দেশে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক পরিবর্তন আনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ১৩ই অক্টোবর বেলা ১১টার সময় নতুন দিল্লির প্রগতি ময়দানে পিএম গতিশক্তি – বহুস্তরীয় যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য একটি জাতীয় মাস্টার প্ল্যানের সূচনা করবেন।
ভারতে পরিকাঠামো গড়ে তোলার সময় দশকের পর দশক নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে সমন্বয়হীনতাই এর মূল কারণ। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একটি রাস্তা তৈরি হল, এর ঠিক পরে মাটির তলার কেবলের লাইন, গ্যাসের পাইপলাইন ইত্যাদি বসানোর জন্য ঐ নতুন রাস্তাটিকে আবার খোড়াখুঁড়ি শুরু হয়। এর ফলে মানুষ যেমন অসুবিধার সম্মুখীন হয়, একই সঙ্গে অর্থের অপচয়ও হয়ে থাকে। এই সমস্যার সমাধানের জন্য সকলের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে সব ধরণের কেবল, পাইপ লাইন যাতে একই সঙ্গে বসানো যায়, তার জন্য সমন্বয় বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্পের নানা দপ্তরে অনুমোদন পেতে সময় লাগে। এছাড়াও বিভিন্ন নিয়ামক সংস্থাগুলির থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়। এই বিষয়গুলির সমাধান করাও এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। বিগত ৭ বছর ধরে সরকার, একটি সর্বাঙ্গীন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিকাঠামোর উপর অভূতপূর্ব গুরুত্ব দিচ্ছে।
পিএম গতিশক্তি বৃহৎ পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির সঙ্গে যুক্ত সকলকা প্রাতিষ্ঠানিক সামগ্রিক পরিকল্পনা করতে সাহায্য করবে। পৃথক পৃথকভাবে পরিকল্পনা করার পরিবর্তে প্রকল্পগুলি একটি জায়গা থেকে পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন করা হবে। ভারতমালা, সাগরমালা, অভ্যন্তরীণ জলপথ, স্থলবন্দর, ড্রাইপোর্ট, উড়ান ইত্যাদির মতো বিভিন্ন মন্ত্রকের এবং রাজ্য সরকারের সঙ্গে একযোগে পরিকাঠামোগত এই প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত করা হবে। বস্ত্র শিল্প ও ওষুধ শিল্পের ক্লাস্টার, প্রতিরক্ষা করিডর, শিল্প করিডর, বৈদ্যুতিন পার্ক, মৎস চাষের ক্লাস্টার কৃষি ভিত্তিক ভিন্ন উদ্যোগের মতো অর্থনৈতিক কর্মকান্ড এই ব্যবস্থার ফলে সুবিধে হবে। এর ফলে ভারতীয় ব্যবসা বাণিজ্য আরো প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে। ভাস্করাচার্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস অ্যাপ্লিকেশন অ্যান্ড জিওইনফরমেটিক্স দ্বারা ইসরোর এই উদ্যোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াবে। এক্ষেত্রে পরিকল্পনা করতে সুবিধা হবে।
পিএম গতিশক্তি ৬টি স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে থাকবে। এগুলি হল –
১) সর্বাঙ্গীনতা – বিভিন্ন মন্ত্রক ও দপ্তরের যে সব প্রকল্প রয়েছে এবং যেগুলির পরিকল্পনা করা হচ্ছে, সবগুলি একটি কেন্দ্রীভূত পোর্টালে দেখা যাবে। প্রত্যেকটি দপ্তর একে অন্যের কাজ দেখতে পাবে। পরিকল্পনা এবং তার পর সেগুলিকে বাস্তবায়নের সময় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান প্রদানের কাজটির সর্বাঙ্গীনভাবে করা হবে।
২) অগ্রাধিকার – বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে পারস্পরিক মতবিনিময়ের মাধ্যমে কোন প্রকল্প অগ্রাধিকার পাবে, সেটি নিশ্চিত করা হবে।
৩) সর্বোচ্চ ব্যবহার –বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে যে সব সমস্যা দেখা দিচ্ছে, সেগুলি দূর করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকগুলির সঙ্গে জাতীয় মাস্টার প্ল্যান পরিকল্পনা করবে। এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পণ্য চলাচলের ক্ষেত্রে অর্থ এবং সময় বাঁচানোর জন্য কোন পথ ব্যবহার করা হবে, তা নির্বাচন করতে সুবিধা হবে।
৪) সামঞ্জস্য বিধান – পৃথক পৃথক মন্ত্রক এবং দপ্তরগুলির প্রায়শই এককভাবে কাজ করে। এর ফলে বিভিন্ন প্রকল্পের পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের সময় সমন্বয়ের অভাব দেখা দেয়। ফলে প্রকল্পগুলি শেষ হতে দেরি হয়। পিএম গতিশক্তি প্রতিটি দপ্তর, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করে সামগ্রিকভাবে সহযোগিতা গড়ে তুলবে।
৫) বিশ্লেষণ ধর্মী – জিআইএস ভিত্তিক বিশেষ পরিকল্পনা এবং বিশ্লেষণ ধর্মী সরঞ্জামের মাধ্যমে সব তথ্য একটি স্থানে রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ২০০র বেশি স্তরে যে কোনো প্রকল্পের বাস্তবায়ন সম্পর্কে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা সব ধরণের তথ্য সংগ্রহ করবে।
৬) প্রগতিশীল – সমস্ত মন্ত্রক এবং দপ্তর জিআইএস প্ল্যাটফর্মের সাহায্যে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে ধারণা করতে পারবে এবং প্রকল্পের পর্যালোচনা ও সেটি বাস্তবায়নের বিষয়ে একটি ধারণা পাবে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর উপগ্রহ মারফৎ ছবি মূল্যায়ন করে প্রকল্পগুলির অগ্রগতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। মাস্টার প্ল্যানের বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য জানতে পারার পর কোথায় কোথায় কাজ আটকাচ্ছে, সে বিষয়ে ধারণা পাওয়া সম্ভব।
প্রধানমন্ত্রীর পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সময়োপযোগি পরিকাঠামো গড়ে তুলতে পিএম গতিশক্তির পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সহজে জীবনযাত্রা এবং সহজে ব্যবসা বাণিজ্য করার সুযোগ তৈরি হবে। জনসাধারণ, পণ্য ও পরিষেবা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলাচলের ক্ষেত্রে বহুস্তরীয় যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে – যা সমন্বিত ও বাধাহীন যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। এর মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে এবং যাতায়াতের সময় বাঁচবে।
পিএম গতিশক্তি ভবিষ্যতের যোগাযোগ সংক্রান্ত প্রকল্পগুলি ব্যবসা বাণিজ্যের কেন্দ্র, শিল্পাঞ্চল এবং পারিপার্শ্বিক পরিবেশ বজায় রেখে বিভিন্ন প্রস্তাব বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করতে সুবিধা হবে। বিনিয়োগকারীরা তাদের ব্যবসা বাণিজ্যের পরিকল্পনা আগে থেকে করতে পারবেন। এর ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, অর্থনীতিতে জোয়ার আসবে। স্থানীয় স্তরের উৎপাদিত পণ্য কম পয়সায় পরিবহণ করা সম্ভব হবে। এর ফলে সরবরাহ শৃঙ্খলের মানোন্নয়ন ঘটবে। স্থানীয় শিল্প ও গ্রাহকদের মধ্যে যাথাযথ যোগাযোগ তৈরি হবে।
প্রধানমন্ত্রী প্রগতি ময়দানে ২ ও ৫ নম্বর প্রদর্শন কক্ষে নতুন প্রদর্শশালা কমপ্লেক্স উদ্বোধন করবেন। ইন্ডিয়া ট্রেড প্রমোশন অর্গানাইজেশনের ফ্ল্যাগশিপ কর্মসূচি ভারত – আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ২০২১, ১৪ - ২৭ তারিখ পর্যন্ত এই হলে অনুষ্ঠিত হবে।
কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রী, সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক মন্ত্রী, রেল মন্ত্রী, অসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী, জাহাজ চলাচল মন্ত্রী, বিদ্যুৎ, পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রীও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
On the auspicious occasion of Maha Ashtami, tomorrow, 13th October at 11 AM, the PM GatiShakti - National Master Plan for multi-modal connectivity will be launched. Here are the details about why this initiative is special. https://t.co/KKE07VxfYF
— Narendra Modi (@narendramodi) October 12, 2021