প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২৭ ও ২৮ আগস্ট গুজরাট সফর করবেন। ২৭ আগস্ট বিকেল ৫-৩০ মিনিটে শ্রী মোদী আমেদাবাদে সবরমতী নদী তীরে খাদি উৎসবে বক্তব্য রাখবেন। ২৮ আগস্ট সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী ভূজ-এ ‘স্মৃতি বন’ স্মারকের উদ্বোধন করবেন। এরপর বেলা ১২টায় তিনি ভূজ-এ একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন। শ্রী মোদী বিকেল ৫টায় গান্ধীনগরে সুজুকি গোষ্ঠীর ভারতে ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন।
খাদি উৎসব
খাদিকে জনপ্রিয় করতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নিরলস উদ্যোগের ফলে দেশে খাদি পণ্যের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলস্বরূপ, ২০১৪ সালের পর থেকে ভারতে খাদি সামগ্রীর বিক্রি চারগুণ বেড়েছে, গুজরাটে যা আটগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’-এর অঙ্গ হিসেবে স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় খাদি শিল্পের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিয়ে এই শিল্পকে শ্রদ্ধা জানানো হবে। আমেদাবাদে সবরমতী নদী তীরে খাদি উৎসবে গুজরাটের বিভিন্ন জেলার ৭,৫০০ মহিলা খাদি শিল্পী একসঙ্গে চরকা কাটবেন। এই অনুষ্ঠানে ১৯২০ সালের পর থেকে খাদির বিবর্তন তুলে ধরা হবে। ২২ রকমের চরকা উৎসবে প্রদর্শিত হবে। এর মধ্যে স্বাধীনতা আন্দোলনের ইয়েরাওয়াড়া চরকা ছাড়াও বর্তমান যুগের উন্নত প্রযুক্তি সম্বলিত চরকাও প্রদর্শনীতে স্থান পাবে। পণ্ডুরু খাদি উৎপাদন ও প্রদর্শনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী গুজরাট রাজ্য খাদি গ্রামোদ্যোগ বোর্ডের নতুন ভবনের উদ্বোধন করবেন এবং সবরমতী নদী তীরে একটি ফুট ওভারব্রিজও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন।
ভূজ-এ প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী ভূজ জেলায় ‘স্মৃতি বন’ স্মারকের উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা অনুসারে ৪৭০ একর জমিতে এটি গড়ে তোলা হয়েছে। ২০০১ সালে যে বিধ্বংসী ভূমিকম্প হয়েছিল তার কেন্দ্র ছিল ভূজ-এ। ঐ ভূমিকম্পে প্রায় ১৩ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। ভূমিকম্পের পর পুনর্গঠনের সময় মানুষের জীবনীশক্তিকে শ্রদ্ধা জানাতে এই স্মারক নির্মিত হয়েছে। ভূমিকম্পের সময় যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, স্মারকে তাঁদের নাম খোদিত রয়েছে।
পুনর্জন্ম, পুনঃঅনুসন্ধান, পুনঃপ্রতিষ্ঠা, পুনর্গঠন, পুনর্ভাবনা, পুনর্জীবন এবং পুনর্নবীকরণ – এই পাঁচটি বিষয়ের ওপর সাতটি ব্লক সম্বলিত ‘স্মৃতি বন ভূমিকম্প সংগ্রহশালা’টি এখানে অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে। যে কোনো বিপর্যয়ের পর পৃথিবীর আবারও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসার ক্ষমতা ‘পুনর্জন্ম’ ব্লকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। গুজরাটের ভূ-বৈচিত্র্য এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বিবরণ ‘পুনঃঅনুসন্ধান’ ব্লকে থাকবে। ২০০১ সালে ভূমিকম্পের পর ত্রাণ ও পুনর্গঠনের জন্য কি কি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা তৃতীয় ব্লকটিতে রয়েছে। চতুর্থ ব্লকে ২০০১ সালে ভূমিকম্পের পর গুজরাটের পুনর্গঠনের জন্য যে সমস্ত উদ্যোগ নেওয়া হয় তার বিবরণ রয়েছে। পঞ্চম ব্লকে যে কোনো সময়ে যে কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবিলায় কি কি করণীয় সে বিষয়ে দর্শকদের কাছে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হবে। একটি সিমুলেটরের সাহায্যে ভূমিকম্পের অভিজ্ঞতা ষষ্ঠ ব্লকে পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে ফাইভ-ডি সিমুলেটর ব্যবহার করা হয়েছে। সপ্তম ব্লকে ভূমিকম্পে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের সুযোগ থাকছে।
প্রধানমন্ত্রী ভূজ-এ ৪,৪০০ কোটি টাকার একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন। তিনি সর্দার সরোবর প্রকল্পের কচ্ছ ব্রাঞ্চ ক্যানেল উদ্বোধন করবেন। ৩৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ক্যানেলের একটি অংশ ২০১৭ সালে শ্রী মোদী উদ্বোধন করেন। এবার বাকি অংশের উদ্বোধন হবে। এই খাল উদ্বোধন হওয়ার ফলে কচ্ছ জেলার ৯৪৮টি গ্রাম এবং ১০টি শহরে সেচ ও পানীয় জলের সংস্থান করা যাবে। প্রধানমন্ত্রী সারহাদ ডেয়ারির নতুন স্বয়ংক্রিয় দুগ্ধ প্রক্রিয়াকরণ ও প্যাকিং প্ল্যান্টের উদ্বোধন করবেন। এছাড়াও, ভূজ-এর আঞ্চলিক বিজ্ঞান কেন্দ্র, গান্ধীধামে ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকর কনভেনশন কেন্দ্র, আনজারে বীর বাল স্মারক, নাখত্রানায় ভূজ-এর দুটি সাব-স্টেশন সহ বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করা হবে। শ্রী মোদী ভূজ-ভীমাসার সড়ক সহ প্রায় ১,৫০০ কোটি টাকার একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাসও করবেন।
গান্ধীনগরে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী ভারতে সুজুকি সংস্থার ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখবেন। গান্ধীনগরের মহাত্মা মন্দিরে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সুজুকি গোষ্ঠীর দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প - হনসালপুর-এ সুজুকি মোটর গুজরাট ইলেক্ট্রিক ভেহিকেল ব্যাটারি ম্যানুফ্যাকচারিং কেন্দ্র এবং হরিয়ানার খারখোড়ায় মারুতি সুজুকি গোষ্ঠীর একটি গাড়ি উৎপাদন কেন্দ্রের শিলান্যাস করবেন তিনি।
হনসালপুর-এ সুজুকি মোটর গুজরাট ইলেক্ট্রিক ভেহিকেল ব্যাটারি ম্যানুফ্যাকচারিং কেন্দ্রটি ৭,৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে। এখানে বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য উন্নতমানের রাসায়নিক সেল তৈরি হবে। হরিয়ানার খারখোড়ায় গাড়ি উৎপাদন কেন্দ্রে প্রতি বছর ১০ লক্ষ যাত্রীবাহী গাড়ি উৎপাদনের ক্ষমতা থাকবে। এটি হবে বিশ্বের বৃহত্তম যাত্রীবাহী গাড়ি নির্মাণ কেন্দ্র। এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ১১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে।