প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখে উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যা সফর করবেন।
সকাল সোয়া ১১ টা নাগাদ প্রধানমন্ত্রী নতুন আঙ্গিকে নির্মিত অযোধ্যা রেল স্টেশনের উদ্বোধন এবং নতুন অমৃত ভারত ও বন্দে ভারত ট্রেনের সূচনা করবেন। আরও বেশ কয়েকটি রেল প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন প্রধানমন্ত্রী। সোয়া ১২ টা নাগাদ নবনির্মিত অযোধ্যা বিমানবন্দরের উদ্বোধন করবেন তিনি। বেলা ১ টা নাগাদ প্রধানমন্ত্রী ১৫,৭০০ কোটি টাকার বেশি প্রকল্পের উদ্বোধন, জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ এবং শিলান্যাস করবেন। এর মধ্যে রয়েছে, অযোধ্যা ও সংলগ্ন এলাকাগুলির জন্য ১১ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প এবং উত্তরপ্রদেশের অন্যান্য অংশের জন্য প্রায় ৪,৬০০ কোটি টাকার প্রকল্প।
অযোধ্যার সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই শহরে আধুনিক বিশ্বমানের পরিকাঠামো গড়ে তোলা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি এবং মানুষের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সেই ভাবনাকে বাস্তব রূপ দিতে একটি নতুন বিমানবন্দর, নতুন আঙ্গিকে রেল স্টেশন নির্মাণ, বিভিন্ন রাস্তার সম্প্রসারণ ও সৌন্দর্যায়ন এবং নাগরিক পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ধরনের পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। অযোধ্যা এবং এর আশেপাশের বিভিন্ন এলাকার সৌন্দর্যায়নের সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েকটি নতুন প্রকল্পেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
অযোধ্যা বিমানবন্দর
১,৪৫০ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে অত্যাধুনিক বিমানবন্দরের প্রথম পর্বের কাজ শেষ করা হয়েছে। বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল ভবনটি ৬,৫০০ বর্গ মিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, যেখানে বার্ষিক প্রায় ১০ লক্ষ যাত্রীর যাতায়াতের সুবিধা রয়েছে। টার্মিনাল ভবনটির সম্মুখভাগ তৈরি করা হয়েছে অযোধ্যার শ্রীরাম মন্দিরের স্থাপত্যের আদলে। তাপ প্রতিরোধী ব্যবস্থা, এলইডি আলোকসজ্জা, বৃষ্টির জল সংরক্ষণ, জলশোধন প্ল্যান্ট, নিকাশি প্ল্যান্ট, সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প সহ এই ধরনের আরও বেশকিছু ব্যবস্থা রয়েছে এই টার্মিনালে।
অযোধ্যা ধাম রেল স্টেশন
২৪০ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে অযোধ্যা ধাম জংশন রেল স্টেশনের সংস্কারের মাধ্যমে এর প্রথম পর্বের কাজ শেষ করা হয়েছে। তিন তলা বিশিষ্ট এই রেল স্টেশনে লিফট, এসকালেটর, ফুড প্লাজা, শিশু পরিচর্যার ঘর, যাত্রীদের থাকার ঘর সহ একগুচ্ছ আধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে।
অমৃত ভারত ও বন্দে ভারত ট্রেন এবং অন্যান্য রেল প্রকল্পসমূহ
প্রধানমন্ত্রী অযোধ্যা ধাম জংশন রেল স্টেশনে একগুচ্ছ সুপার ফাস্ট ট্রেনের সূচনা করবেন। এর মধ্যে রয়েছে অমৃত ভারত এক্সপ্রেস। ট্রেনটিতে সুদৃশ্য আসন ব্যবস্থা, যাত্রীদের মালপত্র রাখার উপযোগী রেক, মোবাইল চার্জিং পয়েন্ট, সিসিটিভি প্রভৃতি সব ধরনের আধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ২ টি নতুন অমৃত ভারত এক্সপ্রেসের সূচনা করবেন। ট্রেন ২টি হল, দ্বারভাঙা-অযোধ্যা-আনন্দ বিহার টার্মিনাল অমৃত ভারত এক্সপ্রেস এবং মালদা টাউন-স্যার এম বিশ্বেশ্বরাইয়া টার্মিনাস (বেঙ্গালুরু) অমৃত ভারত এক্সপ্রেস।
প্রধানমন্ত্রী ৬টি নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসেরও সূচনা করবেন। ট্রেনগুলি হল, শ্রীমাতা বৈষ্ণোদেবী কাটরা-নিউ দিল্লি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস, কোয়েম্বাটুর-ব্যাঙ্গালোর ক্যান্ট বন্দে ভারত এক্সপ্রেস, ম্যাঙ্গালোর-মাডগাঁও বন্দে ভারত এক্সপ্রেস, জলনা-মুম্বই বন্দে ভারত এক্সপ্রেস এবং অযোধ্যা-আনন্দ বিহার টার্মিনাল বন্দে ভারত এক্সপ্রেস।
প্রধানমন্ত্রী ২,৩০০ কোটি টাকার তিনটি রেল প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন।
অযোধ্যায় নাগরিকদের জন্য উন্নত পরিকাঠামো
প্রধানমন্ত্রী ৪টি নতুন রাস্তার সম্প্রসারণ ও সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। এই রাস্তাগুলি রামমন্দিরের সঙ্গে যুক্ত।
অযোধ্যা এবং এর আশেপাশে আরও একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন এবং জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধন করা প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, রাজর্ষি দশরথ স্বশাসিত স্টেট মেডিকেল কলেজ, অযোধ্যা-সুলতানপুর রোড-বিমানবন্দরের সঙ্গে যুক্ত চার লেনের রাস্তা।
অযোধ্যায় নতুন প্রকল্পের শিলান্যাস
নাগরিকদের সুবিধার্থে অযোধ্যায় একগুচ্ছ নতুন প্রকল্পেরও শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে রয়েছে, অযোধ্যার ৪টি ঐতিহাসিক প্রবেশ দ্বারের সৌন্দর্যায়ন, পর্যটকদের জন্য নয়াঘাট থেকে লক্ষ্মণ ঘাট পর্যন্ত এলাকার উন্নয়ন ও সৌন্দর্যায়ন প্রভৃতি।
অযোধ্যায় ২,১৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রস্তাবিত সবুজ উপনগরীর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বশিষ্ঠ কুঞ্জ আবাসিক প্রকল্পেরও তিনি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
উত্তরপ্রদেশের অন্যান্য প্রকল্প
উত্তরপ্রদেশের অন্যান্য অংশের জন্য বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের উদ্বোধন ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে রয়েছে, চার লেনের গোসাঁই কী বাজার বাইপাস-বারাণসী (ঘাঘরা সেতু-বারাণসী, এনএইচ-২৩৩) সড়কের সম্প্রসারণ, আমেঠি জেলার ত্রিশুন্ডিতে এলপিজি প্ল্যান্টের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি প্রভৃতি।