষ্টির কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলার দায়িত্ব ছিল কৃষি মন্ত্রকের। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালের গুজরাট ভূমিকম্প দুর্যোগ মোকাবিলার ব্যবস্থাপনার অর্থই বদলে দিয়েছে। তিনি জানান, “আমরা ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে সমস্ত বিভাগ এবং মন্ত্রককে যুক্ত করেছি। সেই সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ২০০৩ সালে গুজরাট রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা আইন তৈরি করা হয়। এই ধরণের আইন প্রণয়নের ফলে বিপর্যয় মোকাবিলায় গুজরাট দেশের প্রথম রাজ্য হয়ে ওঠে। কেন্দ্রীয় সরকার গুজরাটের এই আইন থেকে শিক্ষা নিয়ে ২০০৫ সালে সমগ্র দেশের জন্য একই ধরণের দুর্যোগ মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা আইন তৈরি করে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ত্রাণ, উদ্ধার ও পুনর্বাসনের ওপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি সংস্কারসাধনেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সারা দেশে এনডিআরএফ-কে শক্তিশালী করা হয়েছে। এমনকি এর কাজের পরিধি এবং আধুনিকাতার ওপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, মহাকাশ প্রযুক্তি থেকে পরিকল্পনা ও দুর্যোগ মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা সর্বোত্রই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানান, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ‘আপদা মিত্র’-এর মতো পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, এর সঙ্গে দেশের তরুণদের যুক্ত করা হয়েছে। তাই যখনই দুর্যোগ আসে, সাধারণ মানুষ যাতে তার শিকার না হন তারা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে এই দুর্যোগ মোকাবিলা করে থাকেন। দুর্যোগ মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা এখন আর শুধু সরকারি চাকরি নয়, এটি হয়ে উঠেছে ‘সবকা প্রয়াস’-এর মডেল।
 
প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগ মোকাবিলায় দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রতিষ্ঠানগুলিকে শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ, গোয়া, মহারাষ্ট্র এবং গুজরাটে ঘূর্ণিঝড়ের উদাহরণ তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ধরণের দুর্যোগে পূর্বের তুলনায় অনেক ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়েছে। তিনি জানান, দেশে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা ব্যবস্থাপনার আধুনিকীকরণ হয়েছে। তাই আগে থেকেই সতর্কীকরণ ব্যবস্থা এবং দুর্যোগের ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে মানুষের প্রাণহানি এড়ানো সম্ভবপর হয়েছে।
 
প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগ মোকাবিলা ব্যবস্থাপনায় সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গি বিশদে তুলে ধরেন। তিনি জানান, এখন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং স্থাপত্য বিদ্যার পাঠ্যক্রমের অঙ্গ। তিনি ভূমিকম্প প্রবণ এলাকায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুতি, চারধাম মহাপরিযোজনা, উত্তর প্রদেশে মহাসড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তাভাবনার কথা তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব পর্যায়ে দুর্যোগ মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রে দেশের নেতৃত্ব দেওয়ার কথাও জানান। দুর্যোগ প্রতিরোধের জন্য সুসংবদ্ধ পরিকাঠামো (সিডিআরআই)-এ ভারত এখন ৩৫টি দেশের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সেনাবাহিনীর মধ্যে যৌথ সামরিক মহড়া চালানো হচ্ছে। তবে, ভারত এই প্রথমবার দুর্যোগ মোকাবিলা ব্যবস্থাপনায় যৌথ মহড়ার আয়োজন করেছে। 
 
প্রধানমন্ত্রী নেতাজিকে উদ্ধৃত করে জানান, “স্বাধীন ভারতের স্বপ্নে বিশ্বাস হারাবেন না, বিশ্বের এমন কোনো শক্তি নেই যা ভারতকে নাড়িয়ে দিতে পারে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন লক্ষ্য হলো স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন পূরণ করা। স্বাধীনতার শতবর্ষের পূর্বে একটি নতুন ভারত গড়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। 
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের মহান সংকল্পে ভারত তার পরিচিতি ও অনুপ্রেরণাকে পুনরুজ্জীবিত করবে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে জানান, স্বাধীনতার পর দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের পাশাপাশি অনেক মহান ব্যক্তিত্বের অবদান মুছে গেছে। 
 
তিনি বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে লক্ষ লক্ষ দেশবাসীর ‘তপস্যা’ জড়িত ছিল। কিন্তু তাদের ইতিহাসকেও সীমাবদ্ধ করে রাখার চেষ্টা চালানো হয়। তবে আজ স্বাধীনতার কয়েক দশক পর দেশ সাহসের সঙ্গে সেই ভুলগুলি সংশোধন করছে। তিনি বাবাসাহেব আম্বেদকরের সঙ্গে যুক্ত পঞ্চ তীর্থ, সর্দার প্যাটেল অবদানের স্মরণে স্ট্যাচু অফ ইউনিটি, ভগবান বিরসা মুণ্ডার সম্মানে জনজাতি গৌরব দিবস, আদিবাসী সম্প্রদায়ের মহান অবদানকে স্মরণ করার জন্য উপজাতি ভিত্তিক জাদুঘর, নেতাজির নামে আন্দামানে একটি দ্বীপের নামকরণের কথা উল্লেখ করেন। নেতাজি ও আইএনএ-কে সম্মান জানাতে আন্দামানে তেরঙ্গা পতাকা উত্তোলন করার মধ্য দিয়ে অতীতের ভুল সংশোধনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী গত বছর পরাক্রম দিবসে কলকাতায় নেতাজির পৈতৃক বাসভবন সফরের কথা স্মরণ করেন। তিনি জানান, ২০১৮ সালের ২১শে অক্টোবরের দিনটি কখনই ভুলতে পারবেন না, কারণ এদিনই আজাদ হিন্দ সরকারের ৭৫ বছর পূর্ণ হয়েছিল। তিনি বলেন, “লাল কেল্লায় আয়োজিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে, আমি আজাদ হিন্দ ফৌজের টুপি পরে তেরঙ্গা পতাকা উত্তোলন করেছিলাম। সেই মুহূর্তটি ছিল অসাধারণ, অবিস্মরণীয়।”
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নেতাজি সুভাষ যদি কিছু করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতেন, তাহলে কোনো শক্তিই তাকে আটকাতে পারতো না। নেতাজি সুভাষের ‘ক্যান ডু, উইল ডু’ চেতনা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে সকলকে এগিয়ে যেতে হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Click here to read full text speech

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM Modi congratulates hockey team for winning Women's Asian Champions Trophy
November 21, 2024

The Prime Minister Shri Narendra Modi today congratulated the Indian Hockey team on winning the Women's Asian Champions Trophy.

Shri Modi said that their win will motivate upcoming athletes.

The Prime Minister posted on X:

"A phenomenal accomplishment!

Congratulations to our hockey team on winning the Women's Asian Champions Trophy. They played exceptionally well through the tournament. Their success will motivate many upcoming athletes."