আগামী ১৯ জানুয়ারি কর্ণাটক ও মহারাষ্ট্র সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ঐদিন তিনি কর্ণাটকে ১০,৮০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগের কয়েকটি প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করবেন। আবার মহারাষ্ট্রে সেদিন ৩৮,৮০০ কোটি টাকার কয়েকটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পাশাপাশি বেশ কিছু প্রকল্পের উদ্বোধনও করবেন তিনি।
কর্ণাটকের যে গ্রামগুলিকে ‘রাজস্ব গ্রাম’ বলে সম্প্রতি ঘোষণা করা হয়েছে সেখানকার প্রায় ৫০ হাজার সুফলভোগীর হাতে সম্পত্তির দলিল তুলে দেবেন তিনি। এছাড়াও, ‘জল জীবন মিশন’-এর আওতায় তিনি শিলান্যাস করবেন একটি গ্রামীণ জল সরবরাহ প্রকল্পেরও।
নারায়ণপুর লেফট ব্যাঙ্ক ক্যানাল এক্সটেনশনের সংস্কার ও আধুনিকীকরণ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর ফলে উপকৃত হবেন সংশ্লিষ্ট এলাকার ৩ লক্ষেরও বেশি কৃষিজীবী মানুষ। কর্ণাটকের দুটি গ্রিনফিল্ড মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাসও করবেন তিনি। এই দুটি প্রকল্প সুরাট-চেন্নাই এক্সপ্রেসওয়ের অন্তর্গত। ঐদিন মহারাষ্ট্রে মেট্রো রেললাইনের ২এ এবং ৭ নম্বর অংশটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও, সাতটি নিকাশি প্রকল্প এবং কংক্রিটের রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনও করবেন তিনি। ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাসকে সংস্কারের মাধ্যমে নতুনভাবে সাজিয়ে তোলার একটি প্রকল্পের শিলান্যাস হবে প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়ে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কর্ণাটকের কালাবুরাগি, ইয়াদগিরি, রায়চুর, বিদার এবং বিজয়পুর জেলার ১,৪৭৫টি বসবাসের এলাকা সম্প্রতি নতুন ‘রাজস্ব গ্রাম’ রূপে চিহ্নিত ও ঘোষিত হয়েছে। যে সমস্ত সুফল গ্রহীতার হাতে প্রধানমন্ত্রী ঐদিন জমি, বাড়ি তথা সম্পত্তির দলিল তুলে দেবেন, তাঁদের অধিকাংশই প্রান্তিক স্তরের মানুষ। এছাড়াও, তপশিলি জাতি, তপশিলি উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীভুক্তরাও রয়েছেন সুফল গ্রহীতাদের মধ্যে। এইভাবে জমির স্বত্ত্ব তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার মাধ্যমে সেখানে পানীয় জল ও বিদ্যুতের যোগান এবং সড়ক নির্মাণের মতো সরকারি কর্মসূচির সুযোগ তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
অন্যদিকে, যে গ্রিনফিল্ড মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস করা হবে তা সুরাট-চেন্নাই এক্সপ্রেসওয়ে বরাবর ছ’টি রাজ্যকে যুক্ত করেছে। রাজ্যগুলি হল – গুজরাট, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ু। এই মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প তৈরির মাধ্যমে মহাসড়কের ১,৬০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যকে কমিয়ে ১,২৭০ কিলোমিটারে নিয়ে আসা হবে। এর ফলে ঐ মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াতের ক্ষেত্রে সময়ের উল্লেখযোগ্য সাশ্রয় ঘটবে। এজন্য প্রকল্প খাতে ব্যয়ের মাত্রা দাঁড়াবে ২,১০০ কোটি টাকা।
মহারাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রী ‘মুম্বাই ১ মোবাইল অ্যাপ’ এবং ন্যাশনাল কমন মোবিলিটি কার্ড (এনসিএমসি)-এরও ঐদিন সূচনা করবেন। ঐ অ্যাপটি ব্যবহারের মাধ্যমে ভ্রমণ বা যাতায়াত আরও সহজ হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। মেট্রো স্টেশনগুলির প্রবেশ পথে এই অ্যাপ ব্যবহারযোগ্য এবং ইউপিআই-এর মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে এর সাহায্যে টিকিটও কেনা যাবে। অন্যদিকে, ন্যাশনাল কমন মোবিলিটি কার্ড (এনসিএমসি) প্রাথমিকভাবে মেট্রো করিডরগুলিতে ব্যবহারযোগ্য। পরে তা বাস ও লোকাল ট্রেনে সফরের ক্ষেত্রেও কাজে লাগানো যাবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এই ব্যবস্থায় যাত্রীদের একাধিক কার্ড বা নগদ অর্থ নিয়ে যাতায়াত করার প্রয়োজন হবে না। এনসিএমসি কার্ডটির সাহায্যে দ্রুত তা এবং স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে ভ্রমণ ও সফর করা যাবে।