নয়াদিল্লি, ১৩ নভেম্বর ২০২৩।। আগামী ১৪-১৫ নভেম্বর ঝাড়খন্ড সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ১৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় রাঁচির ভগবান বিরসা মুন্ডা মেমোরিয়াল পার্ক ও স্বাধীনতা সংগ্রামী জাদুঘর পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর তিনি ভগবান বিরসা মুন্ডার জন্মস্থান উলিহাতু গ্রামে পৌঁছবেন, যেখানে তিনি ভগবান বিরসা মুন্ডার মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। ভগবান বিরসা মুন্ডার জন্মস্থান উলিহাতু গ্রামে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী সকাল সাড়ে ১১টায় খুন্টিতে তৃতীয় জাতীয় গৌরব দিবস, ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এই কর্মসূচির সময় প্রধানমন্ত্রী 'বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা' এবং 'প্রধানমন্ত্রী পার্টিকুলারলি ভার্নারেবল ট্রাইবেল গ্রুপ মিশন’ এর সূচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি পিএম-কিষাণের ১৫তম কিস্তিরও অর্থও এদিন প্রদান করবেন এবং ঝাড়খন্ডে একাধিক উন্নয়ন মূলক প্রকল্পের উদ্বোধন, জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা
এই প্রকল্পগুলির সুফল যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সমস্ত লক্ষ্যযুক্ত সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছে যায় তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে সরকারের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পগুলির স্যাচুরেশন অর্জনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিরন্তর প্রচেষ্টা রয়েছে। প্রকল্পগুলির অন্তর্ভুক্তিকরণের এই লক্ষ্য অর্জনের একটি বড় পদক্ষেপ হিসাবে প্রধানমন্ত্রী জনজাতি গৌরব দিবস উপলক্ষে 'বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা' শুরু করবেন।
এই যাত্রার মূল লক্ষ্য হবে মানুষের কাছে পৌঁছানো এবং সচেতনতা তৈরি করা এবং স্যানিটেশন সুবিধা, প্রয়োজনীয় আর্থিক পরিষেবা, বিদ্যুৎ সংযোগ, এলপিজি সিলিন্ডারের ব্যবহার, দরিদ্রদের জন্য আবাসন, খাদ্য সুরক্ষা, সঠিক পুষ্টি, নির্ভরযোগ্য স্বাস্থ্যসেবা, বিশুদ্ধ পানীয় জল ইত্যাদির মতো কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির সুবিধা প্রদান করা। যাত্রার সময়কালে নির্ধারিত বিবরণের মাধ্যমে সম্ভাব্য সুবিধাভোগীদের তালিকাভুক্তি করা হবে।
ঝাড়খন্ডের খুন্টিতে 'বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা'র উদ্বোধন উপলক্ষে আইইসি (তথ্য, শিক্ষা ও যোগাযোগ) ভ্যানের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। যাত্রাটি প্রাথমিকভাবে উল্লেখযোগ্য জনজাতীয় জনসংখ্যার জেলাগুলি থেকে শুরু হবে এবং ২০২৪ সালের ২৫ শে জানুয়ারির মধ্যে সারা দেশের সমস্ত জেলা জুড়ে যাবে।
পিএম পিভিটিজি মিশন
এই কর্মসূচির সময় 'প্রধানমন্ত্রী পার্টিকুলারলি ভার্নারেবল ট্রাইবেল গ্রুপ”(পিএম পিভিটিজি) মিশন' নামে এই ধরনের প্রথম উদ্যোগেরও সূচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী। ১৮টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ২২,৫৪৪টি গ্রামে (২২০টি জেলা) ৭৫টি পিভিটিজি রয়েছে, যার জনসংখ্যা ২৮ লক্ষ।
এই জনজাতিরা বিক্ষিপ্ত, প্রত্যন্ত এবং দুর্গম বসতিগুলিতে, প্রায়শই বনাঞ্চলে বাস করে, এবং তাই প্রায় ২৪,০০০ কোটি টাকার বাজেটের একটি মিশনের পরিকল্পনা করা হয়েছে পিভিটিজি পরিবার এবং বসতিগুলিকে সড়ক ও টেলিকম সংযোগ, বিদ্যুৎ, নিরাপদ আবাসন, বিশুদ্ধ পানীয় জল এবং স্যানিটেশন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টির উন্নত অ্যাক্সেস এবং সুস্থায়ী জীবিকার সুযোগের মতো মৌলিক সুবিধাগুলি দিয়ে পরিপূর্ণ করার।
মিশনটি ৯টি মন্ত্রকের ১১টি হস্তক্ষেপের সমন্বয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। উদাহরণস্বরূপ, পিএমজিএসওয়াই, পিএমজিএওয়াই, জল জীবন মিশন ইত্যাদির অধীনে। এই প্রত্যন্ত বসতিগুলিকে কভার করার জন্য কিছু প্রকল্পের নিয়ম শিথিল করা হবে।
এছাড়াও, পিএমজেএওয়াই, সিকেল সেল ডিজিজ নির্মূল, যক্ষ্মা নির্মূল, ১০০% টিকাকরণ, পিএম সুরক্ষিত মাতৃত্ব যোজনা, প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী পুষ্টি, প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা ইত্যাদির জন্য পৃথকভাবে স্যাচুরেশন নিশ্চিত করা হবে।
পিএম-কিষাণ ও অন্যান্য উন্নয়ন উদ্যোগের ১৫তম কিস্তি
কৃষকদের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকারের আরও একটি উদাহরণ হিসাবে, প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি (পিএম-কিষান)র আওতায় প্রায় ১৮,০০০ কোটি টাকার ১৫ তম কিস্তির টাকা ৮ কোটিরও বেশি উপকারভোগীদের সরাসরি সুবিধা হস্তান্তরের মাধ্যমে জমা করা হবে। এই প্রকল্পের আওতায় এখনও পর্যন্ত ১৪টি কিস্তিতে ২.৬২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি অর্থ গ্রহীতাদের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী রেল, সড়ক, শিক্ষা, কয়লা, পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের মতো একাধিক ক্ষেত্রে প্রায় ৭২০০ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন, জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ এবং শিলান্যাস করবেন।
প্রধানমন্ত্রী যে প্রকল্পগুলির শিলান্যাস করবেন তার মধ্যে রয়েছে জাতীয় সড়ক ১৩৩-এর মহাগামা-হাঁসডিহা সেকশনের ৫২ কিলোমিটার অংশকে চার লেনে উন্নীত করা; জাতীয় সড়ক ১১৪এ-এর বাসুকিনাথ-দেওঘর সেকশনের ৪৫ কিলোমিটার অংশকে চার লেনে উন্নীত করা; কেডিএইচ-পূর্ণদিহ কয়লা হ্যান্ডলিং প্ল্যান্ট; আইআইআইটি রাঁচির নতুন একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন।
যে প্রকল্পগুলির উদ্বোধন এবং জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করা হবে সেগুলির মধ্যে রয়েছে আইআইএম রাঁচির নতুন ক্যাম্পাস; আইআইটি আইএসএম ধানবাদের নতুন হোস্টেল; বোকারোতে পেট্রোলিয়াম অয়েল অ্যান্ড লুব্রিকেন্টস (পিওএল) ডিপো; হাতিয়া-পাকড়া সেকশন, তালগারিয়া-বোকারো সেকশন এবং জারাংডিহ-পাত্রাতু সেকশনের ডাবলিংয়ের মতো বেশ কয়েকটি রেল প্রকল্প। এছাড়াও, ঝাড়খন্ড রাজ্যে রেল বিদ্যুতায়নের ১০০% অর্জনকেও প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন।