প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী ৫ জানুয়ারি পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সফরে গিয়ে বেলা একটা নাগাদ সেখানে ৪২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার বেশি একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে দিল্লি-অমৃতসর-কাটরা এক্সপ্রেসওয়ে, অমৃতসর-উনা শাখা চার লেন বিশিষ্ট করা, মুকেরিয়ান-তালওয়ারা নতুন ব্রডগেজ রেললাইন, ফিরোজপুরে পিজিআই-এর স্যাটেলাইট সেন্টার সহ কাপুরথালা ও হোশিয়ারপুরে দুটি মেডিকেল কলেজ। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সারা দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার মানোন্নয়নে যে নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন, তার ফল স্বরূপ পাঞ্জাবেও কয়েকটি জাতীয় মহাসড়ক উন্নয়নমূলক প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই পাঞ্জাবে জাতীয় মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ২০১৪-র ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটার থেকে বেড়ে ২০২১-এ ৪ হাজার ১০০ কিলোমিটারের বেশি হয়েছে। মহাসড়কের সম্প্রসারণে যে সমস্ত প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে তার সঙ্গে পাঞ্জাবে আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক করিডরের শিলান্যাস হতে চলেছে। গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থানগুলির সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার মানোন্নয়নে এই প্রয়াস প্রধানমন্ত্রীর দূরদৃষ্টিকে বাস্তবায়িত করবে।
৬৬৯ কিলোমিটার দীর্ঘ দিল্লি-অমৃতসর-কাটরা এক্সপ্রেসওয়ের মানোন্নয়নে প্রায় ৩৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা খরচ হবে। এর ফলে, দিল্লি থেকে অমৃতসর এবং দিল্লি থেকে কাটরার মধ্যে যাত্রার সময় কমবে। এই গ্রীণফিল্ড এক্সপ্রেসওয়েটি শিখদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয়স্থান যেমন সুলতানপুর লোধি, গন্দিওয়াল সাহিব, খাদুর সাহিব, টার্ন তরণ এবং কাটরায় হিন্দুদের পবিত্র বৈষ্ণো দেবী মন্দিরের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলবে। এছাড়াও এই গ্রীণফিল্ড এক্সপ্রেসওয়েটি আম্বালা চণ্ডীগড়, মোহালি, পাতিয়ালা, লুধিয়ানা, জলন্ধর, কপুরথালা, কাথুয়া এবং সাম্বার মত গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলির সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলবে।
অমৃতসর - উনা শাখা চার লেন বিশিষ্ট করার কাজে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এরমধ্যে, ৭৭ কিলোমিটার দীর্ঘ অংশ অমৃতসর থেকে ভোতা করিডরের অংশ। চারলেন বিশিষ্ট এই শাখাটি চারটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় মহাসড়কের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করবে। এই চারটি মহাসড়ক হল অমৃতসর - ভাতিন্ডা - জামনগর অর্থনৈতিক করিডর, দিল্লি - অমৃতসর - কাটরা এক্সপ্রেসওয়ে, উত্তর - দক্ষিণ করিডর এবং কাংড়া - হামিরপুর - বিলাসপুর - সিমলা করিডর। এর ফলে, শিখদের গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থানগুলির সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে।
প্রধানমন্ত্রী কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ মুকেরিয়ান ও তালওয়ারার মধ্যে নতুন ব্রডগেজ রেললাইনের শিলান্যাস করবেন। এটি নির্মাণে খরচ ধরা হয়েছে ৪১০ কোটি টাকার বেশি। নাঙ্গালদাম - দৌলতপুর চক রেল সেকশনের সম্প্রসারিত শাখা হয়ে উঠবে এই ব্রডগেজ রেলাইনটি। এরফলে, সমগ্র এই এলাকায় সব মরশুমের উপযোগী পরিবহণের ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। নতুন এই ব্রডগেজ শাখাটি কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে, কারণ বিকল্প রুটে জম্মু ও কাশ্মীরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা যাবে। পাঞ্জাবে হোসিয়ারপুর এবং হিমাচলপ্রদেশের উনার সাধারণ মানুষ এই প্রকল্পের মাধ্যমে লাভবান হবেন। একই সঙ্গে সমগ্র এই অঞ্চলে পর্যটনের প্রসার ঘটবে, সেই সঙ্গে শৈল শহরগুলিতে যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নতি হবে।
দেশের সব প্রান্তে বিশ্বমানের চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর দূরদৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পাঞ্জাবে তিনটি শহরে নতুন চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে তোলার সূচনা হবে। ফিরোজপুরে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট পিজিআই স্যাটেলাইট সেন্টার গড়ে উঠবে। এই চিকিৎসা কেন্দ্রটি নির্মাণে খরচ ধরা হয়েছে ৪৯০ কোটি টাকার বেশি। এই চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে ইন্টারন্যাল মেডিসিন, জেনারেল সার্জারি, অর্থোপেডিক্স, প্লাস্টিক সার্জারি, নিউরো সার্জারি, গাইনোকলোজি, পিডিয়াট্রিক্স, ইএনটি প্রভৃতি চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যাবে। ফিরোজপুর ও আশেপাশের এলাকার মানুষ এই স্যাটেলাইট চিকিৎসা কেন্দ্রটি থেকে বিশ্বমানের পরিষেবা পাবেন।
প্রধানমন্ত্রী কাপুরথালা ও হোশিয়ারপুরে দুটি মেডিকেল কলেজের শিলান্যাস করবেন। এই মেডিকেল কলেজ দুটি গড়ে তুলতে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৩২৫ কোটি টাকা। প্রতিটি মেডিকেল কলেজে প্রায় ১০০টি করে চিকিৎসা শিক্ষার আসন থাকবে। উল্লেখ করা যেতে পারে, কেন্দ্রীয় সহায়তা পুষ্ট নতুন মেডিকেল কলেজ স্থাপন সংক্রান্ত যে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে, তার তৃতীয় পর্যায়ে পাঞ্জাবে এই দুটি মেডিকেল কলেজ গড়ে তোলার অনুমতি দেওয়া হয়। কর্মসূচির আওতায় এই রাজ্যে মোট তিনটি মেডিকেল কলেজ গড়ে তোলা হবে। ইতিমধ্যেই পাঞ্জাবের এসএএস নগরে একটি মেডিকেল কলেজ চালু হয়েছে।