প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী ১-২ মার্চ পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খন্ড এবং বিহার সফর করবেন।
১ মার্চ সকাল ১১টা নাগাদ প্রধানমন্ত্রী ঝাড়খন্ডের ধানবাদের সিন্দ্রিতে পৌঁছবেন এবং একটি প্রকাশ্য সভায় অংশ নেবেন। ওই অনুষ্ঠানে ঝাড়খন্ডের জন্য ৩৫,৭০০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন, শিলান্যাস ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। বেলা তিনটে নাগাদ প্রধানমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের হুগলির আরামবাগে ৭,২০০ কোটি টাকার বেশি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন, শিলান্যাস ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন।
২ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ পশ্চিমবঙ্গের নদিয়ার কৃষ্ণনগরে একটি কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। সেখানেও ১৫,০০০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন, শিলান্যাস ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। দুপুর আড়াইটে নাগাদ বিহারের ঔরঙ্গাবাদে ২১,৪০০ কোটি টাকার একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন, শিলান্যাস ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন।
ঝাড়খন্ডের সিন্দ্রিতে প্রধানমন্ত্রী
ঝাড়খন্ডের সিন্দ্রিতে এক অনুষ্ঠানে সার, রেল, বিদ্যুৎ এবং কয়লার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন, শিলান্যাস ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন প্রধানমন্ত্রী। ঝাড়খন্ডে ১৭,৬০০ কোটি টাকার বেশি বেশ কয়েকটি রেল প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসের পাশাপাশি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। এর মধ্যে রয়েছে, দেওঘর-ডিব্রুগড় ট্রেন পরিষেবা, টাটানগর ও বাদামপাহাড়ের মধ্যে দৈনিক মেমু ট্রেন পরিষেবা এবং শিবপুর স্টেশন থেকে পণ্যবাহী ট্রেন চালু। সিন্দ্রি ফাটিলাইজার প্ল্যান্টে ৮,৯০০ কোটি টাকার বেশি একটি সার ও রসায়ন কারখানা জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন প্রধানমন্ত্রী। ঝাড়খন্ডের ছাতরায় উত্তর করণপুরা সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রকল্পের প্রথম ইউনিট (৬৬০ মেগাওয়াট)টিও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন প্রধানমন্ত্রী।
পশ্চিমবঙ্গের আরামবাগে প্রধানমন্ত্রী
হুগলির আরামবাগে রেল, বন্দর, তেল পাইপলাইন, এলপিজি সরবরাহ, জল শোধন সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন প্রধানমন্ত্রী। ২,৭৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৫১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ইন্ডিয়ান অয়েলের হলদিয়া-বারাউনি অশোধিত তেল পাইপলাইনের উদ্বোধন করবেন শ্রী মোদী। এই পাইপলাইনটি পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং ঝাড়খন্ডের মধ্য দিয়ে যাবে। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে বারাউনি, বঙ্গাইগাঁও এবং গুয়াহাটি শোধনাগারে অশোধিত তেল সরবরাহ করা হবে।
কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দরের পরিকাঠামো শক্তিশালী করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েকটি প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। কয়েকটি প্রকল্পের শিলান্যাসও করবেন। প্রধানমন্ত্রী ২,৬৮০ কোটি টাকার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রেল প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে, ঝাড়গ্রাম – সালগাঝারি (৯০ কিমি)-র মধ্যে সংযোগকারী তৃতীয় রেললাইন, ডানকুনি – ভট্টনগর – বাল্টিকুরিতে (৯ কিমি) ডবল রেললাইন, সন্ডালিয়া – চাঁপাপুকুর (২৪ কিমি) ডবল রেললাইনের সূচনা।
খড়গপুরের বিদ্যাসাগর শিল্প পার্কে ইন্ডিয়ান অয়েলের ১২০ টিএমটিপিএ ধারণ ক্ষমতার এলপিজি বটলিং প্ল্যান্টের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। ২০০ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নির্মিত এই প্রকল্প ওই অঞ্চলে প্রথম এলপিজি বটলিং প্ল্যান্ট হতে চলেছে। এই প্ল্যান্টের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের ১৪.৫ লক্ষ গ্রাহককে এলপিজি সরবরাহ করা হবে।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের অর্থানুকুল্যে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত জল শোধনের সঙ্গে যুক্ত তিনটি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগরে প্রধানমন্ত্রী
কৃষ্ণনগরেও বিদ্যুৎ, রেল ও সড়কের সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি বেশকিছু প্রকল্প তিনি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় পর্যায়ের (২x৬৬০ মেগাওয়াট) কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন শ্রীমোদী। এছাড়া মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ফ্লু গ্যাস ডিসালফিউরাইজেশন (এফজিডি) ব্যবস্থার ৭ ও ৮ নম্বর ইউনিটের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৬৫০ কোটি টাকা।
১২ নম্বর জাতীয় সড়কের ফারাক্কা ও রায়গঞ্জের মধ্যে ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের রাস্তার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এটি তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ১,৯৮৬ কোটি টাকা। এছাড়া দামোদর – মহিশিলা ডবল রেললাইন, রামপুরহাট ও মুরারইয়ের মধ্যে তৃতীয় লাইন, বাজারসাউ – আজিমগঞ্জ ডবল রেললাইন এবং আজিমগঞ্জ – মুর্শিদাবাদের মধ্যে সংযোগকারী নতুন রেললাইনের সূচনা করবেন তিনি। এই প্রকল্পগুলিতে খরচ হয়েছে ৯৪০ কোটি টাকা।
বিহারের ঔরঙ্গাবাদে প্রধানমন্ত্রী
ঔরঙ্গাবাদে ২১,৪০০ কোটি টাকার বেশি উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস, উদ্বোধন ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন প্রধানমন্ত্রী। ১৮,১০০ কোটি টাকার বেশি বেশকয়েকটি জাতীয় সড়ক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন করবেন তিনি। যে সব প্রকল্পের তিনি উদ্বোধন করবেন, তার মধ্যে রয়েছে ৬৩.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ জয়নগর – নাড়াহিয়া দুই লেনের রাস্তা, ৪৭ কিলোমিটার দীর্ঘ বক্তিয়ারপুর – রাজৌলি চার লেনের রাস্তা এবং ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ আরা – পারারিয়া চার লেনের রাস্তা।
পাটনা রিং রোডের উন্নয়নে গঙ্গার ওপর তৈরি ছয় লেনের সেতুর শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া পাটনায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ইউনিটি মলের শিলান্যাস করবেন তিনি। নমামি গঙ্গে প্রকল্পে বিহারে ২,১৯০ কোটি টাকার ১২টি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন শ্রীমোদী।
বিহারের বেগুসরাইয়ে প্রধানমন্ত্রী
বিহারের বেগুসরাইয়ে বিদ্যুৎ, তেল এবং গ্যাসের সঙ্গে যুক্ত ১.৪৮ লক্ষ কোটি টাকার একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী। বেশকিছু প্রকল্প তিনি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। এই প্রকল্পগুলির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কাবেরি – গোদাবরি অববাহিকা সহ বিহার, হরিয়ানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব এবং কর্নাটক রাজ্য।
তেল এবং গ্যাসের ক্ষেত্রে ১৪,০০০ কোটি টাকার প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ১১,৪০০ কোটি টাকা বারাউনি শোধনাগারের সম্প্রসারণ প্রকল্প। প্রায় ৩,৯১৭ কোটি টাকার বেশ কয়েকটি রেল প্রকল্পের সূচনা ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন শ্রী মোদী।