প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ৫ অক্টোবর রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশ সফরে যাবেন।
সকাল ১১টা নাগাদ রাজস্থানের যোধপুরে পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী সড়ক, রেল, বিমান, স্বাস্থ্য ও উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন। সেইদিন ৩টে ৩০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী পৌঁছবেন মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরে। সেখানে ‘বীরাঙ্গনা রানি দুর্গাবতী স্মারক এবং উদ্যান’-এর ভূমি পূজনে সামিল হবেন প্রধানমন্ত্রী। জব্বলপুরে প্রায় ১২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন তিনি। এই প্রকল্পগুলি সড়ক, রেল, গ্যাস পাইপ লাইন, আবাসন এবং পরিশ্রুত পানীয় জল পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত।
রাজস্থানে প্রধানমন্ত্রী:
রাজস্থানে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর বিকাশে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে রয়েছে – যোধপুরে অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস – এর ৩৫০ শয্যার ট্রমা সেন্টার ও ক্রিটিকাল কেয়ার হসপিটাল ব্লক। এছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো মিশন – এর আওতায় রাজস্থানে ৭টি ক্রিটিকাল কেয়ার ব্লকের সূচনাও করবেন তিনি। যোধপুরের ট্রমা কেয়ার সেন্টারটি তৈরি করতে খরচ হবে ৩৫০ কোটি টাকারও বেশি। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ৭টি ক্রিটিকাল কেয়ার ব্লক জেলাস্তরে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাকে জোরদার করে তুলবে। যোধপুর বিমানবন্দরে অত্যাধুনিক নতুন টার্মিনাল ভবনের শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী। ৪৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ২৪ হাজার বর্গমিটার এলাকার উপর তৈরি হওয়া এই নতুন টার্মিনাল ভবনটি ব্যস্ততম সময়ে ২ হাজার ৫০০ জন যাত্রীকে পরিষেবা যোগাতে সক্ষম হবে। বার্ষিক ভিত্তিতে এই টার্মিনাল ভবন ৩৫ লক্ষ যাত্রীকে পরিষেবা প্রদান করতে পারবে। ১ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আইআইটি যোধপুরের নতুন অত্যাধুনিক ক্যাম্পাসটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন প্রধানমন্ত্রী। রাজস্থানের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় পরিকাঠামো বিকাশের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী সেখানকার সেন্ট্রাল ইন্সট্রুমেন্টেশন ল্যাবরেটরি, কর্মী আবাসন এবং যোগ ও ক্রীড়া বিজ্ঞান ভবনের উদ্বোধন করবেন। সেখানে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, ৬০০ আসনবিশিষ্ট ছাত্রাবাস এবং ভোজনালয় নির্মাণ প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন তিনি। বেশ কয়েকটি সড়ক প্রকল্পের শিলান্যাসও করবেন প্রধানমন্ত্রী। ১ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এগুলি নির্মিত হবে। রাজস্থানে প্রধানমন্ত্রী দুটি নতুন ট্রেন যাত্রার সূচনা করবেন। এর একটি হ’ল – জয়সলমীর ও দিল্লির মধ্যে সংযোগকারী রুনিচা এক্সপ্রেস এবং অন্যটি হ’ল – মারওয়াড় জংশন এবং খাম্বলিঘাটের মধ্যে সংযোগকারী নতুন হেরিটেজ ট্রেন। এর পাশাপাশি, আরও দুটি রেল প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
মধ্যপ্রদেশে প্রধানমন্ত্রী:
ভারত সরকার মহাসমারোহে রানি দুর্গাবতীর ৫০০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করছে। ২০২৩-এর জুলাইতে মধ্যপ্রদেশের শাহদোল-এ এ সংক্রান্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। এ বছরের স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লার প্রাকার থেকে তাঁর ভাষণেও প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি ফের উত্থাপন করেন। সেই অনুসারে প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার ‘বীরাঙ্গনা রানি দুর্গাবতী স্মারক ও উদ্যান’-এর ভূমি পূজনে সামিল হবেন। জব্বলপুরে ২১ একর জমির ওপর ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হবে এই উদ্যান। সেখানে রানি দুর্গাবতীর ৫২ ফুট উঁচু একটি ব্রোঞ্জের মূর্তি থাকবে। গন্ডোয়ানা অঞ্চলের ইতিহাস এবং রানি দুর্গাবতীর বীরত্বগাথার ওপর একটি সংগ্রহশালাও গড়ে উঠবে সেখানে।
রানি দুর্গাবতী ষোড়শ শতকের মধ্যভাগে গন্ডোয়ানার শাসক ছিলেন। মুঘলদের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করেছিলেন তিনি। ইন্দোরে লাইট হাউস প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (নগর) কর্মসূচির আওতায় ১২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে রূপায়িত এই প্রকল্পের সুবাদে উপকৃত হবে হাজারেরও বেশি পরিবার। নতুন উদ্ভাবনমূলক প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবাদে কম সময়ের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। জল জীবন মিশন – এর আওতায় মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরের মান্দলা এবং দিনদরি জেলায় ২ হাজার ৩৫০ কোটি টাকার একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী। সেওনি জেলায় জল জীবন মিশন – এর আওতায় ১০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন। এইসব প্রকল্পের ফলে মধ্যপ্রদেশের ৪টি জেলায় প্রায় ১ হাজার ৫৭৫টি গ্রামে নলবাহিত পরিশ্রুত পানীয় জল পৌঁছে যাবে। মধ্যপ্রদেশে প্রায় ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকার সড়ক প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এছাড়াও তিনি নতুনভাবে নির্মিত জাতীয় সড়ক ৩৪৭-সি’র খলঘাট থেকে সারওয়ারদেওলা অংশের উদ্বোধন করবেন। মধ্যপ্রদেশে প্রায় ১ হাজার ৮৫০ কোটি টাকার একাধিক রেল প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে রয়েছে: কাটনি – বিজয়সোতা ডবল লাইন এবং মারওয়াশ গ্রাম – সিংগ্রৌলি রেলপথ। ঐদিন বিজয়পুর – আউরাইয়া – ফুলপুর পাইপ লাইন প্রকল্পেরও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। ৩৫২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পাইপ লাইন তৈরি হয়েছে ১ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে। মুম্বাই – নাগপুর – ঝারসুগুদা পাইপ লাইন প্রকল্পের নাগপুর – জব্বলপুর অংশের কাজের সূচনা করবেন শ্রী মোদী। এটি রূপায়িত হবে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে। এই গ্যাস পাইপ লাইন প্রকল্পগুলি কলকারখানা ও বাড়ি বাড়ি সুলভ মূল্যে প্রাকৃতিক গ্যাস পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি, পরিবেশ রক্ষার কাজেও সহায়ক হবে। জব্বলপুরে ১৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি নতুন বটলিং প্ল্যান্টেরও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।