প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী ৭ তারিখ শুক্রবার বোড়ো চুক্তি স্বাক্ষর উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসামের কোকড়াঝাড় সফর করবেন।
এই অনুষ্ঠানে আসামের বিভিন্ন জায়গা সহ বোড়োল্যান্ড টেরিটোরিয়াল এরিয়া জেলাগুলির ৪ লক্ষ মানুষ যোগ দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। রাজ্যের বৈচিত্র্য তুলে ধরতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আসামের ভূমিপুত্র শিল্পীদের নিয়ে এক সাংস্কৃতিক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী এক জনসভায় ঐতিহাসিক বোড়ো চুক্তির বিভিন্ন দিক এবং সংশ্লিষ্ট সবপক্ষকে সামিল করে কিভাবে এই সাফল্য অর্জিত হয়েছে, তা বর্ণনা করবেন।
উল্লেখ করা যেতে পারে, ঐতিহাসিক বোড়ো চুক্তি গত ২৭শে জানুয়ারি নতুন দিল্লিতে স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তি স্বাক্ষরের পর প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব ট্যুইটার অ্যাকাউন্টে একটি ট্যুইট করে বলেন ‘আজ ভারতের কাছে বিশেষ দিন’। তিনি আরও বলেন, এই চুক্তি ‘বোড়ো মানুষের জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসবে এবং তাঁদের জীবনে শান্তি, সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা করবে’।
প্রধানমন্ত্রীর ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ – এই মন্ত্রকে সামনে রেখে বোড়ো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে পাঁচ দশক পুরনো বোড়ো সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।
শ্রী মোদী ট্যুইটে বলেন, বোড়ো চুক্তি একাধিক প্রয়াসের ফসল। যারা আগে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, এখন তারা সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসার এবং দেশের অগ্রগতিতে অবদান রাখার সুযোগ পাবেন’।
এই চুক্তি স্বাক্ষরের দু’দিনের মধ্যেই ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট অফ বোড়োল্যান্ডের বিভিন্ন শাখার ১ হাজার ৬১৫ জনেরও বেশি সদস্য অস্ত্রশস্ত্র সহ আত্মসমর্পণ করে সমাজের মূলস্রোতে যোগ দিয়েছেন।
ট্যুইটে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বোড়ো গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে এই চুক্তি বোড়ো মানুষের অনন্য সংস্কৃতির সুরক্ষা ও জনপ্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করবে। এখন থেকে বোড়ো মানুষজন উন্নয়নমূলক উদ্যোগগুলির সুবিধা পাবেন। ‘আমরা বোড়ো মানুষের আশা-আকাঙ্খা পূরণে সম্ভাব্য সবরকম সাহায্য করতে অঙ্গীকারবদ্ধ’।
এই অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বিশেষ প্যাকেজ বরাদ্দ করা হয়েছে। সম্প্রতি ভারত সরকার এবং মিজোরাম ও ত্রিপুরা সরকারের সঙ্গে যে ব্রু-রিয়াং চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে, তার ফলে ৩৫ হাজার ব্রু-রিয়াং উদ্বাস্তুর সমস্যা দূর হবে। এমনকি, ত্রিপুরায় এনএলএফটি-র ৮৫ জনেরও বেশি ক্যাডার আত্মসমর্পণ করেছে। এই সমস্ত অগ্রগতি ও ঘটনা উত্তর-পূর্বে সার্বিক উন্নয়ন ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার ও দূরদৃষ্টিকেই প্রতিফলিত করে।
এবারের সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন ‘মন কি বাত’ বেতার অনুষ্ঠানে দেশবাসীর সঙ্গে তাঁর চিন্তাভাবনা বিনিময় করার সময়ে প্রধানমন্ত্রী হিংসার পথ ও অস্ত্রশস্ত্র ত্যাগ করে সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসার আন্তরিক আবেদন জানিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, সাধারণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আমি সেই সমস্ত মানুষ যাঁরা হিংসা ও অস্ত্রকে হাতিয়ার করে সমস্যার সমাধান খুঁজছেন, তাঁদের আমি সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসার আহ্বান জানাই। এদের প্রত্যেকের নিজস্ব সক্ষমতার প্রতি এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যার সমাধানে দেশের ক্ষমতার প্রতি আস্থা বজায় রাখা প্রয়োজন।