প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ১২ জানুয়ারি দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে মহারাষ্ট্র সফর করবেন। নাসিকে পৌঁছনোর পর তিনি ২৭তম জাতীয় যুব উৎসবের উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রী মুম্বাইয়ে ৩টে ৩০ মিনিটে অটল বিহারী বাজপেয়ী সেওয়ারি – নব সেবা অটল সেতু উদ্বোধন করবেন এবং সেতু পার হবেন। বিকেল ৪টে ১৫ মিনিটে তিনি নবি মুম্বাইয়ে একটি জনসভায় অংশ নেবেন। সেখানে তিনি একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন।
অটল বিহারী বাজপেয়ী সেওয়ারি – নব সেবা অটল সেতু:
শহরে যানবাহন পরিকাঠামো এবং যোগাযোগ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে নাগরিকদের স্বাচ্ছন্দ্য দেওয়াই প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য। এজন্য গড়ে উঠেছে মুম্বাই ট্রান্সহারবার সংযোগ, যার নামকরণ হয়েছে ‘অটল বিহারী বাজপেয়ী সেওয়ারি – নব সেবা অটল সেতু’। ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। ১৭ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে অটল সেতু নির্মিত হয়েছে। ছ’লেনের এই সেতুটি ২১.৮ কিলোমিটার লম্বা। আরব সাগরের ওপর এই সেতুটির দৈর্ঘ্য ১৬.৫ কিলোমিটার এবং স্থলভাগে এর দৈর্ঘ্য ৫.৫ কিলোমিটার। ভারতে এটা শুধুমাত্র দীর্ঘতম সেতুই নয়, দীর্ঘতম সাগরসেতুও বটে। মুম্বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং নবি মুম্বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাতায়াতে গতি বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও, মুম্বাই থেকে পুণে, গোয়া এবং দক্ষিণ ভারত যাতায়াতের সময়ও অনেক হ্রাস পাবে। এর ফলে, মুম্বাই ও জওহরলাল নেহরু বন্দরের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থাও উন্নত হবে।
নবি মুম্বাইয়ে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা:
প্রধানমন্ত্রী নবি মুম্বাইয়ে ১২ হাজার ৭০০ কোটি টাকারও বেশি নানাবিধ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। ইস্টার্ন ফ্রি ওয়ের অরেঞ্জ গেট থেকে মেরিন ড্রাইভ পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ একটি সুড়ঙ্গের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। ৮ হাজার ৭০০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে ৯.২ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গটি নির্মাণ করা হবে। এর ফলে, মুম্বাইয়ের পরিকাঠামো উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য প্রসারলাভের পাশাপাশি অরেঞ্জ গেট থেকে মেরিন ড্রাইভ পর্যন্ত যাতায়াতের সময় অনেকটাই হ্রাস পাবে।
এরপর, সূর্য আঞ্চলিক পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পের প্রথম পর্ব জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। ১ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নির্মিত এই জল প্রকল্প মহারাষ্ট্রের পালঘর ও থানে জেলায় পানীয় জল সরবরাহ করবে। এর ফলে, ১৪ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী ২ হাজার কোটি টাকার রেল প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। এর মধ্যে রয়েছে – উড়ান খারকোপার রেলপথের দ্বিতীয় পর্যায়। এর ফলে, নবি মুম্বাইয়ে শহরতলী রেল পরিষেবা ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতি হবে। নেরুল – বেলাপুর থেকে খারকোপার রেল পরিষেবা এখন উড়ান পর্যন্ত প্রসারিত হবে। প্রধানমন্ত্রী উড়ান রেল স্টেশন থেকে খারকোপার পর্যন্ত একটি ইএমইউ ট্রেনের যাত্রা সূচনা করবেন। এছাড়াও, শহরতলীর অন্য আরও রেল প্রকল্পও রয়েছে। এর ফলে, নিত্য রেলযাত্রীরা উপকৃত হবেন।
সান্তাক্রুজ বৈদ্যুতিন রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা – বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইইপিজেড – এসইজেড) – এ প্রধানমন্ত্রী রত্নালঙ্কার শিল্পের জন্য ‘ভারতরত্নম’ নামে একটি মেগা কমন ফেসিলিটেশন সেন্টার – এর উদ্বোধন করবেন। এ ধরনের উদ্যোগে ভারতে এই প্রথম। থ্রি-ডি মেটাল প্রিন্টিং সহ বিশ্বের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের সুবিধা এখানে পাওয়া যাবে। দক্ষতা বিকাশের জন্য এখানে একটি প্রশিক্ষণ বিদ্যালয় থাকবে, যাতে বিশেষভাবে সক্ষম ছাত্রছাত্রীদেরও প্রশিক্ষণের সুযোগ থাকবে। রত্নালঙ্কারের উন্নতমানের নক্শার জন্য এনইএসটি প্রথম পর্বের উদ্বোধনও করবেন তিনি। এই শিল্পের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বৃহদায়তন উৎপাদনের সংস্থান এখানে রাখা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নমো মহিলা সশক্তিকরণ অভিযানেরও সূচনা করবেন। মহারাষ্ট্রের মহিলাদের সশক্তিকরণের লক্ষ্যে তাঁদের দক্ষতা বিকাশে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
২৭তম জাতীয় যুব উৎসব:
দেশের উন্নয়নে যুবদের সামিল করতে প্রধানমন্ত্রী নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে, নাসিকে ২৭তম জাতীয় ক্রীড়া উৎসবের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। আগামীকাল স্বামী বিবেকানন্দের জন্মজয়ন্তীতে প্রতি বছর ১২ জানুয়ারি থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত এই জাতীয় যুব উৎসবের আয়োজন করা হয়। এ বছর এই উৎসবের আয়োজক রাজ্য হ’ল – মহারাষ্ট্র। এবারের উৎসবের থিম করা হয়েছে ‘Viksit Bharat@ 2047: युवा के लिए, युवा के द्वारा’. দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় সাড়ে সাত হাজারের মতো যুব প্রতিনিধি এতে যোগ দেবেন। এই উৎসবে নানাবিধ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।