প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ৮-১০ মার্চ পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, অরুণাচল প্রদেশ এবং উত্তরপ্রদেশ সফর করবেন।
৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রী আসাম সফর শুরু করবেন। ৯ মার্চ ভোর ৫-৪৪ মিনিটে তিনি কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যান ঘুরে দেখবেন। বেলা ১০-৩০ মিনিটে শ্রী মোদী ইটানগরে ‘বিকশিত ভারত বিকশিত উত্তর-পূর্ব’ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন। এই অনুষ্ঠানে সেলা সুড়ঙ্গটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন তিনি। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শিল্পোন্নয়নকে শক্তিশালী করে তুলতে প্রধানমন্ত্রী ঐ অনুষ্ঠানে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ‘উন্নতি’ প্রকল্পটির সূচনা করবেন। এর অঙ্গ হিসেবে মণিপুর, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, সিকিম, ত্রিপুরা এবং অরুণাচল প্রদেশে ৫৫,৬০০ কোটি টাকার একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন, জাতির উদ্দেশ উৎসর্গ এবং শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর, শ্রী মোদী বেলা ১২-১৫ মিনিটে জোরহাটে পৌঁছবেন। সেখানে অহোম সেনাপতি লচিত বরফুকনের প্রতিকৃতির আবরণ উন্মোচন করবেন। এছাড়াও, একটি জনসভায় আসামে ১৭,৫০০ কোটি টাকারও বেশি একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করা হবে।
এরপর শ্রী মোদী বিকেল ৩-৪৫ মিনিটে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে যাবেন। সেখানে এক জনসভায় রাজ্যের জন্য ৪,৫০০ কোটি টাকারও বেশি রেল ও সড়ক সংক্রান্ত একগুচ্ছ প্রকল্প উদ্বোধন ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। সন্ধ্যা ৭টায় তিনি উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে যাবেন। সেখানে শ্রীকাশী বিশ্বনাথ মন্দির দর্শন ও পূজা করবেন।
১০ মার্চ বেলা ১২টার সময় উত্তরপ্রদেশে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের ৪২ হাজার কোটি টাকারও বেশি একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন। বেলা ২-১৫ মিনিটে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে ছত্তিশগড়ে মহাতারি বন্দনা যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা বন্টন করবেন তিনি।
আসামে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যান ও ব্যাঘ্র প্রকল্পটি ঘুরে দেখবেন। ইউনেস্কোর ঐতিহ্যশালী স্থানের তালিকাভুক্ত এই অভয়ারণ্যটি একশৃঙ্গ গণ্ডার, হাতি, বুনো মোষ, হরিণ এবং বাঘের জন্য বিখ্যাত।
প্রধানমন্ত্রী অহোম সাম্রাজ্যের বিখ্যাত সেনাপতি লচিত বরফুকনের ৮৪ ফুট উঁচু প্রতিকৃতিটির আবরণ উন্মোচন করবেন। এই বীর সেনাপতি মুঘলদের পরাজিত করেছিলেন। এছাড়াও, তাই-অহম সংগ্রহশালা এবং ৫০০ আসন-বিশিষ্ট একটি প্রেক্ষাগৃহ এই প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হচ্ছে। লচিত বরফুকনের শৌর্যকে সম্মান জানিয়ে তাঁর সম্পর্কে অজানা তথ্য মানুষের কাছে তুলে ধরাই এর উদ্দেশ্য। এর ফলে ঐ অঞ্চলে পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
জোরহাটে এক জনসভায় শ্রী মোদী আসামে রেল, স্বাস্থ্য, আবাসন এবং তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্প উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন।
প্রধানমন্ত্রী প্রাইম মিনিস্টার্স ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ ফর নর্থ ইস্টার্ন রিজিয়ন বা পিএম-ডিভাইন প্রকল্পের আওতায় বেশ কয়েকটি প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন। এর মধ্যে রয়েছে - গুয়াহাটিতে হেমাটো-লিম্ফয়েড সেন্টার এবং শিবসাগরে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। এই অনুষ্ঠানে ডিগবয় তেল শোধনাগারের ক্ষমতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রকল্পটির শিলান্যাস করা হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এখানে প্রতি বছর ০.৬৫ এমএমটি থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১ এমএমটি তেল পরিশোধিত হবে। এছাড়াও, গুয়াহাটি তৈল শোধনাগারের সম্প্রসারণ প্রকল্পেরও শিলান্যাস করা হবে। এই শোধনাগারে ক্যাটালিস্ট রিফর্মিং ইউনিট গড়ে তোলা হবে। পাশাপাশি, গুয়াহাটির বেতকুচিতে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন লিমিটেডের একটি টার্মিনাল তৈরি করা হবে।
শ্রী মোদী তিনসুকিয়ায় নতুন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, প্রধানমন্ত্রী উর্জা গঙ্গা প্রকল্পের আওতায় ৭১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ বারাউনি-গুয়াহাটি পাইপলাইন এবং পিএমএওয়াই-জি প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ৫.৫ লক্ষ বাড়ির উদ্বোধন করবেন। এই প্রকল্পগুলি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৮,৪৫০ কোটি টাকা।
শ্রী মোদী আসামে ১,৩০০ কোটি টাকারও বেশি একগুচ্ছ রেল প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, নিউ বঙ্গাইগাঁও-গুয়াহাটি ভায়া গোয়ালপাড়া শাখায় দ্বিতীয় রেল লাইন বসানোর প্রকল্পে ধূপধরা-ছায়াগাঁও অংশ এবং নিউ বঙ্গাইগাঁও-আগথোরি শাখায় দ্বিতীয় রেল লাইন বসানোর প্রকল্পে নিউ বঙ্গাইগাঁও-সরভোগ অংশ।
অরুণাচল প্রদেশে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে আরও উন্নত করে তুলতে ইটানগরে ‘বিকশিত ভারত বিকশিত উত্তর-পূর্ব’ কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। এর আওতায় মণিপুর, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, সিকিম, ত্রিপুরা এবং অরুণাচল প্রদেশে রেল, সড়ক, স্বাস্থ্য, আবাসন, শিক্ষা, সীমান্ত অঞ্চলের পরিকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুৎ, তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে শ্রী মোদী উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শিল্পোন্নয়নের জন্য নতুন প্রকল্প ‘উত্তর-পূর্ব ট্রান্সফর্মেটিভ ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন স্কিম’ বা ‘উন্নতি’ প্রকল্পটির সূচনা করবেন। এর ফলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শিল্পের উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে উঠবে, নতুন নতুন বিনিয়োগ আসবে। এই অঞ্চলে উৎপাদন এবং পরিষেবা শিল্প স্থাপনার মধ্য দিয়ে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। ১০ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পটির পুরো অর্থ কেন্দ্রীয় সরকার ব্যয় করবে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আটটি রাজ্য এর ফলে উপকৃত হবে। এর জন্য একটি পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে যার মাধ্যমে সহজে, স্বচ্ছভাবে বিভিন্ন সংস্থা নিবন্ধীকরণের কাজ করবে।
সেলা সুড়ঙ্গটি ৮২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত উন্নত এক প্রযুক্তি প্রয়োগের নিদর্শন। এই সুড়ঙ্গ তাওয়াং-এর সঙ্গে সারা বছর জুড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে নিশ্চিত করবে। বালিপাড়া-চারিদুয়ার-তাওয়াং রোডের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে উঠবে। অস্ট্রিয়ার উন্নত সুড়ঙ্গ খনন পদ্ধতি প্রয়োগ করে পুরো প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এর ফলে, দেশের কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার মানোন্নয়ন হবে। প্রধানমন্ত্রী ২০১৯-র ফেব্রুয়ারিতে এই সুড়ঙ্গের শিলান্যাস করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী অরুণাচল প্রদেশে ৪১ হাজার কোটি টাকার বেশি একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, দিবাং বহুমুখী জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। লোয়ার দিবাং ভ্যালি জেলায় ৩১,৮৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। এটি হবে দেশের সর্বোচ্চ জলাধার। এর ফলে বন্যা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে, বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে, প্রচুর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। ফলস্বরূপ, ঐ অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে।
শ্রী মোদী এই অনুষ্ঠানে সড়ক, পরিবেশ এবং পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন। ‘ভাইব্র্যান্ট ভিলেজ’ প্রকল্পের আওতায় এই প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত হবে। এখানে ৫০টি সুবর্ণ জয়ন্তী বিদ্যালয়ের মানোন্নয়ন ঘটানো হবে। এছাড়াও, দোন্যি-পোলো বিমানবন্দর থেকে নাহারলাগুন রেল স্টেশন পর্যন্ত দুই লেনের সড়কের শিলান্যাস করা হবে। রাজ্যে প্রায় ১,১০০টি জল জীবন মিশনের প্রকল্প এবং ১৭০টি মোবাইল ফোনের টাওয়ার জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর ফলে, ৩০০-র বেশি গ্রামের মানুষ উপকৃত হবেন। এই অনুষ্ঠানে ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৫০ হাজার বাড়ি সুবিধাপ্রাপকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এগুলি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় নির্মিত।
প্রধানমন্ত্রী মণিপুরে ৩,৪০০ কোটি টাকার একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন। এর মধ্যে রয়েছে : নীলাকুঠিতে ইউনিটি মল, মন্ত্রীপুখরিতে তথ্যপ্রযুক্তির বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, লাম্পজেলপটে ৬০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল এবং মণিপুর টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির পরিকাঠামোর মানোন্নয়ন।
নাগাল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রী ১,৭০০ কোটি টাকার একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করবেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চুমুকেদিমা জেলায় ইউনিটি মল নির্মাণ, ডিমাপুরের নাগারজানে ১৩২ কেভি সাব-স্টেশনের মানোন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস এবং লোকলাকে ছেনড্যাং স্যাডেলে সড়কের মানোন্নয়ন ও কোহিমা-জেসমি সড়ক প্রকল্পের উদ্বোধন।
প্রধানমন্ত্রী মেঘালয়ে ২৯০ কোটি টাকার একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য : তুরায় তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক এবং নিউ শিলং টাউনশিপের জন্য সড়কের মানোন্নয়ন প্রকল্প, আপার শিলং-এ কৃষকদের জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও হস্টেল।
সিকিমের জন্য প্রধানমন্ত্রী ৪৫০ কোটি টাকার একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, রংপো রেল স্টেশনের পুনরুন্নয়ন প্রকল্প, থারকু ও ডারামদিনের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ।
প্রধানমন্ত্রী ত্রিপুরায় ৮,৫০০ কোটি টাকা একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন। যে প্রকল্পগুলির শিলান্যাস করা হবে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, আগরতলায় পশ্চিম বাইপাস সড়ক প্রকল্প, সেকেরকোটে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের নতুন ডিপো এবং ড্রাগের নেশায় আক্রান্তদের জন্য নেশামুক্তি কেন্দ্র। যে প্রকল্পগুলির উদ্বোধন করবেন তিনি, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, গ্রামাঞ্চলে ১.৪৬ লক্ষ বাড়িতে নলবাহিত জলের সংযোগ প্রকল্প এবং দক্ষিণ ত্রিপুরার সাব্রুমে স্থল বন্দর। এই স্থল বন্দর নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২৩০ কোটি টাকা।
সাব্রুম স্থল বন্দর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণে সহায়ক হবে। এখানে যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও, একটি গুদামঘর, দমকল কেন্দ্র সহ পরিকাঠামোর নানা ব্যবস্থা রয়েছে। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরে এই স্থল বন্দরের কারণে পণ্য পরিবহণে সুবিধা হবে। প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের মার্চ মাসে এই প্রকল্পটির শিলান্যাস করেন।
পশ্চিমবঙ্গে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শিলিগুড়িতে ‘বিকশিত ভারত বিকশিত পশ্চিমবঙ্গ’ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন। রাজ্যের ৪,৫০০ কোটি টাকারও বেশি রেল ও সড়ক সংক্রান্ত একগুচ্ছ প্রকল্প উদ্বোধন ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন তিনি।
শ্রী মোদী বেশ কয়েকটি রেল প্রকল্পের বৈদ্যুতিকীকরণের পর সেগুলি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। এই প্রকল্পগুলির বাস্তবায়নে উত্তরবঙ্গ সহ সন্নিহিত অঞ্চলের জনগণের সুবিধা হবে। এর মধ্যে রয়েছে একলাখি-বালুরঘাট শাখা, বারসোই-রাধিকাপুর শাখা, রানিনগর জলপাইগুড়ি-হলদিবাড়ি শাখা, বাগডোগরা হয়ে শিলিগুড়ি-আলুয়াবাড়ি শাখা এবং শিলিগুড়ি-সেবক-আলিপুরদুয়ার জংশন-শামুকতলা শাখা (এই প্রকল্পের মধ্যে আলিপুরদুয়ার জংশন-নিউ কোচবিহার শাখা অন্তর্ভুক্ত)।
শ্রী মোদী রেল সংক্রান্ত আরও কয়েকটি প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। এর মধ্যে রয়েছে - মণিগ্রাম-নিমতিতা শাখার দ্বিতীয় লাইন, আমবাড়ি ফালাকাটা-আলুয়াবাড়ি শাখায় স্বয়ংক্রিয় ব্লক সিগন্যাল ব্যবস্থাপনা, শিলিগুড়ি ও রাধিকাপুরের মধ্যে নতুন প্যাসেঞ্জার ট্রেন পরিষেবা।
প্রধানমন্ত্রী যে সড়ক প্রকল্পগুলি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, ২৭ নম্বর জাতীয় সড়কের চারলেনের ঘোষপুকুর-ধূপগুড়ি শাখা এবং ইসলামপুর বাইপাস। ঘোষপুকুর-ধূপগুড়ি শাখা উত্তর-দক্ষিণ করিডরের একটি অংশ যা পূর্ব ভারতের সঙ্গে দেশের বাকি অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাবে। ইসলামপুর বাইপাস ঐ শহরের যানজটের সমস্যার সমাধান করবে। এই প্রকল্পগুলি ঐ অঞ্চলের শিল্প ও আর্থিক ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটাবে।
উত্তরপ্রদেশের প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী উত্তরপ্রদেশে ৪২ হাজার কোটি টাকারও বেশি একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন।
বিমান চলাচল ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী দেশের ১৫টি বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল ভবনের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন। এগুলির জন্য ব্যয় হবে ৯৮০০ কোটি টাকার বেশী। যে ১২টি বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল ভবনের উদ্বোধন হবে, সেগুলি হল পূণে, কোলাপুর, গোয়ালিয়র, জব্বলপুর, দিল্লি, আলিগড়, আজমগড়, চিত্রকূট, মোরাদাবাদ, শ্রবস্তী এবং আদমপুর। যে প্রকল্পগুলির শিলান্যাস করা হবে সেগুলি হল, কাড়াপা, হুব্বলি এবং বেলগাভি বিমানবন্দর।
এই ১২টি নতুন টার্মিনাল ভবনে প্রতি বছর ৬ কোটি ২০ লক্ষ যাত্রী ওঠা-নামা করতে পারবেন। নতুন যে টার্মিনাল ভবনগুলি নির্মিত হবে সেগুলিতে প্রতি বছর অতিরিক্ত ৯৫ লক্ষ যাত্রী চলাচল করতে পারবেন। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত এই টার্মিনাল ভবনগুলি সংশ্লিষ্ট রাজ্য ও শহরের ঐতিহ্যের কথা বিবেচনা করে নির্মিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী সকলের জন্য আবাসনের বিষয়টিকে নিশ্চিত করতে চান। এই লক্ষ্যে ‘লাইটহাউজ’ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। লক্ষ্ণৌ ও রাঁচিতে লাইটহাউজ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন তিনি। এর আওতায় ব্যয়সাশ্রয়ী মূল্যে ২ হাজার ফ্ল্যাট নির্মিত হয়েছে। এর আগে চেন্নাই, রাজকোট এবং ইন্দোরে ‘লাইটহাউজ’ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি। শ্রী মোদী ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে এই প্রকল্পগুলির শিলান্যাস করেছিলেন।
রাঁচিতে ‘লাইটহাউজ’ প্রকল্পে জার্মানির প্রিকাস্ট কংক্রিট নির্মাণ ব্যবস্থাপনাকে কাজে লাগানো হয়েছে। এখানে প্রত্যেকটি ঘরকে আলাদা আলাদাভাবে বানিয়ে লেগো ব্লক খেলনার মতো একত্রিত করা হয়েছে। লক্ষ্ণৌ-এ কানাডার পিভিসি ফর্মওয়ার্ক প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ১৯ হাজার কোটি টাকার একগুচ্ছ সড়ক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন উত্তরপ্রদেশে। যে প্রকল্পগুলি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করা হবে তা হল, চারলেনের লক্ষ্ণৌ রিং রোড এবং ২ নম্বর জাতীয় সড়কের চাকেরি থেকে এলাহাবাদের মধ্যে ছয় লেনের সড়ক। যে প্রকল্পগুলির শিলান্যাস করা হবে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, চারলেনের রামপুর-রুদ্রপুর শাখার পশ্চিমাংশ, ছয়লেন বিশিষ্ট কানপুর রিং রোড, ২৪বি ও ৩০ নম্বর জাতীয় সড়কের চারলেন বিশিষ্ট রায়বেরিলি-প্রয়াগরাজ শাখা।
প্রধানমন্ত্রী উত্তরপ্রদেশে পিএমজিএসওয়াই-এর আওতায় ৩,৭০০ কোটি টাকারও বেশি ৭৪৪টি গ্রামীণ সড়ক প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। রাজ্যের ৫৯টি জেলায় গ্রামাঞ্চলে ৫৪০০ কিলোমিটার সড়ক নির্মিত হয়েছে। এর ফলে ঐ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার মানোন্নয়ন ঘটবে এবং আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার উন্নতি হবে।
এই অনুষ্ঠানে ৮২০০ কোটি টাকার একগুচ্ছ রেল প্রকল্প উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন। উত্তরপ্রদেশের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এই প্রকল্পগুলি বৈদ্যুতিকীকরণ এবং দ্বিতীয় লাইন পাতার কাজের সঙ্গে যুক্ত। ভাতনি-পিওকোল বাইপাস লাইনটি ভাতনিতে রেল পরিবহণের ক্ষেত্রে সুবিধাজনক হবে। বাহেরাইচ-নানপাড়া-নেপালগঞ্জ রোড শাখায় গেজ পরিবর্তন প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন শ্রী মোদী। এছাড়াও, গাজিপুর শহর এবং গাজিপুর ঘাটের মধ্যে একটি নতুন রেল প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন তিনি। পাশাপাশি, গাজিপুর সিটি-তারিঘাট-দিলদার নগর জংশনের মধ্যে মেমু ট্রেন পরিষেবার সূচনা করা হবে। এছাড়াও, প্রয়াগরাজ, জৌনপুর ও এটাওয়ায় নিকাশি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন তিনি।
মহাতারি বন্দনা যোজনা
ছত্তিশগড়ে মহিলাদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে ছত্তিশগড়ে ‘মহাতারি বন্দনা যোজনা’র প্রথম কিস্তির টাকা বন্টন করবেন প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যের বিবাহিত মহিলারা প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা হিসেবে পাবেন। এই টাকা সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে। এর মাধ্যমে মহিলাদের আর্থিক ক্ষমতায়নের পাশাপাশি অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত হবে। পরিবারে তাঁরা সিদ্ধান্ত নির্ণায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবেন।
ছত্তিশগড়ে ২১ বছরের ঊর্ধ্বে প্রতিটি বিবাহিত মহিলা এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। বিধবা, বিবাহ বিচ্ছিন্না এবং যেসব মহিলারা স্বামী পরিত্যক্তা - তাঁরা সকলেই এই প্রকল্পের আওতায় আসবেন। প্রায় ৭০ লক্ষ মহিলা এর ফলে উপকৃত হবেন।